User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
Relly excellent
Was this review helpful to you?
or
স্পয়লার এলার্ট ⚠ সাধারণত থ্রিলারে মূল খলনায়ককে আড়ালেই রাখা হয় শেষ পর্যন্ত পাঠককে ধরে রাখার লক্ষ্যে। তবে এটি ব্যতিক্রম, শুরুতেই তাকে চিনিয়ে দেবার পরেও পাঠক বিন্দুমাত্রও আগ্রহ হারাবে না। অসাধারণ একটি বই।
Was this review helpful to you?
or
এটা তো বই নয় এটা তো এক আবেগ,,,আসলেই কেউ কেউ কথা রাখে
Was this review helpful to you?
or
দেশের অস্থিতিশীল অবস্থায় মিলি নামের এক মেয়ের হত্যাকাণ্ড দিয়ে কাহিনীর সূচনা। তদন্তকারি দুই পুলিশসহ আরো কিছু মানুষের জীবনে ঘটে যায় নির্মম সব ঘটনা। অনেক তদন্তের পর আসল খুনিকে ধরার পরও তাকে আটকে রাখা যায় না স্বভাবতই। কারন এ দেশে রেপ কেসের কোন সঠিক বিচার নেই। রেহাই পেয়ে যায় খুনি। ফলে কেসের সাথে জড়িত মানুষগুলোর জীবন হয়ে ওঠে দুর্বিষহ। কেউ কেউ এ জীবন থেকে পালানোর জন্য অন্যত্র সুখ খুজে নেয়। কেউ কেউ নিজের শেষ রক্তবিন্দু পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যায়। কয়েক যুগ পরে এক লেখক মিলির এই নির্মম ঘটনাকে সবার সামনে তুলে ধরতে চায়। কিন্তু তার আগে তার জানা দরকার কাহিনীর চরিত্রদের বর্তমান পরিস্থিতি। সেটাই খুজতে গিয়ে তার সামনে আসে এমন সব সত্য যা তার গল্পের নাম 'কেউ কথা রাখেনি' থেকে 'কেউ কেউ কথা রাখে' তে পরিবর্তন করতে বাধ্য করে। বহু বছরের চাপা কৌতুহল থেকে রেহাই পেয়ে তার চোখে মুখে ভেসে ওঠে প্রশান্তির এক ছায়া। ???? #কেউ_কেউ_কথা_রাখে
Was this review helpful to you?
or
#আড্ডাখানায়_রকমারি #রিভিউ_২০২৩ বইয়ের নাম: কেউ কেউ কথা রাখে লেখক: মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন প্রকাশনী: বাতিঘর ৭১ পরবর্তী টালমাটাল সময়টায় নিজ বাসায় খুন হলো সদ্য বিবাহিত এক তরুনী। অকুতোভয় এক ইন্সপেক্টর আর তার সহযোগী মিলে সেই খুনের রহস্যের কিনারা করে ফেললেও, ব্যর্থ হলো অপরাধীকে শাস্তি প্রদান করতে৷ এ ঘটনায় বদলে গেল কেসের সাথে সম্পৃক্ত বেশকিছু জীবনের গতিপথ। দুই যুগ পর আবারও কেসটা নিয়ে লিখালিখি শুরু করলেন এক লেখক। তার ইচ্ছে যে ঘটনাটা এতোগুলো মানুষের জীবন বদলে দিয়েছে সেই দুঃখজনক ঘটনাটার ব্যাপারে সবাই জানুক। এটা টিকে থাকুক আমৃত্যু। কিন্তু বইয়ের এন্ডিং দিতে গিয়ে শেষ যে সত্যটা জানতে পারলেন লেখক, তা তাকে বাকরুদ্ধ করে দিলো। তিনি জানতে পারলেন, অনেকেই কথা না রাখলেও কেউ কেউ কথা রাখে। কাহিনী সংক্ষেপ পড়ে মনে হতে পারে বেশ একটা জমজমাট থ্রিলার বোধহয়। কিন্তু আসলে এটাকে পুরোদস্তুর থ্রিলার বলা যাবে না কোনোভাবেই। বইটা থ্রিলারের চেয়েও বেশীকিছু। এই বইটাতে এমন অনেক অনেক কিছু আছে, যেগুলো উপলব্ধি করতে পারলে বইটা আপনাকে অনেকগুলো ব্যাপারে একটা স্বচ্ছ ধারণা দিতে পারবে, আত্মোপলব্ধি করাবে অনেক ব্যাপারে। লেখক বন্দনা লেখক মোহাম্মদ নাজিন উদ্দিনকে মনে হলো যেনো নতুন করে চিনলাম। এর আগে উনার ৬টা বই পড়া হয়েছে আমার। সেগুলাতে উনার লিখনশৈলী যে ধরণের পেয়েছিলাম এটাতে সে তুলনায় একদমই ভিন্ন এক ধাঁচে লিখেছেন তিনি। এমনিতে নাজিম উদ্দিন দূর্দান্ত স্টোরিটেলার। যেকোনো প্লটের বইই উনার লিখনশৈলীর কারনে একটানা পড়ে যাওয়া যায়। তবুও এই বইটাতে যেনো উনি নিজেকেই ছাড়িয়ে গিয়েছেন সবদিক থেকে। নিজেকে ভেঙ্গেচুরে একেবারে ভিন্ন এক আঙ্গিকে উপস্থাপন করেছেন পাঠকের সামনে। ভূমিকায় নিজেই বলেছেন যে এটা উনার নীরিক্ষাধর্মী কাজ, এবং আমি বলতে বাধ্য হচ্ছি এই কাজটাই এযাবৎকালের উনার সেরা কাজ। অসম্ভব ভালো লাগার এই বইটা লেখক মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিনের বহুমুখী প্রতিভার একটা উদাহরণ। কি যে মায়া নিয়ে উনি লিখেছেন বইটা!! বইয়ের প্রতিটা শব্দে যেনো সেটা ফুঁটে উঠছিলো। গল্পের বহুমাত্রিক রূপ উপরে লেখককে নিয়ে এতো উচ্ছ্বাসিত প্রশংসার কারন এই বইটাতে লেখক শুধুই একটা খুনের গল্প বলতে চাননি। এখানে উঠে এসেছে ৭১ পরবর্তী সময়ে এই দেশের অবস্থা, তখনকার অন্যায়, অবিচার আর অরাজকতার কথা। তৎকালীন সমাজের প্রেম ভালোবাসার কথাও উঠে এসেছে। এসেছে শোকে মুহ্যমান এক স্বামীর কথা, মুক্তিযুদ্ধ থেকে বেঁচে ফেরা এক সৎ পুলিশ অফিসারের কথা, দাম্পত্য কলহের কথা। সবচেয়ে বড় কথা এখানে এসেছে মানুষগুলোর জীবনের কথা, জীবনবোধের যে রূপ লেখক এখানে দেখিয়েছেন সেটা এখন আর নেই আমাদের সমাজে। সম্ভবত জাতি হিসাবে আমাদের দিন দিন পেছনের দিকে যাওয়ার এটাও একটা কারন। পুরো গল্প জুড়ে পাঠককে অনেকগুলো উপলব্ধির মাঝে দিয়ে নিয়ে গিয়েছেন লেখক। বইয়ের গল্প এগিয়েছে দুইটা টাইমলাইনে। শুরুর দিকে টাইমলাইন অদল বদল করে লিখলেও এক পর্যায়ে গিয়ে একটা নির্দিষ্ট টাইমলাইনের গল্প নিয়েই এগিয়েছে বইটা। অতীতের টাইমলাইনটা শুরু হয় মিলি নামের এক তরুনীর খুন দিয়ে। এই খুনের তদন্ত করতে গিয়ে বিভিন্ন পরিস্থিতিতে তৎকালীন সময়ের দেশের বিভিন্ন নৈরাজ্য নিয়ে যেসব উক্তি এসএম হায়দার দিয়েছে তা যেনো এই সময়ে এসে আরো বেশী রিলেটেবল। এই এসএম হায়দারের সহযোগী হিসাবে পুলিশের চাকুরী করা মানুষটাই হলেন আমাদের এই গল্পের কথক। তার বয়ানেই আমরা জানতে পারি কিভাবে খুনীকে সন্দেহ করা হয়, কিভাবে তাকে খুঁজে পাওয়ার জন্য একেকবার একেক জায়গায় রেইড দিতে থাকে তারা দুইজন, কিভাবে সে ধরা পড়ে এবং কিভাবে তার স্বীকারোক্তি আদায় করা হয়৷ এই টাইমলাইনের আরো দুইটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র আছে। একজন মিলির স্বামী মিনহাজ আরেকজন তার বান্ধবী রামজিয়া। রামজিয়ার সাথে গল্প কথকের অংশগুলো এখনকার জেনারেশনের অনেকেই হয়তো ঠিকভাবে অনুভব করতে পারবে না। তবে আমরা যারা একটু মফস্বল এলাকায় জীবনের দীর্ঘ একটা সময় কাটিয়েছি, তাদের ওই সময়ের বর্ণনাগুলো প্রচুর উপভোগ করার কথা। এর মাঝে গল্পে ঘটতে থাকে নিত্য নতুন নাটকীয়তা, হতাশা আর দুঃখের ঘটনা। কোনোকিছুই তেমন কোনো চমক হিসাবে উপস্থাপন করতে চাননি লেখক। কেনো না বইয়ের সামনে কি ঘটতে পারে তার এক আধটু হিন্টস লেখক দিয়েই যাচ্ছিলেন পাঠককে। তবুও যখন যা ঘটছিলো তার উপস্থাপনা এমনভাবে করা হয়েছে যে বুকে একটা হালকা ধাক্কার মতো লাগে। আর তাই সব আগে থেকে ধারণা করে নেয়ার পরেও, বইয়ের কিছু জায়গায় প্রচন্ড মন খারাপ লাগে। এটাকেই তো বলা হয় লেখকের স্বার্থকতা। বর্তমান টাইমলাইনটা কিছুটা ছোট অতীতের টাইমলাইনের তুলনায়। তবে এই ছোট টাইমলাইনেই রয়েছে অতীতের সময়কার ঘটনাবলীর একটা মন ভালো করে দেয়ার মতো এন্ডিং। পাঠক হিসাবে গল্পের অনেকগুলো বিষয়ই মানতে ইচ্ছে করছিলো না, কিন্তু এটাই তো জীবন আর জীবনের ট্র্যাজেডি! আর তাই বইটা শেষ করেছি অসম্ভব তৃপ্তি আর মায়া নিয়ে। চরিত্রকথন এটা শুধুই কিছু ঘটনার বই নয়, এটা এই বইয়ের চরিত্রগুলোরও গল্প। যে চরিত্রগুলো মাথায় গেঁথে থাকবে দীর্ঘদিন। রক্তমাংসের না হওয়া সত্ত্বেও এসএম হায়দার চরিত্রটাকে এমনভাবে লিখেছেন লেখক যে, উনার প্রতি প্রবল শ্রদ্ধায় মাথা নত হয়ে আসে। অদ্ভুত রকমের ভালোবেসে ফেলেছি মানুষটাকে। এমন একটা মানুষ এখন আমাদের প্রচন্ড দরকার ছিলো। আফসোস এমন কেউই এখন আর এই দেশে নেই। রামজিয়া চরিত্রটা আগাগোড়া যদিও সৌন্দর্য আর প্রেমের প্রতিমূর্তি হয়ে ছিলো, তবুও কিছু সিচুয়েশনে তার সাহসী পদক্ষেপ আর সদাচরণের কারনে তাকেও ভালো লেগেছে। গল্প কথকের ভূমিকায় যিনি ছিলেন পুরো বইয়ে তার নাম উল্লেখ না থাকলেও, একজন সৎ, বুদ্ধিমান কিন্তু ভীতু মানুষের যে ছবিটা লেখক আমাদেরকে দেখাতে চেয়েছেন, তাতে করে সেই মানুষটাকেও বড্ড আপনই মনে হয়েছে। বইটা পড়ার সময়ে ইমতিয়াজ চরিত্রটার প্রতি এতোটাই ঘৃণা জন্ম নিয়েছিলো যে মনে হচ্ছিলো এই জীবনে ইমতিয়াজ নামের কারো সাথে সহজভাবে মিশতে পারবো না। আর ছিলো মিনহাজ। নিজের নামের সাথে মিল থাকার কারনেই কি না স্ত্রী শোকে কাতর এই মানুষটার প্রতি প্রবল মায়া অনুভব করেছি, তার দুঃখে ব্যথিত হয়েছি। তার মতো আমিও একই মানসিকতা ধারণ করি, কিছু অপরাধীর শাস্তি শুধু তার মৃত্যু দিয়েই হয় না, এদেরকে তিলে তিলে জীবনের শেষ দিনটা পর্যন্ত শাস্তি দিতে হয়। একেকটা চরিত্রকে এতোটাই বাস্তব লাগছিলো যেনো ওরা আসলেই আছে। আমি খুঁজতে বের হলেই পেয়ে যাবো। ব্যক্তিগত রেটিং: ৯.৫/১০ ( টানটান উত্তেজনা, একের পর এক চমক, টুইস্ট এন্ড টার্নস এমনকিছু না থাকা সত্ত্বেও একটা বই হাত থেকে রাখা দায় হয়ে পড়লে বুঝতে হবে এই বইটা একটা থ্রিলারের চেয়েও বেশী কিছু। থ্রিলার হিসাবে না পড়ে একটা মানবিক গল্প হিসাবে পড়লে আমার মনে হয় না এই বইটা কারো খারাপ লাগা সম্ভব ) প্রোডাকশন: বাতিঘরের গতানুগতিক প্রোডাকশন, যেটা নিয়ে নরমালি আমার কোনো সমস্যা হয় না। তবে একটা ব্যাপারে কিছুটা আশাহত। আমার সংগ্রহের বইটা ২০২২ সালের দ্বাদশ মূদ্রণ৷ ২০১৫ সালে বের হওয়া একটা বইয়ের এতোগুলা মূদ্রণ শেষ হওয়ার পরেও এই বইটাতে অনেক বানান ভুল চোখে পড়েছে। কিছু জায়গায় বাক্য গঠনটাও এলোমেলো হয়ে গিয়েছে। এতো বছরের এতোগুলা মূদ্রণের পর পাঠক কি একটা পরিমার্জিত সংস্করণ আশা করতে পারে না? কতক্ষণ সময় লাগবে ছোটখাটো অল্পবিস্তর এইসব ভুল ত্রুটি সাড়িয়ে নিতে? এতোটুকু দায় তো অন্তত পাঠকদের প্রতি থাকা উচিত একটা প্রকাশনীর। গল্পটা এতোটাই ভালো লেগেছে যে কোনো নেগেটিভ কিছু বলতে চাইনি। কিন্তু রিভিউ লিখতে লিখতে এসএম হায়দারের কথা মনে পড়লো। সে নিশ্চয়ই প্রতিবাদ করতো। আর তাই... প্রিয় উক্তিসমূহ রিভিউ শেষ। এটুকু এড়িয়ে যেতে পারেন সবাই। তবে এই বইটাতে এমনকিছু উক্তি রয়েছে যেগুলার সাথে আমি নিজেকে পুরোপুরি জড়িয়ে নিতে পারি৷ মনে হয়েছে এগুলো যেন আমারই মনের কথা যা লেখক এসএম হায়দারের জবানিতে লিখেছেন। এখানে আমি সেগুলা লিখে রাখতে চাচ্ছি। "উনার চারপাশে নাকী সব চোর! চাটার দল নাকী সব চেটেপুটে খাচ্ছে! তা, আপনি কি করছেন? সমস্ত ক্ষমতা আপনার হাতে। চোরবাটপার গুলোকে পাছায় লাথি মেরে বঙ্গোপসাগরে ফেলে দিচ্ছেন না কেন! চাটার দলের জিহবা কেটে কুকুরকে খাইয়ে দেন! আপনার আশেপাশেই তো ওরা ঘোরাঘুরি করে। ওদেরকে আপনি ভালো করেই চেনেন। আপনি মামা না-হয়ে, বাবা না-হয়ে, মুজিবভাই না-হয়ে, দলের নেতা না-হয়ে আমাদের শেখ সাহেব হয়ে যান না আবার" "সব দেশেই ক্রাইম হয় কিন্তু সভ্যদেশের কোনো সরকার, রাষ্ট্র ক্রাইমকে প্রশ্রয় দেয় না।" দেশের বাড়ি কোথায় এই প্রশ্নের জবাবে এসএম হায়দার বলেন, "শোনেন ভাই, আমাদের দেশটা অনেক ছোটো। এই ছোটো দেশটাকে আমরা আর ছোটো না করি, কি বলেন? আমি যদি আপনার জেলার লোক না হই, তাহলে কি আপনার সাথে আমার খাতির হবে না? আর আপনার জেলার লোক হলে কি বেশি খাতির হয়ে যাবে? নোংরা আঞ্চলিকতা আমার ঘেন্না লাগে। আমার দেশ একটাই- বাংলাদেশ। এটাই আমার জন্মস্থান। এটাকে টুকরো টুকরো করে নিজের পরিচয় বানানোর কোনো ইচ্ছে আমার নেই।" "দুঃখের স্মৃতিগুলো নিখুঁত পেন্টিংয়ের মতো সমস্ত ডিটেইল নিয়ে উদ্ভাসিত হলেও সুখের স্মৃতিগুলো ঝাপসা ছবির মতই অস্পষ্ট।" "ক্ষমতাসীনদের অনেকেই নিজ দলের চোর-বাটপার থেকে শুরু করে মজুতদার, চোরাকারবারি, খুনি, ডাকাত সবার মাথার উপরে বটবৃক্ষের মতো ছায়া দিয়ে যাচ্ছিলো। এসব করতে গিয়ে তারা তাদের প্রিয় নেতা আর জন্মভূমির কত বড় সর্বনাশ করেছে সেটা যদি বুঝতো।" "আমার যা করার আমি তা করবো। ওইসব হারামখোর নেতাদের হুকুম তামিল করার জন্য দেশটা স্বাধীন হয়নি, আর আমিও নিজেকে তাদের চাকর-বাকর মনে করি না।" "উনি যখন পাকিস্তান কারাগার থেকে দেশে ফিরে এসে বললেন, তিন বছর কিছুই দিতে পারবেন না, সেটা সবাই মেনে নিয়েছিল। কিন্তু এই তিন বছরে পাবলিক কি দেখলো? ওনার দলের ঘনিষ্ঠজনদের অনেকেই পরিত্যক্ত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, কারখানা আর বাড়ি পেয়ে যাচ্ছে! তারা কিন্তু তিন বছর অপেক্ষা করছে না। সেটাও কোন সমস্যা হতো না, যদি আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা যেত। এই একটা জিনিস করতে কিন্তু টাকা লাগে না। রাস্তাঘাট, ব্রিজ-কালভার্ট বানাতে টাকা লাগে। স্কুল-কলেজ বানাতে টাকা লাগে, এটা করতে শুধু দরকার হয় ক্ষমতাসিনদের সদিচ্ছা, আত্মত্যাগ আর দূরদর্শিতা। সেটা কি তোমার দলের সবার মধ্যে আছে?" "শেষ পর্যন্ত পাকিস্তানীদের সাথে আমাদের থাকাটা হলো না কিন্তু গণতন্ত্রের জন্যই। সত্তুরের ফলাফল ওরা মেনে নিল না। আমরা বুঝে গেলাম ওদের সাথে আর থাকা যাবে না। ওরা গণহত্যা শুরু করলো, আমরা রুখে দাঁড়ালাম। নয় মাসের যুদ্ধে দেশ স্বাধীন হলো। এখন যদি তুমি সেই স্বাধীন দেশে গণতন্ত্রকে পাশ কাটাতে চাও তাহলে বুঝতে হবে তোমার চিন্তা-ভাবনায় বিরাট বড় গলদ আছে।" "এ কেমন স্বাধীনতা যেখানে আমরা মনের কথাও খুলে বলতে পারছি না। চোখের সামনে শক্ত হয়ে যাচ্ছে মিথ্যে!" এর বাইরেও কিছু কথা বেশ ভালো লেগেছিল। কিন্তু সঙ্গত কারনেই সেগুলো লিখা হলো না। যতটুকু লিখেছি, এর মাঝেও মনে হয় তার কিছু এডিট করে ডিলিট করে দেয়া লাগতে পারে। তবে সবকিছু মনে গেঁথে রেখেছি সবসময়ের মতোই। ? পৃষ্ঠা সংখ্যা: ২৭২ ? বর্তমান মূদ্রিত মূল্য: ৩৬০ টাকা
Was this review helpful to you?
