User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
১. কুহক: হুমায়ূন আহমেদ ০১/০৮/২০২১ অতিপ্রাকৃত একটি উপন্যাস। নিশানাথ নামের এক বৃদ্ধ গৃহশিক্ষক এক্সরে রশ্মির প্রভাবে অদ্ভুত এক ক্ষমতা অর্জন করে বসেন। তিনি ঢুকে যেতে পারেন অন্যের মাথায়। কে কী ভাবছে- সব বলে দিতে পারেন। শুধু তাই নয়, তিনি মানুষের মগজকে মেরামত করে খারাপ মানুষকে ভালো মানুষ করে তুলতেও পারেন। এটা অদ্ভুত একটা উপন্যাস। ২. আজ দুপুরে তোমার নিমন্ত্রণ- হুমায়ুন আহমেদ 'পঙ্গু হামিদ' গল্পে দেখা যায়, একজন রাজাকার, যে কিনা কাঁঠালগাছ থেকে পড়ে গিয়ে কোমড় ভেঙেছে, মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে সে হয়ে গেল মুক্তিযোদ্ধা হামিদ। রাজাকারে নাম লিখিয়ে যে ৭১ সালে মানুষ হত্যা করেছে- সে পাচ্ছে সরকারি ভাতা। 'কাকারু' গল্পটা একটু অন্যরকম। আশরাফুদ্দিন মেয়ের জন্মদিনের উপহার হিসেবে একটি কাক কিনে এনেছেন। কাকটি একদিন কথা বলে উঠল। অফিসের টাকা আত্মসাতের অভিযোগে আশরাফুদ্দিনের চাকরি যায় যায় অবস্থা। কাক উপায় বাতলে দিল। নিশ্চিত বিপর্যয় থেকে রক্ষা পেলেন আশরাফুদ্দিন। 'ফোরটি নাইন' গল্পে আসাদুজ্জামান নামের এক ব্যাক্তির শরীরের উচ্চতা ছোট হতে শুরু করে। ডাক্তারকে ঘটনা বুঝিয়ে বললেন। কিন্তু ডাক্তার ব্যাপারটা বিশ্বাস করলেন না। তাকে একজন মানসিক ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে বললেন। 'সগিরণ বুয়া' গল্পটা কষ্টের। মাসিক পনের শ টাকা বেতনে সগিরণ একটা বাসায় কাজ পায়। কাজটা হলো টুলটুল নামের এক বাচ্চাকে দেখাশোনা করা। টুলটুলকে সগিরণ খুব ভালোবাসে। এক সময় তার মেয়ে সালমার ছায়া খুঁজে পায় টুলটুলের মাঝে। যাকে তের বছর আগে অর্থাভাবে পড়ে এক হাজার টাকায় বিক্রি করে দিয়েছিল। 'নয়া রিক্সা' গল্পটা দারিদ্র্যক্লিষ্ট এক রিক্সাচালক ও তার স্ত্রীর। শ্যুটিংয়ের সময় তাদের দুধের শিশু জাহেদ-এর মৃত্যু এবং সেই মৃত্যুর ক্ষতিপূরণের টাকায় কেনা রিক্সাই গল্পের 'নয়া' রিক্সা। 'আজ দুপুরে তোমার নিমন্ত্রণ' গল্পটি ভালোবাসার। মীরা ও এক টিউশন মাস্টার শওকতের। একদিন মীরা শওকতকে তাদের বাসায় নিমন্ত্রণ করে বসে। মীরার মা খুব রাগারাগি করেন। বলেন, মীরার বাবা নাকি শওকতকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দেবেন। মীরা সমস্যায় পড়ে। কাঁদতে থাকে। তবে শেষটা খুব আনন্দের ছিল। 'আনোভা' গল্পটি একটা রহস্য গল্প। এই গল্পের প্রেক্ষাপট আমেরিকায়। ভয়াবহ ব্লিজার্ডের সময় এক মহিলা তার মেয়েকে নিয়ে গাড়িতে উঠেন। কিন্তু এক সময় ড্রাইভার দেখেন মেয়ে আছে কিন্তু গাড়িতে মা নেই।
Was this review helpful to you?
or
রকমারি_রিভিউ_প্রতিযোগ_আগস্ট_২০১৯ বইয়ের নাম: আজ দুপুরে তোমার নিমন্ত্রণ; লেখক: হুমায়ুন আহমেদ; প্রকাশক: অন্যপ্রকাশ; ধরন: সমকালীন গল্প প্রথমে নাম দেখে ভেবেছিলাম হবে হয়তো কোনো রোমান্টিক উপন্যাস। কিন্তু পরে দেখলাম ১৩ টা গল্প নিয়ে এই বই। ★মিস মানোয়ারা শারমিনের রোজ বিকেলেই গা ম্যাজম্যাজ করে। সে তার স্বামী ইমনকে এই ব্যাপারে বলেছে। শারমিনের মেজো খালা রুবির কথা মতন শারমিন সব করে। এক কথায় রুবি খালা যা করে,শারমিনও তাই করতে চায়। রুবি খালা প্রতি সপ্তাহে ম্যাসাজ নেন।মিস মনোয়ারা নামের এক মহিলা বাসায় এসে ম্যাসাজ দিয়ে যান। শারমিনও মিস মনোয়ারাকে দিয়েই এই কাজ করাতে চায়। এর কদিন পরই মিস মনোয়ারাকে নিয়ে সংবাদ পত্রে নিউজ আসে। অবশেষে কী হয়? কী রহস্য লুকোনো থাকে মিস মনোয়ারার মধ্যে? ★কাকারু আশরাফুদ্দিন তার মেয়ে সুমির জন্মদিনে কাক উপহার দেবে। সে কাটাবনে পাখির দোকানে কাক কিনতে গিয়েছে।