User login

Sing In with your email

Email Address
Password
Forgot Password?

Not Account Yet? Create Your Free Account

Send

Recipients:
Message:

Share to your friends

Copy link:

    Our Price:

    Regular Price:

    Shipping:Tk. 50

    • Size:
    • Color:
    QTY:

    প্রিয় ,

    সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
    মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?

    Please Login to Continue!

    Our User Product Reviews

    Share your query and ideas with us!

    Customer Reviews

      By Sultan

      03 Nov 2019 08:18 AM

      Was this review helpful to you?

      or

      ইঞ্জিনিয়ার পৃথু ঘোষ। লোকে যাকে বলে পাগলা ঘোষসা।সে চেয়েছিলো বড় বাঘের মত বাঁচবে। সমাজ,সংসার,নারী, গৃহ এসবের মধ্যে কখনও নিজেকে আটকে রাখবেনা।স্বনির্ভর, স্বাধীনচেতা, মুক্ত পুরুষ হয়ে বাঁচবে।সে বন,জঙ্গল,গাছপালা, নদী,পাখি এসবের মধ্যে ঘুরে বেড়াতে ভালোবাসতো।সারাজীবন নিজের কাছে নিজেকে গুরুত্ব দিয়ে এসেছে।তার স্ত্রী রুষা সেন,অতি রূপবতী,সুন্দরী, উচ্চ শিক্ষিতা, কলেজের অধ্যাপিকা হিসেবে সমাজের উচ্চ আসনেই বেশ পরিচিত। যার প্রেমে নানা পুরুষ খাবি খায়।অথচ পৃথু তার ধরা ছোঁয়ার বাইরে।সে সারাজীবন চেয়ে এসেছে কুর্চির মত একটা সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারের কম শিক্ষিত নারীকে নিজের বউ হিসেবে জীবনসঙ্গিনী হিসেবে পেতে।কিন্তু রুষা সেরকম মেয়েই নয়।রুষার কাছে তার ক্লাব,সেমিনার, পার্টি,চাকরি এবং অতিরিক্ত নিয়মশৃঙ্খলা, রুটিন মাফিক জীবন এসবই বেশি প্রায়রিটি পেত।ঘর সংসার,পরিবার এসবের প্রতি পৃথুর কোন আগ্রহ বা মন ছিলোনা কোনদিন।যার ফলে দুই ছেলেমেয়ে মিলি,টুসুও তার থেকে অনেক দূরে সরে যায়।অবশ্য টুসুটা একটু আলাদা।অনেকটা পৃথুর মতই হয়েছে।বাবাকে সে ভালোবাসে। ভবঘুরে,বেখেয়ালি ছন্নছাড়া একটা অদ্ভুত মানুষ পৃথু। ছোটবেলা থেকেই কুর্চিকে সে ভালোবেসেছিলো।কুর্চি সমাজ-সংসার লোকলজ্জার ভয়ে পৃথুকে তেমন করে ধরা দেয়নি কখনো।কারণ সে তার বিয়ের পরবর্তী জীবনকে মেনে নিয়েছে। কুর্চি তার স্বামী ভাটুকে নিয়ে একটা ছোটখাট নিশ্চিত সুখের জীবন কাঁটাতে চেয়েছিলো।কিন্তু ভাটুকে সে ভালোবাসতে পারেনি কখনো।কুর্চির মন জুড়ে আছে পৃথু। পৃথুর সাথে তার গোপন প্রণয় চলতে থাকে।যা একসময় ভাটু টের পেয়ে যায়।ভাটু হঠাৎই অগ্নিশিখার মত জ্বলে উঠে।সে মরিয়া হয়ে উঠে বড়লোক পৃথু ঘোষকে হারাতে।পৃথুর চাইতেও বেশি অর্থসম্পদের মালিক হতে।যাতে কুর্চিকে কখনো হারাতে না হয়।কিন্তু কি সে কি পারবে পৃথুকে হারাতে? পৃথু কুর্চিকে কাছে পেতে চায়,কুর্চি ধরা দিয়েও যেন ধরা দেয়না।কুর্চির থেকেও প্রত্যাখ্যাত হয়ে পৃথু যায় বাইজি বিজলির কাছে। অন্যদিকে হ্যান্ডসাম, শিক্ষিত, স্মার্ট, অর্থবিত্তে ভরপুর ভিনোদ ইদুরকার।ভিনোদকে রুষার ভালো লাগে।গড়ে উঠে তাদের মধ্যেও গোপন প্রণয়।রুষা আর ভিনোদের গোপন প্রণয়নের কথা পৃথু বুঝতে পেরেও যেন না বোঝার ভান করে থাকে। শামীমের মেয়ে নুরজাহানকে ডাকাত ডাকু মগনাল অপদস্থ করতে গেলে পৃথু তাকে সেই বিপদের হাত থেকে রক্ষা করে।