or
#আড্ডাখানায়_রকমারি #রিভিউ_২০২৩ অস্থির আর ঝঞ্ঝাবিক্ষুদ্ধ সময়ে ঘটে যাওয়া একটি খুনের রহস্য উদঘাটনে মরিয়া ভিন্ন মত আর স্বভাবের দু-জন মানুষ । অভিনবভাবে এক সন্দেহভাজনের সন্ধান পেলো তারা, অনেক কষ্টে তাকে ধরাও হলো কিন্তু হত্যারহস্য আর মীমাংসা করা গেলো না। এ ঘটনাটা বদলে দিলো তদন্তকারি দু-জনসহ আরো কিছু মানুষের জীবন। দুই যুগ পর স্মৃতিভারাক্রান্ত এক লেখক ব্যস্ত হয়ে পড়লো সেই হত্যারহস্য নিয়ে । চমকে যাবার মতো একটি ঘটনার মুখোমুখি হতে হলো তাকে । বিস্ময়কর সত্যটা জেনে যাবার পরও নতুন এক সঙ্কটে নিপতিত হলো সে- সত্যটা প্রকাশ করার জন্য নির্ভর করতে হবে প্রকৃতির উপরে! ‘কেউ কথা রাখেনি’ একটি কাব্যিক অভিব্যক্তি। ঢালাও অভিযোগও বলা চলে। কিন্তু সত্যটা হলো, কেউ কেউ কথা রাখে। (ফ্ল্যাপ থেকে) • পাঠ প্রতিক্রিয়া: আমাকে যদি জিজ্ঞেস করা হয় 'মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিনে'র লেখা পছন্দের উপন্যাস কোনটি তবে আমি জবাব দেবো, 'কেউ কেউ কথা রাখে'। 'A book within a book' বলতে যদি কিছু থাকে, তবে আমার কাছে তা এই বইটি। যদিও বইটির জনরা 'রহস্য ও গোয়েন্দা' বলা হয়েছে, তবে আমি এর সাথে 'রোমান্টিক থ্রিলার' তকমাটাও যোগ করবো। বইটি নিয়ে আমার অনুভূতি কয়েক স্তরে বিভক্ত। • প্লট নিয়ে আলোচনা: একটি সদ্য স্বাধীন হওয়া দেশ। দেশের আইন-শৃংখলা, অর্থনীতি, রাজনীতির মেরুদন্ড এখনও শক্ত হয়ে উঠেনি। এমনই এক সময়ে রাজধানীর একটি ফ্ল্যাটে ঘটে গেছে এক তরুণীর বীভৎস হত্যাকাণ্ড। এখান থেকেই উপন্যাসের মূল গল্প শুরু হয়েছে এবং চমৎকারভাবে এগিয়ে গেছে রহস্য, থ্রিল ও কিঞ্চিৎ রোমান্টিকতার চিহ্ন রেখে। • চরিত্র পরিচিতি : গল্পকথক: গল্পের চরিত্র নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে মাত্রই খেয়াল করলাম মূল চরিত্র তথা গল্পকথকের নাম নেই। কী আশ্চর্য! উপন্যাসটা পড়ার সময় একবারও বিষয়টা খেয়াল করিনি। (হতে পারে নাম আছে, আমি খেয়াল করিনি।) গল্পকথক যেভাবে আমাদের গল্প বলেছেন, একইসাথে নিজে কিভাবে সেই গল্পের অংশ তা ব্যাখ্যা করেছেন সেটা সত্যিই চমৎকার। অতি সাধারণ প্রকৃতির এ চরিত্রটা সময়ের সাথে কখন যে পরিপক্ব একটা চরিত্র হয়ে উঠবে পাঠক খেয়ালই করবেন না। এসএম হায়দার: উপন্যাসের সবচেয়ে শক্তিশালী চরিত্র। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে যেমন তার সততা, তেমনই তেজ। মুক্তিযুদ্ধের তথাকথিত চেতনার কথা বর্তমান প্রজন্মের মুখে মুখে ফেরে, কিন্তু সেই চেতনার প্রকৃত রূপ ধারণ করতে পারে কয়জন? এসএম হায়দার চরিত্রটা যেনো সে চেতনার শুষ্ক জমিনে আর্দ্রতার আবির্ভাব ঘটানোর জন্যই লেখক তৈরি করেছেন। প্রতিবাদ ও প্রতিরোধের প্রতীক 'হায়দার ভাই' চরিত্রটি নিঃসন্দেহে উপন্যাসে আমার প্রিয় চরিত্র । ইমতিয়াজ: খল চরিত্র লেখায় মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিনের পারদর্শিতা সবচেয়ে বেশি এই উপন্যাসে ফুটে উঠেছে বলে আমি মনে করি। ইমতিয়াজ চরিত্রটি লেখক এমনভাবে লিখেছেন যে ঘৃণায় গা জ্বলে উঠবে। মুখভর্তি এক দলা থুতু ছুঁড়ে দিতে ইচ্ছে করবে এই ঘৃণ্য চরিত্রের উপর। মিজান: চলচ্চিত্রে 'শো স্টিলার' বলতে যে বাগধারা ব্যাবহার করা হয় এক্ষেত্রে মিজান তেমন একটি চরিত্র। অর্থাৎ, মুখ্য চরিত্র না হয়েও সে মন জয় করে নিয়েছে। রামজিয়া: উপন্যাসে উপস্থিত একজন উল্লেখযোগ্য নারী চরিত্র। পার্শ্ব চরিত্র হলেও উক্ত চরিত্রের উপস্থাপন ঘটানো হয়েছে অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে। এছাড়াও উপন্যাসে আরো কিছু পার্শ্ব চরিত্র আছে যা প্লটের প্রয়োজনে যথার্থভাবে লেখা হয়েছে। • লিখনশৈলী: মৌলিক থ্রিলার লেখায় আমাদের দেশে মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিনের নামই সবার আগে আসে। এই বইটিতেও তিনি থ্রিলার স্বাদ যুক্ত করেছেন, তবে একটু ভিন্ন মাত্রায়। উপন্যাসের প্লট চলেছে দুইটি ভিন্ন সময়কালে। বার বার সময়ের জাম্প কাট মোটেও বোর লাগেনি, বরং পরবর্তী কাহিনী জানার জন্য উৎসুক করেছে। তাছাড়া রোমান্টিক লেখায়ও যে লেখক সাহেব মন্দ নন তার সাক্ষর রেখে গেছেন এখানে। পাশাপাশি দুর্নীতিবাজ ও অসৎ চরিত্রের এক গোষ্ঠী মানুষের মুখে প্রতিবাদের যে নিরব চড় মারা হয়েছে, তা সত্যিই দারুন লেগেছে। পরিশেষে, সূচনা থেকে সমাপ্তি পর্যন্ত ভালোবাসা,ক্ষোভ,সাহস, বীরত্ব,আক্ষেপ,আশ্বাস সবটাই অসম্ভব সুন্দর করে ধারণ করেছে উপন্যাসটি। লেখককে আহ্বান করবো এমন সাহসী লেখা আরো প্রকাশের জন্য। • ব্যাক্তিগত মতামত: বইটি নিয়ে আমার বাড়তি তেমন মতামত কিংবা অভিযোগ নেই। তবে যদি বলতেই হয় তাহলে শুধুমাত্র অপরাধের তদন্ত নিয়ে একটু বলবো। সরাসরি অপরাধী কে, সেটা অনুমান করার চেয়ে যদি তদন্তকারীরা একটু পথভ্রষ্ট হতো তবে সেই পরিস্থিতিটাও দেখার মত হতো। • পছন্দের বাক্য: "ঈর্ষা খারাপ হতে পারে কিন্তু ঈর্ষার শিকার হওয়াটা নেহায়েত মন্দ নয়। সম্ভবত, কখনও কখনও সবচাইতে উপভোগ্য জিনিস!" • প্রচ্ছদ: এতো সুন্দর প্রচ্ছদ নিয়ে কথা না বললে ভুল হবে। প্রচ্ছদের রং, ডিজাইন, ডিটেইল বেশ চমৎকার। আমি প্রতিবার একটা বই শেষ করার পর এর প্রচ্ছদ খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখি। এক্ষেত্রেও ব্যাতিক্রম নয় এবং এর প্রচ্ছদ দেখার পর সত্যিই অবাক হয়েছি। অবাক হয়েছি কারণ, উপন্যাসের কাহিনী যেনো অনেকটা প্রচ্ছদেই বলে দেয়া আছে। তবে না পড়ে সেটা কেউ ধরতে পারবে না। তাই পাঠকদের উদ্দেশ্যে আমার পরামর্শ রইলো, তারা যেনো পড়া শেষে প্রচ্ছদটা আরেকবার দেখেন। 'কেউ কেউ কথা রাখে' একটা দারুন অভিজ্ঞতা। যারা নতুন থ্রিলার পাঠক আছেন কিংবা রোমান্টিক জনরা থেকে থ্রিলার জনরার দিকে ধাবিত হচ্ছেন, তাদের কাছে বইটি হবে আরো বেশি উপভোগ্য। • বই: কেউ কেউ কথা রাখে • লেখক: মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন • জনরা: রহস্য ও গোয়েন্দা • প্রকাশনী: বাতিঘর প্রকাশনী • প্রচ্ছদ: ডিলান • প্রচ্ছদ মূল্য: ৪৫০ টাকা • পৃষ্ঠা সংখ্যা: ২৭০ ব্যাক্তিগত মতামত: ৮/১০ ~ইয়াসির আল সাইফ
Was this review helpful to you?
or
কেউ কথা রাখেনি’ একটি কাব্যিক অভিব্যক্তি । ঢালাও অভিযোগও বলা চলে । কিন্তু সত্যটা হলো, "কেউ কেউ কথা রাখে।" অস্থির আর ঝঞ্ঝাবিক্ষুদ্ধ সময়ে ঘটে যাওয়া একটি খুনের রহস্য উদঘাটনে মরিয়া ভিন্ন মত আর স্বভাবের দু-জন মানুষ । অভিনবভাবে এক সন্দেহভাজনের সন্ধান পেলো তারা, অনেক কষ্টে তাকে ধরাও হলো কিন্তু হত্যারহস্য আর মীমাংসা করা গেলো না । এ ঘটনাটা বদলে দিলো তদন্তকারি দু-জনসহ আরো কিছু মানুষের জীবন । ২৪ বছর অর্থাৎ দুই যুগ পর স্মৃতিভারাক্রান্ত এক লেখক ব্যস্ত হয়ে পড়লো সেই হত্যারহস্য নিয়ে । চমকে যাবার মতো একটি ঘটনার মুখোমুখি হতে হলো তাকে । বিস্ময়কর সত্যটা জেনে যাবার পরও নতুন এক সঙ্কটে নিপতিত হলো সে- সত্যটা প্রকাশ করার জন্য নির্ভর করতে হবে প্রকৃতির উপরে! ------------------- বইটার নামটা কেমন যেন একটু অন্যরকম না?বইয়ের নামটা শুনলে প্রথমই মাথায় আসে, প্রেমিক কোনো প্রেমিকাকে বলেছিল? সাধারণত থ্রিলার এর সাথে এরকম নাম যায় না। প্রেমের উপন্যাসের একটা ভাব আছে। আসলে তা নয়, থ্রিলার ই। তবে আসলেও অন্যরকম। বই এর মুখবন্ধেই লেখক বলে দিয়েছেন এটা উনার একটা নিরীক্ষাধরমী বই। মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিনের নিরীক্ষাধর্মী একটি কাজ। তার আগের কাজগুলোর তুলনায় একেবারেই ভিন্ন।
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ একটা বই। শুধু থ্রিলার জনরা বললে ভুল হবে, সাথে অনেককিছু উঠে এসেছে। বইটা আমার মনে দাগ কেটেছে।
Was this review helpful to you?
or
আমি সাধারনত খুতখুতে পাঠক। তবে বলতে হবে, এটা ভালো বই তাই ৫ স্টার দিলাম।
Was this review helpful to you?
or
bhalo
Was this review helpful to you?
or
আমার লাইফে পড়া রোমান্টিক থ্রিলার গল্প গুলার মধ্যে এটা সেরা হয়ে থাকবে। অনেক বছর মনে থাকবে এ গল্প টা ❤️❤️??
Was this review helpful to you?
or
That was a masterpiece
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ একটি বই
Was this review helpful to you?
or
Darun boi
Was this review helpful to you?
or
best thriller i have ever read in my life?
Was this review helpful to you?
or
প্রথমেই ধন্যবাদ জানাই রকমারি কে বইটা হাতে পৌঁছে দিবার জন্য। আর মোহাম্মদ নাজিমউদ্দিন স্যার কে অসংখ্য ধন্যবাদ। আজ পড়া শেষ করলাম, সত্যি বলতে অসাধারণ একটা কাহিনী। বর্তমানের সাথে অতীতের কাহিনী কে লেখক খুব ভালো ভাবেই ফুটিয়ে তুলেছেন?
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ
Was this review helpful to you?
or
Must read
Was this review helpful to you?
or
Mixture of present and past.
Was this review helpful to you?
or
বই এর শুরুতে লেখক এর কথা ঠিকমত না পড়েই বইয়ের কাহিনী পড়া শুরু করে দিয়েছিলাম। কিছুদূর পড়ার পর মনে হল কাহিনীটা চেনা চেনা লাগছে। তারপর লেখক এর কথা মনোযোগ দিয়ে পড়লাম। দেখলাম যা ভেবেছি তাই। বিখ্যাত স্প্যানিশ ভাষার মুভি El secreto de sus ojos বা The Secret In Their Eyes এর অরিজিনাল কাহিনী এর অনুবাদ। মুভি দেখা না থাকলে পড়তে পারেন।
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ
Was this review helpful to you?
or
Masterclass. Brilliant.
Was this review helpful to you?
or
অসাধারন ? এত সুন্দর বই আমি বহুদিন পড়িনি?
Was this review helpful to you?
or
a good read
Was this review helpful to you?
or
ভালো কাহিনী বিন্যাস।সুন্দর প্লট। সুন্দর একটা উপন্যাস যার কাহিনী দেশের অস্থির আর ঝঞ্জাবিক্ষুদও সময়ের।
Was this review helpful to you?
or
khub sundor??
Was this review helpful to you?
or
বইটা অনেক সুন্দর । আর শেষের দিকটা তো ?
Was this review helpful to you?
or
ভালো লেগেছে!
Was this review helpful to you?
or
ব্যতিক্রম একটা বই বলা যায়। এ্যাডাপ্টেশানটা মন্দ হয় নি। লেখক তার যোগ্যতানুযায়ী ছাপ রেখেছেন লেখাতে। অসাধারণ এক গল্প। শেষে বুঝতে পারলাম নামটার সার্থকতা। বইটা শুরু করার পর মনে হচ্ছিলো যে লেখক আসলে কি গল্প বলতে চাচ্ছে!? ১৮০ পৃষ্ঠা, তারপরেই ঘটনাটা ঘটে গেলো! কি যে সুন্দর একটা সমাপ্তি!
Was this review helpful to you?
or
আমার পড়া বেস্ট বইয়ের মধ্যে একটা
Was this review helpful to you?
or
একজন কথা রেখেছিল!
