User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
প্রথমবার অর্ডার করি এবং শুধু একটাই কথা বলবো রকমারি বেস্ট,, তাদের প্যাকেজিং মাশাআল্লাহ,, তাদের ব্যবহার মাশাআল্লাহ, আর এতো তাড়াতাড়ি ডেলিভারি পাবো ভাবতে পারিনি,, অনেক অনেক শুভকামনা ভালোবাসা রকমারির জন্য,, পরের বার আবারও অর্ডার করবো ইনশাআল্লাহ
Was this review helpful to you?
or
pages koyekta নোংরা
Was this review helpful to you?
or
চাঁদের অমাবস্যা ? লেখকঃ সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ্ ▪ আমার সংক্ষিপ্ত প্রতিক্রিয়া : উপন্যাসটি খুবই মনোজাগতিক একটি বর্ণনামূলক উপন্যাস । এতে একটি বীভৎস অপরাধ সচক্ষে দেখে তা নিয়ে নিজের মনে শত জল্পনা-কল্পনা, চিন্তা-দুশ্চিন্তা ও অস্থিরতায় জড়িয়ে পড়ে কোনো এক দরিদ্র যুবক শিক্ষক! একটি অব্যক্ত সত্যতা তার মনকে ঠিক কিভাবে ক্ষত-বিক্ষত করে তুলে এবং অন্যদিকে তার আশ্রিতার পরিবারের একজন প্রত্যক্ষ দোষী হয়েও তাদের বংশ মর্যাদা আর সুপরিচিত ক্ষমতার জেরে কিভাবে নিস্তার পেয়ে বসে , সেসব নিয়েই একটি ধর্মীয় অনুশাসনমূলক ভিন্ন সমাজব্যবস্থা উঠে আসে এই উপন্যাসটিতে। যেখানে বিত্তবানদের আধিপত্য ও উচ্চ সম্মানের কাছে সত্য হার মেনে যায়। নিজের মনুষ্যত্বকে প্রাধান্য দিতে গিয়ে, এমন একজন মানুষের দোষ প্রকাশ করেই বিপদে পড়ে যায় নিম্নশ্রেণীর এক যুবক শিক্ষক। ?এই বইটি সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ'র কালজয়ী একটি উপন্যাস ! বইটি পড়ে আমার অনেক ভালো লেগেছে এবং অনেক গভীর অন্তর্নিহিত বাস্তবতা উপলব্ধি করতে পেরেছি ?
Was this review helpful to you?
or
দারুণ
Was this review helpful to you?
or
একটু সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ রচিত 'চাঁদের অমাবস্যা ' উপন্যাস নিয়ে কথা বলি। আকারে ছোট্ট একটা উপন্যাস। এটা মূলত রূপক ও মনস্তাত্ত্বিক উপন্যাস। গ্রামের এক গরিব যুবক শিক্ষক প্রভাবশালী এক বাড়িতে আশ্রিত। সে বাড়ির বাচ্চাদের এবং মাদ্রাসায় পড়ায়। সে কোন ক্রমে আশ্রিতের ছোট ভাইয়ের এক যুবতীকে খুনের ঘটনায় জড়িয়ে যায়। উপন্যাস শুরু হয় জোসনা রাতে বর্ণনা দিয়ে। এবং পুরোটা উপন্যাস ধরে পাঠকদের এই রকম রহস্যময় ও উৎকন্ঠার মধ্যে দিয়ে নিয়ে যান লেখক। এক জোসনা রাতে আশ্রিতের ছোট ভাইকে একেবারে মনের খেয়ালে অনুসরণ করে গরিব যুবক শিক্ষক। তার বাসনা ছিলো জোসনা উপভোগ করা। ভাগ্যক্রমে সে প্রথমে বাঁশ বাগানে মৃদু চিৎকার ও একটি যুবতী নারীর অর্ধ উলঙ্গ লাশ শনাক্ত করে। এর পরে ঘটনা থেকে একটু দূরে বাঁশ বাগানের বাহিরে আশ্রিতের ছোট ভাইকে আবিষ্কার করে। ভূত দেখার মত দৌড়ে বাড়ি ফিরে আসে সে। সে কিছুই বুঝে উঠতে পারে না। এর পর ছোট ভাই যার নাম কাদের সে যুবক শিক্ষকের ঘরে আসে পরের রাতে। তাকে নিয়ে সেই রাতে লাশ নদীতে ফেলে দিয়ে আসে। সে মন্ত্রমুগ্ধের মত কাদেরকে অনুসরণ করে এবং একসময় অনুভব করে সেও পাপের ভাগিদার হয়ে গেছে। এর পর যুবক শিক্ষকের মনে প্রশ্ন জিজ্ঞাসা তৈরি হয় এবং মৃত যুবতীর লাশ নদীতে ভেসে উঠলে সে আরো বিহব্বল হয়ে পরে। এক সময় কাদের জানায় এটা তারই কাজ এবং ঘটনাটা ঘটেছে দূর্ভাগ্যক্রমে। সে মিলনের সময় যুবতীকে শব্দ না করার জন্য গলা চেপে ধরে কিন্তু যুবতীটি মারা যায়। কাদের বলে এ আর কি! কাদেরের এই অনুশোচনাহীন উক্তি যুবক শিক্ষককে আরো এলোমেলো করে দেয়। সে ব্যাপারটা প্রকাশ করে দিতে চায় এবং চায় যেন কাদের শান্তি পায়। কিন্তু শেষে দেখা যায় গরিব যুবক শিক্ষকই পুলিশের হাতে আটক হয়। জল তার দিকেই গড়ায়। মনস্তাত্ত্বিক এই উপন্যাসে কাদের হলো খুনি, যুবক শিক্ষক হলো সাধারণ জনগন ও কাদেরের বড় ভাই বা রাষ্ট্র হলো নিশ্চুপ পক্ষ যে কিনা প্রভাবশালীদের ডান হাত হিসেবে কাজ করে। ভালো পড়ুন ভালো থাকুন।
Was this review helpful to you?
