User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
Famous.
Was this review helpful to you?
or
#সপ্তর্ষি_রকমারি_বুক_রিভিউ_প্রতিযোগ নাম : মুহাম্মদ মাহির মোসলেহ ফুয়াদ জেলা : পাবনা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান : পাবনা জেলা স্কুল ই-মেইল : [email protected] বই : রাবণের দেশে আমি এবং আমরা লেখক : হুমায়ূন আহমেদ প্রকাশনী : অন্যপ্রকাশ প্রথম প্রকাশ : একুশের বইমেলা ২০১১ পেইজ সংখ্যা : ৮০ পার্সোনাল রেটিং : ৪/৫ বইয়ের নাম দেখেই বোঝা যায় এটা একটি ভ্রমণ কাহিনি। তবে লেখক এটিকে ভ্রমণ কাহিনি বলতে নারাজ। তার মতে সে ভ্রমণ কাহিনি আসলে লিখতে পারে না। তিনি এটিকে 'ভিন দেশে আমাদের আনন্দ-বেদনার কাব্য' বলে আখ্যা দিয়েছেন। তবে এই ভিনদেশ অর্থাৎ রাবনের দেশ কোনটি? আসলে প্রাচীনে শ্রীলংকাকে রাবনের দেশ হিসেবে বলা হত। রাবণ রামপত্নী সীতাকে হরণ করে লঙ্কায় নিয়ে যায়। তারপর অনেক ঝামেলা করে লঙ্কায় অগ্নিকান্ড করে সীতাকে উদ্ধার করা হয়। হিন্দুধর্মে এমন প্রচলিত আছে। তাই শ্রীলংকাকে রাবনের দেশ বলা হত। মহান বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনির লেখক আর্থার সি ক্লার্ক নিজ দেশ ফেলে সারাজীবন শ্রীলংকায় কাটিয়েছেন। একজন লেখকের কাছে নিজ দেশের চেয়ে অন্য দেশ কেন মনে ধরল তা জানার ইচ্ছা ছিল হুমায়ূন আহমেদ স্যারের। কিন্তু আগে কখনো সুযোগ হইনি যাওয়ার। তবে এবার তাঁর স্ত্রী নিজেই সব কিছু ঠিকঠাক করে তাঁকে নিয়ে যায় শ্রীলংকায়। কিন্তু শ্রীলংকায় গিয়ে তিনি বুঝতে পারেন শ্রীলংকা আসা বেড়ানোর জন্য হলেও এর পিছনে আছে একটা বিশেষ উপলক্ষ। কি ছিল সেই বিশেষ উপলক্ষ? এই সফরটা হুমায়ূন আহমেদ স্যারের জন্য ছিল একটি স্মরণীয় সফর। কেননা তাঁর সর্বকনিষ্ঠ পুত্র নিনিতের সাথে এটাই ছিল তার প্রথম বিদেশ ভ্রমণ। তাই পুত্র নিনিত যেন এই ভ্রমণ ভুলে না যায় সেই জন্য অনেক ছবি তোলা হয় এই ভ্রমণে যার কিছু অংশ যুক্ত হয়েছে বইতে। বইয়ে ঐতিহাসিক স্থানের ছবি যেমন দেখতে পাওয়া যায়, তেমনও রয়েছে কিছু ঐতিহাসিক ঘটনার উল্লেখ। বইটিতে শ্রীলংকা সম্পর্কেও কিছু তথ্য দিয়ে দিয়েছেন লেখক। লেখকের এই সফরে সঙ্গী হয়েছিল তার বন্ধু সেহেরি এবং নাজমা ভাবী৷ নাজমা ভাবীকে নিয়ে লেখক কিছু কৌতুকও করেছে যা পাঠকদের আনন্দ দিয়েছে। ইতিহাস, ছবি, আনন্দ সব মিলিয়ে আমার কাছে এটি এক অসাধারণ বই। © Mahir Mosleh
Was this review helpful to you?
or
not extraordinary but story telling capacity of Humayun Ahmed undoubtedly unique.