Was this review helpful to you?
or
Masterpiece
Was this review helpful to you?
or
excellent novel
Was this review helpful to you?
or
বইটি ভাল তবে আরেকটু ভাল হতে পারত
Was this review helpful to you?
or
বই বিবরণঃ বই: কেউ কেউ কথা রাখে লেখক: মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন জনরা: থৃলার প্রচ্ছদ : ডিলান প্রকাশনী : বাতিঘর পৃষ্ঠাসংখ্যা : ২৭২ মুদ্রিত মূল্য: ৩২০টাকা ভূমিকাঃ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইন্সটিটিউটে এক বছর পড়াশোনা করলেও পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ থেকে মাস্টার্স সম্পন্ন করেন আজকের আলোচিত বইয়ের লেখক মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন। যার জন্ম ঢাকায়। বিশ্বমানের অসংখ্য থৃলার অনুবাদ করার পর অবশেষে তার পর পর আটটি মৌলিক থৃলার নেমেসিস, কন্ট্রাক্ট, নেক্সাস, কনফেশন, করাচি, জাল, ১৯৫২, এবং রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনও খেতে আসেন নি প্রকাশিত হলে বিপুল পাঠকপ্রিয়তা লাভ করেন। এ ছাড়াও তিনি অনুবাদ করেছেন সাড়া জাগানো উপন্যাস দ্য দা ভিঞ্চি কোড, লস্ট সিম্বল, গড ফাদার, বর্ন আইডেন্টিটি, বর্ন আলটিমেটাম, দ্য ডে অব দি জ্যাকেল, দ্য সাইলেন্স অব দি ল্যাম্বস, রেড ড্রাগন, মোনালিসা এবং ইনফার্নোসহ বেশ কয়েকটি উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ। আজকের আলোচিত বই তার লেখা মৌলিক থৃলার, "কেউ কেউ কথা রাখে" নিয়ে। কাহিনী বিশ্লেষণঃ বন্ধনটা তৈরি হয়েছিলো সেই দুই যুগ আগে এক হত্যা মামলার কেসে। যার প্রধান চরিত্রে ছিলো মিলি নামের একটি মেয়ে। তার কাজল কালো টানা টানা চোখের মায়ায় যে কেউ অনায়াসে প্রেমে পড়তে বাধ্য। সেই তাকেই নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। প্রথমে ধর্ষণ অতঃপর খুন! পুলিশ এসআই এবং তার সিনিয়র সাব-ইন্সপেক্টর এস এম হায়দার যখন জোড়ালো ভাবে খুনিকে খুঁজতে ব্যস্ত। তখনই ঘটে সেই অভাবনীয় ঘটনা, এসআইর সাথে সাক্ষাত হয় মিলির খুব ঘনিষ্ঠ বান্ধবী রামজিয়া শেহরিনের সাথে। বড়লোক বাবার মেয়ে। কেস নিয়ে কথা বলতে বলতে তাদের মাঝে সূক্ষ্ম এক সূত্রের তৈরি হয়। সেই সূত্রটা হলো বই আদানপ্রদান। দুজনেই বই প্রিয় হওয়াতে সুন্দর বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক হওয়ার মাঝে গরীব বা বড়লোকের বেড়াজাল তৃতীয় পক্ষ হয়ে আটকে যায়নি। আচ্ছা এই সম্পর্কের শেষ পরিণতি কী ঘটেছিলো? বন্ধুত্ব সম্পর্ক গড়ালেও তদন্ত মামলায় এসআই এবং সিনিয়র সাব-ইন্সপেক্টর বেশ ভালো কাজ দেখিয়েছিল। আসামীকে খুব সুন্দরভাবেই পুলিশ হাতকড়া পরিয়ে থানায় হাজির করেছিলো। কিন্তু বেশি সময় তাকে আটকে রাখা যায়নি। রাজনৈতিক নেতার চামচা হওয়ার বদৌলতে পার পেয়ে যায় খুনি ইমতিয়াজ। যে কিনা মিলির পূর্ব পরিচিত। থানা থেকে মুক্তি পেয়ে খুব সুন্দরভাবে আরেকটি হত্যা করে সে। তার দ্বিতীয় হত্যার শিকার কে হয়েছিল? অতঃপর হুট করেই একদিন নিখোঁজ হয়ে যায় ইমতিয়াজ অনেকটা ভোজবাজির মতো। তার রাজনৈতিক নেতা কিংবা দলের বন্ধুরাও জানতে পারেনি ইমতিয়াজ আদৌ বেঁচে আছে কিনা! কী হয়েছিলো ইমতিয়াজের? ইমতিয়াজের নিখোঁজ হওয়ার পিছনে সে নিজেই নাকি অন্য কেউ আছে? ব্যক্তিগত মতামতঃ বইটা পড়তে শুরু করে প্রথমদিককার কয়টা পাতা পড়ে অতটা ভালোলাগা কাজ করেনি। কিন্তু কয়েক পাতা পড়তেই আমি বেশ বড়সড় এক ধাক্কা খেলাম। বইটাতে যে কাহিনী আছে তা দুই সময়কে কেন্দ্র করে। বর্তমান এবং প্রায় দুই যুগ আগের অতীত। লেখক বর্তমান নিয়ে গল্প বলার ছলে অতীতটাকে কী সুনিপুণভাবে বলে গেছে। আমি মন্ত্রমুগ্ধের মতো তা গলাধঃকরণ করেছি। দুই সময়ের কাহিনী নিয়ে আলোচনা করাতে একটু সমস্যা অবশ্য হয়েছে তা হলো, কখনো মনে হয়েছে সে খুব দ্রুত চলছে আবার কখনো মনে হচ্ছে ধীরে। তবে লেখকের দুই সময় নিয়ে লেখার বুদ্ধিটা এবং বাচনভঙ্গি দুটোই বেশ ভালো লেগেছে আমার কাছে। পুরো বইটাতে কিছু বানান ভুল হলেও "হ্যা" বানানটা একেবারে চোখে আটকে থাকার মতো ছিলো। তাই বলবো বানানের দিকের আরেকটু সচেতন হলে মন্দ হতো না। কাহিনীর সাথে বইয়ের নাম এবং প্রচ্ছদ বেশ ভালো মানিয়েছে বলে আমি মনে করি। এছাড়া বইয়ের বাধাই কাজ বেশ সুন্দর হয়েছে। অক্ষর এবং পাতা দুটোই ভালো ছিলো। অনেক বইয়ে পাতা খুব পাতলা হয় যার কারণে বই পড়তে গেলে ছিঁড়ে যাবার ভয়টা বেশি কাজ করে। এখানে তেমন কিছু হয়নি। এবং সবচেয়ে অবাক হয়েছি বইটা পড়ে তার একমাত্র কারণ, পুরো বই জুড়ে কোথাও গল্পকথকের নাম একবারের জন্যও বলা হয়নি। ব্যাপারটা আমাকে একেবারে চমকিত করেছে। সর্বোপরি এটাই বলবো "কেউ কেউ কথা রাখে" বইটা অসাধারণ লেগেছে। আশাকরি বইটা পড়ে কেউ হতাশ হবেন না।
Was this review helpful to you?
or
অনেকদিন পর এমন একটা বই পড়লাম, যেটা ভেতরটা নাড়া দিয়ে গেলো প্রচন্ডভাবে। বইটা ঠিক দুঃখের না, কষ্টেরও না। শেষটা একদম মনমতো হয়েছে, আগেই আন্দাজ করেছিলাম যদিও। তারপরেও এক জায়গায় চোখের দু'ফোটা জল আটকে রাখা সম্ভব হয়নি। আর শেষ করার পর বুকটা ভারী হয়ে আছে, সেটার কারণও আমার জানা নেই। তবে আমার মনে হয় এটা লেখকের অন্যতম সেরা একটা লেখা।
Was this review helpful to you?
or
অনবদ্য
Was this review helpful to you?
or
কেউ কথা রাখে না। না কথাটি ভুল। কেউ কেউ কথা রাখে। আসলেই কেউ কেউ কথা রাখে। সদ্য বিবাহিত তরুণী মিলিকে ধর্ষণ করে হত্যা করা হয়।হত্যা মামলার তদন্তের ভার পরে সিনিয়র সাব ইন্সপেক্টর হায়দার ও জুনিয়র এসআই মিনহাজের উপর। তারা তদন্ত করে খুনিকে বের করলেও তার পর্যন্ত পৌঁছাইতে পারে না খুনির রাজনৈতিক ক্ষমতার কারণে। কিন্তু এই দুই এসআই আইনের সঠিক বাস্তবায়ন করতে রাজনৈতিক সকল হুমকিকে অমান্য করে গ্রেপ্তার করে খুনিকে। কিন্তু অতি অল্প সময়েই জামিনে ছাড়া পেয়ে যায়। আর এই দুই সৎ অফিসারকে তার মূল্য দিতে হয়। সিনিয়র সাব ইন্সপেক্টর হায়দার তার প্রাণ হারান আর মিনহাজকে ট্রান্সফার করা হয় এক অজপাড়া গায়ে। কিন্তু মিনহাজ খুনির এই দৌরাত্ম্য সহ্য করতে না পেরে চাকরি ছেড়ে দেয়। তারপর সে লেখালেখি শুরু করে। মিলির হত্যার দুইযুগ পরে যখন সে বড় নামকরা এক লেখক তখন সে মিলির এই হত্যার ঘটনা নিয়ে একটি বই লেখা শুরু করে। যদিও বইয়ের শেষটা (মানে ঘটনার শেষটা) তার অজানা। সে যখন ঘটনার শেষটা জানতে পারে কিন্তু তারপরেও সাথে সাথে বইটা প্রকাশ করতে পারে না। কারণ বইটির প্রকাশে প্রকৃতির হস্তক্ষেপের প্রয়োজন ছিল। এক সময় সেই সময়টা আসে আর লেখক বইটা প্রকাশও হয়। কি ছিল সেই শেষটা। পাঠক যখন জানতে পারবেন সেই শেষের ঘটনাটা তখন বলতে বাধ্য হবেন আসলেই কেউ কেউ কথা রাখে।
Was this review helpful to you?
or
বইয়ের কাহিনী কিছুটা জটিলভাবে উপস্থাপন করার চেষ্টা করা হয়েছে । কিন্তু ভাল লেখকের লেখনীর জন্য ঘটনার বিবরন কিছুটা সহজ ভাবেই ছিলো। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে হয়ে যাওয়া এক অমীমাংসিত খুনের ঘটনাকে বইয়ের প্লট হিসেবে মানা যায়। তার সাথে যুক্ত করা হয়েছে অই সময়ের রাজনৈতিক এবং সামাজিক অস্থিরতা, অন্যানা ঘটনাবলী ইত্যাদি। খুনের ফলে তদন্তকারী অফিসাররা সহ আরও কয়েকজন মানুষের জীবন চিরতরে বদলে গেল, কিন্তু অপরাধীকে আর শেষ পর্যন্ত শাস্তি দেয়া গেলো না। ২৪ বছর পর এক লেখক যখন সেই ঘটনা নিয়ে লিখতে শুরু করল, তখন অপ্রত্যাশিতভাবে চমকে যাওয়ার মত কিছু ঘটনার মুখোমুখি হলো সে। বইটা পড়ার পর বলা যেতে পারে এর নামকরণ যথার্থ । নাজিম ভাই তার বইগুলোর নাম বরাবরই ইউনিক রাখেন, শুনলেই পড়তে আগ্রহ সৃষ্টি হয় ।
Was this review helpful to you?
or
সূনীলের কেউ কথা রাখেনি কবিতা পড়ে মনে হয়েছিলো, হয়তো সত্যিই কেউ কথা রাখেনা। কিন্তু এখন নাজিম উদ্দিনের কেউ কেউ কথা রাখে বইটা পড়ে মনে হচ্ছে, এখনও এমন অনেক মানুষ আছে যারা কথা রাখে। কেউ কথা রাখেনি অভিব্যক্তি তাদের কাছে খাটে না। তারা তাদের কথা রাখেই। এই গল্প খুব ঢিমেতাল ভাবে এগিয়েছে, থ্রিলের পরিমাণ ছিলো কম তারপরও বইটা সেরা! বইটার কোথাও একটুও বিরক্ত ভাব আসেনি। এক দৃষ্টিতে পড়ে গেছি সবটা। বইয়ের প্রচ্ছদটাও ছিলো অসাধারণ! নীল রঙ, ঘড়ি, তালা লাগানো ঘর, প্রেমিক যুগল! এমনিতে প্রচ্ছদের মানে ঠিক পরিষ্কার ছিলো না আমার কাছে। কিন্তু বইটা পড়ার পর বুঝেছি অর্থ। বইয়ের কাহিনীই যেনো প্রচ্ছদ বলে দিচ্ছে। আপনি বইটি পড়ে প্রচ্ছদের দিকে তাকালেই প্রচ্ছদের মানে বুঝে যাবেন! সবমিলিয়ে অসাধারণ একটা বই কেউ কেউ কথা রাখে। যারা পড়েননি তারা পড়ে ফেলতে পারেন। ভালো লাগবে আশা করি।
Was this review helpful to you?
or
রবীন্দ্রনাথ ডুয়োলজি পড়া থাকা সত্বেও আমার মতে এই বইটি উনার সেরা কাজ যদিও এডাপ্টেশন; তারপরেও এই বইটির লেখনী দেশীয় পটভূমিতে অসম্ভব শক্তিশালী৷ খুব ভালো লাগল বইটি।
Was this review helpful to you?
or
কেউ কেউ কথা রাখে- রাখে কি! কি অমন কথা! যার জন্য সব ছেড়ে ছুঁড়ে সারাজীবন একাকীই থাকতে হয়? প্রেম মানুষকে কতোটা বেপরোয়া করতে জানে? কতোটা উথাপাতাল করতে পারে? সামান্য রাজনৈতিক পরিচয়ই কি আইনকে কাঁচকলা দেখাতে পারে? অপরাধের বিচার কি হয়ই না? 'কেউ কথা রাখেনি' এমন অভিযোগ যে সত্য নয় সেটা জানতেই না হয় পড়ে ফেলুন 'কেউ কেউ কথা রাখে।'
Was this review helpful to you?
or
২ যুগ পর তার সাথে দেখা হতে চলেছে, মনের মধ্যে যেমন উৎকণ্ঠা ঠিক তেমনি এক অজানা সুখ ঢেউ খেলে যাচ্ছে। কিন্তু এই দেখা করাটা শুধু প্রিয় মানুষটিকে দেখার জন্য নয়, এর পিছনে রয়েছে ২ যুগ আগে ঘটে যাওয়া এক ভয়াবহ হত্যাকান্ড যা বদলে দিয়েছিল এতগুলো মানুষের জীবন!! দেশ স্বাধীন হয়েছে বেশি দিন হয় নি,,, লেখক তখনও কেবল একজন পাঠক রুপেই রয়েছেন এবং কাজ করছে পুলিশ অফিসার হিসেবে।। তারই মধ্যে ঘটে গেল এক ভয়াবহ ঘটনা! সদ্য বিবাহিত এক তরুণী মিলি ধর্ষণ ও খুন হয় তার নিজ বাড়িতে। এই খুনের রহস্য উন্মুচনের সময় দেখা হয় তার রামজিয়া নামক মেয়েটির সাথে যার নাম ২ যুগ পর্যন্ত তার হৃদয়ে এখনও রয়েছে। অফিসার হায়দারের চমৎকার বুদ্ধিমত্তার জন্য খুনিকে ধরতে কষ্ট হলেও এক পর্যায়ে ধরা সম্ভব হয়, কিন্তু ক্ষমতার জোড়ে খুনিকে বেশিদিন রাখা সম্ভব হয় নি জেলে,,,,, এদিকে লেখক অ হায়দার শাস্তি দেয়ার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে খুনিকে ঠিক সেই সময় লেখকের সাথে রামজিয়ার প্রণয় বেশ জমে উঠেছে।। অপরদিকে মিনহাজ তার প্রাণপ্রিয় স্ত্রীকে হারিয়ে পাথর প্রায়,,, সে যেকোনো মূল্যে খুনির সাজা চায় কিন্তু সে বারবার বলে যেন খুনির ফাসিঁ না হয়!!!! এই খুনের তদন্তে ঘটে যায় অনেকগুলো ঘটনা,,,, বদলে যায় সবার জীবন,,,, লেখকের জীবন থেকে হারিয়ে যায় তার প্রিয় থেকে প্রিয়তর মানুষগুলো,,,, আর এর মধ্যেই সে চাকরি ছেড়ে হয়ে উঠে একজন লেখক,,,, তার মধ্যে বহুদিন খুনি ইমতিয়াজ ও মিনহাজের কোনো খোঁজ পাওয়া যায় নি।।। লেখক তখন তার জীবনের এই ঘটনা নিয়ে বই লিখতে চান যে ঘটনা এতোগুলো মানুষের জীবন পালটে দিল তা সবার মাঝে বাচিঁয়ে রাখতে চান,,,তাছাড়া মিলি যে বিচার পেল না অন্ততপক্ষে মিলির ঘটনা জানুক সবাই এই ইচ্ছা নিয়ে বই লিখা শুরু করেন।। বইয়ের নাম দেন কেউ কথা রাখেনি!!!! কিন্তু বইটি সম্পূর্ণ করতে তার জানতে হবে ইমতিয়াজের কি হয়েছে আর মিনহাজ ই বা কেন ঢাকা ছেড়েছে।।।।এইসব প্রশ্নের উত্তর যখন তিনি পেলেন তিনি যেন বিষ্ময়ে বিস্ফোরিত হলেন,,,,, তার মনে হল সত্যিই জগতে কেউ কেউ তার কথা রাখে!!!!!! পাঠক প্রতিক্রিয়া : পড়ার সময় এক ঘোরের মধ্যে ছিলাম।।। নাজিম উদ্দিন বরাবরই একজন চমৎকার লেখক আমার কাছে এই বইটিতেও তার প্রমাণ দিয়েছেন,,,, ভালবাসার এক অন্যরুপ তুলে ধরেছেন,,,,, বইটি পড়ার পর শুধু মনে হয়েছে আসলেই কেউ কেউ কথা রাখে!!!?