or
রকমারি_রিভিউ_প্রতিযোগ_আগস্ট_২০১৯ বই: চাঁদের অমাবস্যা; লেখকঃ সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ; প্রকাশকঃ মাটিগন্ধা; ধরন: চিরায়ত উপন্যাস চাঁদপাড়া গ্রামের বাইশ-তেইশ বছরের যুবক শিক্ষক, আরেফ আলী নামহীন একটা গ্রামের স্কুলে চাকরী করেন। স্বজন বলতে তার মা। দুইবেলা বাচ্চাদের পড়ানোর বিনিময়ে সে একি গ্রামের বড় বাড়িতে লজিং মাস্টার হিসেবে থাকে। দাদা সাহেব বড় বাড়ির প্রধান। কাদের দাদা সাহেবের ছোট ভাই বংশের ছোটও বলা যায়, দাদা সাহেবের সাথে তাঁর বয়সের দুরুত্ব তিরিশ বছর। ছোট বেলা থেকে সে অনেক টা উৎশৃঙ্খল, পড়াশোনায় সে একদমই মনোযোগী ছিল না। পরবর্তীতে সে হঠাৎ করেই শান্ত হয়ে যায়, এতটাই নিরব যে সংসারে কারো সাথে সে কথা বা যোগাযোগ রাখে না, এক কথায় সে সংসার থেকে বিচ্ছিন্ন।বিয়ে করলেও বউ এর সাথেও তার ততটা আপন সম্পর্ক নয়। একাকিত্বের সাথেই তার বসবাস। উপন্যাসটি দ্বি-প্রধান চরিত্র দ্বারা কেন্দ্রীভুত হয়েছে। যুবক শিক্ষক আরেফ আলী ও বড় বাড়ির ছোট ছেলে কাদের। তবে যুবক শিক্ষক আরেফ আলীই প্রধান চরিত্র আর তার ভাবনা গুলো কাদের কে ঘিরে গঠিত। এই দুই চরিত্রের মধ্যে না বন্ধুন্ত না শত্রুতা, তবে একটা সময়ে একটু বিরুদ্ধ ভাব লক্ষ্য করা যায়। উপন্যাসের শুরু এভাবে যে, যুবক শিক্ষক ও কাদেরের সাক্ষাৎ হয় বাঁশঝাড়ে। সাক্ষাৎটা আকস্মিক, যদিও যুবক শিক্ষকের গভীর রাতে প্রকৃতি বিচরন করার কারনটা কাদেরকে অনুসরন করা। দাদা সাহেব এমন কি গ্রামের সবাই কাদের কে দরবেশ ভাবে, কিন্তু যুবক শিক্ষকের বিশ্বাসটা একটু কম।কাদেরের নিশি বিচরন তার কাছে সন্দেহের। তাই কাদের কে অনুসরন করতে যেয়েই সে জোৎস্না বিস্তৃত রাতে নিজেকে হারিয়ে ফেলে, একই সাথে কাদেরকেও হারিয়ে ফেলে কিন্তু তারই সাথে একটা অপ্রস্তুত পরিবেশের সাথে তার সাথে সাক্ষাৎ হয়। আর এই অপ্রস্তুত ঘটনাটাই পুরো উপন্যাসটির আলোচনার মুল কেন্দ্র। এই ঘটনাটাই তাকে ভাবিয়ে তোলে। উলট পালট করে দেয় তার দৈনন্দিন জীবন, বিবেক আর মনুষ্যত্বের কড়া বাকবিতন্ডায় পড়তে হয় তাকে। অবশেষে মনুষ্যত্বের জয় টাই বোধ করি মুখ্য হয়ে দাড়ায়। কিন্তু সমাজের দৃষ্টিকোন থেকে সে পরাজিত। জোৎস্না বিস্তৃত শীতের রাতে যুবক শিক্ষক বাঁশঝাড়ে একটা যুবতি নারীর অর্ধউলঙ্গ মৃতদেহ দেখে। তারপরেই তার কাদেরের সাথে সাক্ষাৎ হয়। কাদেরকে দেখেই সে ভয়ে কুকরে যায়, পাগলের মতো দৌড়াতে থাকে, উদ্ভট চিন্তা তার মাথায় ঘুরপাক খেতে থাকে। পরের রাতে কাদের তার কাছে আসে সাহায্যের জন্য, তারা উভয়ে অর্ধ নগ্ন যুবতি নারীর মৃতদেহ নদীতে ফেলে দেয়। পর দিন সকালে যখন যুবক শিক্ষক যুবতি নারীর মৃত দেহ আবিষ্কারের কথা শুনে, সে দিকবিদ্বিক শুন্য হয়ে যায়। অদ্ভুদ চিন্তা মাথার মধ্যে ঝড় তুলতে থাকে। সে একটু ভয়ও পায়, কাদের কি তাকে হত্যাকারি ভাবে? যুবতি নারীর মৃতদেহ গুপ্ত করার জন্য সে কেন কাদের কে সাহায্য করেছিল? তার মন, শরীর অবশ করার মত চিন্তার অবসান করার জন্য সে কাদেরের সাথে সাক্ষাৎ করতে চায়। যখন কাদেরের সাথে তার দ্বিতীয় বার সাক্ষাৎ হয়, কোন অজানা সত্য তার দুয়ারে