User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
#রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগিতা #অক্টোবর : ৬ বই : খাঁচার ভিতর অচিন পাখি লেখক : ওয়াসিকা নুযহাত প্রকাশন : বাংলা কবিতা প্রকাশন প্রকাশকাল : একুশের বইমেলা, ২০১৬ মলাট মূল্য : ২৪০ টাকা অয়ন আর আহিরের গল্প এটি। অয়ন উচ্চবিত্ত পরিবারের ছেলে। তার মাকে এককথায় শিল্পপতিই বলা যায়।বাইরে সবাই জানে, অয়নের বাবা নেই। তাই মায়ের হাতেই ব্যবসার সব দায়িত্ব। সংসারের পুরো ভার। ছেলেরা নাকি মা পাগল হয়। অথচ মায়ের সাথে অয়নের যোজন যোজন দূরত্ব। টান নেই পরিবারের প্রতিও। তাই মাঝে মাঝেই পরিবার ছেড়ে উধাও হয় সে। কিছুটা পাগলাটে, ভাবুক,পরোপকারী অয়ন।ঠিক একই ভাবে উদাসীন নিজের জীবন নিয়ে। তার মনের উপর টা শক্ত ইস্পাত, কিন্তু ভেতর টা কোমল। ভেতরে যার ভালবাসার আকুতি, টান। কিন্তু বাইরে অনুভূতিহীন, নিস্পন্দ সে। কেমন যেন মোহনীয় একটা রূপ তার, মানুষ যাকে পেতে চায় আপন করে, অথচ সে সবসময় সবার ধরা ছোঁয়ার বাইরে। আহির মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে।আটপৌরে জীবন যার। পড়াশুনো শেষ করে চাকুরীর খোঁজে সময় কাটে তার। সামনে অবশ্য বিয়ে। সেও পছন্দের মানুষটির সাথে।অনেক বছর যার সাথে পরিচয়, ভালবাসা,স্বপ্ন দেখা। এমন ভাগ্য কজনেরই বা হয়? নিত্তনৈমত্তিক ছন্দে ছন্দিত হয় তার জীবন। কিন্তু হঠাৎ করেই অয়ন- আহির, এই দুই মেরুর মানুষ দুজনের দেখা হয় একদিন। কোনদিন পরিচয় না থাকার পরও, তারা আবিষ্কার করে তাদের মধ্যে অন্যরকম এক টান । অদ্ভুত এক আপনত্ববোধে আক্রান্ত হয় তারা। তাদের মধ্যে প্রেম নেই,ভালবাসা নেই, এমন কি বন্ধুত্বও নেই। কিন্তু তবুও অজানা একটা বন্ধন,অচেনা একটা অনুভূতি তাদের আষ্টেপৃষ্ঠে ধরে। সেই অনুভূতি এক নিমেষে পাল্টে দেয় অনেক কিছু। সময়ের সাথে একই গতিতে চল তে থাকে জীবন। কিন্তু তারাই শুধু বুঝতে পারে, অতি সূক্ষভাবে ঘটে গেছে তাদের জীবনের ছন্দপতন। পাঠ প্রতিক্রিয়া : উপন্যাস টা পড়ার পর কতবার যে এর রিভিউ লিখতে বসেছি,তার ইয়াত্তা নেই।কিন্তু একবারো রিভিউ শেষ করতে পারিনি। এর প্রধান কারন উপন্যাসের মনস্তাত্ত্বিক দিক। যা নিজের মন দিয়ে উপলব্ধি করা যায়,কিন্তু প্রকাশ করা যায় না। উপন্যাসটি সাধারণ, সাদামাটা প্রাত্যাহিক জীবনের গল্প, কিন্তু কেন যেন মনে হয়,এই গল্প আমারই জীবনের। উপন্যাসের ভেতরে মনের যে আবেগ,টানাপোড়ন, তা যেন আমাদেরই অনুভূতির প্রকাশ। হয়ত জীবনে চলার পথে আমরা অনেকেই এই অনুভূতিটির মুখোমুখি হয়েছি । কেউ কেউ অলক্ষ্যে, অচৈতন্যে আমাদের মনে আসন গেড়ে বসেছে। তাদের কাছে গেলে জীবনে ক্ষানিকক্ষনের জন্য শান্তি পেয়েছি, মন খুলে নিজের সব কথা বলতে পেরেছি। কিন্তু তাকে আমাদের প্রাত্যহিক জীবনের একজন করে নিতে পারিনি, হয়ত কখনো ভাবিওনি। তাকে কাছের কেউ হিসেবে স্বীকার করে নিতেও পারিনি। তবুও তার জন্য মনের কোথাও একটা সূক্ষ চিনচিনে ব্যথা ঘাপটি মেরে রয়ে গেছে। সবচেয়ে অবাক হয়েছি উপন্যাসের শেষাংশে।প্রথম থেকে পড়তে গিয়ে উপন্যাসের শেষটা যা কল্পনা করেছি, তা তো হয়নিই,বরং যা হয়েছে তা কল্পনাতীত। এতে পড়ার সময় লেখকের উপর খানিকটা আক্ষেপ তৈরি হলেও,পরে মনে হলো এইটাই তো বাস্তবতা। শেষটার জন্য উপন্যাসটা আরো বেশি জীবন্ত মনে হয়েছে। যারা নতুন লেখকের বই পড়তে ভয় পান, এই বইটি অবশ্যয় পড়ে দেখবেন। আশা করি সময়টি বৃথা যাবে না