Was this review helpful to you?
or
” ‘কেউ কথা রাখেনি’ একটি কাব্যিক অভিব্যক্তি। ঢালাও অভিযোগও বলা চলে। কিন্তু সত্যিটা হলো, ‘কেউ কেউ কথা রাখে’। “...বাংলাদেশের প্রথম মৌলিক থৃলার লেখক ও বর্তমানকালের অতি পরিচিত ঔপন্যাসিক মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিনের এ সাহিত্যকর্মটির নাম দেখে মনে হবে এটি শুধুই একটি রোমান্টিক বই। আসলে কিন্তু তা নয়; এটি একইসাথে ডিটেক্টিভ থ্রিলার, রোমান্টিক ও ট্র্যাজিক ঘরানার। এরই সাথে যুক্ত আছে আমাদের সমাজের কিছু সমস্যার বিরুদ্ধে লেখকের নিজস্ব মতামত। সবমিলিয়ে একটা ভালোলাগার মতো বইয়ে যা যা উপাদান থাকা দরকার, তার সবই এতে উপস্থিত; হাসি-কান্না, ভালোলাগা অথবা কোনোকিছু না পাওয়ার অব্যক্ত বেদনা। বইটি লেখকের পুরোপুরি মৌলিক সৃষ্টি নয়, তা তিনি নিজেই জানিয়েছেন। আর্জেন্টিনার জনপ্রিয় ঔপন্যাসিক এদুয়ার্দো সাচেরির ‘লা প্রেহুন্তা দে সুস ওহোস’ (La pregunta de sus ojos) বইটি পড়ে তিনি মুগ্ধ হলে অনুবাদ করতে যান। কিন্তু অনুবাদ করা আর হয়ে উঠলো না; উক্ত বইটির দ্বারা প্রভাবিত বা অনুপ্রাণিত হয়ে সম্পূর্ণ নিজের সৃষ্ট চরিত্র ব্যবহার করে আমাদের দেশের সামাজিক সমস্যাকে পুঁজি করে নিজের কাহিনী অনুসরণ করে লিখে ফেললেন ‘কেউ কেউ কথা রাখে’। ২০১৫ এর ডিসেম্বরে বইটি প্রথম প্রকাশিত হলেও আমি এটা সম্বন্ধে জানতাম না, পরে এক বন্ধুর পরামর্শে বইটি পড়েছিলাম। পড়ার পরে যেন ‘এতদিন কোথায় ছিলে’ ধরনের দুঃখ হয়েছে। এর আগে এবং পরে এই লেখকের আরো কিছু বই পড়েছি। তাঁর লেখা বইগুলোর মাঝে ‘কেউ কেউ কথা রাখে’-কে আমার নিকট সেরা মনে হয়েছে। বইটির মধ্যে পাঠককে গল্পে আকৃষ্ট করে রাখার ক্ষমতা প্রচণ্ড। আপনি শুধুই একজন ডিটেক্টিভ থ্রিলার প্রেমী হলেও এই বইটির স্বাদ আস্বাদন করে দেখতে পারেন, আশা করি নিরাশ হবেন না।
Was this review helpful to you?
or
বই- কেউ কেউ কথা রাখে লেখক- মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন সদ্য স্বাধীন হওয়া দেশ। নয়মাস যুদ্ধের ধাক্কা টা সামলে উঠতে পারেনি তখনো। এমন সময়ে ঢাকাতে নিজের বাসায় ধর্ষিত হয়ে খুন হন একটি মেয়ে মিলি, যার কিনা মাত্র তিন মাস আগে বিয়ে হয়েছিল। ব্যাংকার স্বামী মিনহাজ বাসায় এসে মৃত স্ত্রীর নগ্ন দেহ দেখতে পায়। তদন্ত করতে আসে এসআই এসএম হায়দার এবং এএসআই ( লেখক)। এসএম হায়দার একজন সৎ পুলিশ অফিসার এবং মুক্তিযোদ্ধা। তারা দুজনেই প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যায় আসল খুনী কে ধরার জন্য। ভিক্টমের হাসবেন্ড মিনহাজ কে সন্দেহ করলেও ঘটনা মোড় নেয় অন্য দিকে। এ ব্যাপারে সাহায্য করে মিলির বান্ধবী রামজিয়া। অনেক চেষ্টার পর খুনী কে পাওয়া গেলেও রাজনৈতিক নেতার অপশক্তির কাছে হার মেনে যেতে হয়। অমীমাংসিত থেকে যায় ঘটনা টি। তছনছ হয়ে যায় কয়েকটি জীবন। গল্পটি দুটি সমান্তরালে চলতে থাকে। ২৪ বছর আগের আর পরের সময়ে। ২৪ বছর আগের এএসআই যে কিনা ২৪ বছর পর একজন পরিচিত লেখক যে কিনা তার সেই অমীমাংসিত কেস টির লিখিত রুপ দিতে চান। ঘটনার শেষ পরিনতি জানতে চান। সেই জন্য খুজে বের করেন সেই রামজিয়া কে। এরপর মিনহাজ কে। এরপর খুজে পান এক বিস্ময়কর সত্য। কি ছিল সেই সত্য??? মিলির খুনী কি অন্য কেউ ছিল নাকি আসল খুনী তার উপযুক্ত শাস্তি পেয়েছিল। গল্পের প্রায় পুরোটা জুড়ে ছিল লেখক আর রামজিয়ার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক। ছিল অব্যক্ত ভালবাসা। সিনিয়র অফিসারের প্রতি জুনিয়রের ভালবাসা। ভাইয়ের জন্য ভাইয়ের ভালবাসা। দুজন বিপরীতধর্মী মানুষের চিন্তাভাবনার দ্বিমত, যুক্তিতর্কের ফারাক কিন্তু একে অপরের জন্য অপরিসীম ভালবাসা। । মৃত স্ত্রীর প্রতি স্বামীর অকৃত্রিম ভালবাসা।একজন খুনীর বেপরোয়া জেদ আর চাঞ্চল্যকর পরিণতি। উঠে এসেছে সত্তর দশকের কিছু চিত্র। মিলি আর রামজিয়ার বর্ণনা তখনকার মেয়েদের স্টাইলের বাস্তব চিত্র ফুটিয়ে তুলেছে। যুদ্ধ পরবর্তী সময়ের অস্থিরতা, রাজনৈতিক অবস্থা, শেখ মুজিবের হত্যাকান্ড ইত্যাদি। থ্রিলার প্রেমীদের জন্য খুবই উপযুক্ত বই। প্রথমে একটু ঢিম গতিতে চললেও পরে আছে পরিপূর্ণ টুইস্ট। সবচেয়ে ভাল লেগেছে হায়দার ভাইকে। এসএম হায়দার। যার জন্য কেদেছি। মনের গভীরে থাকবে হায়দার ভাইয়ের জন্য ভালবাসা আর শ্রদ্ধা। আর কাউকে দেয়া কথা রাখা। কেউ কেউ কথা রাখে। কেউ কেউ আসলেই কথা রাখে।
Was this review helpful to you?
or
☆☆☆☆
Was this review helpful to you?
or
সদ্য স্বাধীন হওয়া দেশ। নয়মাস যুদ্ধের ধাক্কা টা সামলে উঠতে পারেনি তখনো। এমন সময়ে ঢাকাতে নিজের বাসায় ধর্ষিত হয়ে খুন হন একটি মেয়ে মিলি, যার কিনা মাত্র তিন মাস আগে বিয়ে হয়েছিল। ব্যাংকার স্বামী মিনহাজ বাসায় এসে মৃত স্ত্রীর নগ্ন দেহ দেখতে পায়। তদন্ত করতে আসে এসআই এসএম হায়দার এবং এএসআই ( লেখক)। এসএম হায়দার একজন সৎ পুলিশ অফিসার এবং মুক্তিযোদ্ধা। তারা দুজনেই প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যায় আসল খুনী কে ধরার জন্য। ভিক্টমের হাসবেন্ড মিনহাজ কে সন্দেহ করলেও ঘটনা মোড় নেয় অন্য দিকে। এ ব্যাপারে সাহায্য করে মিলির বান্ধবী রামজিয়া। অনেক চেষ্টার পর খুনী কে পাওয়া গেলেও রাজনৈতিক নেতার অপশক্তির কাছে হার মেনে যেতে হয়। অমীমাংসিত থেকে যায় ঘটনা টি। তছনছ হয়ে যায় কয়েকটি জীবন। গল্পটি দুটি সমান্তরালে চলতে থাকে। ২৪ বছর আগের আর পরের সময়ে। ২৪ বছর আগের এএসআই যে কিনা ২৪ বছর পর একজন পরিচিত লেখক যে কিনা তার সেই অমীমাংসিত কেস টির লিখিত রুপ দিতে চান। ঘটনার শেষ পরিনতি জানতে চান। সেই জন্য খুজে বের করেন সেই রামজিয়া কে। এরপর মিনহাজ কে। এরপর খুজে পান এক বিস্ময়কর সত্য। কি ছিল সেই সত্য??? মিলির খুনী কি অন্য কেউ ছিল নাকি আসল খুনী তার উপযুক্ত শাস্তি পেয়েছিল। গল্পের প্রায় পুরোটা জুড়ে ছিল লেখক আর রামজিয়ার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক। ছিল অব্যক্ত ভালবাসা। সিনিয়র অফিসারের প্রতি জুনিয়রের ভালবাসা। ভাইয়ের জন্য ভাইয়ের ভালবাসা। দুজন বিপরীতধর্মী মানুষের চিন্তাভাবনার দ্বিমত, যুক্তিতর্কের ফারাক কিন্তু একে অপরের জন্য অপরিসীম ভালবাসা। । মৃত স্ত্রীর প্রতি স্বামীর অকৃত্রিম ভালবাসা।একজন খুনীর বেপরোয়া জেদ আর চাঞ্চল্যকর পরিণতি। উঠে এসেছে সত্তর দশকের কিছু চিত্র। মিলি আর রামজিয়ার বর্ণনা তখনকার মেয়েদের স্টাইলের বাস্তব চিত্র ফুটিয়ে তুলেছে। যুদ্ধ পরবর্তী সময়ের অস্থিরতা, রাজনৈতিক অবস্থা, শেখ মুজিবের হত্যাকান্ড ইত্যাদি। থ্রিলার প্রেমীদের জন্য খুবই উপযুক্ত বই। প্রথমে একটু ঢিম গতিতে চললেও পরে আছে পরিপূর্ণ টুইস্ট। সবচেয়ে ভাল লেগেছে হায়দার ভাইকে। এসএম হায়দার। যার জন্য কেদেছি। মনের গভীরে থাকবে হায়দার ভাইয়ের জন্য ভালবাসা আর শ্রদ্ধা। আর কাউকে দেয়া কথা রাখা। কেউ কেউ কথা রাখে। কেউ কেউ আসলেই কথা রাখে
Was this review helpful to you?
or
গল্পের উপস্থাপনা অসাধারণ। ভাষার প্রকাশ অত্যন্ত সহজ ও সাবলীল বলে মনে হয়েছে। চরিত্রের অবতারণাগুলোও বেশ সহজভাবেই হয়েছে। কোনো চরিত্রকেই হুট করে গল্পে ঢুকে পড়েছে- এমনটা মনে হয়নি। আর গল্প বলার ধরণটাও আমার কাছে বেশ ভালই লেগেছে। সবথেকে ভাল লেগেছে কিছুক্ষণ পরপর হতবাক করে দেওয়ার মতো ঘটনার অবতারণা। পুরো গল্পটাতে অন্তত দুই-তিন জায়গায় রীতিমত অবাক হয়ে গেছি। সব মিলে অসাধারণ লেগেছে আমার কাছে। বিদ্র: গল্পের অন্যতম চরিত্র হচ্ছে মিনহাজ (ধর্ষণ ও হত্যার শিকার হওয়া মিলির স্বামী)। তিনি তার স্ত্রী-কে দেওয়া কথা রেখেছেন। গল্পটা পড়ার পর শুধু একটা কথাই আপনার মনে হবে- সত্যিই, কেউ কেউ কথা রাখে।
Was this review helpful to you?
or
মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন এর ব্যতিক্রমধর্মী একটি উপন্যাস "কেউ কেউ কথা রাখে"। আগের কাজগুলো থেকে অনেকটাই আলাদা। ভালো লেগেছে।
Was this review helpful to you?
or
বইটির প্লট আমাকে ভীষণভাবে টেনেছিলো,চরিত্রগুলোর প্রতি ভীষণ আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছিলাম,অনেকের কাছে তেমনটা নাও হতে পারে। কিন্তু কাহিনী যেভাবে এগোচ্ছিলো তাতে আমি আর নিজেকে সামলাতে পারিনি চরিত্রগুলোর নির্মম পরিহাসের জন্য। আর শেষটা যে এভাবে চমকে দিয়ে উল্টে যাবে তা কল্পনাও করিনি! নাজিম ভাইয়ের বেস্ট বইয়ের মধ্যে অবশ্যই এটি সবার উপরে থাকবে। বইটি শেষ করে কষ্ট হলেও নিজেই নিজেকে শুনিয়েছি, আসলেই " কেউ কেউ কথা রাখে " আসলেই! !! Must Read.
Was this review helpful to you?
or
#রকমারি_রিভিউ_প্রতিযোগ_জুলাই #বই_রিভিউ_১৭ #কেউ কেউ কথা রাখে #লেখক: মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন #বইয়ের_ধরণ: থ্রিলার #প্রকাশনী: বাতিঘর #পৃষ্ঠা: ২৬৯ #মুদ্রিত_মূল্য: ৩০০ টাকা #ব্যক্তিগত_রেটিং: ৮/১০ . . থ্রিলার পড়ে কেউ কখনো কেঁদেছেন? নাজিম উদ্দিনের 'কেউ কেউ কথা রাখে' পড়ে কেঁদেছি। আমি এতটাও নরম বা রোমান্টিক না। যে বই পড়ে কেঁদে ফেলব। তার ওপর আবার থ্রিলার বই! তাও বাধ্য হয়েছি। . . কেউ কেউ কথা রাখে। আসলেই কেউ কেউ কথা রাখে। সদ্য বিবাহিত এক তরুণীকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়। খুনিকে খুঁজতে মরিয়া হয়ে ওঠে দুজন এস আই। কিন্তু খুনিকে পেলেও একাত্তর পরবর্তী রাজনৈতিক নৈরাজ্য, ক্ষমতার অপব্যবহার, রাজনৈতিক দলের ক্ষমতা এসবের ছত্রছায়ায় বেড়ে ওঠা খুনিকে তারা আটকে রাখতে পারেননি। . . খুন হয়ে যাওয়া মিলির বন্ধু ছিল রামজিয়া শেহরিন নামে এক তরুনি। তার সাথে ঘটনাক্রমে পরিচয় হয়ে যায় তদন্তকারি জুনিয়র এস আইয়ের। সে বুঝতে পারে তার প্রতি ক্রমশই দুর্বল হয়ে যাচ্ছে সে। কিন্তু রামজিয়া ছিল তৎকালীন স্মার্ট তরুনিদের রোলমডেল। সামান্য একজন এস আই হয়ে তার ওরকম কারো প্রতি দুর্বল হওয়াটা ছিল যথেষ্ট বেমানান। . . সিনিয়র সাব ইন্সপেক্টর এস এম হায়দার এর ক্যারেক্টার টাই ছিল সবথেকে বেশি রোমাঞ্চকর। যে কিনা ছিল একজন মুক্তিযোদ্ধা সাথে সাথে তৎকালীন মুজিব সরকারের এক কট্টর সমালোচক। এই ক্যারেক্টার টির প্রতি ধীরে ধীরে মায়ায় পড়ে গিয়েছিলাম এবং ইনিই শেষমেষ কাঁদতে বাধ্য করেছেন। ইচ্ছা হচ্ছিল যেন এই ক্যারেক্টার টা নাজিম উদ্দিনের অন্য বইতেও থাকে কিন্তু সেটা আর সম্ভব না। কারন... যাহোক এরকম হাজারো হায়দারকেই আমরা হারিয়েছি এবং প্রতিনিয়ত হারিয়েও যাচ্ছি। . . মিলি হত্যাকান্ডের প্রায় দুই যুগ পর সেই জুনিয়র এস আই হয়ে উঠেন একজন নামকরা লেখক এবং তিনি এই পুরো হত্যাকান্ডের ঘটনাটি একটি বই আকারে লিখে ফেলেন। কিন্তু সেই বই তিনি প্রকাশককে প্রকাশ করার একটি নির্দিষ্ট সময় বেধে দিয়েছেন। সেই সময় একমাত্র প্রকৃতিই বলে দিতে পারবে। . . তবুও বইটির শেষ অংশ তখন অব্দিও লেখকের অজানা ছিল। দুইযুগ পরে এসে শেষমেশ তিনি এমন কিছু সত্য জানতে পারেন যেটা দিয়ে তিনি লেখাটা শেষ করতে পারলেও সাথে সাথেই বইটি প্রকাশ করতে পারেন নি। তার জানা সেই সত্যটাই ছিল গল্পের মূল টুইস্ট। বইট প্রকাশের জন্য তাকে অপেক্ষা করতে হয়েছে সেই নির্দিষ্ট সময়ের... . . বইয়ে একাত্তর পরবর্তী সময়ের যে রাজনৈতিক নৈরাজ্যের বর্ণনা পাওয়া যায় সেটার সাথে আমাদের বর্তমান সময়ের দেশের অবস্থাও খুবই সামঞ্জস্যপূর্ণ। এজন্যই হয়ত পাঠক আরো বেশি মুগ্ধ হবেন। . . বইয়ের বাধাই একদম ই ভালো ছিলনা। বানান ভুল তুলনামূলক কম ই ছিল। প্রচ্ছদ, প্রিন্ট, পেজ কোয়ালিটি ভালো ছিল। . #হ্যাপী_রিডিং
Was this review helpful to you?
or
বই: কেউ কেউ কথা রাখে লেখক: মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন প্রকাশনায়: বাতিঘর প্রকাশনী প্রকাশকাল : ডিসেম্বর ২০১৫ সদ্য স্বাধীন দেশ ঠিক সামলে ওঠেনি তখনো, সে সময় ঢাকা শহরে নিজ বাসায় ধর্ষনের পর খুন করা হয় একটি মেয়েকে। তিন মাস হলো বিয়ে হয়েছে মিলির, স্বামী মিনহাজ ব্যাংকে চাকরি করে। ঘটনার তদন্তের ভার নিলেন সৎ পুলিশ অফিসার ও মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ মোহাম্মদ হায়দার, সাথে ভাতৃপ্রতিম সহকারী। দুজন পুলিশ অফিসার চিন্তাধারা ও স্বভাবে একেবারে ভিন্ন হলেও অন্তরের টান তীব্র। তারা দুজনেই বদ্ধপরিকর - মেয়েটির হত্যাকারীকে খুঁজে বের করতেই হবে। সহায়তার হাত বাড়ালো মিলির ঘনিষ্ঠ বান্ধবী রামজিয়া শেহরিন। সন্দেহভাজনকে পাওয়াও গেলো, কিন্তু রাজনৈতিক চাপে ধরে রাখা গেলো না তাকে। উলোট-পালোট হয়ে গেল কতগুলো জীবন। অমীমাংসিত থেকে গেলো মিলির হত্যাকান্ড। দুই যুগ পর সেই সহকারী পুলিশ অফিসার এখন পুরোদস্তুর লেখক, কাগজের পাতায় ফিরিয়ে আনলেন চাপা পড়ে যাওয়া স্মৃতি। কিন্তু গল্পটার সমাপ্তি যে তার জানা নেই! শেষ খুঁজতে গিয়ে বিস্ময়কর তথ্য জানতে পারলেন তিনি। মিলি কি সুবিচার পেলো তবে? পাঠপ্রতিক্রিয়া: 'কেউ কেউ কথা রাখে' - থ্রিলারটিকে ঠিক অনুবাদ বলা যাবে না। স্প্যানিশ লেখক এদুয়ার্দো সাচেরির জনপ্রিয় একটি উপন্যাসকে মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন ঢেলে সাজিয়েছেন বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে। মূল গল্পটা ঠিক রেখে, সত্তুরের দশকের রাজনৈতিক আবহ আর দৃশ্যপট যোগ করেছেন তাতে। টানটান থ্রিলার যারা ভালোবাসেন তাদের হয়তো গল্পটা একটু ঢিমে মনে হতে পারে। গল্পের অনেকটা জুড়ে আছে রামজিয়া আর লেখকের রসায়ন, সেইসাথে আছেন হায়দারভাই। এস এম হায়দার চরিত্রটাকে পাঠকের ভালো লাগতেই হবে। আমাদের দেশের শিল্পমাধ্যমগুলো সাধারণত সচেতনভাবে এদেশের রাজনৈতিক সত্যটাকে এড়িয়ে যান। চলচ্চিত্র থেকে বই - সবখানেই একটা নিরাপদ অবস্থান ধরে রাখা হয়। মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন সাহসিকতার সাথে সরাসরি এই বইয়ে সরকারী ক্ষমতার অপব্যবহার, বিচারহীনতা এবং সাধারণের ক্ষোভের কথা বলিয়েছেন হায়দারের মুখ দিয়ে। বঙ্গবন্ধুর শাসনামল নিয়ে খোলামেলা চিত্রায়ণ ভুল বোঝার সুযোগ রাখে, তবে লেখক সেই ঝুঁকিটা নিয়েছেন। আরেকটা দিকের প্রশংসা করতেই হয়। বর্তমানে কোন এক অজ্ঞাত কারণে থ্রিলার লেখকরা অশালীন ভাষা এবং গালিগালাজের দিকে খুব ঝুঁকেছেন। এই গল্পে সে অভিজ্ঞতাটা হয় নি, কিছু যা ছিল সেটা কাহিনীর প্রয়োজনে চরিত্রের মুখে এসেছে তাই অস্বস্তিকর লাগে নি। গল্পের উপস্থাপনা ছিল সত্তুর দশকের উপযোগী, রামজিয়া আর মিলির বর্ননা পড়লেই সত্তুরের আধুনিকা নারীদের সাথে মিলানো যায়। বইয়ের প্রচ্ছদ গল্প অনুযায়ী খুব একটা অর্থবহ না হলেও দেখতে সুন্দর। বাঁধাই-ও উন্নতমানের। টুকটাক কিছু ছাপার ভুল ছিলো, এড়িয়ে যাওয়া যায়। অনেকেই নিশ্চয়ই পড়ে ফেলেছেন, যারা এখনো পড়েননি পড়তে পারেন মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিনের নীরিক্ষাধর্মী থ্রিলার 'কেউ কেউ কথা রাখে'।
Was this review helpful to you?