কড়া নারে??? যুবতি নারীর হত্যাকারী কে? কেন যুবতি নারী নির্মম ভাবে বাঁশঝাড়ে খুন হলো? কোনো গোপন প্রেমের সুত্র কি সেখানে ছিল? নাকি শুধুই শরিরের ক্ষুধা ছিল? সব কিছু বিচার করে যুবক শিক্ষকের সিদ্ধান্ত কি ছিল? নাকি সে সিদ্ধান্ত নিতেই দ্বিধা বোধ করছিল? কি বিষয় তাকে এত ভাবাচ্ছিল? আদৌ কি সে তাঁর বিবেকের কাছে জয়ী হতে পেরেছিল? এত গুলো প্রশ্নের সমাধান শুধুমাত্র সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ রচিত ‘চাঁদের অমাবস্যা‘ উপন্যাস পড়ার মাধ্যমেই পাওয়া সম্ভব। উপন্যাসের প্রেক্ষাপট: সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ রচিত “চাঁদের অমাবস্যা” একটি মনস্তাত্ত্বিক উপন্যাস। প্রেক্ষপট বলতে উপন্যাসটি কিছুটা ধর্মীয় অনুশাসন,বিত্তবানদের আধিপত্য নিয়ে লেখা। যেখানে বিত্ত্ববানদের আধিপত্যের কাছে সত্য হার মেনে যায়। সমাজের উচ্চ সম্মানের তলায় চাপা পড়ে যায় ন্যায় বিচার। মনুষ্যত্বকে জয়ী করতে যেয়ে, ধনীদের দোষের কথা যেখানে প্রকাশ করেই বিপদে পড়ে যায় নিম্নশ্রেনীর মানুষেরা। এমনই একটা বিষয়ের চিত্র ফুটে উঠেছে চাঁদের অমাবস্যা উপন্যাসে। তাছাড়া ধার্মিক গোছের মানুষের মাঝেও যে কলুষতা লুকিয়ে থাকে সেটাও প্রকাশ পায় সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহর রচিত চাঁদের অমাবস্যা উপন্যাসটিতে। উপন্যাসে কাদের একজন দরবেশ হিসেবে পরিচিত যে সংসার থেকে পুরোটাই বিচ্ছিন্ন,তাছাড়া তার বড় ভায়েরাও অনেকটা ধার্মিক মনোভাব পোষন করেন। কিন্তু চরম নোংরা দুর্ঘটনাটা, হোক সেটা ইচ্ছা বা অনিচ্ছায়, কাদেরের দ্বারাই সম্পন্ন হয়। উপন্যাসে সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ উক্তি সমূহ: ★“সত্যই সত্যকে আকর্ষন করে”। ★“যে বৃক্ষটি শাখা-প্রশাখা বিস্তার করে, সত্য রুপ ধারন করেছিল, মুল নেই বলে সে বৃক্ষটি নিমেষেই ধরাশায়ী হয়”। ★“মানুষের ভাগ্য খামখেয়ালী এবং নির্মম হলেও মানুষ মায়া মমতাশূন্য নয়, অতি নিস্পৃহের নিকট ও অন্যের জীবন মুল্যহীন নয়”। ★"মানুষের জীবনটা অতি ভঙ্গুর,একটুতে-ই মটকায়।" ★"একটি কারনেই মানুষ মানুষের অন্তিম ব্যবস্থা না করে পারে না। সে কারন প্রেম, ভালবাসা”। ★"খাঁটি মানুষ অসম্কোচে দোষঘাট স্বীকার করে, কিন্তু হৃদয়ের সৌন্দর্য সহজে উন্মুক্ত করে না”। ★"যে ঝড়ের নাম জানা নেই, যে ঝড়কে দেখা যায় না,সে ঝড়কে চেপে রাখতে হয়”। ★“যে কথা আকাশের সূর্য, চন্দ্রতারা, ধরনীর ফুল, লতা-পাতা-দূর্বাদল বা স্রোতস্বীনী নদী নির্বিঘ্নে বলতে পারে সে কথা বলা নিষেধ। যে কথা হয়তো জীবন সম্মন্ধে একটি সরল কৌতুহল মাত্র, যার উৎস অজানার প্রতি মানুষের ভীতির মধ্যে সে কথা বলা নিষেধ”। ★"আদর্শ চরিত্র শুধু রুপকথায় বিরাজ করে,বাস্তব জগতে তার অস্তিত্ব নেই”। ★"পুরুষের ওসব দুর্বলতা থাকেই, দোষটা আসলে মেয়ে লোকটির। দুশ্চরিত্রা হলে এমন অপঘাত মৃত্যু অবধারিত”। সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহর চাঁদের অমাবস্যা উপন্যাস নিয়ে বুক রিভিউ লেখার সময়, আরো বেশ কিছু উক্তির কথা মাথায় এসেছিল। সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ এর এই বানীগুলিই সবচেয়ে বেশি মনে ধরেছে। ব্যক্তিগত মতামত: শুরুতেই আমরা জেনেছি, "চাঁদের অমাবস্যা" একটি মনস্তাত্ত্বিক উপন্যাস। উপন্যাসটিতে আমরা প্রধান চরিত্র হিসেবে অবিবাহিত যুবক শিক্ষক আরেফ আলীকে দেখতে পাই। অনেকটা মেরুদন্ডহীন ,যার সত্য সাহসের বড় অভাব, একটু জটিলতা তাকে ঘোরের মধ্যে ফেলে দেয়। বাস্তব আর কল্পনাকে সে এক করে ফেলে। যদিও তিনি একটু ভীতু গোছের কিন্তু এই ভীরুতারও কারন আছে। একজন দরিদ্র শিক্ষক কিভাবে পেরে উঠতে পারে একজন বিত্তশালীর কাছে? যুবক শিক্ষক ভীতু হলেও একটু বিশ্লেষন ধর্মী। দেরিতে হলেও তিনি অর্থ বিত্তের কাছে হেরে যান নি, জয়ী হয়েছেন মনুষ্যত্ব নামক ছায়ার কাছে। যুবতি নারী তার পরিচিত কেউ নন, তবুও তার নির্মম মৃত্যু তাকে ভাবিয়ে তুলেছে বহুবার। নিজের আশ্রয় চলে যাবে, উপার্জনের পথ বন্ধ হয়ে যাবে, বৃদ্ধ মাতাকে সাহায্য করতে পারবে না, এমনও অনেক ব্যক্তিগত স্বার্থের কথা আসলেও সে শেষ পর্যন্ত যুবতি নারীর হত্যার ঘটনা প্রকাশ করেছে, যুবতি নারীর জন্য ন্যায় বিচার সে এনে দিতে চায়। বাঁশঝাড়ের ঘটনার সাক্ষী বলতে যুবক শিক্ষক, তারপর সে সাধারান শিক্ষক, উচু বংশের নামযশ ধারী কাদেরের বিরুদ্ধে করা অভিযোগ বিশ্বাস করাটা সহজ হলেও মেনে নেয়া এতোটাও সহজ নয়, যুক্তিতেই এমনটা চলে আসে, সেটা যুবক শিক্ষক নিজেও উপলব্ধি করেছে অনেকবার। তবুও সে বিবেকের দহনে আইনের আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছে, সে ঘটনাটি প্রকাশ করা নিজ দায়িত্ব মনে করেছে। এটা তার নিজের ধ্বংসের কারন ছাড়া আর কিছুই এনে দেয়নি, ফলাফল বলতে শুন্যতায় এসে দাড়িয়েছে। আইন তার কথা বিশ্বাস করেনি, একজন উন্মাদ ভেবেছে তাকে, পাগলের প্রলাপ হিসেবে গ্রহণ করেছে আর শেষে দোষী হিসেবে তাকেই ইঙ্গিত করেছে। বাঁশঝাড়ের ঘটনা প্রকাশ করা আর চাপিয়ে রাখা দুটোই যুবক শিক্ষকের জন্য নিষ্ঠুরতা।যদি সে চেপে রাখে তাহলে সে বিবেকের দংশনে বিষিয়ে যাচ্ছে প্রতিটা মুহুর্ত আর প্রকাশ করলে কেউ বিশ্বাস করবে না দোষটা এসে পরবে তার উপর। উপন্যাসটিতে কাদের চরিত্র টি গুরুত্বপূর্ভাবে প্রকাশিত হয়নি, তার দৃষ্টিভঙ্গিই পাঠকের অগোচরে রয়ে গেছে। তবে উপন্যাসের সমস্ত কথা চিন্তা কাদেরের দ্বারা ঘটিত বিষয় নিয়ে আবর্তিত হয়েছে যুবক শিক্ষরের মনে। বেশ কিছু চরিত্রের আনাগোনা থাকলেও তাদের কে খুব কমই প্রকাশ করেছেন লেখক। সব চেয়ে বেশি ফোকাস করেছেন বাঁশঝাড়ে যুবতি নারীর মৃত্যুর ঘটনা। দরিদ্র মাঝির বউ এর সাথে কাদেরের প্রনয়ের কারন ভালবাসা ছিল কিনা এ নিয়ে সুস্পষ্ট ধারনা লেখক দেননি। তবে অবৈধ সম্পর্ক ছিল তা যুবক শিক্ষকের চিন্তা থেকে ধরে নেয়া যায়। কিন্তু ভালবাসা ব্যতিত প্রণয় সম্ভব কিনা এটাই প্রশ্নাতীত। যুবতি নারীর মৃত্যু একটা দুর্ঘটনা হিসেবে চিহ্নিত করা যায়। দুজনের সম্মতিতেই তারা(কাদের ও যুবতি নারী) বাশঁঝাড়ে দেখা করতে আসে। কাদের কেন তাকে হত্যা করবে? এমনটা চিন্তার বাইরে। যুবক শিক্ষকের উপস্থিতি বুঝতে পেরেই যুবতি নারী একটু চিৎকার দিয়ে ওঠে, কাদের তার গলা চেপে ধরে, যাতে চিৎকারের আওয়াজ না হয়। কথা হলো,তাদের দুজনের সম্মতি ছিল তাহলে কেন যুবতি নারী চিৎকার করলো? আর কাদেরই বা কেন গলা টিপে ধরলো? সে তো মুখ চেপে ধরতে পারতো কন্ঠ নালীই কেন ধরতে হলো। শুধু মাত্র ভয় পেয়েই কাদের যুবতি নারীকে হত্যা করে ফেললো? এখানেও একটু প্রশ্ন থেকে যায়। এমন হতে পারে যুবতি নারী চিৎকার করে প্রমান করতে চায় কাদের তাকে জোর করেছিল। তাহলে এখানে ভালবাসার প্রশ্নই উঠে না।