User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
উপন্যাসের শুরু এভাবে যে, যুবক শিক্ষক ও কাদেরের সাক্ষাৎ হয় বাঁশঝাড়ে। সাক্ষাৎটা আকস্মিক, যদিও যুবক শিক্ষকের গভীর রাতে প্রকৃতি বিচরন করার কারনটা কাদেরকে অনুসরন করা। দাদা সাহেব এমন কি গ্রামের সবাই কাদের কে দরবেশ ভাবে, কিন্তু যুবক শিক্ষকের বিশ্বাসটা একটু কম।কাদেরের নিশি বিচরন তার কাছে সন্দেহের। তাই কাদের কে অনুসরন করতে যেয়েই সে জোৎস্না বিস্তৃত রাতে নিজেকে হারিয়ে ফেলে, একই সাথে কাদেরকেও হারিয়ে ফেলে কিন্তু তারই সাথে একটা অপ্রস্তুত পরিবেশের সাথে তার সাথে সাক্ষাৎ হয়। আর এই অপ্রস্তুত ঘটনাটাই পুরো উপন্যাসটির আলোচনার মুল কেন্দ্র। এই ঘটনাটাই তাকে ভাবিয়ে তোলে। উলট পালট করে দেয় তার দৈনন্দিন জীবন, বিবেক আর মনুষ্যত্বের কড়া বাকবিতন্ডায় পড়তে হয় তাকে। অবশেষে মনুষ্যত্বের জয় টাই বোধ করি মুখ্য হয়ে দাড়ায়। কিন্তু সমাজের দৃষ্টিকোন থেকে সে পরাজিত।
Was this review helpful to you?
or
“ শীতের উজ্জ্বল জ্যোৎস্নারাত তখনো কুয়াশা নাবে নাই। বাঁশঝাড়ে তাই অন্ধকারটা তখনো জমজমাট নয়। সেখানে আলো অন্ধকারের মাঝে যুবক শিক্ষক একটি যুবতি নারীর অর্ধ উলঙ্গ মৃতদেহ দেখতে পায়। অবশ্য কথাটা বুঝতে তাঁর একটু দেরী লেগেছে, কারন তা ঝট করে বুঝা সহজ নয়। পায়ের উপর এক ঝলক চাঁদের আলো, যুবতি নারীর হাত- পা নড়ে না, চোখটা খোলা মনে হয়।বাঁশঝাড়ের সামনেই পূর্ণ জ্যোৎস্নালোকে সে তাঁকে দেখতে পায়। ধীরপদে হেঁটেই যেন সে তাঁর সামনে গিয়ে দাঁড়ালো, নিরাকার বর্ণহীণ মানুষ। হয়তো তাঁর দিকে কয়েক মুহূর্ত সে তাকিয়ে ছিলও। তারপর সে দৌড়তে শুরু করলো”! মানুষ মৃত্যুকে ভয় পায়, কথাটি মিথ্যা নয় কিছুতেই। তারপরও বাঁচবার আকুলতা বুকে নিয়ে আর অমরতা লাভের ওষুধের দোকান খুঁজতে খুঁজতে সাড়ে তিন হাত নিরাপদ ও আপন প্লটের দিকে আমাদের নিবিড় নিশ্চিত অভিযাত্রা। মানুষের বাঁচবার এই অশেষ আকুলতার কারণেই গোরস্থানের সামনের ফ্ল্যাটের চেয়ে লেকের পাশের ফ্ল্যাটটির দাম দাঁড়ায় অনেকটা বেশী। সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ্র “চাঁদের অমাবস্যা” বইটি তে প্রকৃতি, রাত,চাদ,অন্ধকার, আলো, কুয়াশা, নদী, বাঁশির শব্দ, বাতাসের আওয়াজ, ব্যাক্তির সংশয়, সারল্য, আত্মনিমগ্নতা- এই সব বিষয় ও অনুভব সারিবদ্ধভাবে হাজির হয়েছে পাঠকের সামনে। সর্বোপরি বলা যায়, ঔপন্যাসিক সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ্ তাঁর চাঁদের অমাবস্যা উপন্যাসে আমাদের আমাদের চির পরিচিত সমাজকে আরেফ আলী মাস্টারের মনোজাগতিক বিশ্লেষণের মাধ্যমে আমাদের সামনে তুলে ধরেছেন। এতে সমাজের ইতির দিকটা যেমন উঠে এসেছে তেমনি ভাবে নেতির দিকটাও প্রাধান্য পেয়েছে। ফলে আমরা এমন একটা ঘুণে ধরা সমাজব্যবস্থাকে প্রত্যক্ষ করি যা ঔপন্যাসিকের সমকালীন সমাজমনস্কতার পরিচয় বহন করে।
Was this review helpful to you?