Was this review helpful to you?
or
"রাবণের দেশে আমি এবং আমরা" লেখক হুমায়ূন আহমেদের শ্রীলংকা কিংবা সিংহল ভ্রমণের উপরে লিখিত। লেখকের সাথে আছেন স্ত্রী, পুত্র, বন্ধু ও বন্ধু পত্নী। লেখকের বয়ানে শ্রীলংকা ভ্রমণের টুকরো টুকরো ঘটনা তার স্বভাবসুলভ হাস্যরসাত্মক ভঙ্গিতে আমরা পাই। লেখক তথ্য উপাত্তে বইটিকে গুরু গম্ভীর করেননি। তারপরও শ্রীলংকা সম্বন্ধে অনেক অজানা তথ্য জানতে পারি। আছে সিগিরিয়া রক, বেনটোটার সমুদ্র সৈকত এবং অনুরাধাপুরের ভগ্ন প্রাসাদের বর্ণনা। মাঝে মাঝে মজার কাহিনী তো রয়েছেই। বাংলাদেশের নামি লেখক পরিচয় দেয়ার পরও হোটেলে রুম না পাওয়া, ফিনল্যান্ডের বৃদ্ধার সাথে কথোপকথন, লংকান ডিম রান্নার রেসিপি কিংবা শ্রীলংকার লোককাহিনী কোনোটাই কম উপভোগ্য নয়। ৮০ পৃষ্ঠার বইটির অন্যতম আকর্ষণ এর আলোকচিত্রসমূহ। প্রায় ৩১টি আলোকচিত্র এখানে সংযোজিত করা হয়েছে। পুরো বইটি পড়ে মন ভরে না, আরেকটু বেশি জানার আগ্রহ থেকেই যায়। হুমায়ূন ভক্তদের জন্য বইটি লেখককে আরো ভালোভাবে জানার সুযোগ করে দিবে।
Was this review helpful to you?
or
#রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগীতা। বই- রাবণের দেশে আমি এবং আমরা। লেখক- হুমায়ূন আহমেদ। ধরন- ভ্রমন কাহিনী। পৃষ্ঠা- ৮০। প্রকাশনী- কাকলী। স্বাধীনতা পরবর্তীতে বাংলা সাহিত্যের সবচেয়ে শক্তিমান সাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ। তার জীবনটাও ছিলো বড্ড বিচিত্র। নানা অভিজ্ঞতায় ভরপুর। মানুষটা ভ্রমন পাগল না হলেও তাকে অনেক দেশ ভ্রমন করতে হয়েছে। তবে শ্রীলংকা ভ্রমনের বেলায় কথাটা একটু ভিন্ন। এই অদ্ভুত দেশটায় তিনি সেচ্ছায় আগ্রহ করে গিয়েছেন। শুরুতেই বইতে বলেছেন তার অনেক দিনের শখ ছিলো শ্রীলংকা ভ্রমন। কারন বিখ্যাত সাইফাই লেখক আর্থার সি ক্লার্ক তার নিজের দেশ ফেলে শ্রীলংকায় রয়েছিলেন আজীবন। লেখক হিসেবে তার জানার ইচ্ছা ছিলো কেন আরেকজন লেখকের এমন মনে হলো। সে মনোভাব থেকেই বোধহয় তার শ্রীলংকা ভ্রমন। ভ্রমন কাহিনীও সাহিত্য জগতের একটি গুরুত্বর্পূণ বৈশিষ্ট্য। ভ্রমন কাহিনীর মাধ্যমে লেখকগণ নিজেদের সুন্দর ও অসুন্দর দুই অভিজ্ঞতাই তুলে ধরেন। পাশাপাশি সেসব অভিজ্ঞতার সাথে আসে উক্তো অঞ্চলের ইতিহাস, সংস্কৃতি, বৈচিত্রময় পরিবেশের ব্যাপারও। হুমায়ূন আহমেদও তেমনভাবে এগিয়েছেন। তার যাত্রাটাই শুরু হয় বেশ সুন্দরভাবে। যাত্রাপথে এয়ারপোর্টে এক লুঙ্গিপড়া ব্যাক্তি বেশ আগ্রহ করে তাদের ছবি তুলতে এগিয়ে আসে। হুমায়ূন আহমেদ কিছুটা বিরক্ত হন। কিন্তু তারচেয়েও বেশী বিস্মিত হন যখন জানতে পারেন মানুষটা শ্রীলংকার হাইকমিশনার। যিনি শ্রীলংকার যাত্রীদের উদ্দেশ্যে হ্যালো বলতে এসেছেন। আর সেদিন থেকেই শুরু হয়েছিলো বাংলাদেশ শ্রীলংকা প্রথম সরাসরি বিমান চলাচল। আর তারচেয়েও আরো একটি বড় ব্যাপার হচ্ছে??? না থাক, এটা বলা যাবেনা। বরং ইন্টারেষ্টিং এই ব্যাপারটি আপনাদের পড়ে জেনে নিতে হবে। শ্রীলংকা। পূর্বনাম সিংহল। দেশটি ভ্রমনার্থীদের জন্য খুব বিখ্যাত। সৌর্ন্দয্যে ভরা বালুকাময় সমুদ্র সৈকত, সুবিশাল পাহাড় ও বিখ্যাত অ্যাডামস