User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
কাহিনী সংক্ষেপ:- দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন সময়, রাশিয়ার একদল জঙ্গিবিমান শত্রুপক্ষ জার্মানির বিমান-ঘাঁটিতে আক্রমণ করল। দক্ষ পাইলট "আলেক্সেই মেরেসিয়েভ" এর নেতৃত্বে আক্রমণ সফল হল। কিন্তু এই সময়ে আলেক্সেই মারাত্মক ভুল করে বসল।সহজ শিকারকে ধাওয়া করতে গিয়ে নিজেই ফাঁদে পড়ে গেল।তার জঙ্গি বিমানের গুলি শেষ হয়ে গেছে,চারটি বিমান ঘিরে ধরলো আলেক্সেই এর বিমান কে।বন্দি করতে চায় তাকে। কিন্তু আলেক্সেই জীবন থাকতে বন্দি হবে না,সে জানে একবার বন্দি হলে এই জীবনে আর বের হতে পারবে না শত্রুর হাত থেকে। সহ্য করতে হবে অকথ্য নির্যাতন আর অত্যাচার।তাই সিদ্ধান্ত নিল,যে করেই হোক বের হতে হবে শত্রু বিমানের ফাঁদ থেকে। কিন্তু ফাঁদ কেটে বের হতে গিয়ে গুলি লাগলো বিমানে,আহত বিমান নিয়ে নিজের ঘাঁটির দিকে যেতে লাগল সে। কিন্তু হঠাৎ করেই বন্ধ হয়ে গেল ইঞ্জিন।বিমানটা গড়িয়ে নামতে লাগল, যেন খাড়া পাহাড়ের গা বেয়ে গড়াচ্ছে।নিচে বিশাল বনের উপর আছড়ে পড়লো,কয়েকটা গাছ ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে গেল বিমানটা।ককপিট থেকে ছিটকে গাছের শাখা প্রশাখার সাথে গড়িয়ে নিচের জমাটবাঁধা বরফের স্তূপে গিয়ে পড়ল আলেক্সেই।তাতে প্রাণে বেঁচে গেল,,,, কতখন পর জ্ঞান ফিরেছে জানে না আলেক্সেই, জেগে উঠার সাথে সাথে অনুভব করল তীব্র যন্ত্রণা, কিন্তু যন্ত্রণা শুধু পায়ে। পরীক্ষা করে বুঝতে পারল দুটো পা-ই ভেঙে গিয়েছে। পায়ের পাতার উপর দিকটা আর আঙুলের হাড় টুকরো টুকরো হয়ে গিয়েছে। পায়ের উপর দাঁড়াতে গেলেই ব্যাথায় পুরো শরীরে আগুন ধরে যায়। কিন্তু এই যুদ্ধ বিধ্বস্ত জঙ্গলে কিভাবে নিজের এলাকায় ফিরবে এই ভাঙা পা নিয়ে? এখানে বসে থাকলে ঠান্ডায় জমে যাবে।ভয় আছে শত্রুর চোখে পড়ে যাওয়ার। অসহ্য ব্যথা নিয়ে একপা দু'পা করে গোড়ালির উপর ভর দিয়ে হাঁটতে শুরু করল আলেক্সেই।পা ফেলার সাথে সাথে ব্যাথায় আগুন ধরে যাচ্ছে মাথা। এভাবেই নেংচিয়ে নেংচিয়ে সাতদিন হাঁটার পর আর সম্ভব হলো না এভাবে এগোনো। এরপর হাঁটু আর হাতের উপর ভর দিয়ে যন্তুর মত সামনে এগোতে লগলো আলেক্সেই। খাবার হিসেবে খেলো কচি পাইনের ছাল,বার্চ আর লইমের কুঁড়ি,আর নরম সবুজ শ্যাওলা গরম জলে ফুটিয়ে। টানা ১৮ দিন জমাটবাঁধা বরফের উপর হামাগুড়ি দিয়ে হাঁটার পর প্রায় অচেতন অবস্থায় পৌঁছাল ছোট এক গ্রামে। গ্রামের বুড়ো মিখাইল দাদু আর তার ছেলের বউ ভারিয়া'র আন্তরিক সেবা শুশ্রূষায় ধিরে ধিরে কঙ্কালসার দেহে প্রাণ ফিরে আসল। কিছুদিন পর আলেক্সেই এর বন্ধুরা এসে নিয়ে গেল তাকে। উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠিয়ে দেওয়া হলো মস্কোর উন্নত হাসপাতালে। কিন্তু হাজার চেষ্টা করেও বাঁচানো গেল না তার পা দুটো।দেশকে শত্রুর হাত থেকে রক্ষা করার স্বপ্ন, লড়াই করার স্বপ্ন,আকাশে উড়ে বেড়ানোর স্বপ্ন সব একসাথে শেষ হয়ে গেল। হতাশায় নিমজ্জিত হলো দুঃসাহসী পাইলট আলেক্সেই মেরেসিয়েভ।ডাক্তার, নার্স, রুমের অন্যান্য বাসিন্দারা সাহস দেওয়ার চেষ্টা করলেও ধিরে ধিরে জীবন্ত লাশে পরিনত হতে লাগলো সে। কিন্তু একদিন হাসপাতাল রুমের আরেক বাসিন্দা 'কমরেড কমিসার ভরোবিওভের' কাছে একটা পুরোনো পত্রিকার পাতা পেল যাতে এক সৈনিকের গল্প আছে যে এক পা হারিয়েও বিমান উড়িয়েছিল। হঠাৎ করেই তারপর থেকে উজ্জ্বল হয়ে উঠতে দেখা গেল আলেক্সেই এর মুখ।