কিন্তু কোনো পাখির দোকানেই কাক বিক্রি করেনা।তাহলে আশরাফুদ্দিন কি মেয়ের ইচ্ছা পুরণ করতে পেরেছিলেন শেষপর্যন্ত? ★পঙ্গু হামিদ পঙ্গু হামিদের বয়স ষাটের কাছাকাছি। সে হাটতে চলতে পারেনা,হুইল চেয়ার নিয়ে ঘোরাফেরা করে। অনেকেই জানে মুক্তিযুদ্ধের সময় যুদ্ধে সে পা হারিয়েছে। কিন্তু এটাই কি আসল সত্য? ★ফোর্টি নাইন যে কোনো জীবই বয়স বাড়ার সাথে সাথে বড় হয়।কিন্তু আসাদুজ্জামান চৌধুরী দিন দিন ছোট হচ্ছেন।তিনি এসেছেন অর্থপেডিক সার্জন মাসুম রহমানের কাছে। এ কেমন রোগ? কী কারণই বা থাকতে পারে এর পেছনে? ★সগিরন বুয়া সগিরন তিন নম্বর রোডের একটা ফ্ল্যাটে কাজ পেয়েছে। বাচ্চা রাখার কাজ। সগিরন বুয়া বাচ্চাটাকে খুব আদর করে,তার স্বামীর কাছে খুব গল্প করে বাচ্চাটার বিষয়ে। সাধারণ এই গল্পেই আছে অসাধারণ এক রহস্য। ★নয়া রিকশা জাহেদা তার ছেলের নাম রেখেছে জাহেদুর রহমান।ছেলের বাবা কুদ্দুস ভাড়ায় রিকশা চালায়। তার খুব ইচ্ছা নিজের একটা রিকশার।পাশের বাড়ির রিকশাওয়ালা ছুলেমানের ছেলে জিপিএ ফাইভ পেয়েছে বলে ছুলেমানকে নতুন রিকশা দিয়েছে পত্রিকাওয়ালারা। জাহেদুরও পেরেছিলো তার বাবাকে নতুন রিকশার মালিক বানাতে।তবে জিপিএ ফাইভ না পেয়েই।কীভাবে পেরেছিলো সে? ★আজ দুপুরে তোমার নিমন্ত্রণ মাসের প্রথম শুক্রবার আফতাব সাহেব নিজে বাজার করেন।মীরা সেদিন তার বাবার সাথে বাজারে গেল,অনেক ধরনের মাছ কিনে আনলো। মীরা আজকে শওকতকে খেতে বলেছে। এদিকে সুজিতের সাথে বিয়ের কথা চলছে মীরার। মীরার মা এই কথা শুনে বলেছে,শওকতকে না করে দিতে। দুপুরে নিমন্ত্রণ এর কী হবে তাহলে! ★আনোভা মকবুল আমেরিকায় টেক্সি চালায়। তার সাথে একবার এক অদ্ভুত ঘটনা ঘটেছিলো।একবার এক মেয়েকে নিয়ে তার মা উঠেছিলো তার টেক্সিতে কিন্তু মাঝ রাস্তায় তার মা উধাও হয়ে গিয়েছিলো।কী এক অদ্ভুতুড়ে গল্প! ★তিনি ভদ্রলোকের বয়স ষাটের কাছাকাছি। তিনি রাস্তা হারিয়ে ফেলেছেন।কিছু মনে করতে পারছেন না।পাঞ্জাবীর পকেটে হাত দিয়ে তিনি দেখলেন একটা চিরকুটে লেখা রসমালাই। তবুও তার কিছু মনে পরছে না। কী তার পরিচয়? আলাউদ্দিনের ফাঁসি নুরুল হক সাহেব ডিস্ট্রিক্ট দায়রা জজ। তার এক কলমের খোঁচাতেই হয়ে যেতে পারে কোনো আসামীর ফাঁসি।কী হবে আলাউদ্দিনের? সে কি সত্যিই নির্দোষ? ★ভালোবাসা সুইটি বিয়ের পর স্বামীর সাথে ঢাকা এসেছে। তার স্বামী সারাদিন শুয়ে বসে কাটায়। সুইটি জিজ্ঞেস করলে আবুল কাশেম শুধু বলে ব্যাবসা করে। সুইটির স্বামী খুবই খারাপ এক কাজের সাথে যুক্ত।এই কথা জানার পর সুইটির স্বামীর প্রতি তার ভালোবাসা কি থাকবে? ★টিকটিকি জহিরের স্ত্রী আত্মহত্যা করেছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে তার স্ত্রীর আত্মহত্যার বিষয়ে। তার স্ত্রী কি সত্যিই আত্মহত্যা করেছিলো? ★ভূত ইসলামুদ্দিন সুটকেসে কিছু কাপড়চোপড়, টুথপেস্ট-টুথব্রাশ আর সাবান নিয়ে তার গ্রামের বাড়ি ধুপখালির দিকে রওনা দিলেন। তবে তার গ্রামের বাড়িতে গিয়ে দেখলেন,দশ বারো বছরের একটি ছেলে তার ঘরদোর সব পরিষ্কার করে রেখেছে। তবে এই ছেলে কখনো কিছু খায়না,লেখা পড়া করেনা,আবার আগুন দেখলে ভয় পায়। পাঠ প্রতিক্রিয়া : প্রত্যেকটা গল্প কী অদ্ভুত ভাবে শেষ হয়ে গেল,তবে রয়ে গেল মুগ্ধতার রেশ। মাত্র কয়েকটা পৃষ্ঠায় কী সুন্দর করে ফুটিয়ে তুলেছেন প্রত্যেকটা গল্প। তবে 'ফোর্টি নাইন' গল্পটাতে আমি 'সায়েন্স ফিকশন গল্প সমগ্র' থেকে পড়া 'তাহারা' গল্পটার কেমন যেন মিল পেয়েছি। মনে হয় যেন একই ছাঁচে গড়া শুধু রংটা আলাদা। প্রত্যেকটা গল্পই খুব সুন্দর তবে 'নয়া রিকশা' 'পঙ্গু হামিদ' দুইটা গল্পের শেষ অসম্ভব ভালো লেগেছে আমার।
Was this review helpful to you?
