User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
good
Was this review helpful to you?
or
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের উপর লেখা অত্যন্ত নির্ভরযোগ্য একটি উপন্যাস।
Was this review helpful to you?
or
Worse
Was this review helpful to you?
or
It took a bit to get over from this novel. Very well written by Sofa.
Was this review helpful to you?
or
Praiseworthy
Was this review helpful to you?
or
যুদ্ধকালীন সময়ে শরণার্থী জীবনে চলমান নানাধরনের মানসিক দ্বন্ধ, ক্ষোভ, সংকীর্ণতা ও অসহায়ত্বের চিত্র ফুটে উঠেছে। প্রেম- বিরহ, অনিশ্চিত জীবন, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের মানসিক দেওলিয়াত্ব ও তাদের কার্যক্রমের সমালোচনা বেশ সাবলীল ভাষায় করা হয়েছে। যা তৎকালীন সময়ের প্রতিনিধিত্ব করছে।
Was this review helpful to you?
or
বইটি হাতে পেলাম আজ৷ খুবই ভাল বই
Was this review helpful to you?
or
৪১ বিসিএস না এলে অনেকেই এই বইয়ের খোজ জানতই না। ?
Was this review helpful to you?
or
অনেক দিন পর তাহেরার জন্য চোখে পানি ঝরল?
Was this review helpful to you?
or
প্রখ্যাত সাহিত্যিক আহমদ ছফা তার এই উপন্যাসে পাঠক কে সম্পূর্ণ একটি ভিন্ন আঙ্গিকে মুক্তিযুদ্ধকে উপলব্ধি করার সুযোগ করে দিয়েছেন৷ যুদ্ধের ভয়াবহতা থেকে বাঁচতে কলকাতায় আশ্রয় নেয়া শরনার্থীদের দুর্বিষহ জীবন তিনি এই উপন্যাসে তুলে ধরেছেন৷ অসাধারণ কিছু চরিত্রের মাধ্যমে তিনি পাঠককে এই উপন্যাসে নিয়ে গেছেন মুক্তিযুদ্ধের সেই দিনগুলোতে৷
Was this review helpful to you?
or
মুক্তিযুদ্ধের শরণার্থী শিবিরের জীবন্ত প্রতিচ্ছবির চিত্রায়িত একটি উপন্যাস।দানিয়েল চরিত্রের নায়কটি হলো স্বয়ং আহমদ ছফা নিজে আর নায়িকা তায়েবা হলো তার রাজনৈতিক আদর্শের নারীকর্মী ঢাবির শিক্ষার্থী। তায়েবা ও ছফার আদর্শের মিলের সাথে সাথে তাদের অন্তরের একটা মিলবন্ধন ছিল তা তায়েবার রোগ বৃদ্ধির সাথে সাথে প্রকটতা পেতে শুরু করে।তায়েবার মুখে কোন ছেলের প্রশংসা শুনলে ছফার হৃদয়ে যে রকম একটা ঈর্ষার কুটিলতা ফুটে অনুরূপ ছফার মেয়ে বন্ধু অর্চনাকে কেন্দ্র করে তায়েবার মনে বিরূপতা লক্ষ্য করা যাই।তাদের পরস্পরের ভালোবাসা আর অসুস্থ তায়েবার শিশুসুলভ আবদার উপন্যাসটার রোমান্টিকতার পূর্ণতা শতগুনে ফুটিয়ে তুলে।তবে তারা উভয়ে বাস্তুহীন শরণার্থী একজন হাসপাতালে স্থায়ী ডেরা পেতে বসে আছে আরকেজন পরিবার থেকে ছিন্ন এক মুসলিম যুবক জাতপাত ফেলে দিয়ে বন্ধুদের সাথে একটা মেসে থাকা শুরু করে আর সেখান থেকে মুক্তিযুদ্ধের সার্বিক চিত্র পর্যবেক্ষণ করে যাচ্ছে। তাছাড়া এখানে তাদের পরিবার পরিজনের পরিচয় অংশটা উঠে এসেছে।