or
osadharon
Was this review helpful to you?
or
সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় এর " কেউ কথা রাখেনি " - এক কাব্যিক অভিযোগ। মানবমন খুব অদ্ভুত। জীবনের এক পর্যায়ে গিয়ে হয়তো আমরা সকলেই হিসেব কষতে বসি পাওয়া - না পাওয়ার। দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে ভাবি আসলেই কেউ কথা রাখেনি,কেউ কথা রাখেনা! কিন্তু চাইলেও কেউ কথা রাখতে পারেনা কি? এই বই পড়ার পর আপনি অদ্ভুতভাবে এই প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন। ঘোলা চোখে বলবেন, হ্যাঁ কেউ কেউ কথা রাখে! এই বইটির রিভিউ এক লাইনেই দেয়া সম্ভব। কেমন হবে তা? রিভিউ হচ্ছে - কেউ কেউ কথা রাখে!নামকরণের সার্থকতা ঠিক এখানেই। আমার দেখামতে লেখক বরাবর নামকরণের ব্যাপারে সিদ্ধহস্ত। নাম গুলি একদিকে যেমন ব্যতিক্রমী, চমৎকার অন্যদিকে তেমনি কাহিনীর সাথে এক সুতোয় গাঁথা। এখানেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। এই গল্পের প্লট অদ্ভুত এক সময়ের। আমাদের স্বাধীনতার ঠিক পরবর্তী সময়। ১৯৭৪-৭৫ সাল,সদ্য স্বাধীন হওয়া একটি টালমাটাল দেশ। স্বাধীন দেশের জনগণের প্রত্যাশা ও আশাভঙ্গ, চারিদিকে সামাজিক ও রাজনৈতিক অস্থিরতা। ঠিক এহেন পরিস্থিতি আর সময়ে একটি খুনের কাহিনী। শুধু খুন নয়,সেই সাথে ধর্ষণ। এই জায়গায় আমার এক বিশাল প্রশ্ন। এইযে আমাদের বর্তমান সময়ে যেসব ধর্ষণ হচ্ছে এবং ধর্ষকরা বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে - এটি নতুন কিছু নয়! সেই শুরুতেও যেমন ছিলো এখনো তেমনি। অপরাধীর রাজনৈতিক ছত্রছায়াতে বহাল তবিয়তে বিচরণ - আমাদের দেহ গঠনের শুরুতেই অস্থিমজ্জায় এই নিয়ম গেঁথে দেয়া হয়েছিলো। বর্তমান যুগে বসে সেই সময়ের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট তুলে ধরার মত সাহসী কাজটি করেছেন নাজিম ভাই। এজন্য তিনি প্রশংসার দাবিদার। ফিরে যাই কাহিনী সংক্ষেপে। হ্যাঁ একটি ধর্ষণ ও অতঃপর খুনের গল্প এটি। মিলি নামের সদ্য বিবাহিতা এক তরুণী। বিয়ের তিন মাসের মাথায় ধর্ষণ করে খুন করা হলো তাকে। খুনের তদন্তের ভার পড়লো যে দুইজন পুলিশ অফিসারের ওপর তাদের চিন্তাধারা ও স্বভাব সম্পূর্ণ বিপরীত। কিন্তু এক জায়গায় তারা দৃঢ়বদ্ধ - মিলির খুনিকে চিহ্নিতকরণ। শুরু হলো তদন্ত, অবশেষে গ্রেফতার করা হলো সসন্দেহভাজন কে। কিন্তু তারপর? যা হবার তাই হলো! হত্যারহস্য থেকে গেলো অমীমাংসিত। খুনীর বিচার হলোনা। মিলির স্বামী চেয়েছিলো কোন ভাবেই যেন আসামীর ফাঁসি না হয়।অদ্ভুত না? হ্যাঁ সেই মানুষটি চেয়েছিলো খুনির শাস্তি দীর্ঘায়ীত করতে,সে যেন ধুঁকে ধুঁকে মরে! যেখানে আসামীর বিচার হলোনা সেখানে মিলির স্বামীর ইচ্ছে পূরণ তো বহু দূরের কথা! এই ঘটনা মারাত্মক ভাবে বদলে দিলো তদন্তকারী সহ কয়েকজন মানুষের জীবন। প্রায় ২৪ বছর পর স্মৃতি ভারাক্রান্ত এক লেখক সেই অমীমাংসিত হত্যারহস্য নিয়ে নতুনভাবে লড়তে গিয়ে মুখোমুখি হলো একটি চমকে যাবার মত ঘটনার। জানতে পারলো এক বিস্ময়কর সত্য। অন্যদিকে সে পড়লো এক নতুন সঙ্কটে। সত্য প্রকাশ করার ক্ষমতা তার হাতে নেই। তাকে নির্ভর করতে হবে প্রকৃতির ওপর। কথায় আছে,প্রকৃতি সময়ের সাথে সব কিছুর সমাধান করে দেয়। প্রয়োজন শুধু অপেক্ষার। আমার পড়া লেখকের প্রথম বই ছিলো রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনো খেতে আসেননি। এরপর পড়েছিলাম বাস্টার্ড সিরিজ পুরোটা। ভালো লেগেছিলো। এই বই পড়ে পুনরায় এক নতুন ভাললাগায় আচ্ছন্ন হয়েছি। সম্পূর্ণ ভিন্নধর্মী একটি বই। চমকে যাবার মতো। আর শেষ করার পর পরিতৃপ্তির সাথে বলতে বাধ্য হয়েছি - কেউ কেউ কথা রাখে। প্রথমদিকে কাহিনী সাধারণ আর পরিচিত মনে হবে। একটি ধর্ষণ,খুন এবং তার তদন্ত। আপনি দ্রুত জেনেই যাবেন অপরাধী কে। তবুও আপনাকে শেষ অবধি পড়তে হবে সত্যের সন্ধানে। এ প্রসঙ্গে একটি ছোট ঘটনা উল্লেখ করি। আমার বান্ধবী পড়ার জন্য আমার কাছে বই চেয়েছে। আমি তাকে এই বই দিলাম। কয়েক পেজ পড়ার পর সে খুব বিরক্তি সহকারে আমাকে বললো, এটাতো কোন নতুন ঘটনা নয়। প্রতিনিয়ত বাস্তবেই এসব প্রত্যক্ষ করছি। বই পড়ে কী হবে? আমি মুচকি হেসে তাকে বললাম কষ্ট করে পুরোটা পড়তে। আর বই শেষ করার পর তার অবাক মুখাবয়ব থেকে একটি কথাই বেরিয়েছে -সত্যি কেউ কেউ কথা রাখে! বইয়ের প্রচ্ছদ অসাধারণ লেগেছে। নীল আমার প্রিয় রং। সেই সাথে সময়ের প্রতিচ্ছবি হিসেবে ঘড়ি - ভালো লাগার মত। বানান ভুলের মাঝে চোখে লেগেছে স্বামী আর স্ত্রী। যা লিখা হয়েছে এভাবে - স্বামি, স্ত্রি। হ্রস্ব-ই ব্যবহার আধুনিক বানান রীতি কিনা আমার জানা নেই। স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ের ইতিহাসের ব্যাপারে স্পষ্ট করে কিছুই জানা নেই। বই পড়ে এই ব্যাপারে আগ্রহ তৈরি হয়েছে, বুঝতে পেরেছি অনেক বই ঘাঁটাঘাটি করা প্রয়োজন। হায়দার চরিত্রটি খুব দাগ কেটেছে মনে। একজন সৎ, শক্তিমান যোদ্ধা - একজন পুলিশ অফিসার। সব পুলিশ যদি এমন হতো! এই বইয়ের দুই জায়গায় আমি চরম ধাক্কা খেয়েছি। এক - মাঝামাঝিতে, দুই - শেষে। মাঝের ধাক্কার ভীত ছিলো এই হায়দার। সবশেষে কেউ কথা রাখেনি-এর ঢালাও অভিযোগ থেকে বেরিয়ে আসার জন্য বইটি পড়ার আমন্ত্রণ রইলো।প্রিয় লাইন - " If a writer falls in love with you, you can never die!"
Was this review helpful to you?
or
?আপনি কি এমন একটা বই চান যেখানে রাজনীতি, প্রেম, আবেগ, কষ্ট, ব্যর্থতা, প্রতিশোধ, দেশপ্রেম সবগুলো একসাথে আছে? তাহলে বইটি আপনার জন্য!!!! ?হয়তো লেখাটা একটু অন্যরকম হয়ে গেছে কিন্তু এটা বলা ছাড়া আমার আর ভাষা নেই। ?এমন একটা বইয়ে সেই সময়কার বাংলাদেশ তুলে ধরা হবে সেটুকু কতটাই আশা করা গিয়েছিল!!! কিন্তু সেই আদি ঢাকার রূপ পাওয়া যায় এখানে। স্টেডিয়াম, রাস্তা, ফ্যাশন, বাড়িঘর, পারিপাশ্বিক অবস্থা সবগুলোর খন্ড খন্ড কাল এখানে আমরা খুঁজে পাই। ?বইটা শেষ করার পর আমার মনে হইছিলো এই গল্পটা লেখকের কাছ থেকে শুনি। যদিও বলা আছে সত্যঘটনা অবলম্বনে লিখা, তবুও এভাবে লেখক তুলে ধরবে সেটা আশা করতে পারিনি। ?তবে প্লট বুঝে বেশকিছু অশ্লীল কথা লিখেছেন লেখক। তবে থ্রিলার গল্পের আদলে এটা মানানসই। ? তবে রামজিয়ার চরিত্রটাকে আরেকটু বিস্তৃত করা যেত বলে আমার মনে হয়। লেখক আর রামজিয়ার মাঝে সম্পর্কের মাঝে আরেকটু নাটকীয়তা থাকলে ভালই লাগতো। এস ই হায়দার এর কথা কি বলব...উনিই বিশেষ করে তখনকার রাজনীতির নেতিবাচক দিকগুলো উপস্থাপন করে গেছেন। এছাড়া সবাই ঠিকঠাক। তবে রামজিয়ার সাথে লেখকের কথাবার্তা কখনো কখনো দীর্ঘ হয়ে গেছে। যেটা কিঞ্চিৎ বিরক্তি প্রকাশ পায়। এককথায় অসাধারণ। অবসর সময়ে এমন বই পড়লে নির্ঘাত ভালো সময় কাটবে বলে আমার বিশ্বাস।
Was this review helpful to you?
or
#আড্ডাখানায়_রকমারি #রিভিউ_২০২৩ [স্পয়লার এলার্ট- হালকা স্পয়লার চলে এসেছে।] ❝বঙ্গবন্ধু! তোমার স্বাধীন দেশে হায়দাররা বেঘোরে মরে পড়ে থাকে। মিলিদের জীবনস্বপ্ন ধর্ষিত হয়। কিন্তু ইমতিয়াজরা বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়ায়!❞ সময়টা মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময়কাল। স্বাধীনতার আনন্দ তখনও বাঙালির রন্ধ্রে রন্ধ্রে। একটি স্বাধীন, শৃঙ্খলমুক্ত বাংলাদেশ গঠনের স্বপ্ন তখনো প্রতিটি বাঙালির চোখে মুখে ঝিকমিক করছিল। কিন্তু সময়ের প্রভাবে তাদের সে আশায়ও চিড় ধরতে সময় লাগেনি। সদ্য স্বাধীন একটি দেশে বিশৃঙ্খলা, খু-না-খু-নি, ন্যায় বিচারের অভাব যেন দিনকে দিন প্রকট হয়ে উঠছিল আর বাড়িয়ে দিচ্ছিল সংশয়। ঠিক সে সময়ই একদল ছিল আমাদের গল্পকথকের মতন, যে কিনা বঙ্গবন্ধুর উপর আস্থা রেখে নিজের মনে কিছুটা আশা তখনও পর্যন্ত জিইয়ে রেখেছিলেন। আবার একদল ছিল ঠিক এসএম হায়দারের মতন। নিজেদের র-ক্ত নিলামে তুলে, জীবন বাজি রেখে যে দেশকে তারা স্বাধীন করেছে সে দেশের এমন দুরবস্থা তাদেরকে চরম হতাশায় নিমজ্জিত করে দিচ্ছিল। কেউ কেউ তো বলেই ফেলছিল, ‘আমরা পাকিস্তানি আমলেই ভালো ছিলাম’। কিন্তু আরেকদল ছিল ঠিক ইমতিয়াজের প্রতিবিম্ব। সরকার বিরোধী, দেশ বিরোধী, জাতি বিরোধী! ক্ষমতার লোভ তাদেরকে অন্ধ করে দিয়েছিল পুরোপুরি। অপরাধ করেও স্বাধীন বাংলার বুকে মাথা উঁচিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছিল তারা। এমনই এক বিপর্যস্ত বাংলাদেশ, স্বাধীনতা পরবর্তী পরিস্থিতি, আইনের দৌড়, ক্ষমতার নিচে পিষ্ট হওয়া নিরপরাধ কিছু মানুষকে নিয়েই মোহাম্মদ নাজিম উদ্দীনের এই বইটি... ❝সময় হচ্ছে সত্যের জনক, আর এর মা হচ্ছে আমাদের মন।❞ ——————জিওর্দানো ব্রুনো সময় মানবজীবনের খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ। সময়ের সাথে জীবনের পরিবর্তন ঘটে, পরিবর্তন ঘটে সম্পর্কের। সময় আমাদের থেকে পরিচিত মুখ, পরিচিত স্বভাব এমনকি নিজের পরিচিত আমিটাকেও কেড়ে নেয় নির্দ্বিধায়। সেখানে স্থান পায় নতুন কিছু মুখ, আলাদা কিছু পথ আর চাপিয়ে দেওয়া হয় দায়িত্বের কিছু বেড়াজাল। আমার তো মনে হয়, একটা দীর্ঘ সময় পর আমরা স্বল্পপরিচিত একজন মানুষের সাথে যতটা নির্দ্বিধায় কথা বলতে পারি, অতিপরিচিত কারো সাথে তা খুব সহজে সম্ভব হয় না। কারণ, তখন ‘অতি’ শব্দটায় এসে জেঁকে বসে কিছুটা জড়তা, আরেকটু সংকোচ, আর সাথে থাকে অনেকটা দ্বিধা। মনের মাঝে সংকোচ, দ্বিধা, জড়তার এক পাহাড়সম অনুভূতি নিয়ে দুই যুগ পূর্বের খানিক পরিচিত এক মহিলার সঙ্গে দেখা করতে এসেছেন আমাদের গল্পকথক। সময়ের বেড়াজালে যে কিনা পুলিশের নিতান্তই এক অফিসার থেকে পরিণত হয়েছেন জনপ্রিয় এক লেখকে। কিন্তু জীবনের এ পর্যায়ে এসেও স্মৃতিরা যেন তার সাথে ছল করছে। ভুলিয়ে দিচ্ছে সকল দুঃখ ও আনন্দঘেরা মুহূর্তগুলো। তবে তিনি ভুলতে চান না...ভুলতে চান না চব্বিশ বছর আগের সেই বিভীষিকাময় সময়টিকে। যা কিনা বদলে দিয়েছিল তাকে ও তার আশপাশের বেশ অনেকগুলো মানুষের জীবনের মোড়। তাই তো এ বয়সে এসে নিজের কলমের আঁচড়ে সেই স্মৃতিটুকুকে জীবিত রাখতে চাইছেন তিনি। চাইছেন পৃথিবী জানুক সত্যটি, জানুক মিলি নামক নিষ্পাপ মেয়েটির বুকফাটা আর্তনাদ, মনে রাখুক তার নিষ্পাপ চোখ দুটোকে। সেই সাথে মনে রাখুক তার হায়দারভাইকেও... খু-ন হয়েছে তিন মাসের নববধূ মিলি। শ্বাসরোধ করে হ-ত্যা করা হয়েছে তাকে। কেসটির দায়িত্বে আছেন এসএম হায়দার ও তার সহকারী গল্পকথক। হায়দার সাহেব ক্ষুরধার মস্তিষ্কের অধিকারী হলেও তার সহকারী ছিলেন সহজ, সরল ও হায়দার সাহেবের ভাই সমতুল্য। জোরকদমে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে তারা। খুব সহজেই অপরাধীকে শনাক্তও করে ফেললো। এবার তাকে বাগে পাওয়ার অপেক্ষায়... এতো সহজেই সমস্যার সমাধান হয়ে গেলে তো শুরুতেই গল্পের সমাপ্তি। কিন্তু অপরাধীকে শনাক্ত করার পরেও গল্পের আর কি বাকি থাকতে পারে? এখানেই মূল টুইস্ট। খু-নির মোটিভ, অপরাধ ও অপরাধী সবই জানা। তবুও বইটিতে আছে এক অজানা ইতিহাস, মন কেমন করা এক গল্প, আর আছে কতগুলো মানুষের দীর্ঘশ্বাস। তবুও এসবের তো একটা শেষ হওয়া চাই, তাই না? কিন্তু শেষে কি হয় মিলির খু-নীর? সে কি ধরা পরে আইনের হাতে? নাকি নিজের ক্ষমতার ব্যবহার করে আইনের হাত থেকেও বেঁচে যাবে সে? তবে কি এভাবেই অপরাধীরা বুক চিতিয়ে ঘুরে বেড়াবে যুগের পর যুগ আর নিরপরাধী তাদের ব-লি হতে থাকবে? ?️পাঠপ্রতিক্রিয়া— বইটা পড়ার আগে নামটা কেমন অদ্ভুত লাগছিল। ‘কেউ কেউ কথা রাখে’—এটা আবার কেমন নাম? এর থেকে ’কেউ কথা রাখেনি’এ বাক্যটিই বেশি মানানসই নয় কি? সেজন্যই হয় তো লেখক শেষ চমকটা রেখেছিলেন পাঠকদের জন্য। যেন পাঠকদের দিকে ইঙ্গিতপূর্ণভাবে মন্তব্য করছেন, ‘এরপর আর তোমাদের কিছু বলা আছে কি?’ না, নেই..সত্যিই কিছু বলার নেই আর। এমন একটা সমাপ্তির পরে কোনো আক্ষেপ থাকাটা অন্যায়, বিরাট অন্যায়! ছোটবেলা থেকে এখন পর্যন্ত যে প্রবাদটি সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করে এসেছি আমি, তা হলো- ’শেষ ভালো যার, সব ভালো তার।’ এ বইটির ক্ষেত্রে প্রবাদটি একটু বেশিই মানিয়ে যায়। বইয়ের শুরুতে গল্পগুলো কেমন একটা খাপছাড়া লাগছিল। একই মানুষের দুই বয়সের দুটো ঘটনা সমান্তরালে এগিয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু তাদের কথোকপথন ঘিরে ছিল একটিই ঘটনা। মিলির খু-ন! লেখক দুটো সময়কার অবস্থা একইসাথে চলমান রাখতে গিয়ে খানিকটা গোঁজামিল করে ফেলেছিলেন বোধহয়। নয়তো আমার নিজেরই বুঝতে ভুল হয়েছে। অতীত ও বর্তমানকে গুলিয়ে ফেলছিলাম আমি। সেইসাথে ঘটনাপ্রবাহও খুবই ধীরগতিতে এগিয়ে যাচ্ছিল। তাই খানিকটা সমস্যা হলেও সামান্যতম বিরক্ত হইনি আমি। প্রথম কয়েকটা অধ্যায়ে এ সমস্যা চলমান ছিল অবশ্য। তবে লেখক শেষদিকে এসে নিজের সবটা ঢেলে দিয়েছেন বইটিতে। কিছুটা রোমান্টিকতা, কিছুটা রাজনীতি, কিছুটা ট্র্যাজেডি আর পরিপূর্ণ তৃপ্তি নিয়ে বইয়ের শেষ পৃষ্ঠাটি পড়ছিলাম আমি, খুবই ধীরগতিতে। বারবার মন বলছিল, ‘চমৎকার গল্পটি শেষ হয়ে যাচ্ছে। একটু বেশিই দ্রুত!’ সত্যি বলতে আমি মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময়কার কথা খুব কমই জানতাম। আর জানলেও তা কতটা সঠিক সেটা আমার পক্ষে জানাটা সম্ভব নয়। কিন্তু এই বইটি পড়ে মনে হচ্ছে স্বচক্ষে সেসময়কার অস্থিতিশীলতা দেখেছি আমি, দেখেছি বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ভঙ্গ। কখনো কখনো তো মনে হচ্ছিল লেখক কি কোনো দৈব বলে সেসময়টায় উপস্থিত ছিলেন? নয়তো এতো নিপুণভাবে লিখলেন কি করে? বইটির শেষদিকে বেশ কয়েকটা ধাক্কা যেন পরপর এসে পড়ছিল। অপরাধীর আইনের হাত গলে বেরিয়ে যাওয়া, সাক্ষীদের আত্মগোপন, আর সবশেষে....! এটা মানতে পারিনি আমি। আমার সবচেয়ে প্রিয় চরিত্র ছিল সে। এরপর যখন নীলুভাবির অন্তঃসত্ত্বার ব্যাপারটা আসে! সত্যি বলতে মনে হচ্ছিল বাস্তবের কোনো ঘটনা আমার চোখের সামনে ক্রমাগত ঘটে চলেছে। বারবার মনে হচ্ছিল, তাদের এতোদিনের স্বপ্ন পূরণ হলো, কিন্তু মানুষটা আর কোনোদিন জানতেই পারবে না এ কথাটি। সেজন্যই বোধহয় শেষটা আমাকে এতোটা তৃপ্ত করেছে। এমন শাস্তিই তো অপরাধীদের প্রাপ্য। কিন্তু এভাবে চারদেয়ালের মাঝে নয়, এতে অপরাধ দমন হবে কিনা আমার জানা নেই। এদের শাস্তি মাঝরাস্তায় হওয়া উচিত, সকলের সামনে। প্রতিটি মানুষের দেখা উচিত একজন ধর্ষকের শাস্তি কি হতে পারে! এ বইটিতে যদি আপনি থ্রিল খুঁজেন, তবে খানিকটা হতাশই হবেন আপনি। কিন্তু শেষ পৃষ্ঠা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে পারলে এক অন্যরকম অনুভূতির মুখোমুখি হতে পারবেন। আসলে অনেকদিন পর দারুণ কিছু সময় কাটালাম আমি। আমার প্রিয় বইয়ের তালিকায় যোগ হলো আরো একটি প্রিয় বই। ?️লেখনী ও শব্দচয়ন— ‘মোহাম্মদ নাজিম উদ্দীন’ আমার প্রিয় লেখকদের একজন। তার বই পড়া শুরু করেছিলাম বেগ-বাস্টার্ড সিরিজ পড়ার মধ্য দিয়ে। তারপর থেকেই উনার লিখার ভক্ত আমি। এ বইটি পড়ে তো আরো মুগ্ধ হয়ে গেলাম। লেখনী ও শব্দচয়ন নিয়ে কোনো কথা হবে না। আসলে গল্পের মাঝে এতোটা ডুবে গিয়েছিলাম এতোদিকে নজর দেওয়ার সময় কোথায়? নিঃসন্দেহে এটা উনার সেরা কাজের একটি। হতে পারে এডাপটেশন, তবুও... পরিশেষে, ভালো কিছু মুহূর্ত কাটাতে চাইলে বইটি আপনার জন্যই। দেরি কেন? এখনই পড়ে নিতে পারেন বইটি। অন্য জগতে হারিয়ে গেলে আমি দায়ি না। বই- কেউ কেউ কথা রাখে লেখক- মোহাম্মদ নাজিম উদ্দীন জনরা- মিস্ট্রি থ্রিলার প্রকাশনী- বাতিঘর পৃষ্ঠা সংখ্যা- ২৬৯ মুদ্রিত মূল্য- ৪৫০ টাকা
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ একটি বই। পুরোটা পড়ে শেষ করেছি। আমার অনেক ভালো লেগেছে বইটা।
Was this review helpful to you?
or
'কেউ কেউ কথা রাখে' বইটির লেখক মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন,বইটি একজন লেখকের স্মৃতিকথা ধরণের লেখা।প্রায় দুই যুগ আগে মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী স্বাধীন দেশে ঘটে যাওয়া তার জীবনের কিছু ঘটনার আত্মকথন । লেখক সেই সময় পুলিশ বাহিনীতে কর্মরত ছিলেন। মিলি নামের সদ্য বিবাহিতা এক তরুণীকে বিয়ের তিন মাসের মাথায় ধর্ষণ করে খুন করা হলো ।এই মামলার তদন্তের ভার পড়লো লেখক ও তার উধ্বতন কর্মকর্তার উপর। মোটামুটি সহজেই খুনি কে গ্রেফতার করে ফেললো তারা। খুনী নিজেই স্বীকারোক্তি দিল তার অপরাধের। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময়ের আরো অনেক অপরাধীর ক্ষেত্রে যেটা ঘটেছে সেটাই ঘটলো । রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে বের হয়ে গেল অপরাধী। একই সাথে লেখক ও তার সাথে সংশ্লিষ্ট কয়েক জনের জীবন মারাত্মক ভাবে বদলে দিলো ঘটনাটি। এই বইটি এদওয়ার্দো সাচেরি'র "la pregunta de sus ojos"-এর ছায়া অবলম্বনে লেখা।লেখক দেশীয় পটভূমি তে বইটা দুর্দান্তভাবে উপস্থাপন করেছেন। বেশ সহজ সরল একটা কাহিনী কে মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী পরিস্থিতিতে অসাধারণভাবে উপস্থাপন করেছেন। সম্ভবত বাংলা সাহিত্যের সবচেয়ে বেস্ট আ্যডাপ্টেশন। আর স্বাধীনতা পরবর্তী সময় টা ছিল আমাদের দেশের জন্য ছিল একটা অন্ধকার যুগ যেটা এখন বেশির ভাগ মানুষই স্বীকার করতে চায় না। যে কারণেই হোক আমাদের দেশের লেখকরা তাদের লেখায় সেই সময় তাকে অগ্রাহ্য করেন। তবে লেখক এই বইয়ে মোটামুটি নিরপেক্ষ ভাবে সেই সময়টাকে তুলে ধরেছেন।অাগ্রহী পাঠকরা বইটা একবার পড়ে দেখতে পারেন। অাশা করি, হতাশ হবেন না।
Was this review helpful to you?
or
রিভিউঃ কেউ কেউ কথা রাখে লেখকঃ মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন প্রকাশকঃ বাতিঘর প্রচ্ছদঃ ডিলান পৃষ্ঠা সংখ্যাঃ ২৬৯ মূল্যঃ২৬০ টাকা মাত্র রেটিংঃ ৪.৫/৫ কেউ কেউ কথা রাখে। সত্যিই রাখে।... এই মিথ্যে বলার শহরেও এমন অনেক মানুষ আছে যারা তাদের প্রিয়জনকে দেয়া কথা রাখে। এর জন্য যতো বাঁধা ঝঞ্ঝাট পেরোতে হোক না কেনো। তারা তাদের কথা রাখেই! এমনই এক কথা রাখার গল্প নিয়েই নাজিম উদ্দিনের নিরীক্ষাধর্মী থ্রিলার "কেউ কেউ কথা রাখে"। এই গল্পের পটভূমি ১৯৭৪/৭৫ সাল। সদ্য স্বাধীন হওয়া দেশটির চারদিকে তখন সামাজিক ও রাজনৈতিক অস্থিরতা। টালমাটাল দেশটি তখন নিজেকে সামলাতে ব্যস্ত ঠিক সেসময় ঢাকা শহরের নিজ বাসায় মিলি নামের এক সদ্য বিবাহিত নারীর খুন হয়। শুধু খুন না! মিলি নামক ওই মেয়েটিকে ধর্ষণের পর করে খুন করা হয়!... ঘটনার তদন্তের ভার পরলো সৈয়দ মোহাম্মদ হায়দার নামক এক সৎ পুলিশ অফিসারের উপর এবং তাকে তদন্তে সাহায্যের ভার পরে তারই সহকারী পুলিশ অফিসারের উপর। এ দুজনার চিন্তাধারা, মতবিরোধ ও রাজনৈতিক চিন্তা ধারা আলাদা হলেও তারা একে অপরের ভ্রাতৃবৎ।এ দুজনই মিলির খুনীকে ধরতে বদ্ধপরিকর। তখন তাদেরকে সাহায্য করতেই এগিয়ে আসে মিলির ঘনিষ্ঠ বান্ধবী রামজিয়া শেহরিন। রামজিয়া শেহরিনের সাহায্যে তারা খুনীকে চিহ্নিত করতে সক্ষম হয়। এবং অনেক চেষ্টার পর গ্রেফতারও করে ফেলে খুনীকে। কিন্তু এটা যে বাংলাদেশ!এই দেশে কি ধর্ষণের বিচার হয়? নাহ! হয় না! মিলির খুনীরও হয়নি। তবে এই একটি মাত্র কেইস বদলে দিয়েছিলো অনেক গুলো মানুষের জীবন! আর অমীমাংশিত থেকে গিয়েছিল মিলির হত্যাকান্ড। দুই যুগ পরের কথা। সেই সহকারী পুলিশ এখন দেশের নামজাদা লেখক। মিলির সেই নির্মম হত্যার স্মৃতি তিনি কাগজের পাতায় ফিরিয়ে আনলেন। কিন্তু গল্পের সমাপ্তি যে তার জানা নেই! অমীমাংসিত সেই হত্যারহস্যের সমাপ্তি জানার জন্য নতুন উদ্যমে লড়তে গিয়ে মুখোমুখি হলো এক বিষ্ময়কর সত্যের! এটা এমন এক সত্য যা জানতে পারলে পাঠক তার ঘোলা চোখ দুটো মুছতে মুছতেই বলে উঠবে "সত্যিই কেউ কেউ কথা রাখে!" "কেউ কেউ কথা রাখে" স্প্যানিশ লেখক এদুয়ার্দো সাচেরির "লা প্রেহুন্তা দে সুস ওহোস" র ছায়া অবলম্বনে লিখা হয়েছে। বলতে গেলে নাজিম উদ্দিন বাংলাদেশের প্রেক্ষাগৃহে সত্তর দশকের অস্থির রাজনৈতিক আবহ যোগ করে ওই উপন্যাসটিকেই সাজিয়েছেন। এই গল্পের কাহিনী প্রথম থেকেই ঢিমেতালে ভাবে এগিয়েছে। তবে আপনি খুব তাড়াতাড়িই জেনে যাবেন অপরাধী কে। এই গল্পে টুইস্ট ও তেমন নেই। তাছাড়া বইটা টেনেটুনে বড় করা হয়েছে বলেও আপনার মনে হবে। তারপরও এক অন্যরকম টান উপলব্ধি করবেন বইটা নিয়ে যা আপনাকে দিয়ে সবটা বই পড়িয়েই ছাড়বে।কোথাও একটুও বিরক্তি আসবে না। আর সবটা পড়লেই আপনি খুজে পাবেন আসল এক সত্য! যা আপনাকে বলতে বাধ্য করবে "সত্যি কেউ কেউ কথা রাখে!" সেই দিক থেকে লেখক সার্থক। আচ্ছা প্রেমের রঙ নীল নাকি বেদনার? যাই হোক এই বইয়ের প্রচ্ছদের রংটাও নীল। যেটা প্রেম বা বেদনা দুটোর একটা হয়তো প্রকাশ করেছে। কিংবা কে জানে দুটোই হয়তো প্রকাশ করেছে। আর ঘড়ি! সেটাতো সময়েরই প্রতিচ্ছবি! যা আমার কাছে ভালো লেগেছে। সবমিলিয়ে নাজিম উদ্দিনের "কেউ কেউ কথা রাখে" অসাধারণ একটি বই। হয়তো এতোদিনে অনেকেই বইটা পড়ে ফেলেছেন। যারা পড়েন নি তারা পড়ে ফেলতে পারেন। ভালো লাগবে আশাকরি।
Was this review helpful to you?
or
আমার কাছে মনে হয়েছে এটাই নাজিম উদ্দিনের শ্রেষ্ঠ বই
Was this review helpful to you?
or
কেউ কেউ কথা রাখে আসলেই রাখে। যেমন রেখেছিল..... উঁহু বলা বারণ, নিজেই জেনে নিয়েন। আচ্ছা বলেন তো যৌবনে যাকে পেতে চেয়েছেন, মনের মধ্যে যার জন্যে ভালোবাসা পুষে রেখেছেন, তার সাথে দুই যুগ পর দেখা হলে কী করবেন? আচ্ছা বাদ দেন। অন্য একটা বিক্ষুব্ধ সময়ের গল্প বলি চলুন। যুদ্ধের বছর তিনেক পরের কথা। দেশটা তখনও শিশু, দাঁড়াতে শেখেনি ঠিকভাবে। আইন ব্যবস্থাও এখনকার মত উন্নত ছিল না। তখন সদ্য বিবাহিত এক মেয়ে খুন হয়। ধর্ষণ করে খুন করা হয় ওকে। খুনের তদন্ত শুরু করেন আজিমপুর থানার তৎকালীন সাব ইন্সপেক্টর এস এম হায়দার এবং তার এসিস্ট্যান্ট। তদন্ত এগিয়েছিল ভালই। কিন্তু.... তখন আবার বাকশাল গঠন করার তোড়জোড় চলছিল। দেশ উন্মাতাল ছিল। সেই সময়ে প্রভাবশালী নেতার জোরে বাধাগ্রস্ত হয় তদন্ত। আচ্ছা ভিন্ন একটা গল শুনাই চলুন। মোটামুটি ভালই বিখ্যাত একজন লেখক, যিনি কিনা থ্রিলার, ক্রাইম ফিকশন লিখেন। ধরা যাক সেই লেখকের নাম মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন। তো, এই লেখক নতুন একটা মার্ডার ক্রাইম ফিকশন লিখেছেন। প্রকাশককে পাঠিয়েওছেন। কিন্তু..... প্রকাশককে নিষেধ করেছেন প্রকাশ করতে। এমন একটা দুর্দান্ত প্লটের লেখা নিয়ে প্রকাশক বসে আছেন, কিন্তু ছাপাতে পারছেন না! লেখক একট শর্ত জুরে দিয়েছেন। সেই শর্ত অনুযায়ী একটা নির্দিষ্ট সময় পর, কিংবা বলা যায় অনির্দিষ্ট একটা সময়ে লেখাটা প্রকাশ করতে পারবে। একটা ঘটনা ঘটার পর, সেটার জন্য প্রকৃতির উপর ভরসা করে বসে থাকতে হবে। প্রকাশক জীবদ্দশায় থাকতে যদি সেই সময় না আসে তবে তার উত্তরাধিকার এই লেখা প্রকাশ করবে এমন উইল করা আছে। ভাবা যায়? কী আছে ঐ পান্ডুলিপিতে যা এখন ছাপানো যাবে না! রামজিয়া শেহরিনের মত কারো টান উপেক্ষা করা কঠিন। ৭৫ সালের সেই সময়ে আধুনিক মেয়ের রোল মডেল বলা যায় ওকে। যেমন সুন্দরি তেমনি তার ব্যক্তিত্ব। দুই যুগ পর তার সামনে বসে আছেন আলোচ্য লেখক। এতদিন পর তার হাতে একটা পাণ্ডুলিপি ধরিয়ে দিলেন। একটা অসমাপ্ত পান্ডুলিপি। শেষ করার জন্য রামজিয়ার সাহায্য প্রয়োজন। মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিনের কেউ কেউ কথা রাখে বইটিকে একটি নিরীক্ষাধর্মী থ্রিলার বলা যায়। বইটি আর্জেন্টাইন লেখক এদুয়ার্দো সাচেরি'র 'লা প্রেহুন্তা দে সুস ওহোস' বইয়ের ছায়া অবলম্বনে লেখা। বইটি পড়ার পর লেখকের ভালো লেগে যায়, সিদ্ধান্ত নেন অনুবাদ করতে যাবেন। কিন্তু অনুবাদ করতে গিয়ে দেখলেন চরিত্রগুলো নিজে থেকেই বদলে যাচ্ছে, পটভূমিটাও বদলে গিয়ে আমাদের দেশে চলে আসতে চাইছে। কী আর করা অগত্যা লিখে ফেললেন নিরীক্ষাধর্মী থ্রিলার কেউ কেউ কথা রাখে। বইয়ের গল্পটা শুরু থেকেই ঢিমেতালে এগিয়েছে। অবশ্য এভাবে এগুলেও বিরক্তি আসেনি পড়তে গিয়ে। তেমন কোনো একশন কিংবা মারামারি নেই। সাসপেন্স এবং টুইস্টও অনেক কম। কিন্তু পড়ে যেতে হয়েছে অমোঘ টানে। পুরো বইয়ের গল্পটা খুব ছোটই, চাইলে ১৫০-২০০ পৃষ্টাতেই শেষ করে দেয়া যেত। কিন্তু পড়তে গিয়ে খেয়াল করলাম বর্ণনাটুকু খারাপ লাগছে না। বরং বেশ উপভোগ্যই ছিল। সাধারণ সামাজিক একটা গল্পের সাথে একটা মার্ডার মিস্ট্রির মিশেল বলা যায়। অনেকেই বলেছেন এই বইটা মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিনের সেরা বই। আমার কাছে কিন্তু সেটা মনে হয়নি। এরচেয়ে সুন্দর বই উনি লিখেছেন। বাতিঘরের অন্যান্য বইয়ের মত এটাতেও টাইপিং মিস্টেক আছে ভালো পরিমাণেই। বইয়ের বাঁধাই কাগজের মান এবং প্রচ্ছদ বরাবরের মতন বাতিঘর স্ট্যান্ডার্ড। থ্রিলারপ্রেমীদের মধ্যে যারা এখনো এই বইটা পড়েননি, তারা দ্রুত শুরু করে দিতে পারেন। হ্যাপি রিডিং। বইঃ কেউ কেউ কথা রাখে লেখকঃ মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন প্রকাশকঃ বাতিঘর প্রকাশকালঃ ডিসেম্বর ২০১৫ প্রচ্ছদঃ ডিলান পৃষ্ঠা সংখ্যাঃ ২৭০ মূল্যঃ ২৫০ টাকা মাত্র
Was this review helpful to you?