or
অদ্ভূত সুন্দর। লেখক একজন যাদুকর ছিলেন।
Was this review helpful to you?
or
#রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগিতা #অক্টোবর : ২০ বই : আজ দুপুরে তোমার নিমন্ত্রণ লেখক : হুমায়ূন আহমেদ প্রকাশনী : অন্যপ্রকাশ মূল্য : ২০০ টাকা ছোট গল্পের রিভিউ দেয়া বরাবরই খুব কঠিন লাগে আমার কাছে। তবুও কয়েকটি গল্প সম্পর্কে বলার চেষ্টা করছি। প্রথমেই বলি বইটির নাম গল্পের কথা। আজ দুপুরে তোমার নিমন্ত্রণ : মীরার বাবা আফতাব সাহেব প্রতি শুক্রবার নিজে বাজার করেন। তাজা তাজা মাছ কিনে আনেন বাজার থেকে। মীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী। অর্থনীতি তে তৃতীয় বর্ষে পড়ে সে। মীরার খুব ইচ্ছে হয়, তার ভালবাসার মানুষটিকে খাওয়াবে। তাই একদুপুরে মীরা তার দরিদ্র প্রেমিককে খাবার নিমন্ত্রণ দেয়। সেদিন সে নিজে তার বাবার সাথে বাজারে গিয়ে নানা ধরনের মাছ কিনে নিয়ে আসে। সেগুলি রান্নাও হয়, কিন্তু মীরা তার বাবার ভয়ে তার প্রেমিককে বাসায় নিয়ে যেতে পারে না, কারণ তার বিয়ে ঠিক করা আছে এক ডাক্তার ছেলের সাথে। এরপর কি করবে সে? মিস মানোয়ারা : ইমন আর শারমিনের বিয়ে হয়েছে অল্প কিছুদিন। শারমিন তার জীবনে রুবি খালাকে গুরুর মত মানে। তার সব কিছুইই সে করে রুবি খালার পরামর্শে। একদিন সে জানতে পারে, রুবি খালা মিসেস মনোয়ারা নামক একজনের কাছে শরীর ম্যাসাজ করান। তারপর শারমিনও তার কাছে সাপ্তাহে একদিন করে ম্যাসাজ শুরু করে। তার প্রায় মাস খানেক পরে শারমিন একদিন জানতে পারে, মিস মানোয়ারা কোন মহিলা নন। তার নাম আবদুল মজিদ। কাকারু : আশরাফুদ্দিন তার দুই বছরের মেয়ের জন্ম দিনে একটি কাক কিনে উপহার দেন। যেদিন তিনি কাকটি কিনে আনেন সেদিন বাড়িতে কেউ ছিল না। তিনি রাতে যখন শুতে যাবেন, ঠিক সেই সময় কাকটি মানুষের গলায় কথা বলে উঠল। কাকটির সাথে অদ্ভুত আলাপচারিতা জমে উঠল। একসময় তিনি কাকটাকে তার অফিসের টাকা হারানোর কথা বললেন। কাকটা বলল টাকা নিয়েছে হেড ক্যাশিয়ার। কাকের পরামর্শে তিনি তার বসকে ফোন করে বলেন, “কা - কা - কা তুই গু খা”। কয়েকরাত তিনি একই কথা বললেন। কিন্তু কেন? এই কথা বলে কি প্রমান হবে টাকা হেড ক্যাশিয়ার চুরি করেছেন? পঙ্গু হামিদ : হামিদ মুক্তিযুদ্ধের সময় ছিল একজন রাজাকার। যুদ্ধের সময় সে অন্য এলাকাতে রাজাকার হিসেবে নাম লেখায়। কিন্তু যুদ্ধ শেষ হলে সে নিজের এলাকাতে ফিরে সবাইকে বলে মুক্তিযুদ্ধ করেছেন। সবাই তাকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে মেনে নেন। তার এক নাতনি আছে দুই বছর বয়সী, নাম সুধা। সুধা কে যত দেখে, ততই অবাক হয় হামিদ। যুদ্ধের সময় রাজাকার ক্যাম্পে বন্দি করে রাখা রাধা নামের একটি মেয়ের সাথে সুধার অনেক মিল পায় সে। রাধা হামিদের মুখে থুতু দিতো একসময় , সুধাও সেই একই ভঙ্গিতে তার মুখে থুতু দেয়। কিন্তু এ কিভাবে সম্ভব? ফোর্টি নাইন : ডা. মাসুম রহমানের কাছে আসাদুজ্জামান নামে একজন রোগী আসেন । তার বক্তব্য তিনি প্রতিনিয়ত খাটো হয়ে যাচ্ছেন। বিয়ের সময় তার হাইট ছিল ৫ ফুট ৭ ইঞ্চি, আর তার স্ত্রীর মৃত্যুর ৫ বছর পর তার উচ্চতা হয় ৪ ফুট ৯ ইঞ্চি। ডা. রোগীর কথা কিছুতেই বিশ্বাস করলেন না। কিন্তু রোগী তার পিছু ছাড়ল না। সে একসময় বিশেষ বিশেষ দিনে তাকে কার্ড পাঠাতে শুরু করলো, প্রতি মাসে চিঠি লেখা শুরু করলো। ডাক্তার সাহেব অসহ্য হয়ে উঠলেন। বছর খানেক পরে মাসুম সাহেব দেশের বাইরে চলে গিয়ে রেহাই পেলেন। কিন্তু অনেক অনেক বছর পরে হঠাত করে তিনি লক্ষ্য করলেন তার উচ্চতা কমতে শুরু করেছে। কমতে কমতে তার উচ্চতা এখন ৪ফুট ৯ইঞ্চি। আনোভা : মকবুল আমেরিকায় ট্যাক্সি চালায়। এক তুষারবৃষ্টির রাতে সে রাস্তা থেকে এক মহিলা আর তার বাচ্চা মেয়েকে গাড়িতে নেয়। কিছু দূর এসে খাবার দোকানের সামনে গাড়ি থামিয়ে সে দেখে গাড়িতে শুধু মেয়েটি বসে আছে, তার মা