ছফা এসেছিল যুদ্ধে ট্রেনিং নিয়ে সম্মুখ যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে বলি হওয়ার জন্য তবে কর্তাব্যক্তিদের কাছে তার ক্রিয়েটিভ পরিচয় ধরা পড়ার কারনে বুদ্ধিবৃত্তিক যুদ্ধে সীমাবদ্ধ থাকতে হয়।এখানে আরো ফুটে উঠে শরণার্থী ও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে ভারতীয় জনগনের বিভিন্ন ধরনের নেগেটিভ পজেটিভ ক্রিয়াশীলতা। শরণার্থীদের তারা ডাকতো জয়বাংলার লোক বলে।প্রথম দিকে ভারতীয় জনগন জয়বাংলার লোকদের যেভাবে সাগ্রহে নিয়ে ছিল, পরে পরে যুদ্ধের দীর্ঘায়িত দেখে জয়বাংলারর লোকদের অসহ্য লেগেছিল।বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ভারতীয় রাজনীতিতে যে প্রভাব বিস্তার করেছিল তার দিকটাও উপন্যাসটিতে ফুটে উঠে। উপন্যাসটিতে ফুটে উঠেছে মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে অজানা দিকের একটা বড় অংশ আর তৎকালীন নেতাদের গাফিলতি আরো ফুটে উঠেছে দেশের সুবিধাবাদী অসৎ লোকের প্রতিচ্ছবি।ফুটে উঠেছে ইয়াহিয়ার আত্মদম্ভিকতা আর ইন্দেরার ধূর্তামি। বহিঃবিশ্বের একটা পরোক্ষ সংযোগ। এসব কিছু যেন মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযোদ্ধা ও সীমান্তে পঙ্গপালের মত অসাহায় শরণার্থীদের ব্যঙ্গ করতেছে।দিন দিন যেন বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম পাক ভারত যুদ্ধের রূপ নেওয়ার রসে পুষ্ট হচ্ছে।সর্বশেষ মুক্তিযুদ্ধটি পাক ভারত যুদ্ধে রূপ নেয় আর বাংলাদেশের মানুষের আশা আকাঙ্গা ও আদর্শের মৃত্যু ঘটে। মৃত্যু ঘটে উপন্যাসের নায়িকার, মৃত্যু ঘটে বাংলাদেশের মানুষের মনে জ্বল জ্বল করে জ্বলতে থাকা তেজোদ্দীপ্ত শৌর্যবীর্য প্রাণপুরুষের!
Was this review helpful to you?
or
কাহিনী শুনে মানব -মানবীর সাধারণ প্রেমের কাহিনী মনে হলেও আহমদ ছফা যেভাবে মানব মনের জটিল সমীকরণ তুলে ধরেন তা পাঠকের মুগ্ধ বিস্মিত না হয়ে উপায় থাকে না।আহমদ ছফার অন্যান্য রচনার মতো এই উপন্যাস জুড়েও রয়েছে ইতিহাস আর ঐতিহ্য সচেতনতার বিশেষ মাত্রা।
Was this review helpful to you?
or
‘অলাতচক্রে’ আহমদ ছফা মুক্তিযুদ্ধকে তুলে এনেছেন একদম শিকড় থেকে। যুদ্ধকালীন শুভ ও অশুভ শক্তির তৎপরতা এঁকেছেন নিপুণ হাতে এবং এঁকেছেন রণক্ষেত্রের বাহিরে প্রতিদিন ঘটে যাওয়া আরেকটা মুক্তিযুদ্ধের মানবিক চিত্র।[৩] বঙ্গবন্ধু, তাজউদ্দীন, ভাসানী, মোশতাক, ওসমানী সবগুলো চরিত্র হাজির হয় উপন্যাসে, লেখক তুলে আনেন এক রাজনৈতিক মুক্তিযুদ্ধকে। পুরো উপন্যাস জুড়েই রয়েছে মুক্তিযুদ্ধ ঘিরে এক ঠান্ডা মনস্তাত্ত্বিক লড়াই। উপন্যাসে লেখক আহমেদ ছফা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের এক ভিন্ন প্রেক্ষাপট বর্ণনা করার চেষ্টা করেছেন।
Was this review helpful to you?