or
#রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগিতা বই-কেউ কেউ কথা রাখে লেখক-মোহাম্মদ নাজিম উদ্দীন ধরন- উপন্যাস পৃষ্ঠা-২৬৯ মূল্য-২৮০ প্রকাশনী-বাতিঘর "কেউ কেউ কথা রাখে" এদওয়ার্দো সাচেরি'র la pregunta de sus ojos ছায়া অবলম্বনে লেখা। আবার এই কাহিনী অবলম্বনে The secret in Their Eyes নামে সিনেমা বানানো হয়। নাজিম উদ্দিনের বইটা ঠিক মৌলিকও নয় আবার অনুবাদও হয়ে উঠেনি। লেখক তা প্রথমেই প্রকাশ করেন। গল্পের পটভূমি মুক্তিযুদ্ধের পরের সময় । যখন দেশের রাজনৈতিক অবস্থা খুব বেশি অস্থিতিশীল। সেই অবস্থায় খুন হয় এক মেয়ে। যাকে ধর্ষণ করার পর হত্যা করা হয়েছে। যথারীতি পুলিশেরর উপর দায়িত্ব বর্তায়। সে সময়ের দুজন পুলিশ এই দায়িত্ব গ্রহন করে। কে খুনি বুঝতে পারার পরও তার নাগাল পাওয়া যাচ্ছিলো না। সে সময়ে দেশের এই অবস্থায় খুনী তখন রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় হাওয়া খেয়ে বেড়াচ্ছে। একটা সময় যদিওবা পাওয়া যায়। এবং খুনীর স্বীকারোক্তিও নিয়ে ফেলেছিলো প্রায়। তবুও শেষ রক্ষা হয় নি। আরো একটা ঘটনায় তখন কাহিনী উল্টে যায়। এবং শেষ পর্যন্ত এই হত্যা রহস্যের কোন কূল কিনারা করা যায় নি। এর পরের গল্প পুরো দুই যুগ পর। এই সময়ে এসে খুনের দায়িত্ব নিলেন লেখক। তিনি জানতে চাইলেন এই খুনের পিছনের রহস্য। ‘কেউ কেউ কথা রাখে' এটা ঠিক রাজনৈতিক উপন্যাস নয়। আবার থ্রিলারও নয়। যুদ্ধ পরবর্তী সমাজ আর রাজনৈতিক বাস্তবতা বর্ণনা করা হয়েছে। কাহিনী স্পয়লার গুলো সব প্রথমেই দেওয়া। মূলত কয়েক পৃষ্ঠা পড়ার পরই যাবতীয় উত্তর পাওয়া যাবে। তবু পাঠক আগ্রহের গুনে শেষ পৃষ্ঠা পর্যন্ত যাবে অবশ্যই। লেখক সুন্দরভাবে উপস্থাপন করেছেন তখনকার সময়ের দেশের রাজনৈতিক অবস্থা। সেই মুক্তিযোদ্ধা, দেশবাসীদের প্রত্যাশা। সেই সাথে দেশের মানুষের প্রত্যাশা অনুযায়ী স্বপ্ন না পুরণ হওয়ার গল্প। এত রক্তের বিনিময়ে যে স্বাধীনতার অর্জন তার কতটা ভোগ করতে পেরেছে সাধারণ জনগন! লেখকের বরাবরি মেয়ে চরিত্র উপস্থাপনে কমতি থাকে। এবার বোধহয় আর তেমনটা ছিলনা। আবার চরিত্রদের কিছু বোকা বোকা সংলাপ অবাক লেগেছে। এদিকে লেখক বোধহয় নজর কম দিয়েছেন। যেহেতু অন্যান্য থ্রিলারের মতো এটা নয় তাই এখানে ইন্টারেস্টিং বা চমকে যাবার মতো জায়গা খুঁজে লাভ নেই। তবে লেখকের লেখনী বেশ চমৎকার। বইয়ে এই প্লট লেখার জন্য লেখক বেশ সাহস দেখিয়েছেন। লেখার শুরু টা বেশ ছিলো কিন্তু শেষের দিকটায় মনে হয় লেখক ততোটা ধরে রাখতে পারেন নি। উপন্যাসের নামের দিকে তাকালে একটু অবাক হতে হয়। মূলত, কেউ কথা রাখে নি কথা টা বেশ সহজ ভাবেই নেওয়া যায় কিন্তু "কেউ কেউ কথা রাখে"। সেটা একটু অন্য রকমই লাগে। আবার নাম দেখে এটাকে কোন মতেই এরকম রাজনীতি বা খুনাখুনির উপন্যাস বলে মনে হয় না। তার থেকে নিপাট প্রেমের গল্প মনে হয়। তবে এটাও ঠিক রাজনীতি, হত্যার সাথে প্রেমও আছে। রেটিং-৪/৫ রকমারি লিংক- https://www.rokomari.com/book/109589/কেউ-কেউ-কথা-রাখে
Was this review helpful to you?
or
কেউ কথা রাখেনি।।। কথাটা খুব কাব্যিক মনে হলেও এটাই নির্মম বাস্তবতা। কেউ কথা রাখেনা। রাখতে চাইলেও পারেনা। কিন্তু এটাই জগতের শেষ কথা নয়। কেউ কেউ আবার কথা রাখে। সেই কথা রাখা নিয়েই এই লেখা- কেউ কেউ কথা রাখে।।। প্রায় দুইযুগ আগে অস্থির আর ঝঞ্জাবিক্ষুদ্ধ সময়ে ঘটে গেল এক নারকীয় হত্যাকাণ্ড। মাত্র তিনমাস আগে বিয়ে হওয়া এক তরুণীকে নির্মমভাবে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়। সিনিয়র সাব-ইন্সপেক্টর এসএম হায়দার তার এএসআইকে সাথে নিয়ে তদন্তে নামেন। সন্দেহভাজন একজনকে গ্রেফতার করতেও সক্ষম হন। কিন্তু ক্ষমতাসীন দলের ঝান্ডা দেখিয়ে বেড়িয়ে যেতে সক্ষম হয় ইমতিয়াজ হায়দারের প্রবল বিরোধিতা সত্ত্বেও। এদিকে মৃতা মিলির স্বামী মিনহাজ অনুরোধ করে ফাঁসি না সারা জীবন জেলখানায় বন্দী করে রাখার জন্য। কিন্তু কতিপয় ক্ষমতালোভী রাজনৈতিক দলের নেতার জন্য বারবার ছাড়া পেয়ে যায় ইমতিয়াজ। সাহস এতটাই বেড়ে যায় যে গল্পকখক এএসআই আর মিলির বন্ধু রামজিয়াকেও হুমকি দিতে পিছপা হয়না। এর কিছুদিন পরেই নিজের বাড়িতে খুন হয়ে যায় হায়দার। গল্পকথক নিশ্চিত ছিল যে এটা ইমতিয়াজের কাজ। কিন্তু কেউ তা আমলে নেই নি। এরপর ঘটে গেল ইতিহাসের সেই চরম ঘটনা। সব মিলিয়ে গল্পকথকের জীবনে এক বিশাল উথ্থান পতনে সব ওলটপালট হয়ে গেল। পুলিশের চাকরি ছেড়ে কলম হাতে তুলে নিলেন তিনি। এখন তিনি জনপ্রিয় থ্রিলার লেখক। আজ দুইযুগ পরে তিনি দেখলেন সেদিনের ঘটনাগুলো ফিকে হয়ে আসছে। পাছে ভুলে যান এই আশঙ্কায় কাগজের পাতায় লিখলেন সব কিছু। কিন্তু অসম্পূর্ণ এই লেখার উপসংহার কি হবে? আদৌ কি তিনি জানতে পারবেন শেষটুকু? আমার কথা : এই উপন্যাসটা নিয়ে আসলে তেমন কিছু বলা ঠিক না। স্বাধীনতার পর 74-75 এ ঠিক কি ঘটেছিল এর অনেকটাই আমাদের অজানা। এ নিয়ে তেমন কোন উচ্চবাচ্যও করেনা কেউ। সেই আঙ্গিকে লেখকের এই লেখাটা বর্তমান অবস্থায় খুব সাহসী পদক্ষেপ বলে আমার মনে হয়। অপরাধীর রাজনৈতিক আশ্রয় নেয়া আমাদের দেশে নতুন কিছু না। আকছার হয়ে আসছে এই ঘটনা। কিন্তু কতটা লজ্জাজনক তা দেশ ও দেশের মানুষের প্রতি তা কেউ ভাবে না। সবাই সবার নিজেরটা নিয়েই ব্যস্ত। এই লেখার প্লট বাস্তব জীবন থেকে নেয়া। অন্যদিকে লেখক বলেছেন এই লেখা মৌলিকও না আবার অনুবাদও না, মৌলিক ও অনুবাদের মাঝামাঝি একটা কিছু। অনুপ্রাণিত লেখা হলেও আমার কাছে মৌলিকের মতই সমাদৃত হয়েছে। আশা করি ভবিষ্যতে আরও অনেক অনুপ্রাণিত লেখা পাব। হ্যাপি রিডিং।।।
Was this review helpful to you?
or
নাম ঃ কেউ কেউ কথা রাখে লেখক ঃ মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন প্রকাশকাল ঃ২০১৫ প্রকাশনীঃ বাতিঘর প্রকাশনী মুল্যঃ ১৮২ ধরনঃ রহস্য/ থ্রিলার প্রচ্ছদ ঃ ডিলান পৃষ্ঠাঃ ২৬৮ কাহিনী সংক্ষেপ ঃ দীর্ঘ দুই যুগ পর, প্রেমিকা আইনজীবী রামজিয়া শেহরীনের সাথে এক অপ্রকাশিত উপন্যাসের পান্ডূলিপি নিয়ে দেখা করতে যায়... পান্ডূলিপির গল্প আর গল্প কথক ও রামজিয়ার কথোপকথন সমান ভাবে আগিয়ে গিয়েছে......। “কেউ কথা রাখেনি “ নামের এক পান্ডুলিপি............... মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী একটি সময়...। একটি ধর্ষন-খুনের ঘটনা নিয়ে যাত্রা শুরু করে সেই উপন্যাসটি। রামজিয়ার বান্ধবী মিলি, তার রহস্যময় এই খুনের রহস্য উদঘাটনে মরিয়া হয়ে ওঠে দুজন পুলিশ অফিসার। সদ্য বিবাহিত গৃহবধূ মিলিকে ধর্ষণের পর গলাটিপে হত্যা করেছিল খুনী। বইপড়ুয়া গল্পকথক এস আই, কিছুটা নরম প্রকৃতির কিন্তু দায়িত্ব সম্পর্কে সজাগ, সৎ এবং তার সিনিয়র অফিসার এস এম হায়দার, মুক্তিযোদ্ধা, এ্যালকোহলিক, সৎ, বড় ভাই এর মতই কথকের । মিলির মৃত্যুতে মারাত্মক ভেঙ্গে পরা স্বামী মিনহাজ..................।। হঠাৎ ছোট্ট একটা ক্লু থেকে আশ্চর্যজনকভাবেই খুনীর সন্ধান পাওয়া যায়। একে একে অনেক সূত্রের তার জুড়ে খুনী কে ধরে ফেলেন হায়দার সাহেব ও গল্প কথক............ দীর্ঘ খাটাখাটনির পর চড়াই-উতরাই পার করে অবশেষে খুনীকে ধরতে সক্ষম হন হায়দার আলী এবং লেখক। খুনি ছিল ভিক্টিমের চাচাতো ভাই-ইমতিয়াজ। অভিনব কায়দায় তথ্য আদায় করেন তিনি!! কিন্তু আইনের ফাঁক গলে বেড়িয়ে যায় খুনী ইমতিয়াজ............।। একদিন খুন হন হায়দার সাহেব.........।। কথক চাকুরী ছেড়ে লেখক হয়ে যান ............।। ১৯৭৫ সালের পর খুনী কে কেউ আর দেখেনি। কোথায় খুনী??? ২৪ বছর পরে লেখক আর রামজিয়া আবিষ্কার করে আশ্চর্যজনক কিছু সত্য। সেদিন বদলে যায় উপন্যাসের নাম..................... কি সেইনাম ?? পাঠ প্রতিক্রিয়াঃ “কেউ কেউ কথা রাখে” মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিনের আমার পড়া ৩য় বই সম্ভবত। বিদেশি বই এর অনুকরনে হলেও সেই সময়ে উত্তাল বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে আঁকা এক অদ্ভুত ছবি.........।। সেরা, বেষ্ট বললে কম বলা হবে .........।। এটা থ্রিলার ঘরানার হলেও এতে প্রেম ভালবাসা আবেগ অনুভূতি কোন কিছুর অভাব নেই। এটা মজা লেগেছে............ তবে বইটি ভাল লাগার থেকে প্রচ্ছদ বোধহয় আরো বেশি সুন্দর! কি অদ্ভুত একটা নেশা আছে প্রচ্ছদে...। কিছু বিষয় বেশ ভাল লেগেছে যেমন লেখক পুলিশ অফিসার হয়েও বইপোকা ছিলেন, আবার রামজিয়া, সেই বহু ভচর আগেও বইপড়ুয়া আধুনিক নারী...... তবে হ্যাঁ মধ্যে বয়সে রামজিয়ার নিঃসঙ্গতাটা কষ্টের , তবে এটা কঠিন সত্য। থ্রিলার-রোমাঞ্চ-ভালবাসার এক অপুর্ব মিশ্রণ বইটি...............।। নাম দেখে এটিকে রোমান্টিক মনে হলেও এটি রোমান্টিক- থ্রিলার ! রেটিংঃ ৫/৫
Was this review helpful to you?