চলন্ত গাড়ি থেকে হাওয়ায় মিলিয়ে গেছে। মেয়েটির নাম আনোভা। মকবুল পুলিশে ফোন করে জানায় ঘটনাটি। পুলিশ মেয়েটিকে নিয়ে যায় কিন্তু তার সম্পর্কে কোনো তথ্য বের করতে পারে না। পরে মকবুল আনোভার সাথে দেখা করতে গেলে আনোভা জানায় যে তার মায়ের সাথে মকবুলের আবার দেখা হবে। সত্যিই কি হবে? ভূত : ইসলাম উদ্দিন চাকুরী থেকে অবসর নিয়েছেন। তার আর্থিক অবস্থা খুবই খারাপ। পেনশনের টাকা দিয়ে উত্তরায় একটা জমি কিনেছিলেন, সেটার দখল পাননি। ব্যবসায় করার জন্য বন্ধুর সাথে পাটনার হিসেবে ৪ লাখ টাকা খাটিয়ে ছিলেন সেটার অবস্থাও খারাপ। ফলে তিনি শহর ছেড়ে গ্রামে চলে আসেন। যখন তিনি গ্রামের পরিত্যক্ত বাড়ির সামনে এসে দাঁড়ালেন তখন সন্ধ্যে নেমেছে। তিনি প্রচণ্ড পিপাসায় কাতর, ঠিক সেই সময় তার পেছন থেকে একটি ছোট ছেলে বলে উঠলো ডাব খান। তিনি ডাব খেতে খেতে ছেলেটির সাথে আলাপ করে জানতে পারলেন ছেলেটি তার বাড়িতেই একা একা থাকে। সেই রাতে তিনি খিচুরি রাঁধলেন, কিন্তু একসময় দেখলেন ছেলেটি কোথাও নেই। আবার শোয়ার সময় দেখলেন ছেলেটি তার পাশে শুয়ে আছে, কিন্তু সকাল হতেই আবার ছেলেটি নেই । কদিনের মধ্যেই ছেলেটির সাথে তার ভীষণ ভাব হয়ে গেল, ছেলেটিকে তিনি বক্র বলে ডাকেন। এই কদিন তিনি এটাও নিশ্চিত হলেন যে বক্র আসলে মানুষ না, অন্য কিছু। তাহলে সে কে? উপরোক্ত গল্প সমূহ সহ, এই বইটি তে মোট তেরটি গল্প আছে। পাঠ প্রতিক্রিয়া : হুমায়ূন আহমেদের লেখার চমৎকারিত্ব সব স্থানে একই। তাই এই বইটিতে তার নিজস্ব ধারার স্বাদ পাবেন, এই কথা বলা যায়। গুনি মানুষদের লেখা নিয়ে আলাদা করে বলার মত কিছুই থাকে না। শুধু বলতে চাই, পড়ে ফেলুন। মুগ্ধ হবেন। আর হ্যা, আজ দুপুরে তোমার/ আপনার নিমন্ত্রণ কিন্তু। এই বইটি পড়ার নিমন্ত্রণ
Was this review helpful to you?
or
#রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগিতা ১৩ টি ছোটগল্প দিয়ে সাজানো হয়েছে ‘আজ দুপুরে তোমার নিমন্ত্রণ’ বইটি। গল্পগুলো ছোট হলেও তার মূলভাব কিন্তু ছোট না, প্রতিটি গল্পেই লেগে আছে লেখকের যত্নের ছোঁয়া। আমি ভিন্ন স্বাদের এই গল্পগুলোর মূলভাব আপনাদের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি, আশা করছি খারাপ লাগবে না । মিস মনোয়ারাঃ ব্যংকক থেকে ট্রেনিং নিয়ে আসা মহিলা মিস মনোয়ারা। সংক্ষেপে এম. এম.। তার ট্রেনিংয়ের বিষয় হল শরীর ম্যাসাজ করা। সম্ভ্রান্ত পরিবারের মহিলারা মোটা অঙ্কের টাকা খরচ করেন মিস মনোয়ারার ম্যাসাজের পেছনে। তেমনি একজন মহিলা শারমিনের মেঝখালা। মেঝখালা যেখানে এম. এম. এর ম্যাসেজ নিচ্ছেন, সেখানে তার অন্ধ ভক্ত শারমিন কিভাবে চুপচাপ বসে থাকবে!!! তাই তার বাসায়ও মিস মনোয়ারার আগমন। কিন্তু এক শুক্রবারের খবরের কাগজ শারমিনের জন্য নিয়ে এলো এক ভয়াবহ বার্তা। কাকারুঃ আশরাফুদ্দিন তার ২ বছরের মেয়ে সুমির জন্মদিনে উপহার দেয়ার জন্য একটা কাক কিনে আনলেন। তার স্ত্রী তখন সুমিকে নিয়ে তার ভাইয়ের বাসায়। রাতে ঘুমানোর সময় হঠাত কাকটি মানুষের ভাষায় কথা বলে উঠলো। কাকের পরামর্শ বদলে দিল আশরাফউদ্দিনের জীবন। পঙ্গু হামিদঃ রাজাকারের খাতায় নাম লেখানো পঙ্গু হামিদের বর্তমান পরিচয় ‘মুক্তিযোদ্ধা’। এই পরিচয়ে সে সরকার থেকে একটা হুইলচেয়ারও পেয়েছে। ষাট বছরের এই শক্ত-সামর্থ্য বৃদ্ধের অতীতের একটা অশুভ স্মৃতি আছে, যা তাকে প্রায়ই কুন্ঠিত করে ফেলে। ফোরটি নাইনঃ অরথোপেডিক সার্জন মাসুম রহমানের কাছে এল এক অদ্ভুত রোগী। তার রোগের বিবরণ শুনেই বোঝা যায় যে এই রোগীর সমস্যা হাড়ে নয়, মনে। তাই মাসুম রহমানের কাছে এই রোগীর অবহেলা ছাড়া আর কিছুই পাওয়ার ছিলনা। কিন্তু সমস্যা কি আসলেই মনে ছিল? সগিরন বুয়াঃ কর্মজীবী দম্পতির একমাত্র সন্তান টুলটুল। ১৩ মাস বয়সী টুলটুলের দেখাশোনার কাজ পায় সগিরন বুয়া, বেতন ১৫০০ টাকা। সগিরন বুয়ার সংসারে তার পঙ্গু স্বামী