or
যুদ্ধকালীন সময়ে শরণার্থীরা স্বশরীরে যুদ্ধে অংশগ্রহণ না করলেও মৌলিক চাহিদা পূরণের যুদ্ধটা তাদের নিয়মিত করে যেতে হয়েছে। শুরুতে কলকাতাবাসী সাদরে গ্রহণ করলেও একসময় যে তারা বিষফোড়া হয়ে উঠেছিলো এ কথা কারোর অজানা নয়। যুদ্ধ যে শুধু স্বশরীরে করতে হয় একথাটির মুদ্রার অপর পিঠটিও লেখক বর্ণনা করেছেন, একজন শরণার্থীর কাছে বাংলাদেশের যুদ্ধ কোনোভাবেই মানসিক যুদ্ধের চেয়ে কোনো অংশে কম ছিলো না। আহমদ ছফা স্যারের 'অলাতচক্র' বইটিতে এইসব যুদ্ধকেই কিছু চরিত্রের মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলেছেন। বইয়ের গল্পের সারসংক্ষেপ বলে মজাটা নষ্ট করবো না, তবে এইটাই বলবো ভারতে বাংলাদেশের শরণার্থীদের অবস্থা কেমন ছিলো জানার আগ্রহ থাকলে বইটি পড়ে উপভোগ করবেন।
Was this review helpful to you?
or
মূলত মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে ভারতে ‘শরণার্থী’ হিসেবে অবস্থান করা বাঙালীদের চিত্র ফুটে উঠেছে এ বইয়ে। আহমদ ছফা, দানিয়েল চরিত্র সৃষ্টি করে সে চরিত্রের দৃষ্টিতে দেখিয়েছেন সে সময়ে কলকাতায় আশ্রয় নেওয়া বাঙালীদের যাপিত জীবন, তাদের মনোভাব। যে হোস্টেলে ছফা আশ্রয় নিয়েছিলেন সেখানে থাকতো আরও অনেক বাঙালি। এরা কেউই কোন না কোন কারনে সম্মুখ যুদ্ধে অংশ নিতে পারেনি। তাই ক্ষোভ দূর করতো তারা নানা উপায়ে। কখনও ইন্দিরা গান্ধী, কখনও মুজিব, কখনও থিয়েটার রোডে থাকা কর্তাব্যক্তিদের নিয়ে তাদের তর্ক হতো।
Was this review helpful to you?
or
#বই_পরিচিত বই:অলাতচক্র। লেখক:আহমদ ছফা। রচনাকাল:১৯৮৫। প্রকাশনী:খান ব্রাদার্স অ্যান্ড কোম্পানি। প্রচ্ছদ:ধ্রুব এষ। মূল্য:৩০০টাকা। #ভূমিকা সাপ্তাহিক "নিপুণ" পত্রিকার ঈদ সংখ্যার জন্য আহমদ ছফাকে ১৯৮৫ সালে একটি লেখা জমা দিতে হয়েছিল। মাত্র বার দিনের মাথায় তাকে লিখাটা শেষ করতে হয়। কিন্তু লিখাটা নিয়ে তিনি পুরোপুরি সন্তুষ্ট ছিলেন না। তাই তখনই তিনি ঠিক করেছিলেন উপন্যাসটি পুনরায় লিখবেন। তারই ধারাবাহিকতায় অনেক চড়াইউতরাই পেরিয়ে ১৯৯৩ সালে মুক্তধারা প্রকাশনী থেকে উপন্যাস টি আবার প্রকাশ করা হয়। ***অলাতচক্র–জ্বলন্ত অঙ্গার বা জ্বলন্ত কাঠ প্রচন্ড বেগে ঘোরানো হলে সৃষ্ট চক্রকার আগুনের গোলোক; চক্রের মতো আগুনের গোলোক। #লেখক_পরিচিতি আসলে আহমদ ছফার নাম শোনেনি বা উনাকে চেনে না এমন কোনো পাঠকই হয়ত বাংলাদেশে নেই। আহমদ ছফা ১৯৪৩ সালের ৩০ জুন চট্টগ্রাম জেলার চান্দনাইশ থানাধীন গাছবাড়িয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। একাধারে তিনি ছিলেন একজন দূরদৃষ্টিসম্পন্ন লেখক,ঔপন্যাসিক,কবি,চিন্তাবিদ ও গণবুদ্ধিজীবী। জাতীয় অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাক ও সলিমুল্লাহ খানসহ আরো অনেকের মতে, মীর মশাররফ হোসেন ও কাজী নজরুল ইসলামের পরে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বাঙালি মুসলমান লেখক হলেন আহমদ ছফা। কীর্তিমান এ বাঙ্গালী ২৮ জুলাই ২০০১ পরলোক গমন করেন। #বইয়ের_পর্যালোচনা অলাতচক্র মুক্তিযুদ্ধের সময় কলকাতায় শরণার্থী হিসেবে আশ্রিত লেখক দানিয়েল ও ক্যান্সারে আক্রান্ত তাইয়েবার মধ্যকার অস্ফুট ভালবাসা, মানসিক টানাপড়েন,এবং যুদ্ধ নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন গোষ্ঠীর ভিন্ন ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে লেখা এক অনবদ্য উপাখ্যান।