or
#রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগিতা বইয়ের নাম- চাঁদের অমাবস্যা জনরা-উপন্যাস ঔপন্যাসিক-সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ পৃষ্ঠা-১৪১ মূল্য-২০০ শোভা প্রকাশনী সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ বাংলা সাহিত্যের এক অসমান্য কথাশিল্পী, যিনি আপন নিষ্ঠা ও মনস্কতায় স্বতন্ত্র। শিল্প সৃষ্টিতে তিনি এক শুদ্ধ পুরুষ। যুগের জটিল চেতনাপ্রবাহে তার শিল্পচর্চায় আমাদের মনন ও চেতনা হয়ে উঠে ক্রমাগত সচেতন। "চাঁদের অমাবস্যা" উপন্যাসের কাহিনী। বড় বাড়িতে আশ্রয়প্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক যুবক আরেফ আলী। শীতের এক জ্যোৎস্নালোকিত রাতে নিজের প্রয়োজনে বাইরে গিয়ে হঠাৎ বড়বাড়ির ছোট কর্তা কাদেরকে দেখে। হঠাৎ করে তাকে আবার চোখের সামনে থেকে হারিয়ে ফেলে। তখনি বাঁশ ঝাড়ে নারীকন্ঠের কান্না এবং এক যুবতীর অর্ধনগ্ন মৃতদেহ দেখতে পায়। প্রথমে দ্বিধান্বিত হলেও পরে আরেফ আলী বুঝতে পারে কাদেরই যুবতীটির হত্যকারী। এই হত্যাকান্ডই উপন্যাসের কেন্দ্রবিন্দুতে অবস্থিত। হত্যার ঘটনাটি তাকে বিচলিত করে তুলে। অনেক ভাবনা চিন্তার পরও সে এসবের কোন কূল কিনারা পায় না। সে কি বলে দিবে কাদের যে এই হত্যাকান্ডের মূল হোতা ? তারপর কি হতে পারে আরেফ আলীর জীবনে! সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ শিল্পী জীবনের বেশির ভাগ সময় কাটিয়েছেন ফ্রান্সে। ইউরোপীয় সাহিত্যের সংস্পর্শে এসে তিনি বাংলা সাহিত্যে চেতনাপ্রবাহ রীতর প্রবর্তনা করলেন তাঁর উপন্যাস সাহিত্যের মাধ্যমে। বিরলপ্রজ শিল্পী সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহর "চাঁদের অমাবস্যা" উপন্যাসে চেতনা প্রবাহের রীতি মেলে। ইউরোপীয় উপন্যাস থেকে তিনি এটা ধার করলেও পুরোপুরি অন্ধ অনুকরণ করেন নি। বরং তাকে কিছুটা পরিবর্তন করে বাংলা সাহিত্যের উপযোগী করে বিশেষ মৌলিকতায় চেতনাপ্রবাহের রীতির প্রবর্তন করেন। এই উপন্যাসের বাইরের কাহিনী ততটা মুখ্য নয় যতোটা এই হত্যাকান্ড নিয়ে আরেফ আলীর মনোজগতের চিন্তা চেতনা। আরেফ আলীর মনোজগতের এই চেতনা উপন্যাসের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। ব্যক্তিগত মতমত: ভালো লাগার প্রশ্ন আসলে বলবো অবশ্যই পছন্দের একটি উপন্যাস। কিন্তু কেন? সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ এই উপন্যাসে আরেফ আলী চরিত্রের মধ্য দিয়ে আমাদের মনোজগতের দ্বন্দ্ব প্রকাশ করেছেন। আরেফ আলী ভেতরকার চিন্তা চেতনাই এই উপন্যাসের মূল দ্বন্দ্ব। কাদের চরিত্রের গুরুত্ব আপেক্ষিক। কাহিনীর প্রয়োজনে তাকে টেনে আনা। তবে মূল চরিত্র আরেফ আলী। এবং আরেফ আলীর প্রতি ভালোলাগা এই কারনেই আসে, সে দূর্বল জেনেও চুপ করে থাকেনি বা নিজের দ্বন্দ্বের উর্ধে গিয়ে নিজের অস্তিত্ব জানান দিয়েছে। অকারনে একটি প্রাননাশ তার চেতনাকে বারবারই বিচলিত করে তুলেছিলো। আর এই অস্তিত্ব প্রকাশেই আরেফ আলী চরিত্রের সার্থকতা। যদিও উপন্যাসের শেষ টা ঔপন্যাসিক পাঠকের ভাবনার বাইরে রেখে চমক দিয়েছেন। এবং উপন্যাসের শুরু থেকে পাঠককে তিনি শেষ পর্যন্ত টেনে নিয়ে যেতে পেরেছেন নির্দ্বিধায়। "চাঁদের অমাবস্যা" বাংলা সাহিত্যের অন্যতম উপন্যাস। ঔপন্যাসিক খুবই নিপুন ভাবে উপন্যাসের ভাষার শৈল্পিকতায় চরিত্রের মাঝে দ্বিধা, আতঙ্ক এবং প্রবঞ্চনা এবং কর্তব্যবোধের মতো স্তরগুলো গড়ে তুলেছেন। https://www.rokomari.com/book/100061/চাঁদের-অমাবস্যা
Was this review helpful to you?