পিক এই দেশটিকে বিখ্যাত করে তুলেছে। হুমায়ূন আহমেদের এবারের ভ্রমন কাহিনীটি ছিলো ভিন্ন। তার আগের দুটি ভ্রমন কাহিনীতে তার সঙ্গীনি ছিলো একজন। এবারে শেষদিকে হয়ে যায় আরেকজন। ব্যাপারটা বোধহয় তাকে কিছুটা উদাস করে তুলেছিলো। যাইহোক, একজন লেখকের জন্য ভ্রমনটা বেশ গুরুত্বপূর্ণ। কারন ভ্রমনের মাধ্যমেই তার মাথায় অনেক গল্পের প্লট যোগাড় হয়। হুমায়ূন আহমেদেরও হয়েছে। আর সেটাই হচ্ছে এই অসাধারন ভ্রমন কাহিনী। চমৎকার ভাষাশৈলীর মাধ্যমে তার ভ্রমনের বর্ণনা দিয়েছেন। পাঠকের শ্রীলংকা ভ্রমনের আফসোস ঘুচে যাবে কারন এতো সুন্দর করে তিনি লিখেছেন, মনে হয় যেনো তার সাথেই শ্রীলংকা ভ্রমন করা হচ্ছে। সাথে সেখানে তোলা বেশকিছু ছবিও দেওয়া হয়েছে। আশা করি পাঠকদের খুব ভালো লাগবে পড়তে। রেটিং- ৫.০০/৫.০০
Was this review helpful to you?
or
In humorous travelogue of its own kind Huamyun Ahmed unveils the face of the beautiful Singhalese land Srilanka . Although the book is very small - I believe one can read it in a hour or two - yet the book has been able to capture some snippets of the rich Buddhist culture of Srilnaka .
Was this review helpful to you?
or
ভভ্রমণ করতে কে না ভালবেসে ? ভভ্রমণের কথা উঠলেই নাওয়া খাওয়া বন্ধ হয়ে যায়। নির্দিষ্ট দিন যেন আসতেই চায়না। আর যদি আমরা জানতে পারি যেখানে ভ্রমণে যাব তার সম্পর্কে মজার মজার সব তথ্য তাহলে তো আর কথাই নেই। হ্যাঁ পাঠক এই বইটি পড়লে আমরা জানতে পারবো শ্রীলংকার মজার মজারসব জায়গার মজার মজার সব জিনিস। তাহলে আসুন ঘরেবসেই পড়েনেই সেইসব মজার কাহীনি ..... রাজা চায় সবাই রাজার কথা শুনুক তাকে ভয় করুক কিন্তু রাজার সে ইচ্ছা মনে হয় পূরনীয় নয় কারন রাজার যে বুদ্ধিমান পন্ডিত আছে সবাই তার কথা শোনে আর সমীহ করে। তাই রাজা ঠিক করলেন পন্ডিত কে যে করেই হোক জব্দ করতে হবে। জব্দ করার মানসে পন্ডিত কে হুকুম দেয়া হল রাজ্যের সবচেয়ে ভালো ঘোড়াটাকে কথা বলা শেখাতে হবে। পন্ডিত পড়লেন ভারি বিপদে। আর যাইহোক কোন ঘোড়াকে তো আর কথা বলা শেখানো যাবে না। কিন্তু রাজার হুকুম ঘোড়াকে কথা বলা শেখাতেই হবে নইলে পন্ডিতের গর্দান যাবে। পন্ডিত কে এই পরিস্থিতি থেকে উদ্ধার করলো তার মেয়ে। এমন এক বুদ্ধি বের করলো যে.... আর বলবোনা, যদি ইচ্ছা হয় নিজেই পড়ে দেখতে পারেন। তবে যে ঘটনা উল্লেখ করলাম সেটা হুমায়ূন আহমেদের নিজের লেখা না। এই বইটি হুমায়ূন আহমদ এবং তার পরিবারের শ্রীলংকা ভ্রমনের কাহীনি নিয়ে রচিত। শ্রীলঙ্কার কোথায় কোথায় ঘুরেছেন এবং কোন কোন নিদর্শন শ্রীলঙ্কার শ্রেষ্ঠ সেটা বর্ননা করা আছে। সাথে এটাও উল্লেখ আছে ক্রিকেট খেলতে যাওয়া বাংলাদেশ এবং ভারতের হোটেলের মধ্যে মারামারি করার কথা। আরো হাস্যকর কিছু বিষয় উল্লেখ আছে যেগুলো বেশ মজার। সেই সংগে আমরা যদি কেউ শ্রীলংকা যাই তাহলে এই বইটি আমাদের জন্য সহায়ক হিসাবে কাজ করবে। শুধু হুমায়ূন আহমদ নয় তার সংগে যাওয়া নাজমা ভাবি এবং তার স্বামীর কিছু মজার কীর্তি কলাপ আছে।
Was this review helpful to you?