দানিয়েল দীর্ঘ সাত মাস খুঁজে বের করে তাইয়েবা কে। এরপর নিত্যদিন তাকে হাসপালে দেখতে যাওয়াই জেনো প্রধান কাজ হয়ে দাঁড়ায়। কলকাতা শহরে ভাসমান শ্যাওলা মত ছন্নছাড়া, দয়ায় আশ্রিত অনেকটা ভিক্ষুকের মতই যেন বাংলাদেশ ছেড়ে যাওয়া মানুষ জনের জীবন। এর মাঝেই বয়ে চলে জীবন। সকলেই মুখে জয় বাংলার মানুষ হিসেবে করুণা করে,তুচ্ছতাচ্ছিল্য করতেও বাদ রাখেনা। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ নিয়ে দৃষ্টিভঙ্গির এত ভিন্নতা খুব সম্ভবত আর কোনো গল্প উপন্যাসে এভাবে উঠে আসেনি। কলকাতা শহরে আশ্রয় নেয়া মানুষজনের জীবন, বেঁচে থাকার জন্য টিকে থাকার জন্য নিত্য লড়াইয়ে, গল্পের নায়ক দানিয়েলের চিন্তাভাবনার মধ্য দিয়েই যেন নিজের চিন্তারাজ্য কে প্রস্ফুটিত করেছেন আহমদ ছফা। একদিকে তায়বার জন্য তার দুশ্চিন্তার অন্ত ছিল না। অন্যদিকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য মুক্তিযুদ্ধ, তা কোন দিকে মোড় নিচ্ছে বা নিবে কেউই যেনো বুঝতে উঠতে পারছিলনা। অবস্থা এমনই বেগতিক ছিল যে, ভারতীয়রা বাংলাদেশি কমান্ডের সাথে যোগাযোগ না করেই, বাংলাদেশী যুবকদের আলাদাভাবে ট্রেনিং দিচ্ছিল।কারো পরিকল্পনার সাথে কারো পরিকল্পনার মিল ছিলনা। আওয়ামীলীগের অভ্যন্তরীণ দলীয় কোন্দলে ভারত সরকার তাজুদ্দীন সাহেবকে প্রধানমন্ত্রী মেনে নিলেও, তার উপর শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধী আস্থা রাখতে পারছিলেন না। আবার ভারত সরকার তাজুদ্দীন বিরোধীদের হাতে রাখতেও চেষ্টা করছিল। তাজুদ্দীন সাহেব কে নিজ অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতেই ভারত সরকারের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়তে দেখা গেছে।কিন্তু অন্যদিকে সীমান্তবর্তী ক্যাম্পগুলাতে মুক্তিযুদ্ধে ট্রেনিং এ থাকা মুক্তিযোদ্ধারা অপেক্ষা করত বাংলাদেশের অস্থায়ী সরকারের আশ্বাস বাণী শোনার জন্য। কিন্তু অস্থায়ী সরকারের পক্ষ থেকে ক্যাম্প পরিদর্শনকারি কেউ ই ভারতীয় হাই কমান্ড অমান্য করার এখতিয়ার ই যেন রাখে না। এই অমোঘ সত্যটাই তখন কে কাকে বোঝায়! অন্য দিকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধী কী কর্মকাণ্ড ছিল অননুমেয় । ভারতীয় জনমত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষোণার অনুকূল এবং জনগণ চায় শ্রীমতী গান্ধী বাংলাদেশের অস্থায়ী সরকারকে অনতিবিলম্বে স্বীকৃতি প্রদান করুন। কিন্তু যুদ্ধ বললেই তো আর যুদ্ধ করা যায় না।ভারতবর্ষ কি বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য একটা বিশ্বযুদ্ধের ঝুঁকি কাঁধে তুলে নিবে? এদিকে পাকিস্তানের পক্ষ হয়ে চীন আর আমেরিকা বার বার নালিশ করে আসছে,ভারত পাকিস্তানকে ভেঙে দুই টুকরা করার জন্য পূর্ব পাকিস্তানের একাংশ কে ডেকে এনেছে।আর মুসলিম দেশসমূহের অধিকাংশই পাকিস্তানকে সমর্থন করছে।