আর ভালবাসা নেই বলেই যুবক শিক্ষকও কাদের কে ক্ষমা করতে পারে না। আবার,যুবক শিক্ষক কাদের কে অনুসরন করেছিল বলেই দুর্ঘটনাটা ঘটেছিল, এমনটাও ভেবে নেয়া যায়। যুবক শিক্ষকের উপস্থিতি বুঝেই যুবতি নারী চিৎকার করেছে আর কাদের তার বংশ মর্যাদা, নিজের সম্মানের কথা ভেবে ভয় পেয়ে যুবতি নারীর গলা টিপে ধরে, মৃত্যু হয় একটি প্রাণের। কিছু কিছু ঘটনা এভাবে আকস্মিক ঘটে যায়, শুধুমাত্র ভয় মানুষের বোধ শক্তিকে লোপ করে দেয় জঘন্য খারাপ কাজের দিকে ঠেলে দেয়, একজন সহজ সুবোধ মানুষকেও। চাঁদের অমাবস্যা উপন্যাসটিতে, সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ এর নারীদের প্রতি একটা উক্তি ছিল এরকম.... ★“পুরুষের ওসব দুর্বলতা থাকেই, দোষটা আসলে মেয়ে লোকটির।দুশ্চরিত্রা হলে এমন অপঘাত মৃত্যু অবধারিত” উক্তিটি ধনী ব্যক্তিদের সমর্থকদের, যারা মেয়েদেরকেই দোষী বলে বিবেচনা করে থাকে। এখানে কাদের বিবাহিত,, যুবতি নারীও বিবাহিত। মেয়েটা যদি দুশ্চরিত্রা হয়, ছেলেটা কম কিসে? উক্তিটি লেখার সময়টাতে যে লিঙ্গ বৈষম্য প্রকট ছিল তা বলার প্রয়োজনই পরে না। শুধু তখনকার সময়ে নয় বর্তমান সময়টাতেও এর বিপরীত নয়। সব শেষে উপন্যাটির মাধ্যমে, মুলতই মানসিক চিন্তাটা কিভাবে মানুষের দৈনন্দিন জীবনকে টলিয়ে দিতে পারে এমনই একটি চিত্র অঙ্কিত হয়েছে যুবক শিক্ষক চরিত্রের মাধ্যমে। তাছাড়াও ভয় মানুষকে ধ্বংস করে দিতে পারে, আর এটা পাঠকগণকে শিক্ষা দেয় যে, সর্ব সময়ে ভয়কে পরাজিত করার।ব্যক্তিস্বার্থকে বড় করে না দেখে অপরের জন্য চিন্তা করার ধারনাও পাঠকগণ পেয়ে থাকেন যুবক শিক্ষক চরিত্রের মাধ্যমে। সর্বোপরি সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ রচিত "চাঁদের অমাবস্যা" উপন্যাসটি ব্যতিক্রমধর্মী।
Was this review helpful to you?
or
বইটা পড়তে বেশ কয়েকদিন সময় লেগে গেলো। প্রথম দিকে কাহিনীর গতিপ্রকৃতি ঠিক বুঝে উঠতে পারছিলাম না। সব মিলিয়ে অন্যরকম একটা বই, এই ধারাকে কি বলা যায়? খুব সম্ভব নিরীক্ষাধর্মী। 'চাঁদের অমাবস্যা' উপন্যাসের মূল গল্পের আকার খুব একটা বড় নয়, কিন্তু এখানে মানসিক টানাপোড়েন, দ্বন্দ্ব, সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি ইত্যাদি বেশ কিছু ব্যাপার উঠে এসেছে। এবং সত্যি বলতে, মূল গল্পের চেয়ে সেগুলোই প্রাধান্য পেয়েছে। বাংলা উপন্যাসের ক্ষেত্রে এ ধরণের ব্যাপার খুব একটা লক্ষণীয় নয়। লেখকের কৃতিত্ব এখানেই যে, সুচারুভাবে মনস্তাত্ত্বিক কিছু ব্যাপার তুলে ধরেছেন। সেই সাথে তৎকালীন সমাজ-কাঠামো, সমাজের দৃষ্টিভঙ্গির একটা অংশও বেশ বাস্তবসম্মতভাবে রূপলাভ করেছে।
Was this review helpful to you?