or
’রাবণের দেশে আমি এবং আমরা’ বইটি লেখক হুমায়ুন আহমেদের শ্রীলংকা ভ্রমণের কাহিনী। এই ভ্রমণটা লেখকের জন্য খুব সারপ্রাইজিং ছিলো। লেখক পত্নী শাওন হুমায়ূন আহমেদকে না জানিয়েই শ্রীলঙ্কা ভ্রমণের সব ব্যবস্থা করে রেখেছিলেন । ভ্রমণে লেখকের সাথে ছিলেন তাঁর বন্ধু সেহেরী এবং বন্ধু পত্নী নাজমা।যাত্রার শুরুতেই খুবই মজার একটা ঘটনা ঘটলো। সিল্কের ঝলমলে লুঙ্গি পরা এক লোক লেখক ও অন্যদের সাথে ছবি তুলতে চাইলেন---”আমি যথেষ্টই বিরক্ত হয়ে ভদ্রলোকের দিকে তাকালাম। তখন একজন বললেন, উনি বাংলাদেশে শ্রীলংকার হাইকমিশনার। যারা শ্রীলংকায় যাচ্ছেন তাদের ‘হ্যালো’ বলতে এসেছেন। আমার বিস্ময়ের সীমা রইল না। এক জীবনে নানান দেশে গিয়েছি। কোনো দেশের হাইকমিশনার বা এ্যামবাসেডারই এয়ারপোর্টে ‘হ্যালো’ বলতে আসেননি। ঘটনাটা কী? সেহেরী বললো, বাংলাদেশ-শ্রীলংকা সরাসরি বিমান চলাচল আজই প্রথম শুরু তো, এই কারণেই হাইকমিশনার এসেছেন।” এভাবে পুরো বইয়ে লেখক তাঁর নিজের পরিবারের এবং বন্ধু সেহেরী আর তাঁর স্ত্রীর সাথে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন রকম মজার মজার ঘটনা বর্ণনা করেছেন।হুমায়ুন আহমেদের বন্ধু সেহেরীর স্ত্রী নাজমার শ্রীলঙ্কা গিয়ে ব্যাগ হারানোর ঘটনা লেখক যেভাবে তুলে ধরেছেন তা অত্যন্ত মজাদার। আবার লেখক তাঁর দুই শিশুপুত্র নিষাদ আর নিনিতকে নিয়ে ঘুরে বেড়াতে গিয়ে কী রকম বিড়ম্বনার শিকার হয়েছেন সে সবেরও সুন্দর বর্ণনা পাওয়া যাবে এই বইয়ে। আর এই বইয়ের সবচেয়ে অসাধারণ দিক হল, শ্রীলঙ্কায় ভ্রমণের সময় তোলা ছবিগুলো। প্রায় প্রতি পৃষ্ঠাতেই ঝলমলে ছবিগুলো বইটি নিয়ে পাঠকের উৎসাহ আরও দ্বিগুণ বাড়িয়ে তুলবে।
Was this review helpful to you?