কিন্তু তার বিনিময়ে হারাতে হয় নিজের একটা পা।হাসপাতালে তিনমাস ট্রিটমেন্ট এরপর বাড়ি গিয়ে বিরাট এক ধাক্কা খায়। আর তখনই রুষা,পৃথুর জীবনে ছন্দপতন শুরু হয়। পৃথু হাটাচন্দ্রা ছেড়ে সিওনীতে চলে যায়।শুরু হয় তার একার পথচলা।কিন্তু সেখানে গিয়ে দেখতে পায় তার ভালোবাসার কুর্চিকে।যে কুর্চি একসময় নিজেকে পৃথুর থেকে গুটিয়ে রাখতো সে কুর্চিই পৃথুকে ঘনিষ্ঠভাবে পেতে চায়।পৃথুর অজানিতেই তাদের পুরোনো ভালোবাসায় রঙ লাগে আবার। কুর্চি চায় তাদের ভালোবাসার সম্পর্কে পূর্ণতা আসুক। কিন্তু পৃথুর বিবেক,মানুষত্ববোধ, তার সচেতন মন কি পারবে কুর্চির আহবানে সাড়া দিতে? অন্যদিকে ভিনোদ ইদুরকার রুষার সাথে প্রতারণা করে।বিপদগ্রস্ত রুষা সাহায্যের জন্য ছুটে যায় ভুচুর কাছে।ভুচু তাকে সাহায্য করতে গিয়ে সুন্দরী রুষার প্রেমে পড়ে যায়।ভুচু একটা গাড়ির গ্যারেজের মেকানিক।পৃথুর সাথে সবসময় একসাথে চলফেরা করতো বন্ধুর মত।ভুচু কখনো বিয়ে করেনি।পামেলা নামে এক মেয়েকে ভালোবেসেছিলো।কিন্তু সেও ভাটুর সাথে প্রতারনা করে চলে যায়। ভুচুর একাকীত্ব জীবনে রুষা যেন একটুকরো স্বপ্ন হয়ে আসে।সে রুষাকে নিজের করে পেতে চায়।পৃথু টের পায় সহজ সরল ভুচু তারই স্ত্রী রুষার প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছে।রুষাও বুঝতে পারে।কিন্তু রুষা কি পারবে ভুচুকে গ্রহণ করতে? জীবনের উত্থানপতন, মান-অভিমান সবকিছুকে পিছনে ফেলে এসে রুষা চায় পৃথু ফিরে আসুক,এতোকিছুর পরে রুষাও বদলে যায় অনেক।সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারের বউদের মতই একটা স্বাভাবিক জীবন কাটাতে চায় পৃথু আর তার দুইছেলেমেয়েকে নিয়ে। অন্যদিকে, কুর্চি পৃথুকে চায়,মিলি টুসুও চায় তাদের বাবা তাদের কাছে ফিরে আসুক,তাদের পাশে থাকুক। কিন্তু পৃথু কি করবে?কার ডাকে সাড়া দিবে সে? তার বাবা সত্ত্বা তাকে কি এই মেলবন্ধনের বেড়াজাল থেকে বের হতে দিবে?অন্যদশজন স্বামীর মত সে কি পারবে রুষার সাথে সংসার করতে? নাকি কুর্চির ডাকে সাড়া দিবে? কোথায় যাবে পৃথু?কার কাছে যাবে? বনের বাঘের মত যে বাঁচতে চেয়েছিলো সে কি তা কোনদিনও পারবেনা?কোন মানুষই কি তা পারে? সব মানুষই কি এভাবে মানুষের দ্বারে দ্বারে ফিরে সারাজীবন একে অন্যের হৃদয়,মন হাতড়ে বেড়িয়ে সুখ খুঁজে বেড়ায়?এর নামই কি জীবনের মাধুকরী? পাঠ প্রতিক্রিয়া:বইটা অসাধারণ যে তা বলবো না।পৃথুর অতিরিক্ত হেয়ালিপনা,ভবঘুরে ভাব,বন্ধুদের সাথে অতিরিক্ত আড্ডাবাজি,মদ খাওয়া,বাইজিদের বাড়িতে নাচ গান দেখা এসব আমার কাছে খুবই একঘেয়ে আর বিরক্তি লেগেছে।তাই মাঝখানে বেশকিছুদিন আর বইটা পড়িনি।তবে এসব একঘেয়েমি কাটিয়ে উঠার পর তাদের জীবনের ছন্দপতন থেকে শুরু করে বাকিসবই ভালো লেগেছে।বইয়ের লেখাগুলো বেশি গিজগিজে।তাই পড়তে গিয়ে বিরক্তিও যেমন লেগেছে তেমনি অনেক সময়ও লেগেছে।তবে সবকিছুকে কাটিয়ে উঠতে পারলে বইটা আপনার কাছে ভালো লাগবে আশা করি।তবে ১৮ এর কম বয়সী ছেলেমেয়েদের এই বইটা না পড়াই ভালো হবে।ম্যাচিউরড না হলে এই বই পড়ে কোন সুখ পাওয়া যাবেনা আমার মতে। পুনশ্চঃবইটা লেখক একবিংশ শতাব্দীর ছেলেমেয়েদের জন্য লিখেছেন।তাই আপনারা চাইলে বইটা পড়তে পারেন।আশাকরি খারাপ লাগবেনা।অনেককিছু জানতে পারবেন।