or
সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ রচিত “চাঁদের অমাবস্যা” একটি মনস্তাত্ত্বিক উপন্যাস। প্রেক্ষপট বলতে উপন্যাসটি কিছুটা ধর্মীয় অনুশাসন,বিত্তবানদের আধিপত্য নিয়ে লেখা। যেখানে বিত্ত্ববানদের আধিপত্যের কাছে সত্য হার মেনে যায়। সমাজের উচ্চ সম্মানের তলায় চাপা পড়ে যায় ন্যায় বিচার। মনুষ্যত্বকে জয়ী করতে যেয়ে, ধনীদের দোষের কথা যেখানে প্রকাশ করেই বিপদে পড়ে যায় নিম্নশ্রেনীর মানুষেরা। এমনই একটা বিষয়ের চিত্র ফুটে উঠেছে চাঁদের অমাবস্যা উপন্যাসে। তাছাড়া ধার্মিক গোছের মানুষের মাঝেও যে কলুষতা লুকিয়ে থাকে সেটাও প্রকাশ পায় সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহর রচিত চাঁদের অমাবস্যা উপন্যাসটিতে। উপন্যাসে কাদের একজন দরবেশ হিসেবে পরিচিত যে সংসার থেকে পুরোটাই বিচ্ছিন্ন,তাছাড়া তার বড় ভায়েরাও অনেকটা ধার্মিক মনোভাব পোষন করেন। কিন্তু চরম নোংরা দুর্ঘটনাটা, হোক সেটা ইচ্ছা বা অনিচ্ছায়, কাদেরের দ্বারাই সম্পন্ন হয়।
Was this review helpful to you?
or
একটু সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ রচিত 'চাঁদের অমাবস্যা ' উপন্যাসটি আকারে ছোট্ট একটা উপন্যাস। এটা মূলত রূপক ও মনস্তাত্ত্বিক উপন্যাস। গ্রামের এক গরিব যুবক শিক্ষক প্রভাবশালী এক বাড়িতে আশ্রিত। সে বাড়ির বাচ্চাদের এবং মাদ্রাসায় পড়ায়। সে কোন ক্রমে আশ্রিতের ছোট ভাইয়ের এক যুবতীকে খুনের ঘটনায় জড়িয়ে যায়। উপন্যাস শুরু হয় জোসনা রাতে বর্ণনা দিয়ে। এবং পুরোটা উপন্যাস ধরে পাঠকদের এই রকম রহস্যময় ও উৎকন্ঠার মধ্যে দিয়ে নিয়ে যান লেখক। আসলে যুবকটি খুনি নাকি এর নেপথ্যে অন্য কেউ? পড়ুন চাঁদের অমাবস্যা তাহলে পেয়ে যাবেন সকল প্রশ্নের উত্তর।
Was this review helpful to you?
or
“ শীতের উজ্জ্বল জ্যোৎস্নারাত তখনো কুয়াশা নাবে নাই। বাঁশঝাড়ে তাই অন্ধকারটা তখনো জমজমাট নয়। সেখানে আলো অন্ধকারের মাঝে যুবক শিক্ষক একটি যুবতি নারীর অর্ধ উলঙ্গ মৃতদেহ দেখতে পায়। অবশ্য কথাটা বুঝতে তাঁর একটু দেরী লেগেছে, কারন তা ঝট করে বুঝা সহজ নয়। পায়ের উপর এক ঝলক চাঁদের আলো, যুবতি নারীর হাত- পা নড়ে না, চোখটা খোলা মনে হয়।বাঁশঝাড়ের সামনেই পূর্ণ জ্যোৎস্নালোকে সে তাঁকে দেখতে পায়। ধীরপদে হেঁটেই যেন সে তাঁর সামনে গিয়ে দাঁড়ালো, নিরাকার বর্ণহীণ মানুষ। হয়তো তাঁর দিকে কয়েক মুহূর্ত সে তাকিয়ে ছিলও। তারপর সে দৌড়তে শুরু করলো”! মানুষ মৃত্যুকে ভয় পায়, কথাটি মিথ্যা নয় কিছুতেই। তারপরও বাঁচবার আকুলতা বুকে নিয়ে আর অমরতা লাভের ওষুধের দোকান খুঁজতে খুঁজতে সাড়ে তিন হাত নিরাপদ ও আপন প্লটের দিকে আমাদের নিবিড় নিশ্চিত অভিযাত্রা। মানুষের বাঁচবার এই অশেষ আকুলতার কারণেই গোরস্থানের সামনের ফ্ল্যাটের চেয়ে লেকের পাশের ফ্ল্যাটটির দাম দাঁড়ায় অনেকটা বেশী। সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ্র “চাঁদের অমাবস্যা” বইটি তে প্রকৃতি, রাত,চাদ,অন্ধকার, আলো, কুয়াশা, নদী, বাঁশির শব্দ, বাতাসের আওয়াজ, ব্যাক্তির সংশয়, সারল্য, আত্মনিমগ্নতা- এই সব বিষয় ও অনুভব সারিবদ্ধভাবে হাজির হয়েছে পাঠকের সামনে। সর্বোপরি বলা যায়, ঔপন্যাসিক সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ্ তাঁর চাঁদের অমাবস্যা উপন্যাসে আমাদের আমাদের চির পরিচিত সমাজকে আরেফ আলী মাস্টারের মনোজাগতিক বিশ্লেষণের মাধ্যমে আমাদের সামনে তুলে ধরেছেন। এতে সমাজের ইতির দিকটা যেমন উঠে এসেছে তেমনি ভাবে নেতির দিকটাও প্রাধান্য পেয়েছে। ফলে আমরা এমন একটা ঘুণে ধরা সমাজব্যবস্থাকে প্রত্যক্ষ করি যা ঔপন্যাসিকের সমকালীন সমাজমনস্কতার পরিচয় বহন করে।
Was this review helpful to you?
