User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
এভাবে লেখা হয়েও গেলো আরেকটি গল্প। তিনি "নীল খাম" উপন্যাসটা লিখেছিলেন অনেক আগে। তারপর একদিন হঠাত করেই নীল খামে উপন্যাসের সেই নায়িকা ফারহানা তাঁর বাসায় উপস্থিত। তিনি ঠিক যেরকম ফারহানা নামের চরিত্র বানিয়েছিলেন, এ ফারহানা ঠিক সেটিই। ফারহানা লেখককে চেপে ধরলেন, শর্তও দিলেন। কিন্তু কিসের? তবে অবাক করার বিষয় এটা না। তাহলে অবাক করার বিষয়টি কি? আমিও ভাবলাম। অনেক কয়টাই আছে। আর ভাবলাম এই উপন্যাসটা নিয়ে রিভিও লিখবোনা। রিভিও লিখবো মঈনুল আহসাব সাবেরকে নিয়ে। তাঁকে নিয়ে এই বাংলাদেশে আরো বড় পরিসরে আলোড়ন হওয়া উচিত। এই জেনারেশন যে কয়জন আধুনিক বাংলা সাহিত্যিক পেয়েছে, নিঃসন্দেহে সাবের তার উপরের দিকের একজন। তাঁর সব উপন্যাস পড়েই দুই একদিন ঝিম মেরে বসে থাকতে হয়। পাঠককে কয়েক দিনের জন্য Numb করে দেওয়ার এই ক্ষমতাওয়ালা লেখক হওয়া সহজ কথা না।
Was this review helpful to you?
or
একজন লেখকের মনস্তত্ত্বে যেমন বাস্তব চরিত্র থাকে, তেমনি থাকে তাঁর রচিত কাল্পনিক চরিত্রগুলোও। রচিত চরিত্রগুলো কখনো বাস্তব থেকে উঠে আসে, কখনো আসে লেখকের কল্পনার জগৎ থেকে। কিন্তু উভয় চরিত্রের প্রধান উদ্দেশ্য থাকে লেখক যা বলতে চান তার বাস্তবায়ন। এভাবে চরিত্ররা লেখকের বিবেচনার পাত্র হয়ে তাঁর রচনায় বিরাজ করে। মাঝেমধ্যে লেখকের মনস্তত্ত্বে এমনভাবে কল্পনার চরিত্রগুলো ঢুকে যায় যে লেখক এই দুই জগতের মধ্যকার বিভেদাত্মক সুতোটি ধরতে পারেন না। তখন কল্পনা ও বাস্তবের চরিত্ররা চলে এসে তাঁর মনোজগতে বিবিধ ক্রিয়া করতে থাকে। তাঁর চিন্তার জগৎ ও বিবেচনাবোধকে প্রভাবিত করতে থাকে। মঈনুল আহসান সাবেরের উপন্যাস ‘এভাবে লেখা হতে পারে আরেকটি গল্প’-এ এ রকম একটি বিষয়ের অবতারণা হতে দেখি। যেখানে লেখক নিজে তো আছেনই। আরো আছেন তাঁর বাস্তব জগতের বাসিন্দা—স্ত্রী। আছে বহু বছর আগে লেখা একটি উপন্যাসের চরিত্র ফারহানা। তার প্রেমিক লোটন। আছে ফারহানার স্বামী পারভেজ। উপন্যাসে দেখা যায়, লেখক ঈদ সংখ্যার জন্য লেখালেখিতে ব্যস্ত। হাতে সময় নেই। কিন্তু কী এক অবসাদ কাজ করছে। অবসাদ কাটানোর জন্য তিনি যেতে চান বন্ধু এহসানের কাছে, সিলেটে। চা বাগানে। এর মধ্যে এক সকালে এক তরুণী এসে হাজির। তরুণী লেখকের কাছে এসে জানতে চায়, আপনি কি আমাকে চিনতে পেরেছেন? লেখক তাকে চেনেন না। তরুণী পরিচয় দেয়, প্রায় দুই যুগ আগে লেখা একটি উপন্যাসের নায়িকা সে। তার নাম ফারহানা। উপন্যাসে কাহিনীর শেষে লেখক তাকে বিদেশ পাঠিয়ে দিয়েছিলেন। সেখানে তার বিয়ে হয়েছে পারভেজ নামক এক পুরুষের সঙ্গে। সেখানে সে সংসারব্রত পালন করছে। কিন্তু লোটন নামের একটি ছেলের প্রতি রয়ে গেছে তার অগাধ টান। যাকে লেখক উপন্যাসের শেষাংশে পাঠিয়েছিলেন এক চা বাগানের ম্যানেজার করে। ফারহানা এখন এই কাহিনীর শেষাংশের পরিবর্তন চায়। চায় লেখক নতুন করে লিখুক শেষ অংশ। যেন সে ও লোটন, তার পছন্দের মানুষটি, তাদের দিনগুলো এখানেই পার করতে পারে। লেখক খুব বিস্ময়ের ভেতরে পড়ে যান। তিনি ঘোরের ভেতরে হাবুডুবু খেতে থাকেন। বাস্তব এবং বহু বছর আগে লেখা উপন্যাসের চরিত্রটির মধ্যে পড়ে তাঁর খেই হারিয়ে ফেলার উপক্রম হয়ে যায় যেন। ধীরে ধীরে বিস্ময় কাটিয়ে উঠতে থাকেন। বলেন, তা কি হয়! সিলেটে গিয়ে যথারীতি দেখা হয়ে যায় লোটনের সঙ্গে। লোটন ধীরস্থির। ফারহানার জন্য তার ভালোবাসাও প্রবল। ফারহানা বলে, লোটনের হাত ধরে বনের ভেতরে হাঁটতে তার অসামান্য লাগছিল। এই মিলনই মৌলিক। তাহলে বিরহের কষ্ট নিয়ে সে কেন পড়ে থাকবে আমেরিকায়। সুতরাং সিদ্ধান্ত হয়, লেখক উপন্যাসে রাখবেন লোটনের সঙ্গে ফারহানার দাম্পত্য যাপন। লেখক লিখবেন এ উপন্যাসের আরো একাধিক পর্ব। এ রকম কাহিনীর একটি বিস্ময়কর উপন্যাস ‘এভাবে লেখা হতে পারে আরেকটি গল্প’। যেখানে লেখক, তাঁর বাস্তব জগতের স্ত্রী, উপন্যাসের চরিত্র ফারহানা, তাঁর প্রেমিক লোটন—সবার মনস্তত্ত্বের এক অপূর্ব রসায়ন পুঞ্জীভূত হয়েছে। যা যাঁর যাঁর অবস্থান থেকে বিশ্লেষিত হয়েছে। বোধ করি উপন্যাসটি সমকালের বিবেচনায় অদ্ভুত, অন্য রকম এবং বিস্ময়কর হিসেবে উল্লিখিত এবং আলোচিত হবে।