or
ভ্রমণকাহিনী পড়ার ব্যাপারে যাদের এলার্জি আছে, সেই এলার্জি দূরীকরণে এলাট্রল ওষুধের মত কাজ করবে 'রাবণের দেশে আমি এবং আমরা'। যারা হুমায়ুন আহমেদের গদ্যের সাথে পরিচিত নন তারা প্রশ্ন করতে পারেন, কেন এই বইতে কি ভ্রমণকাহিনীর আদলে জোক বা সেজাতীয় কিছু লেখা হয়েছে যে তা ভাল লাগবে? না, সেরকম কিছু হয়নি। অনেকে আবার ভ্রমণকাহিনী এ কারণে পছন্দ করেন না যে তারা নিজের থেকে যেটুক ভ্রমণ করতে পারেন, তাতেই সন্তুষ্ট থাকেন। অন্যের ভ্রমণের অভিজ্ঞতা ধার করতে তাদের ইগো হার্ট হয়। কিন্তু এই বইটা পড়তে গিয়ে উপর্যুক্ত দুই শ্রেণির পাঠকেরই ভুল ভাঙবে। সাধারণত বাংলা ভাষায় যেসব ভ্রমণকাহিনী লেখা হয় তা আর শেষ অব্দি নিছক ভ্রমণকাহিনী থাকে না। হয়ে ওঠে ট্যুরিস্ট গাইড। অনুবাদের ক্ষেত্রে যেমন আক্ষরিকতা অনেকের মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ায়, তেমনই ভ্রমণকাহিনীতে 'এর পরে ঐ দেখলাম, ওইটার পরে ওইটা দেখা গেল' টাইপের একঘেয়ে বর্ণনা প্রায় সবাইকে বোর করে। কিন্তু এই বইটি তা করবে না। কারণ, স্যারের সাবলীল লেখনি। যা দেখেছেন শুধু তারই বর্ণনা তিনি করেন নাই বরং ব্যক্তিগত অনুভূতিগুলোকেও নিঃসংকোচে পাঠকদের সাথে শেয়ার করেছেন। শ্রীলংকা যাওয়ার উদ্দেশ্যে ঢাকার বিমান বন্দর থেকে শুরু হওয়া যাত্রার থেকে শ্রীলংকার নানা উল্লেখযোগ্য স্থানে ঘোরার স্মৃতি, সবই অকপটে তুলে ধরেছেন লেখক। যা দেখেছেন তার থেকে দেখার পরে যা ভেবেছেন সেটাকেই বেশি প্রাধান্য দিয়েছেন। তাই এই ভ্রমণকাহিনী তথাকথিত ভ্রমণকাহিনীর ছকে আবদ্ধ থাকেনি। বিদেশ ফেরত আত্মীয়রা যেমন রসিয়ে রসিয়ে ভ্রমণের গল্প করেন, ঠিক সেই ফ্লেভারটাই পাওয়া যাবে 'রাবণের দেশে আমি এবং আমরা'। ভ্রমণকাহিনীতেই ঐতিহাসিক স্থানের কথা থাকলে সেই স্থানের ইতিহাসটাকে স্বল্প পরিসরে হলেও তুলে ধরা বাধ্যতামূলক। স্যারও সেটা ঠিকমতই করেছেন। এই ইতিহাস বর্ণনায় তিনি কোন অভিনবত্বের আশ্রয় নেন নাই, তবে তার নিজস্ব গদ্যলেখন পদ্ধতিতে যেভাবে ইতিহাসকে ফুটিয়ে তুলেছেন, তা আর নিরস কোন ব্যাপার থাকেনি। ইতিহাসও প্রাণবন্ত ও উপভোগের বিষয় হয়ে উঠেছে। এই বইয়ের আরেকটি বিশেষত্ব, নাজমা ভাবি নামের এক বাস্তব চরিত্রের বর্ণনা শুরু থেকে শেষ অব্দি অত্যন্ত আন্তরিকতার সাথে দিয়ে গেছেন লেখক যা পড়ে পাঠকের ভাল লাগতে বাধ্য। এছাড়া ভ্রমণকাহিনী পড়তে গিয়ে পাঠকের যে মৌলিক সমস্যায় পড়তে হয় তা হল লেখা যতই ভাল হোক, বইয়ে যে স্থানগুলোর কথা আছে সে সম্পর্কে পূর্বোক্ত ধারণা না থাকলে স্রেফ বই পড়ে কল্পনাশক্তির মাধ্যমে সেসবের চিত্র উপলব্ধি করা অসম্ভব। তাই পাঠকদের সুবিধার্থে এই বইতে অসংখ্য ছবি জুড়ে দেয়া হয়েছে যাতে পাঠককে একটিবারের জন্যেও এধরণের সমস্যায় পড়তে না হয়। সবমিলিয়ে বলতে গেলে, 'রাবণের দেশে আমি এবং আমরা' খুবই কৌতূহলোদ্দীপক ও গতিময় একটি ভ্রমণকাহিনী যা পড়ার পর রাবণের দেশ শ্রীলংকা সম্পর্কে অনায়াসে অনেক জ্ঞান ও ধারণা লাভ করা সম্ভব হবে।
Was this review helpful to you?