or
বইটি প্রথমে শুরু হবে একদম নাটকীয় ভাবে, একটু থ্রিলার ধাঁচের এই বইটি। তবে বইটি পড়লে লেখকের কল্পনা শক্তি যে কতটা প্রখর তা বুঝতে পারবেন। আমার ভালো লেগেছে।
Was this review helpful to you?
or
চাঁদের অমাবশ্যা’উপন্যাসের ‘যুবক শিক্ষক’একটি অপরাধ চাক্ষুষ করাবার পর থেকে যেতে থাকে এক সীমাহীন ভাবনাপুঞ্জির ভেতর দিয়ে। এই ভাবনার নির্মাতা যে সমাজ তা তাকে প্রতিনিয়ত বলে পলায়নের কথা। বাঁশঝাড়ে মৃতদেহ এবং তার পরপর কাদেরকে দেখার পরই সে তার মনের ভেতরে নিশ্চিত জেনে যায় যে কাদেরই এই হত্যার সংঘঠক। কিন্তু বড়বাড়ির আশ্রিত যুবক শিক্ষকের মনে কাদের সমন্ধে রয়েছে এক অবিশ্বাস মিশ্রিত শ্রদ্ধার ভাব। অবিশ্বাসটি হচ্ছে কাদের সমন্ধে দরবেশ বিষয়ক প্রচারণার বিপরীতে। আর শ্রদ্ধা রয়েছে দাদাসাহেব যে কিনা বড়বাড়ির মূল কর্তা এবং যুবক শিক্ষকের অন্ন সংস্থানের যোগানদাতা, কাদেরের প্রতি তার অপত্য স্নেহ ও শ্রদ্ধার ভাবের কারণে। কাদের যে দরবেশ এই বিষয়টি মূলত দাদাসাহেবের প্রচার। তিনি তাঁর বংশের গৌরব অক্ষুণ্ন রাখতে নিপুন কৌশলে ব্যবহার করেন ধর্মকে। এই ব্যবহার, কোন এক ভিন দেশে কে ইসলাম প্রচার করছে সেই আনন্দে গ্রামের দরিদ্রদের একবেলা খাওয়ানো থেকে শুরু করে কাদেরের দরবেশি বিষয়ক প্রচারণা পর্যন্ত বিস্তৃত। বিত্তের পতনের কারণে প্রতিপত্তি যেন কমে না যায় তা নিশ্চিত করবার জন্য দাদাসাহেব বংশের গায়ে ধর্মের একটি বাড়তি আলোয়ান সেঁটে দিতে চান। দাদাসাহেবের পড়তি অবস্থা কিন্তু প্রাক্তন জৌলুস ও বংশগৌরবের পুনরুদ্ধারও করতে চান ধর্মের জায়গা থেকেই। ‘মুসলমানদের শানশওকাত আজ নাই, কিন্তু তাই তাদের অন্তস্থিত মূল্য কী কিছু কমেছে? অবশ্য এ যুক্তি তাঁরই।’ আরেকটি উদ্ধৃতি দেয়া যেতে পারে, “আমিই তাকে শিখিয়েছি। আমার হাতেই সব শিখেছে, তোমাদের কাদের দাদা, অবশ্য দরবেশকে কে কী শেখাতে পারে?” অর্থাৎ কাদেরের দরবেশি নিতান্তই দাদাসাহেবের সৃষ্টি।
Was this review helpful to you?