ভারতীয় একদল জনগণ মনে করে চিরশত্রু পাকিস্তান কে শায়েস্তা করার এইটাই মোক্ষম সুযোগ এবং ইন্দিরা গান্ধীর উচিত যুদ্ধ ঘোষণা করা। কিন্ত একটা যুদ্ধ যদি সত্যি সত্যি বেঁধে যায়, পাকিস্তানের মিত্র চীন আর আমেরিকা যদি পাকিস্তানের সমর্থনে এগিয়ে আসে! তখন বিশ্বযুদ্ধের সম্ভবনা এড়ানো অসম্ভব। তাই ভারত সরকার চাইছিল এক শান্তিপূর্ণ সমাধান। পূর্ব পাকিস্তান থেকে ভারতে আসে প্রায় এক কোটির বেশি মানুষ। যাদের মধ্য প্রায় আশি লক্ষ হিন্দু। যারা পাকিস্তানী সৈন্যের বর্বর আক্রমণের মুখে সব খুইয়ে প্রাণমাত্র সম্বল করে ভারত পালিয়ে আসে। নিরাপদ বসবাসের নিশ্চয়তা না পেলে তারা দেশে ফেরত যেতে চাইবে কেন? ভারত তো আর জোর করে হিন্দুদের ঠেলে দেশে পাঠাতে পারবে না। শ্রীমতী গান্ধী চোখ বুজলেই দেখেন তার ঘাড়ে একটি যুদ্ধ এসে পড়েছে।যুদ্ধ এড়িয়ে যাওয়ার যত বিপদ সরাসরি যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার বিপদ তার চাইতে অনেক কম। এই অবস্থা তিনি রাশিয়াসহ মার্কিনযুক্তরাষ্ট্র, পশ্চিমা জার্মানি, ফ্রান্স ও ইংল্যান্ড সফর করেন। রাশিয়ার সাথে বন্ধুত্ব চুক্তির পরেও শ্রীমতী গান্ধী কেনো পশিম ইউরোপ ও মার্কিনযুক্তরাষ্ট্র সফরে গেলেন তা যে কোনো বুদ্ধিমান মানুষের কাছে তার কারণ অস্পষ্ট রইল না। ভারত সোভিয়েত ইউনিয়নের সঙ্গে চুক্তি করে পশ্চিমা দেশগুলার স্বার্থ পরিপন্থী কোনো কিছু করতে যাচ্ছে না,সে আশ্বাসটা ওসকল দেশের সরকার এবং জনগণের সামনে তুলে ধারাই ছিল তার মূল উদ্দেশ্য। বাংলাদেশ ভারতের নৌকায় পা রেখেছে। সুতরাং ভারত যা করেছে বাংলাদেশ কে মেনে নিতেই হয়েছে।বাঙালি জাতির স্বাধীনতার জন্য, বাংলাদেশের জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকর প্রতিষ্ঠার জন্য ভারত সত্যি একটি যুদ্ধ নিজ কাঁধে তুলে নিচ্ছে! ভারতের যতই স্বার্থ থাকে থাকুক না। সকলেই নিজ মাতৃভূমি তে ফিরে যেতে আকুল,স্বাধীন বাংলাদেশের জন্য উদগ্রীব। যে বাংলাদেশ ১৯৪৮ সাল থেকেই পাকিস্থানের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছে,ভারত-পাকিস্থান যুদ্ধই কি এই বাইশ বছরের রক্তাক্ত সংগ্রামের একমাত্র ফল? এটাই কি আমরা চেয়েছিলাম? ইতিহাস কোন দিকে মোড় নিবে কে জানত? এই যুদ্ধ সংঘাত রক্তপাতের মধ্য দিয়ে আমাদের জাতীয় ইতিহাস কোন ভবিষ্যৎ পানে পাড়ি দিবে তখন কি কেউ জানত? #পাঠানুভূতি আহমদ ছফা যুদ্ধপুরাণ ও প্রেমপুরাণের সংমিশ্রণে রুপকপুরাণ হিসেবে সৃষ্টি করেন "অলাতচক্র"। কম বেশি অনেক মুক্তিযুদ্ধের গল্প উপন্যাস পড়েছি। কিন্তু সম্পূর্ণ ভিন্ন আঙ্গিকে রচিত হয়েছে " অলাতচক্র"। সাবলীল ভাষায় সুনিপুণ বর্ণনা প্রত্যেক টা চরিত্র ঘটনা যেনো চোখের সামনে জীবন্ত হয়ে উঠেছে। কলকাতার ঝুম বৃষ্টি তে ভিজে ভিজে হাসপাতালে যাওয়া, কিংবা কলকাতায় বসে পাকিস্তানি মেজরের সাথে বোনের বিয়ের খবরে ভাইয়ের আত্নহত্যা! প্রতিটি ঘটনার এমন বাস্তব বর্ণনায় গায়ে কাটা দিবে, অন্তরে রক্তক্ষরণ হবে। সারাটা বই জুরেই যে ভাল লাগা তা পাঠকে শিহরিত করবে। পাঠকসমাজের প্রতি বইটা পড়ার আহবান রইল। বই হোক ভালবাসার প্রতীক।
Was this review helpful to you?