জয়নাল ছাড়া আর কেউ নেই। এই কাজ পাওয়ার পর থেকে জয়নাল-সগিরনের মুখে টুলটুল ছাড়া আর কোন কথাই নেই, তাদের জীবনযাত্রাই যেন পাল্টে দিয়েছে ছোট্ট এই শিশু। নয়া রিকশাঃ ঢাকা শহরের রিকশাচালক কুদ্দুসের সংসারে সৌভাগ্য নিয়ে এসেছে তার নবজাতক সন্তান জাহেদুর রহমান খান। ছেলে নিয়ে কুদ্দুস আর জাহেদার খুশির সীমা নেই। জাহেদাতো ছেলের নামও রেখেছে নিজের নামের সাথে মিলিয়ে। কুদ্দুসের ধারণা ছেলের ভাগ্যে তার নিজের রিকশাও হয়তো হবে, তখন আর রিকশা মালিককে রোজ ৫০ টাকা করে দিতে হবেনা। অবশেষে কুদ্দুসের ধারণাই সত্যি হয়, নিজের রিকশা কিনে কুদ্দুস। কিন্তু কিভাবে? আজ দুপুরে তোমার নিমন্ত্রণঃ মীরার বাসায় আজ শওকতের দাওয়াত। সেই উপলক্ষে মীরা আজ বাবার সাথে মাছবাজারে গিয়ে রাজ্যের মাছ কিনে নিয়ে এসেছে। কিন্তু বাবার ভয়ে শওকতকে দাওয়াত দিয়েও বাসায় আনতে পারেনি,ফিরিয়ে দিয়েছে বাড়ির গেইট থেকেই। আনোভাঃ ডিসেম্বরের এক তুষারঝড়ের রাতে আমেরিকার ট্যাক্সিচালক মকবুলের সাথে দেখা হয় আনোভা নামের এক ছোট্ট মেয়ের। মেয়েটির সাথে ছিল তার মা, যে রহস্যজনকভাবে গাড়ির ভেতর থেকেই হাওয়া হয়ে যায়। এই ঘটনার ১০ বছর পার হয়ে গেলেও এখনো পার হয়নি মকবুলের অপেক্ষার প্রহর। কিন্তু, কিসের অপেক্ষা??? তিনিঃ এলিফ্যান্ট রোডের সামনের একটি চশমার দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে তিনি আবিষ্কার করলেন যে তার কিছুই মনে পড়ছে না। নাম, ঠিকানা, বংশপরিচয় – কিছুই না। এই আকস্মিক স্মৃতিস্থলনের কোন কারণও তিনি খুঁজে পাচ্ছেন না। পকেটে আছে মাত্র দু’শ তেত্রিশ টাকা। এম্ন অবস্থায় কি করবেন এই প্রৌঢ়?? আলাউদ্দিনের ফাঁসিঃ ডিসট্রিক্ট দায়রা জজ নুরুল হক ও ফাঁসির আসামি আলাউদ্দিন এই গল্পের মূখ্য চরিত্র। শিশুহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত আলাউদ্দিন আসলেই দোষী কিনা সেটা নিয়ে যথেষ্ট সন্দিহান নুরুল হক সাহেব; তার হাত দিয়ে কোন নির্দোষ মানুষের শাস্তি না হয়ে যায় এই চিন্তায় রাতে ঘুম নেই তার। অবশেষে উপযুক্ত সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে রায় হয় মামলার। কিন্তু যা হল, তা কি ঠিক হল? ভালবাসাঃ সুইটির স্বামী আবুল কাশেম ঢাকায় ব্যবসা করে, সেরকমই জানতো সুইটি। কিন্তু বিয়ের পর সে যখন স্বামীর সাথে থাকতে ঢাকায় আসে তখন দেখে ঘটনা ভিন্ন। তার স্বামীর পেশাটা তার পছন্দ না হলেও কিছুদিনের মধ্যেই সেও এতে অভ্যস্ত হয়ে পড়ে; আবুল কাশেম কাজ শেষে বাড়ি ফেরার পর সুইটি আগ্রহ নিয়ে স্বামীর ব্যবসার খোঁজখবর নেয়, অনুভব করে স্বামীর প্রতি তার সীমাহীন ভালবাসা। টিকটিকিঃ জহির বসে আছে টিকটিকিতে ভর্তি গুদামঘর টাইপের ছোট্ট একটি বদ্ধ ঘরে, তার সামনে অতি ভদ্র চেহারার একজন ওসি। তিনি ক্রমাগত একই প্রশ্ন ঘুরিয়ে ফিরিয়ে বারবার উপস্থাপন করছেন জহিরের সামনে, আর প্রশ্নগুলো অবশ্যই শায়লাকে নিয়ে। শায়লা, জহিরের স্ত্রী, যে ঝগড়ার পরিণতি হিসেবে বেছে নিয়েছে আত্মহননের পথ। ভূতঃ ইসলামউদ্দিন, বয়স চৌষট্টি বছর। তিনি তার দীর্ঘ চাকরিজীবনে বেশ ভাল টাকাই উপার্জন করেছিলেন, তবে সেই টাকার প্রায় কিছুই আর অবশিষ্ট নেই। তাই উপায়ান্তর না দেখে বুড়ো বয়সে আশ্রয় নিতে হয় বাপ-দাদার ভিটেতে, যেখানে আছে শুধুমাত্র একটি জীর্ণ বসতবাড়ি। তল্পিতল্পাসহ সেখানে পৌছার পর দেখা গেল যে তার বাড়িটি একেবারে জনমানবশূন্য নয়, সেখানে বাস করছে বিচিত্র স্বভাবের এক বালক। কিন্তু আসলেই কি কেউ ছিল, নাকি এ সবই ছিল নিঃসঙ্গ ইসলামউদ্দিনের অবচেতন মনের কল্পনা? ব্যক্তিগত মতামতঃ দ্বিতীয়বারের মত পড়লাম বইটি। ভাল লেগেছে। তবে যে গল্পের নামানুসারে বইটির নাম দেয়া হয়েছে সেই গল্প অতটা ভাল লাগেনি, ভাল লাগেনি ‘টিকটিকি’ গল্পটাও। এই বইয়ে আমার প্রিয় গল্প হল ‘পঙ্গু হামিদ’, ‘নয়া রিকশা’ ও ‘আলাউদ্দিনের ফাঁসি’।
Was this review helpful to you?