or
#রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগিতা বইয়ের নামঃ চাঁদের অমাবস্যা লেখকঃ সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ ধরণঃ চিরায়ত উপন্যাস প্রকাশনীঃ মাটিগন্ধা মূল্যঃ ১২০ টাকা . শীতের একটি জোছনা রাতে ভয়ংকর এক ঘটনার মধ্য দিয়ে শুরু হয় #চাঁদের_অমাবস্যা বইটির কাহিনী। একটি যুবতী নারীর অর্ধ-উলঙ্গ মৃতদেহ! হ্যাঁ, বিভৎস এই দৃশ্যটি ধরা পড়ে আরেফ আলীর চোখে! তারপর..... দৌঁড়াতে থাকে আরেফ আলী.... সে জানেনা, কে বা কারা করেছে এই নির্মম কাজটি। এই যুবতীর ধর্ষক আর হত্যাকারী কে আরেফ আলীর মত যুবক শিক্ষক তা জেনেও যেন জানেনা! কিন্তু এই এক বিভৎস দৃশ্য নিজ চোখে দেখার পর থেকেই আরেফ আলীর জীবন হঠাৎ করেই বদলে যায়...... . বড়বাড়ির লজিং মাস্টার আরেফ আলী। দু'বছর আগে শিক্ষক হয়ে দাদাসাহেবদের গ্রামে আসে সে। আশ্রয় পায় বড়বাড়িতে , বিনিময়ে এ বাড়ির ছেলে-মেয়েদের দুইবেলা পড়ায় সে। দাদাসাহেব বেশ পছন্দ করেন আরেফ আলীকে। দাদাসাহেব। বড়বাড়ির প্রধান মুরব্বি। সরকারি চাকরি করতেন, পাঁচ বছর আগে চাকরি থেকে অবসর নিয়ে ফিরে আসেন নিজ গ্রামে। ভীষন ধার্মিক লোক। মাজহাব-শরিয়ত এইসব ধর্মীয় ব্যাপারে খুব আগ্রহ। বাড়ির প্রত্যেক ব্যক্তিকেও দাদাসাহেবের আদেশে ধর্ম নিয়মানুযায়ী মেনে চলতে হয়। প্রতি সন্ধ্যায় দাদাসাহেব পরিবারের মানুষের সামনে ধর্মীয় কিছু ওয়াজ-নসিয়ত করেন। বাড়ির পুরুষদের সমন্বয়ে জামায়েতে নামাজ আদায় হয় বড়বাড়িতে দাদাসাহেবের হুকুমে। যাইহোক, দাদাসাহেব এক কঠিন ধার্মিক মানুষ তা সহজেই বুঝে নেয়া যায়। কাদের। কাদের হল দাদাসাহেবের ভাই। দাদাসাহেবের ধারণা, "কাদের" #দরবেশ_মানুষ! দাদাসাহেব আর কাদের দুই ভাই হলেও তাদের বয়সের ব্যবধান প্রায় ত্রিশ বছর। শৈশবে বেশ দুরন্ত ছিল কাদের। ঝড়ের মতন চলাফেরা! দুষ্টুমিতে তার জুড়ি ছিলনা.... সেই কাদের আঠারো কি উনিশ বছরে হঠাৎ করেই গেল বদলে! কারো সাথে কথা বলেনা, একা একা থাকে। খুব শান্ত হয়ে গেল.... আস্তে আস্তে দাদাসাহেব ছোট ভাইটার প্রতি অন্ধস্নেহ অনুভব করতে লাগলেন। রটে গেল.... কাদের যে সে মানুষ না! সে দরবেশ!! প্রবল আগ্রহ থাকে এই দরবেশ মানুষটাকে নিয়ে আরেফ আলীর। মনে মনে এক ধরণের ভালবাসাও অনুভব করে আরেফ আলী কাদেরকে নিয়ে! . তারপর... চলতে থাকে নিয়মিত জীবন। সমস্যা আসে, আরেফ আলীর দেখা সেই অর্ধ-উলঙ্গ যুবতীর মৃত্যু নিয়ে... আরেফ আলী কাকে এই হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত ভাবে?..... একটা সময়, আরেফ আলী নিজেকেই মনে মনে দায়ী করে বসে এই নির্মম হত্যাকান্ডের জন্য.... কেন? আরেফ কি সত্যিই কোন অংশে থাকে এই হত্যাকান্ডের?..... রহস্যের জট কি খোলে? হত্যাকারী ধরা পড়লে তার শাস্তি হবে তো........? . #পাঠ_প্রতিক্রিয়াঃ ভিন্নধর্মী #চাঁদের_অমাবস্যা বইটি সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ ফ্রান্সের আলপস পর্বত অঞ্চলে ইউরিয়াজ নামক ক্ষুদ্র একটি গ্রামে লেখেন। সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ রচিত আমার পড়া দ্বিতীয় বই এটি। আমি যাদেরই জিজ্ঞেস করছি বইটা কেমন? উত্তর ছিল- "মোটামুটি" কিন্তু আমার কাছে বইটি চমৎকার লেগেছে কারণ লেখক বইটিতে বাস্তবতা খুব চমৎকারভাবে ফুঁটিয়ে তুলেছেন! বইটতে আমার কাছে বেশী ভাল লেগেছে দাদাসাহেবদের বাড়ির পারিপার্শ্বিক দিকটা! আরেফ আলীর মতো আমিও সেই অভাগী খুন হয়ে যাওয়া যুবতীটির জন্য দারুণ কষ্ট পেয়েছি..... যাদের পড়ার আগ্রহ আছে, পড়ে নিতেই পারেন এই বাস্তবতা নির্ভর বইটি.... হ্যাপি রিডিং :)