or
‘বা ংলা কথাসাহিত্যে একজন অন্যতম দিকপাল হচ্ছেন সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ্। মাত্র তিনটি উপন্যাস লিখে তিনি বাংলা সাহিত্যাঙ্গনে অমরত্ব লাভ করেছেন। তার ছোটগল্প, নাটক প্রভৃতির ভেতরে তিনি অস্তিত্ববাদের বিষয়টি প্রকট করে দেখেছেন।তার সুন্দর রচনাগুলোর মধ্যে “চাঁদের অমাবস্যা” অন্যতম।চাঁদের অমাবস্যা’ উপন্যাসের সমগ্র অবয়বজুড়ে অস্তিত্ববাদী দর্শনের ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। এখানে কোনো সুসংবদ্ধ কাহিনী নেই, প্রতি মুহূর্তেই অনুভূতি ও আত্মোপলব্ধি একাকার হয়ে উঠেছে। মানব মনের জটিলতা বা আত্মদ্বন্দ্বকে প্রকাশ করার জন্য পরিবেশ উপযোগী শব্দ ব্যবহার করেছেন। বিশ্লেষণের রহস্যভরা আকর্ষণ প্রতীকের যথার্থ ব্যবহার তার উপন্যাসকে শিল্প সুষমামণ্ডিত করেছে। বিংশ শতাব্দীর মহাযুদ্ধ-উত্তর সমাজব্যবস্খায় যে নতুন শিল্পরীতির জন্ম হয়েছে, সেই চেতনাপ্রবাহ রীতিতেই ‘চাঁদের অমাবস্যা’র কাহিনী বিন্যস্ত হয়ে সার্থক হয়ে উঠেছে। আশ্রিত জীবনে অভ্যস্ত অস্তিত্বহীন স্কুলশিক্ষক আরেফ আলী কিভাবে অস্তিত্ববান হয়ে ওঠে, তার প্রতিফলন ঘটে ‘চাঁদের অমাবস্যায়’। এখানে মৌলিক সমস্যাকে লেখক বিশ্লেষণের সাহায্যে প্রকাশ করেছেন। আরেফ আলীর মানসিক ও অর্থনৈতিক যন্ত্রণা এখানে সুতীব্রভাবে প্রকাশ পেয়েছে এভাবে ‘আরেফ আলীর বয়স বাইশ-তেইশ, কিন্তু তার শীর্ণ মুখে, অনুজ্জ্বল চোয়ালে বয়োতীত ভার, যৌবনভার সে যেন বেশি দিন সহ্য করতে পারেনি। সে মুখে হয়তো যৌবন কন্টক জন্মেছিল, কখনো যৌবনসুলভ পুষ্পোদগম হয় নাই।’ এক রাতে ঘর থেকে বাইরে বেরিয়ে আরেফ আলী দেখে, জ্যোৎস্নালোকিত পরিবেশে বাঁশঝাড়ের ভেতর এক মৃত যুবতী পড়ে আছে। পাশে দণ্ডায়মান কাদের মিঞা, যে বাড়ি সে আশ্রিত, সে বাড়ির মালিক। এই সত্য কথাটি সে কাউকে বলবে কি বলবে না, সে দ্বিধাদ্বন্দ্বে তার অনেক সময় কেটে যায়। নদীতে মৃত যুবতীকে ফেলে দিয়ে সে আত্মবিস্মৃত হয়ে পড়ে। অস্তিত্বহীনতার দোলায় দুলতে থাকে। কিন্তু না, অবশেষে সে ঘুরে দাঁড়ায়, সাহসী হয়ে ওঠে এবং সব সত্য কথা দাদা সাহেব ও আইন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রকাশ করে। আরেফ আলী হয়ে ওঠে অস্তিত্ববান। অস্তিত্ববাদের মতো চেতনা প্রবাহ রীতি তার এ উপন্যাসে চমৎকারভাবে ফুটে উঠেছে। ঘটনা বিন্যাস, চরিত্র চিত্রণ, অস্তিত্ববাদ ও চেতনাপ্রবাহ রীতি প্রয়োগে সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ্র ‘চাঁদের অমাবস্যা’ একটি অন্যতম শিল্পসম্মত সফল উপন্যাস। ইউরোপীয় দর্শনের ছোঁয়া এ উপন্যাসে রয়েছে।পাঠক মিস করবেন না এত সুন্দর একটি গল্প।আশাকরি আপনার ভাল লাগার খোঁড়াক যোগাবে বইটি।