or
বাংলা সাহিত্যের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র হুমায়ন আহমেদের “আজ দুপুরে তুমার নিমন্ত্রন” একটি গল্প গ্রন্থ।১৩টি গল্পের মধ্যেই হুমায়ন আহমেদ তার রচনা কৌশলী বেশ ভাল ভাবেই তুলে ধরেছেন। ১ম গল্প - মিস মনোয়ারা ইমন আর শারমিনের বিয়ে হয়েছে ১৫ মাস হয়। শারমিন সব কিছু করে তার রুবি খালার পরামর্শে। রুবি খালা মিসেস মনোয়ারার কাছে শরীর মেস্যাজ করান তাই শারমিনও মেস্যাস করাবে ঠিক করে এবং প্রতি সাপ্তাহে একদিন করে মেস্যাজ শুরু করে। এর এক মাস পরে শারমিনের হাসবেন্ড ইমন খবরের কাগজে দেখতে পায় একজন লোক মিস মনোয়ারা নাম নিয়ে মেয়ে সেজে বাড়ি বাড়ি গিয়ে মেয়েদের মেস্যাজ করায়। গ্রেফতার করার পরেও পুলিশ সেই লোককে ছেড়ে দিয়েছে, কারণ তার বিরুদ্ধে কোনো মেয়ে স্বাক্ষি দিতে রাজি হয়নি। খবরটা ইমন শারমিনকে দেখায়। সপ্তাহের সেই বিশেষ মেস্যাজের দিনটা এলে শারমিন অস্থির হয়ে উঠে, এক সময় সে মিস মনোয়ারাকে ফোন দিয়ে আসতে বলে তার শরীর মেস্যাজ করানোর জন্য। ২য়গল্প-কাকারু আশরাফুদ্দিন তার দুই বছরের মেয়ে সুমীর জন্ম দিনে ৫৭০ টাকা দিয়ে একটি কাক কিনে উপহার দেন। যেদিন তিনি কাকটি কিনে আনেন সেদিন বাড়িতে কেউ ছিল না, তিনি রাতে যখন শুতে যান তখন কাকটি মানুষের গলায় কথা বলে উঠে। আশরাফুদ্দিন একটা ইনস্যুরেন্স কোম্পানিতে এ্যাসিস্টেন্ট কেশিয়ারর চাকুরী করেন। লেজার বুকের একটা হিসাব তিনি মিলাতে পারছেন না বলে প্রতিদিনই তার বেরহতে দেড়ি হচ্ছে। তাদের সংসার সুমীর বড় মামা মুমিনের নির্দেশে চলে। কারণ তারা থাকেন মুমিন সাহেবের ফ্লাটে, বিপদে আপদে মুমিন সাহেব সাহায্য করেন। অফিস থেকে ৫,২৬,০০০/= টাকা একবার হারিয়ে ফেললেন আশরাফ সাহেব, সেই টাকা মুমিন দিয়ে দিলো। কাকটার সাথে তিনি তার টাকা হারানোর কথাটা বললেন। কাকটা বলল টাকা নিয়েছে হেড ক্যাশিয়ার। কাকের পরামর্শে তিনি তার বসকে ফোন করে বলেন “কা - কা - কা তুই গু খা”। পরদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখেন কাকটি নেই পালিয়ে গেছে। পরদিন রাতে তিনি যখন আবার শুতে গেলেন তখন কাকটি তার জানালায় এসে বসলো। আবার তার সাথে কথা বলতে শুরু করলো, কাকের চাপা চাপিতে তিনি আবার হেড ক্যাশিয়ারকে ফোন করে বললেন “কা - কা - কা তুই গু খা”। পরদিন অফিসে গেলে বড় সাহেব তাকে ডেকে পাঠান। তিনি স্বীকার করেন যে তিনি রাতে হেড ক্যাশিয়ারকে ফোন দেন, এবং তার সন্দেহ হেড ক্যাশিয়ার টাকাটা চুরি করে তাকে ফাঁসিয়েছে। নতুন করে আবার তদন্ত হয় আর তাতে প্রমাণ হয় হেড ক্যাশিয়ারই টাকা চুরি করেছে। হেড কেশিয়ারর চাকরি চলে যায়। আশরাফ সাহেব হেড ক্যাশিয়ার হিসেবে নিয়গ পান। তিনি তার নিজের ফ্লাটে উঠেন আর মুমিন সাহেবের টাকাটাও ফেরত দিয়ে দেন। কিন্তু সেই কাকটি আর ফিরে আসে না। ৩য়গল্প- পঙ্গু হামিদ হামিদ মুক্তিযোদ্ধা না হয়েও মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে পরিচিত, আসলে সে ছিল একজন রাজাকার। যুদ্ধের সময় সে অন্য এলাকাতে রাজাকার হিসেবে নাম লিখায়। কিন্তু যুদ্ধ শেষ হলে সে নিজের এলাকাতে ফিরে সবাইকে বলে মুক্তিযুদ্ধ করেছেন। যুদ্ধে সে পঙ্গু হয়নি, বরং কদিন আগে কাঁঠাল গাছ থেকে পরে সে পঙ্গু হয়েছে। তার এক নাতনি আছে দু’বছর বয়সী, নাম সুধা। যুদ্ধের সময় রাজাকার ক্যাম্পে বন্দি করে রাখা রাধা নামের একটি মেয়ের সাথে সুধার অনেক মিল। রাধা হাতিদের মুখে থুতু দিতো, সুধাও