সে আবার লড়াই করবে, আবার আকাশে উড়বে,গুলি করে ঝাঁঝড়া করবে শত্রু বিমান, শত্রু মুক্ত করবে তার প্রিয় মাতৃভূমি। কিন্তু কিভাবে??এক পা ছাড়া হয়তো বিমান চালানো সম্ভব, কিন্তু তার যে দুটো পা-ই নেই,সে কিভাবে উড়াবে যুদ্ধ বিমান?? যেখানে শুধু একটা নখ না থাকলেই অযোগ্য ঘোষণা দেওয়া হয়, বাদ দিয়ে দেওয়া হয় প্রার্থী'কে,,,,,, ?পাঠ-প্রতিক্রিয়া :- আমার কাছে সব সময় এই বইয়ের প্রতিটি চরিত্র অসাধারণ মনে হয়। অসম্ভব কে সম্ভব করার গল্প এটা, কষ্ট কে সাফল্যে পরিণত করার গল্প।হার না মানা এর সৈনিকের গল্প এটা, যুদ্ধ করে টিকে থাকার গল্প। এটা কোন কাল্পনিক গল্প না, সম্পূর্ণ সত্যি ঘটনা নিয়ে রচিত এই উপন্যাস। লেখক ও সাংবাদিক 'বরিস পলেভয়' পুরো দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়টা বিভিন্ন যুদ্ধক্ষেত্রে ঘুরে বেড়ান সাংবাদিকতার খাতিরে।আর তখনি বিভিন্ন সময়ে দেখা পাওয়া সৈনিকদের অভিজ্ঞতা একটি ডায়রিতে লিখে রাখেন। এভাবেই মোট ৬৫টি নোট তৈরি হয় যার একটি গল্প পরিণত হয় "মানুষের মত মানুষ" উপন্যাসে। গল্পের নায়ক 'আলেক্সেই মেরেসিয়েভ' কোন কাল্পনিক চরিত্র না, সম্পূর্ণ বাস্তব একটি চরিত্র।আর সে কারণেই হয়তো পাঠকের হৃদয়ের গভীরে আঘাত করে প্রতিটি শব্দ।আলেক্সেই পা হারানোর পর আবার সুস্থ হয়ে কাঠের পা ব্যাবহার করে নিজের যোগ্যতার প্রমাণ দিয়ে আবার যুদ্ধে ফিরে আসে।কাঠের পা দিয়ে বিমান চালনায় এতোটাই দক্ষতার প্রমাণ দেয় যে উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বাধ্য হয়ে আবার তাকে নিয়োগ দেয়।১৯৪৩-১৯৪৫ সালের নানান অভিযানে সাফল্যের সাথে লড়াই করে যার জন্য সরকার তাকে 'সোভিয়েত ইউনিয়নের বীর' খেতাবে ভূষিত করে। যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে সে তার ভালোবাসার মেয়ের সাথে বিয়ে করে এবং তাদের একটি ছেলেও আছে। ?পুনঃশ্চ:- জীবনে আমাদের প্রতি মুহূর্তে বিভিন্ন বাঁধার সম্মুখীন হতে হয়।সে বাঁধার সাথে লড়াই করে বেঁচে থাকার নামই জীবন।আর এই লড়াইয়ে অনুপ্রেরণা যোগায় এইসব অসাধারণ বই।সবাই বেশি বেশি বই পড়বেন,সব বাঁধা অতিক্রম করে জীবন কে উপভোগ করবেন,হাল ছেড়ে না দিয়ে লড়াই চালিয়ে যাবেন, সুস্থ থাকবেন,সুখে থাকবেন এই কামনাই করি।
Was this review helpful to you?
or
এই গল্পটা অসাধারণ সুন্দর। কিন্তু ব ইটি আমি হারিয়ে ফেলেছি ।আর পাচ্ছিনা।আমি বরিস পলেভয় এর অনুবাদটি চাই ।
Was this review helpful to you?
or
বইটি একটি সত্যি ঘটনা অবলম্বনে লেখা হয়েছে। গল্পের সময়কাল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ এবং প্রধান চরিত্র রাশিয়ার একজন বৈমানিক, নাম আলেক্সেই মারেসিয়েভ। যুদ্ধে তিনি গ্যাংগ্রিন এর কারণে তার দুটো পা'ই হারিয়ে ফেলেন বিমান যুদ্ধে। এরপর হাজারো বাধা বিপত্তি কাটিয়ে শুধুমাত্র প্রবল ইচ্ছাশক্তি'র জোরে যুদ্ধ বিমানের একজন সফল বৈমানিক হয়ে উঠা। উৎসাহী পাঠকবৃন্দ গল্পের নায়কের কিছু কথা নিচের লিংকে পড়তে পারবেন। http://en.wikipedia.org/wiki/Alexey_Maresyev --------------------------------------------------- অনুবাদে লেখাটি'র ধাঁচ প্রায় রাশিয়ান বই এর মত। তবে মাঝেমধ্যে নীলক্ষেত এবং কলেজ স্ট্রীটের সেকেন্ড হ্যান্ড বইয়ের দোকানে বা ফুটপাথে এটি'র অন্য অনুবাদকের বইও দেখেছি। সংগ্রহে রাখার মত একটি বই, পড়ে দেখতে পারেন। সত্যি বলছি ভালো লাগবে।