or
মুক্তিযুদ্ধের শরণার্থী শিবিরের জীবন্ত প্রতিচ্ছবির চিত্রায়িত একটি উপন্যাস।দানিয়েল চরিত্রের নায়কটি হলো স্বয়ং আহমদ ছফা নিজে আর নায়িকা তায়েবা হলো তার রাজনৈতিক আদর্শের নারীকর্মী ঢাবির শিক্ষার্থী। তায়েবা ও ছফার আদর্শের মিলের সাথে সাথে তাদের অন্তরের একটা মিলবন্ধন ছিল তা তায়েবার রোগ বৃদ্ধির সাথে সাথে প্রকটতা পেতে শুরু করে।তায়েবার মুখে কোন ছেলের প্রশংসা শুনলে ছফার হৃদয়ে যে রকম একটা ঈর্ষার কুটিলতা ফুটে অনুরূপ ছফার মুখে কোন মেয়ের নাম শুনলে তায়েবার হৃদপিণ্ড জ্বলতে শুরু করে।তাদের পরস্পরের ভালোবাসা আর অসুস্থ তায়েবার শিশুসুলভ আবদার উপন্যাসটার রোমান্টিকতার পূর্ণতা শতগুনে ফুটিয়ে তুলে।তবে তারা উভয়ে বাস্তুহীন শরণার্থী একজন হাসপাতালে স্থায়ী ডেরা পেতে বসে আছে আরকেজন পরিবার থেকে ছিন্ন এক মুসলিম যুবক জাতপাত ফেলে দিয়ে বন্ধুদের সাথে একটা মেসে থাকা শুরু করে আর সেখান থেকে মুক্তিযুদ্ধের সার্বিক চিত্র পর্যবেক্ষণ করে যাচ্ছে। তাছাড়া এখানে তাদের পরিবার পরিজনের পরিচয় অংশটা উঠে এসেছে।ছফা এসেছিল যুদ্ধে ট্রেনিং নিয়ে সম্মুখ যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে বলি হওয়ার জন্য তবে কর্তাব্যক্তিদের তার ক্রিয়েটিভ পরিচয় ধরা পড়ার কারনে বুদ্ধিবৃত্তিক যুদ্ধে সীমাবদ্ধ থাকতে হয়।এখানে আরো ফুটে উঠে শরণার্থী ও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে ভারতীয় জনগনের বিভিন্ন ধরনের নেগেটিভ পজেটিভ ক্রিয়াশীলতা। শরণার্থীদের তারা ডাকতো জয়বাংলার লোক বলে।প্রথম দিকে ভারতীয় জনগন জয়বাংলার লোকদের যেভাবে সাগ্রহে নিয়ে ছিল, পরে পরে যুদ্ধের দীর্ঘায়িত দেখে জয়বাংলারর লোকদের অসহ্য লেগেছিল।বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ভারতীয় রাজনীতিতে যে প্রভাব বিস্তার করেছিল তার দিকটাও উপন্যাসটিতে ফুটে উঠে। উপন্যাসটিতে ফুটে উঠেছে মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে অজানা দিকের একটা বড় অংশ আর তৎকালীন নেতাদের গাফিলতি আরো ফুটে উঠেছে দেশের সুবিধাবাদী অসৎ লোকের প্রতিচ্ছবি। এসব কিছু যেন মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযোদ্ধা ও সীমান্তে পঙ্গপালের মত অসাহায় শরণার্থীদের ব্যঙ্গ করতেছে।দিন দিন যেন বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম পাক ভারত যুদ্ধের রূপ নেওয়ার রসে পুষ্ট হচ্ছে।সর্বশেষ মুক্তিযুদ্ধটি পাক ভারত যুদ্ধে রূপ নেয় আর বাংলাদেশের মানুষের আশা আকাঙ্গা ও আদর্শের মৃত্যু ঘটে। মৃত্যু ঘটে উপন্যাসের নায়িকার, মৃত্যু ঘটে বাংলাদেশের মানুষের মনে জ্বল জ্বল করে জ্বলতে থাকা তেজোদ্দীপ্ত শৌর্যবীর্য প্রাণপুরুষের!