সেই একই ভঙ্গিতে তার মুখে থুতু দেয়। এই কারণে হামিদের মনে শান্তি নেই। শেষ পর্যন্ত হামিদ তার নাতনি সুধাকে কুয়ার জলে ফেলে দেয়ে। ৪র্থ গল্প - ফরটি নাইন ডা. মাসুম রহমানের কাছে ববিচিত্র একজন রোগী আসেন আসাদুজ্জামান নামে। তার বক্তব্য তিনি প্রতিনিয়ত খাটো হয়ে যাচ্ছেন। বিয়ের সময় তার হাইট ছিল ৫ফুট ৭ইঞ্চি, আর তার স্ত্রীর মৃত্যুর ৫ বছর পরে আজ তার উচ্চতা ৪ফুট ৯ইঞ্চি। ডা. রোগীর কথা কিছুই বিশ্বাস করলেন না। কিন্তু রোগী নাছরবান্দার মতো তার পিছনে লেগে রইল। বিশেষ বিশেষ দিনে তাকে কার্ড পাঠাতে শুরু করলো, প্রতি মাসে চিঠি লেখা শুরু করলো। বছর খানেক পরে মাসুম সাহেব দেশের বাইরে চলে গিয়ে রেহাই পেলেন। কিন্তু অনেক অনেক বছর পরে হঠাত করে তিনি লক্ষ্য করলেন তার উচ্চতা কমতে শুরু করেছে। কমতে কমতে তার উচ্চতা এখন ৪ফুট ৯ইঞ্চিতে এসে গেছে। ৫ম গল্প - সগিরন বুয়া সগিরন টুটুল নামের একটি বাচ্চাকে দিনের বেলা দেখাশোনা করে, তার কাজই হচ্ছে টুটুলকে দেখে রাখা। সগিরনের একটি মেয়ে ছিল, প্রচণ্ড অভাবের কারণে সেই মেয়েকে বেচে দিতে হয়ে ছিল। সেই মেয়ের সাথে মনে মনে মিল খোজে টুটুলের। ৬ষ্ঠ গল্প - নয়া রিকশা কুদ্দুস ও জাহেদার প্রথম সন্তান ছেলে হয়েছে। কুদ্দুস ভাড়ায় রিকশা চালায়। ছেলেকে নিয়ে তাদের স্বপ্নের শেষ নাই। হঠাত করেই নবজাতক বাচ্চার একটা অভিনয়ের জন্য জাহেদার কাছে তার ছেলেকে চায়। জাহেদা ছেলেকে দিতে রাজি হয়। কিন্তু শুটিং চলাকালীন হাত থেকে পরে বাচ্চাটি মারা যায়। ছবির ডাইরেক্টর সাহেব জাহেদাকে দশ হাজার টাকি দিয়ে বলেযান বাচ্চা মারা গেছে হার্ট এ্যাটাক করে। ৭ম গল্প - আজ দুপুরে তোমার নিমন্ত্রণ মীরা তার হতদরিদ্র প্রেমিককে দুপুরে খাবার নিমন্ত্রণ দেয়। সে তার বাবার সাথে গিয়ে নানা ধরনের মাছ কিনে নিয়ে আসে। সেগুলি রান্নাও হয়, কিন্তু মীরা তার বাবার ভয়ে তার প্রেমিককে বাসায় নিতে পারে না, কারণ তার বিয়ে ঠিক করা আছে এক ডাক্তার ছেলের সাথে। তাই সে তার প্রেমিক যখন তার বাড়ির কাছে আসে তখন তার হাতে ৫০০ টাকা দিয়ে বলে সামনের রেস্টুরেন্টে খেয়ে নিতে। এদিকে মীরার কান্না দেখে তার বাবা সেই ছেলেকে রেস্টুরেন্ট থেকে ডেকে বাসায় নিয়ে যায় খেতে। ৮ম গল্প - আনোভা মকবুল আমেরিকায় ট্যাক্সি চালায়। এক তুষার পাতের রাতে সে নিউইয়র্ক ফেরার সময় রাস্তা থেকে এক মহিলা আর তার বাচ্চা মেয়েকে গাড়িতে নেয়। কিছু দূর এসে খাবার দোকানের সামনে গাড়ি থামিয়ে সে দেখে গাড়িতে শুধু মেয়েটি বসে আছে, তার মা চলন্ত গাড়ি থেকে হাওয়ায় মিলিয়ে গেছে। মেয়েটির নাম আনোভা। মকবুল পুলিশে ফোন করে জানায় ঘটনাটি। পুলিশ মেয়েটিকে নিয়ে যায় কিন্তু তার সম্পর্কে কোনো তথ্য বের করতে পারে না। পরে মকবুল আনোভার সাথে দেখা করতে গেলে আনোভা জানায় যে তার মায়ের সাথে মকবুলের আবার দেখা হবে। তারপর থেকে মকবুল সেই বিশেষ রাতে সেই একই রাস্তায় ঘুরাঘুরি করে আনোভার মায়ের দেখা পাওয়ার জন্য। ৯ম গল্প - তিনি হঠাত করেই লক্ষ্য করলেন তিন এ্যালিফেন্ট রোডে দাঁড়িয়ে আছেন। তিনি কে, তার নাম কি, কোথায় থাকেন কি করেন, এখানে কেন এসেছেন কিছুই মনে করতে পারছেন না। এদিক সেদিক ঘুরে তার সারাটা দিন কেটে গেল, কিন্তু কিছুই মনে পড়লো না। দুপুরে পার্কে ঘুমিয়েছেন, ঘুম থেকে উঠে দেখেন তার পকেটে অল্প যে কটা টাকা ছিল সেটাও কেউ নিয়ে গেছে। এক সময় রাত নেমে আসে, শুরু হয় বৃষ্টি। তিনি এ্যালিফেন্ট