or
‘রাবণের দেশে আমি ও আমরা’ বইটি হুমায়ূন আহমেদের শ্রীলঙ্কা ভ্রমণের কাহিনী। এখানে হুমায়ূন আহমেদ তাঁর সহজাত সাবলীল ভাষায় ভ্রমণের সময় ঘটে যাওয়া বিভিন্ন ঘটনা তুলে ধরেছেন। শ্রীলঙ্কা ভ্রমণের ব্যাপারে আসলে লেখক আগে থেকে কিছু জানতেন না। লেখক পত্নী শাওন হুমায়ূন আহমেদকে না জানিয়েই শ্রীলঙ্কা ভ্রমণের সব ব্যবস্থা করে রেখেছিলেন তাঁকে সারপ্রাইজ দেয়ার জন্যে। এই ভ্রমণে লেখকের সাথে ছিলেন তাঁর বন্ধু সেহেরী এবং বন্ধু পত্নী নাজমা। পুরো বইয়ে লেখক তাঁর নিজের পরিবারের এবং বন্ধু সেহেরী আর তাঁর স্ত্রীর সাথে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন রকম মজার মজার ঘটনা বর্ণনা করেছেন। হুমায়ূন আহমেদের ভ্রমণ কাহিনী লেখার ভঙ্গি পুরোপুরি স্বতন্ত্র। আমি আজ পর্যন্ত যত জন লেখকের লেখা ভ্রমণ কাহিনী পড়েছি তাদের বেশিরভাগই অতিরিক্ত পরিমাণে তথ্য দিয়ে লেখাকে বিরক্তিকর বানিয়ে ফেলেন। হুমায়ূন আহমেদ এই ক্ষেত্রে উজ্জ্বল ব্যতিক্রম। তিনি কখনোই তথ্য-তত্ত্ব দিয়ে লেখাকে ভারি করে তোলেন না। বরং ভ্রমণের সময় ঘটে যাওয়া নানা মজার মজার ব্যক্তিগত ঘটনা দিয়ে লেখাটাকে আরও অনেক বেশি আকর্ষণীয় করেন। ‘রাবণের দেশে আমি ও আমরা’ বইয়েও তাই হয়েছে। এখানে লেখক তাঁর বন্ধুর স্ত্রী নাজমার শ্রীলঙ্কা গিয়ে ব্যাগ হারানোর ঘটনা যেভাবে তুলে ধরেছেন তা পড়ে যে কোন পাঠকই আনন্দ পাবেন। আবার লেখক তাঁর দুই শিশুপুত্র নিষাদ আর নিনিতকে নিয়ে ঘুরে বেড়াতে গিয়ে কী রকম বিড়ম্বনার শিকার হয়েছেন সে সবেরও সুন্দর বর্ণনা পাওয়া যাবে এই বইয়ে। আর এই বইয়ের সবচেয়ে অসাধারণ দিক হল, শ্রীলঙ্কায় ভ্রমণের সময় তোলা আলোকচিত্রগুলো। প্রায় প্রতি পৃষ্ঠাতেই ঝলমলে আলোকচিত্রগুলো সংযোজিত হয়েছে যা বইটিকে আরও উপভোগ্য করে তুলেছে। সবশেষে বলা যায়, ‘রাবণের দেশে আমি ও আমরা’ বইটি হাতে নিয়ে যে কোন পাঠকই হুমায়ূন আহমেদের শক্তিশালী লেখনীর সাহায্যে ঘরে বসেই শ্রীলঙ্কা থেকে ঘুরে আসতে পারেন।