Was this review helpful to you?
or
আহমদ ছফার অলাতচক্র একটা ঘোর লাগা গল্প, একটা ঘোর লাগা সময়ের গল্প। মু্ক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বা মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক গল্প-উপন্যাস বলতে এতকাল যা পড়ে এসেছি সে সবই আমাদের দেশের গল্প— আমাদের দেশের হাট, ঘাট, মাঠ আর নগরের গল্প। কিন্তু এর বাইরেও গল্প আছে। সেই গল্প বাংলাদেশ থেকে পশ্চিমবঙ্গে আশ্রয় নেওয়া বাঙালিদের গল্প, এক কোটি শরনার্থীর গল্প। আর সেই গল্পই পরম মমতায় তুলে এনেছেন আহমদ ছফা, তাঁর অলাতচক্রে। উপন্যাসটির দুটি সংস্করণ আছে, একটি প্রকাশিত হয়েছিল সাপ্তাহিন ‘নিপুণ’ পত্রিকার ইদ সংখ্যায়; আরেকটি সংস্করণ ছফা তৈরি করেন এর কয়েক বছর পর যা পরবর্তীতে প্রকাশ পায় বই আকারে। আর এই আলোচনায় অলাতচক্র বলতে আমি সেই পরিবর্তিত সংস্করণটির কথাই বলব। অলাতচক্র কিছু মানুষের গল্প—দানিয়েল, তায়েবা কিংবা অর্চনার গল্প। অথবা বলা চলে একটি সময়ের গল্প। উপন্যাসটিতে ছফা মুক্তিযুদ্ধকে শরনার্থীদের চোখে দেখার চেষ্টা করেছেন, দেখতে চেয়েছেন কলকাতার সেই সময়কার অধিবাসীদের মাধ্যমেও। বঙ্গবন্ধু, ভাসানী, তাজউদ্দীনের ওপর ফেলেছেন ভিন্ন আলো। মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতের ভূমিকা, যাকে অনেকেই খুব বেশি গ্লোরিফাই করে, সেটিকে ক্রিটিক্যালি দেখেছেন ছফা। আর এ সব কিছুই ফুটে উঠেছে কখনও বর্ণনায়, কখনও সংলাপে। মৃত্যু শয্যায় তায়েবা যখন ছটফট করে, তখন তার মতো দেশপ্রেমীকে বাদ দিয়ে একটি বানোয়াট মিথ্যা চরিত্রকে নিয়ে লম্ফঝম্প দেখা যায় বাঙালিদের মাঝে। গল্পে এমন কিছু মানুষের কথাও এসেছে যারা সময় থেকে বহু পেছনে বসবাস করে, আঁকড়ে ধরে আছে ভিন্ন একটি সময়কে। উপন্যাসের বর্ণনা সুখপাঠ্য। তবে সংলাপ লেখার ধরনটা এর আগে দেখিনি আমি। পড়ে আনন্দ পেয়েছি। অলাতচক্রকে একইসঙ্গে বলা চলে একটি ইতিহাসভিত্তিক উপন্যাস, আবার একে একটি অসাধারণ প্রেমের উপাখ্যান বললেও ভুল হবে না! পড়ার আমন্ত্রণ রইল!