রোডের বন্ধ দোকানের সামনে একা দাঁড়িয়ে বৃষ্টিতে ভিজতে থাকেন। ১০ম গল্প - আলাউদ্দিনের ফাঁসি জজ নুরুল হক সাহেবের সামনে কাঠ দগড়ায় দাঁড়ানো আলাউদ্দিন, তার বিরুদ্ধে অভিযোগ একটি শিশুকে অপহরণের পরে হত্যা করার। বাচ্চাটিকে অপহরণের পরে ২০লাখ টাকা মুক্তিপন চায় সে। বাচ্চাটির পরিবার ১০ লাখ টাকা দেয়ার পরে বাকি ১০ লাখ টাকা নিতে এসে পুলিশের হাতে ধরা পরে সে। এদিকে বাচ্চাটির লাশ পাওয়া যায় আশুলিয়ায় বস্তা বন্দি অবস্থায়। সেই ছবি আসে পত্রিকাতেও। পুলিশ আলাউদ্দিনের বাসা থেকে বাচ্চাটির পায়ের জুতা উদ্ধার করে আদালতে জমা দেয়। এ দিকে পত্রিকাতে বাচ্চাটির লাশের যে ছবি আসে সেখানে দেখা যায় বাচ্চাটির পায়ে জুতা আছে। জজ সাহেব বুঝতে পারেন যে কেসটি পুলিশ সাজিয়েছে আলাউদ্দিনকে ফাঁসানোর জন্য, তাই তিনি আলাউদ্দিনকে খালাস করে দেন। কদিন পরে আলাউদ্দিন জজ সাহেবের বাসায় এসে বলে যে বাচ্চাটির যে জুতা তার বাসায় পাওয়া গেছে সেই জুতা সে নিজেই বাজার থেকে কিনে এনে রেখে ছিল। বাচ্চাটিকে আসলে সেই অপহরণ করে হত্যা করেছে। ১১তম গল্প - ভালোবাসা আবুল কাশেমের সাথে বিয়ের পরে সুইটি বেশ কিছু দিন গ্রামের বাড়িতেই ছিল। তখন কাশেম সুইটির হাত খরচা হিসেবে প্রতিমাসে ৭০০ টাকা পাঠাতো। কিছু দিন পরে সুইটি যখন তার স্বামীর সংসার করতে ঢাকায় আসলো তখন দেখল সংসার বলতে তেমন কিছু নেই। কদিন পরেই জানতে পারলো তার স্বামী আসলে মলম পাটির লোক। কিন্তু তার পরেও সে তার স্বামীকে ছেড়ে যেতে পারলো না। সে তার স্বামীর প্রেমে পরে গেছে। ভালোবাসা এমনই হয়। ১২তম গল্প - টিকটিকি জহির তার স্ত্রীকে খুন করে, আর একজন পুলিশ অফিসার তাকে প্রশ্ন করে খুব সহজেই সেটা ধরে ফেলে। ১৩তম গল্প - ভূত ইসলাম উদ্দিন চাকুরী থেকে রিটায়ার্ড করার পরে চলেছেন নিজের গ্রামের বাড়িতে। তার আর্থিক অবস্থা খুবই খারাপ। পেনশনের টাকা দিয়ে উত্তরায় একটা জমি কিনেছিলেন, সেটার দখল পাননি। ব্যবসায় করার জন্য বন্ধুর সাথে পাটনার হিসেবে ৪ লাখ টাকা খাটিয়ে ছিলেন সেটাও ভরা ডুবি যায়। তিনি যখন তার গ্রামের পরিত্যক্ত ভাঙ্গা বাড়ির সামনে এসে দাঁড়ালেন তখন চারধার অন্ধকার হয়ে গেছে। তিনি প্রচণ্ড তৃষার্ত ছিলেন, ঠিক সেই সময় তার পেছন থেকে একটি ছোট ছেলে বলে উঠলো ডাব খান। তিনি ডাব খেতে খেতে ছেলেটির সাথে আলাপ করে জানতে পারলেন ছেলেটি তার বাড়িতেই একা একা থাকে। রাতে তিনি খিচুরি রাঁধলেন, কিন্তু গোছল করে এসে দেখেন ছেলেটি কোথাও নেই, আবার শোয়ার সময় দেখলেন ছেলেটি তার পাশে শুয়ে আছে, কিন্তু সকাল হতেই আবার ছেলেটি নেই হয়ে গেল। কদিনের মধ্যেই ছেলেটির সাথে তার ভীষণ ভাব হয়ে গেল, ছেলেটিকে তিনি বক্র বলে ডাকেন। এই কদিন তিনি এটাও নিশ্চিত হলেন যে বক্র আসলে মানুষ না, অন্য কিছু। বক্র মাঝে মাঝেই তার জন্য নানান জিনিস নিয়ে আসে নদীর তলা থেকে, সবই স্বর্ণের। কিন্তু তার কোনো লোভ হয় না, তিনি সব আবার আগের যায়গায় রেখে আসতে বলেন। বছর ৫ পরে তার শারীরিক অবস্থা খুবই খারাপ হয়ে পরে। সেই সময় তার ব্যবসার পাটনার তার সাথে দেখা করতে আসেন। ১০ হাজার টাকা তাকে দিতে চান কিন্তু তিনি তা নিতে রাজি হন না। রাতে বক্র আসে তার জন্য মাছ নিয়ে, সেই মাছ আগুনে পুরিয়ে লবণ মেখে তিনি খান। তিনি ছাড়া আর কেউই বক্রকে দেখতে পায় না প্রত্যেকটি গল্পেই পাঠকে বেশ মজা পাবেন।আপনাদের ভাল লাগা বাড়িয়ে দিতে পারে এই বইটি। তাই মিস না করে পড়ে ফেলুন