or
কেউ কেউ কথা রাখে মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন বাতিঘর প্রকাশনী গায়ের মূল্যঃ দুইশত পঞ্চাশ টাকা অস্থির ঝঞ্ছাবিক্ষুদ্ধ সময়ে ঘটে যাওয়া একটি ধর্ষন-খুনের ঘটনা নিয়ে যাত্রা শুরু করে এই উপন্যাসটি। এই খুনের রহস্য উদঘাটনে মরিয়া হয়ে ওঠে দুজন পুলিশ অফিসার। গল্পকথক এস আই, কিছুটা নরম প্রকৃতির কিন্তু দায়িত্ব সম্পর্কে সজাগ, সৎ। এবং তার সিনিয়র অফিসার এস এম হায়দার, মুক্তিযোদ্ধা, এ্যালকোহলিক, সৎ। ছোট্ট একটা ক্লু থেকে অনেকটা আশ্চর্যজনকভাবেই খুনীর সন্ধান পাওয়া যায়। অনেক কায়দা কানুন করে তাকে ধরেও ফেলা হয়। কিন্তু সময়টা নৈরাজ্যে পূর্ণ। আইনের ফাঁক গলে বেরিয়ে গেল খুনী। মুক্তিযোদ্ধা পুলিশ অফিসার হায়দার এ অবিচার মেনে নিতে পারে না, ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। নিজ উদ্যোগে খুনীকে পুণরায় পাকড়াও করে। কিন্তু ঐ যে দেশের পরিস্থিতি, সেই অরাজক পরিস্থিতিতে নেতার ছত্রচ্ছায়া বাঁচিয়ে দেয় খুনীকে। অনেকটা বেপড়োয়া হয়ে ওঠে সে। চড়াও হয় হায়দারের প্রতি। নিমেষে পাল্টে যায় ঘটনা প্রবাহ। প্রচন্ড মানসিক আঘাতে গল্পকথক ছেড়ে দেয় পুলিশের চাকরি। একসময় হাতে তুলে নেয় কলম। পুরো ঘটনাটি শুধু তারই নয়, পাল্টে দেয় আরো কিছু মানুষের জীবন। দুইযুগ পর গল্পকথক এই ঘটনাটাকে বই আকারে ছাপার অক্ষরে বন্দী করে রাখার জন্য উদ্যোগী হয়। ক্রমান্বয়ে স্মৃতি রোমন্থন, ভালবাসা আর আবেগ নিয়ে এগিয়ে যায় উপন্যাস। বইয়ের শেষ অংশ লিখতে গিয়ে সে আবিষ্কার করে আশ্চর্যজনক কিছু সত্য। বুঝতে পারে কেউ কেউ সত্যিই কথা রাখে। কেউ কেউ কথা রাখে মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিনের নিরীক্ষাধর্মী এবং সেই সাথে ব্যতিক্রমধর্মী একটি রচনা। আমার মতে তার অন্যতম সেরা রচনা। আর্জেন্টাইন লেখক এদুয়ার্দো সাচেরির বিখ্যাত উপন্যাস প্রেহুস্তা দে সুস ওহোস এর মাধ্যমে অণুপ্রাণিত হয়ে এর ছায়া অবলম্বনে নাজিম উদ্দিন লিখে ফেলেন চমৎকার এই উপন্যাসটি। মূল উপন্যাসে উল্লেখিত আর্জেন্টিনার ডার্টি ওয়ারের (১৯৭৬-১৯৮৩) সাথে আমাদের দেশের সেই সময়কার কিছু পরিস্থিতি অদ্ভূতভাবে মিলে যায়। বইয়ের কাহিনী এগিয়ে দুই সময়কাল নিয়ে। একটি যুদ্ধ পরবর্তী অরাজক সময় এবং অন্যটি বর্তমান। বিশেষত যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে দেশের অবস্থা, জনগণের চিন্তা ভাবনা গুটিকয়েক চরিত্রের মাধ্যমে চমৎকার দক্ষতায় ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। মূল উপন্যাসে দুই ধরণের পয়েন্ট অফ ভিউ থাকলেও নাজিম উদ্দিন তার উপন্যাসে শুধুমাত্র উত্তম পুরুষে ঘটনা বর্ণনার ক্ষেত্রে দারুণ মূন্সিয়ানা দেখিয়েছেন। উপন্যাসে একই সাথে উঠে এসেছে নৈরাজ্য, অপরাজনীতি, বিরহ এবং ভালবাসা। সত্যি বলতে আমাদের দেশি থ্রিলারে এত অনুভূতির মিশ্রণ এর আগে আর দেখিনি। যদ্দুর মনে পড়ে এর আগে হুমায়ুন আহমেদের অমানুষ পড়ে যেমন বিমূঢ় হয়ে গিয়েছিলাম, এই বইটাও ঠিক তেমনই চমৎকার একটা অনুভূতি দিয়েছে। নাজিম উদ্দিনের থ্রিলারগুলো আমার কাছে খুবই গতানুগতিক বলে মনে হয়। কিন্তু এই বইটি সত্যিই আমার ধারণা আমূল পাল্টে দিয়েছে। আরেকটা অদ্ভূত ব্যাপার হচ্ছে, বইটা পড়ার সময় বারবার আমার হুমায়ুন, সুনীল, শীর্ষেন্দুর কথা মনে পড়ে যাচ্ছিল। বিশেষত শীর্ষেন্দুর কথা। সম্ভবত উপন্যাসের চরিত্র চিত্রণের জন্য। প্রতিটা চরিত্রের চিন্তা চেতনা উপলব্ধি আক্ষেপ বেশ নিখুঁতভাবে দেখানো হয়েছে। এমন অনবদ্য চরিত্র চিত্রণ আর পরিবেশ বর্ণনা এর আগে শুধুমাত্র জীবনধর্মী বা সামাজিক উপন্যাসেই পেয়েছি। বারবার মনে হচ্ছিল, আহা নাজিম উদ্দিন যদি জীবনধর্মী উপন্যাস লিখতেন! বর্ণনা, ভাষাশৈলী তার অন্যান্য বইয়ের চেয়ে উন্নত মনে হয়েছে। এর আগে 'রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনও খেতে আসেন নি' বেশ চমৎকার লাগলেও পুরোপুরি তৃপ্তি দিতে পারেনি। 'কেউ কেউ কথা রাখে' সেই আক্ষেপ দুর করে পরিপূর্ণ তৃপ্তি দিয়েছে। লেখকের কাছে আমার দাবি থাকবে এরকম রচনা বেশি করে উপহার দেবার। বাতিঘরের বইয়ের সবচেয়ে নেতিবাচক দিক হচ্ছে বানান ভুল। তবে এই বইয়ে বানান ভুলের ব্যাপারটা তুলনামূলক বেশ কম। আধুনিক বানানরীতির প্রয়োগ বরাবরই ভাল লাগে। আপাতদৃষ্টিতে কিছু বানান ভুল মনে হলেও বেশিরভাগ বানানই আধুনিক রীতিতে সঠিক। তবে বেশ কিছু ভুল বানান, প্রিন্টিং মিসটেক চোখে পড়েছে। আশা রাখি পরবর্তী মুদ্রনে সেগুলো দুর হয়ে যাবে। সত্যি বলতে একটি বই পড়ার পর মুগ্ধ হয়ে গেলে সেটার নেতিবাচক দিকগুলো খুব কম চোখে পড়ে। এই বইয়েরও তেমন কোন নেতিবাচক দিক আমার মাথায় আসেনি। নিশ্চিতভাবেই নাজিম উদ্দিনের আরেকটা মাস্টারপিস এই বইটা। স্বয়ং লেখকের দুটো লাইন উল্লেখ করছি- "পাঠককে বলব, 'কেউ কেউ কথা রাখে' পুরোপুরি নিরীক্ষাধর্মী একটি কাজ। গল্পটি আমার ভাল লেগেছে তেমনি তাদের যদি ভাল লাগে তবে সার্থক মনে করব।" লেখক নিশ্চিতভাবেই স্বার্থক। পুনশ্চঃ আর্জেন্টাইন মূল বইটা অবলম্বেনে ২০০৯ সালে চলচ্চিত্র বানানো হয়েছে। যেটা আবার ২০১০ সালে বেস্ট ফরেন ল্যাংগুয়েজ ফিল্ম ক্যাটাগরীতে অস্কারও পেয়েছে। চাইলে দেখে ফেলতে পারেন মুভিটিও। কষ্ট করে পড়বার জন্য ধন্যবাদ।
Was this review helpful to you?
or
অস্থির আর ঝঞ্জা বিক্ষুব্ধ সময়ে ঘটে যাওয়া একটি খুনের রহস্য উদঘাটনে মরিয়া ভিন্ন মত আর স্বভাবের দুই জন মানুষ। অভিনব ভাবে এক সন্দেহ ভাজনের সন্ধান পেলো তারা, অনের কষ্টে তাকে ধরাও হলো কিন্তু খুনের রহস্যের কোন কিনারা করা গেলো না। এ ঘটনা বদলে দিলো তদন্ত কারি দুই জন সহ আরো কিছু মানুষের জীবন। দুই যুগ পর স্মৃতি ভারাক্রান্ত এক লেখক ব্যস্ত হয়ে পরলো সেই হত্যা রহস্য নিয়ে। চমকে যাবার মত এক ঘটনার মুখোমুখি হতে হলো তাকে। বিস্ময়কর সত্য জেনে যাবার পর নতুন এক সংকটে নিপতিত হলো সে- সত্যটা প্রকাশ করার জন্য নির্ভর করতে হবে প্রকৃতির উপরে। “কেউ কথা রাখেনি” এক কাব্যিক অভিব্যক্তি। ঢালাও অভিযোগ ও বলা চলে। কিন্তু সত্যিটা হলো- কেউ কেউ কথা রাখে। স্বয়ং লেখকের দুটো লাইন উল্লেখ করছি- "পাঠককে বলব, 'কেউ কেউ কথা রাখে' পুরোপুরি নিরীক্ষাধর্মী একটি কাজ। গল্পটি আমার ভাল লেগেছে তেমনি তাদের যদি ভাল লাগে তবে সার্থক মনে করব।" লেখক নিশ্চিতভাবেই সার্থক। পুনশ্চঃ আর্জেন্টাইন মূল বইটা অবলম্বেনে ২০০৯ সালে চলচ্চিত্র বানানো হয়েছে। যেটা আবার ২০১০ সালে বেস্ট ফরেন ল্যাংগুয়েজ ফিল্ম ক্যাটাগরীতে অস্কারও পেয়েছে। চাইলে দেখে ফেলতে পারেন মুভিটিও। সবশেষে, কেউ কেউ কথা রাখে- নাম শুনে প্রথমে কেউই বইটিকে আর যাই হোক, অন্তত থ্রিলার ক্যাটাগরির ভাববে না। স্টার্টিংটাও শুরু হয়েছে একটা রোমান্টিক উপন্যাসের মতই। পঞ্চাশোর্ধ এক লোক তার দুই যুগ আগের প্রেমিকা কিংবা প্রেমিকা টাইপ কেউ একজনের সাথে দেখা করতে যাচ্ছে। সে তাকে চিনতে পারবে কিনা এই নিয়ে তার কত হিন্যমন্যতা, কত সংশয়! তারপর কাহিনী যখন আস্তে আস্তে সামনের দিকে আগাতে থাকবে তখন পাঠক বুঝতে পারবেন কেন এমন রোমান্টিক নাম হওয়া সত্ত্বেও এটা থ্রিলার। আর পুরোটা শেষ করার পর অনুধাবন করতে পারবেন যে খুব কম থ্রিলারেই এমন থ্রিল থাকে!
Was this review helpful to you?
or
গত বইমেলার পর পরই বইটা পড়তে শুরু করেছিলাম, কিন্তু কয়েক পাতা পড়ার পরে সবে যখন আগ্রহ তৈরি হয়েছে তখনই বইটা হাতছাড়া হয়ে যায়। সেই আফসোস মিটল এতদিন পর। এই বই নিয়ে অনেকেই অনেক কিছু লিখেছে এবং বলেছে। আসলে এটা তেমনই একটা বই যেটা পড়ার পর আরেকজনকে জানাতে ইচ্ছা করে। বইয়ের কাহিনী খুব একটা জটিল কিছু নয়। কিন্তু ভাল লেখকের হাতে পড়লে কাহিনী তেমন প্যাচালো না হলেও চলে- এটা নাজিম ভাই প্রমাণ করে দিয়েছেন আগেও। এখানেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। স্বাধীনতা পরবর্তী টালমাটাল সময়ে ঘটে যাওয়া অমীমাংসিত একটা খুনের রহস্যকেই বইয়ের মূল কাঠামো ধরা যায়। তার সাথে যোগ হয়েছে সেই সময়ের রাজনৈতিক এবং সামাজিক অস্থিরতা, উল্লেখযোগ্য ঘটনাবলী ইত্যাদি। খুনের ফলে তদন্তকারী অফিসাররা সহ আরও কয়েকজন মানুষের জীবন চিরতরে বদলে গেল, কিন্তু অপরাধীকে আর শেষ পর্যন্ত শাস্তি দেয়া গেলো না। দুই যুগ পর এক লেখক যখন সেই ঘটনা নিয়ে লিখতে শুরু করল, তখন অপ্রত্যাশিতভাবে চমকে যাওয়ার মত কিছু ঘটনার মুখোমুখি হলো সে। বইটা পড়ার পর মনে হয়েছে এর নামকরণ স্বার্থক। নাজিম ভাই তার বইগুলোর নাম বরাবরই সুন্দর রাখেন, শুনলেই পড়তে ইচ্ছা করে। এবং এর পুরোটা পড়ার পর পাঠক সত্যিই মনে মনে বলতে বাধ্য হবে- “কেউ কেউ আসলেই কথা রাখে!” এটা নাজিম ভাইয়ের সম্পূর্ণ মৌলিক কাজ নয়, সেটা তিনি ভূমিকাতেই উল্লেখ করেছেন। আর্জেন্টাইন উপন্যাস La pregunta de sus ojos (The secret in their eyes) এর ছায়া অবলম্বনে লেখা এই বইটি। তবে মানতেই হবে যে বাংলাদেশের পটভূমিতে দারুণ ভাবে খাপ খেয়ে গেছে গল্প। প্রচলিত ঘরানার বাইরে এসে একটা ব্যতিক্রমধর্মী উপন্যাস উপহার দেয়ার জন্য নাজিম ভাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ। তার কাছ থেকে ভবিষ্যতে এই ধরণের আরও গল্প পড়ার আশা রাখি।
Was this review helpful to you?
or
#রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগিতা বইয়ের নামঃ কেউ কেউ কথা রাখে লেখকের নামঃ মোহাম্মদ নাজিম উদ্দীন ঘরনারঃ থ্রিলার রেটিং- ৪/৫ রিভিউঃ অস্থির আর ঝঞ্ঝাবিক্ষুদ্ধ সময়ে ঘটে যাওয়া একটি খুনের রহস্য উদঘাটনে মরিয়া ভিন্ন মত আর স্বভাবের দু-জন মানুষ । অভিনবভাবে এক সন্দেহভাজনের সন্ধান পেলো তারা, অনেক কষ্টে তাকে ধরাও হলো কিন্তু হত্যারহস্য আর মীমাংসা করা গেলো না । এ ঘটনাটা বদলে দিলো তদন্তকারি দু-জনসহ আরো কিছু মানুষের জীবন । দুই যুগ পর স্মৃতিভারাক্রান্ত এক লেখক ব্যস্ত হয়ে পড়লো সেই হত্যারহস্য নিয়ে । চমকে যাবার মতো একটি ঘটনার মুখোমুখি হতে হলো তাকে । বিস্ময়কর সত্যটা জেনে যাবার পরও নতুন এক সঙ্কটে নিপতিত হলো সে- সত্যটা প্রকাশ করার জন্য নির্ভর করতে হবে প্রকৃতির উপরে! ‘কেউ কথা রাখেনি’ একটি কাব্যিক অভিব্যক্তি । ঢালাও অভিযোগও বলা চলে । কিন্তু সত্যটা হলো, কেউ কেউ কথা রাখে। প্রকাশনীঃবাতিঘর পৃষ্ঠাঃ২৬৯ মূল্যঃ২৮০ প্রকাশকালঃ২০১৫ মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন-এর জন্ম ঢাকায় । ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইন্সটিটিউটে এক বছর পড়াশোনা করলেও পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ থেকে মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। বিশ্বমানের অসংখ্য জনপ্রিয় থুলার অনুবাদ করার পর অবশেষে বেশ কয়েকটি মৌলিক রচনা করেছেন। ব্যক্তিগত মতামতঃ গল্পের প্লট বেশ সুন্দর । লেখকের লেখনীতে গল্পে বর্ণনাও খুব ভালো ছিলো। প্রথমে গল্পের গতিটা ধীর ছিলো। কিন্তু শেষের দিকে থ্রিলারের মাত্রা পেয়েছে বলেই মনে হয়েছে। থ্রিলার হিসেবে নাম টা ভিন্ন রকম, লেখকের অন্য লেখাগুলোর তুলনায় গল্পটাও অন্য রকম। চরিত্র গুলোর মাঝে হায়দারকে বেশ ভালো লেগেছে। মেয়ে চরিত্র তেমন ভালো নয়। লেখক গল্পের প্লট হিসেবে বাংলাদেশের যুদ্ধ পরবর্তী সময়কে বেছে নিয়েছেন। যখন রাজনীতিক অবস্থা অনেক বেশি নাকল ছিলো। সে সময়ের দেশের অবস্থা বুঝা যায়। বইয়ের শেষ দিকে গল্পের কাহিনীর প্যাঁচে উত্তেজনার পারদ বেড়ে গিয়েছিলো অনেক বেশি। সত্যি কথা বলতে থ্রিলার হলেও প্রথম দিকে একে আসলে ততটা থ্রিলার মনে হয় নি। কারন থ্রিলারের সাথে স্বাভাবিকও তবে একটা সময় এসে গল্প তার আকর্ষণ ছড়াতে পেরেছে। আর সে কারনেই হয়তো বইটা খুব বেশি ভালো লাগবে। কিছু ব্যপার বাদ দিলে, বই টা যাস্ট অসাধারণ। আর চরিত্রের হায়দারের কথা তো বললামই। পুরো গল্পের যতটা ভালো লাগছে ততটাই ভালো লাগছে এই চরিত্রকে। https://www.rokomari.com/book/109589/কেউ-কেউ-কথা-রাখে?ref=srbr_pg0_p0
Was this review helpful to you?
or
এই কাহিণী নিয়ে তৈরী করা সিনেমাটা আগেই দেখেছিলাম। তবুও বই পড়ার লোভ সামলাতে পারিনি। কারণ লেখক কাহিণীর বর্ণনা করেছেন আমাদের দেশের পটভূমিতে। প্রথমে প্রচ্ছদ; উপন্যাসের কাহিণীর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ প্রচ্ছদ করার জন্য প্রচ্ছদ শিল্পীকে ধন্যবাদ। এরপর গল্পের বিষয়বস্তু; আমার কাছে মনে হয়েছে এটা রহস্য বা গোয়েন্দা উপন্যাস নয়, মনে হয়েছে এর বিষয়বস্তু মানুষের মন। বিভিন্ন ঘটনায় মানুষের মন কিভাবে সাড়া দেয় তারই সুন্দর বর্ণনা। পাঠকদের প্রতি অনুরোধ বইটা পড়বেন এবং সংগ্রহে রাখবেন।
Was this review helpful to you?
or
দীর্ঘ বারো বছর পর রামজিয়া শেহরিনের সাথে দেখা করতে এলেন লেখক, যিনি কিনা বারো বছর আগেও ছিলেন একজন পুলিশ অফিসার। সঙ্গে নিয়ে এলেন তার অপ্রকাশিত ব ই এর একটা কপি, বারো বছর আগে যেটির রহস্য উদ্ঘাটন করেও হারিয়েছিলেন হায়দার আলীর মত একজন মুক্তিযোদ্ধা এবং কর্তব্য পরায়ণ পুলিশ অফিসার কে। . কেসটা ছিল মূলত মিলি হত্যাকাণ্ড নিয়ে, যে ছিল রামজিয়ার বান্ধবী। গৃহবধূ মিলিকে ধর্ষণের পর গলাটিপে হত্যা করেছিল খুনী। দীর্ঘ খাটাখাটনির পর চড়াই-উতরাই পার করে অবশেষে খুনীকে ধরতে সক্ষম হন হায়দার আলী এবং লেখক। খুনি ছিল ভিক্টিমের চাচাতো ভাই-ইমতিয়াজ। অভিনব পদ্ধতিতে তার মুখ থেকে সব তথ্য বের করে নিয়েছিলেন হায়দার আলী। কিন্তু, রাজনীতিক দলের সহায়তার দরুণ বারবার পার পেয়ে যায় ইমতিয়াজ। জেল থেকে ছাড়া পেয়েই সে খুন করে হায়দার আলীকে। তারপর আচমকাই উধাও হয়ে যায় ইমতিয়াজ। কিন্তু কোথায়? সে কি আসলেই বেচে আছে? নাকি ঘুরে বেড়াচ্ছে লোকচক্ষুর অন্তরালে? আর মিলির শোকে শোকাতুর তার স্বামী মিনহাজ ই বা কোথায়? সেই রহস্যের খোজেই বারো বছর পর লেখক বেরিয়ে পড়লেন অজানার উদ্দেশে। কোথায় মিলবে এর কূল-কিনারা?