      By Dulal Hossin Emon

      10 Jul 2018 11:04 AM

      Was this review helpful to you?

      or

      পড়ে ভাল লাগল ,মজার একটা বই

      By Galiba Yesmin

      29 Apr 2020 11:37 AM

      Was this review helpful to you?

      or

      “বুদ্ধদেব গুহ”-একজন ভারতীয় বাঙালী লেখক। তিনি মূলত বন, অরণ্য এবং প্রকৃতি বিষয়ক লেখার জন্য পরিচিত। বহু বিচিত্রতায় ভরপুর এবং অভিজ্ঞতাময় তার জীবন। ইংল্যান্ড, ইউরোপের প্রায় সমস্ত দেশ, কানাডা, আমেরিকা, হাওয়াই, জাপান, থাইল্যান্ড ও পূর্বআফ্রিকা তার দেখা। পূর্বভারতের বন-জঙ্গল, পশুপাখি ও বনের মানুষের সঙ্গেও তার সুদীর্ঘকালের নিবিড় ও অন্তরংগ পরিচয়। সাহিত্য-রচনায় মস্তিষ্কের তুলনায় হৃদয়ের ভূমিকা বড়- এই মতে তিনি বিশ্বাসী। মাধুকরী উপন্যাসে কেন্দ্রীয় চরিত্র পৃথু ঘোষকে সবাই আড়ালে ‘পাগলা ঘোষসা’ বলে কারণ তিনি কি করেন কি করেন না কার সাথে চলেন কার সাথে চলেন না এসব কিছুই তার ঠিক ছিল না , বিলেত ফেরত ইঞ্জিনিয়ার ভালোবাসতো কবিতা লিখতে আর জঙ্গলে ঘুরতে, পরিপূর্ণ পরিবার থাকা সত্ত্বেও তিনি ছুটতেন প্রাক্তন প্রেমিকের কাছে একটু ভালবাসা পাওয়ার আশায় এবং বাঁচতে চেয়েছিল বড় বাঘের মতো। কিন্তু ভাগ্যের পরিহাসে অঙ্গ হারানোর পর তিনি বুঝতে পারলেন ভালবাসা এবং নিজের সুখের পিছনে ছুটতে ছুটতে তিনি কতো দূর চলে গেছেন যেখান থেকে ফিরে আসা সম্ভব না এবং তার স্ত্রীও একই ভুল করে তার থেকে অনেক দূরে চলে গেছে। সুখের পিছে ছুটে ঘরের সুখকে পা দিয়ে পিষে ফেলেছে। এছারাও অন্যান চরিত্র কুর্চি, বিজলী, ভুচু, শামীম, সাবির, দিগা পাড়ে, ঠুঠা বাইগা, গিরিসদা তাদের নিয়েও অনেক ছোট-বড় ঘটনা জড়িয়ে রয়েছে উপন্যাসে। উপন্যাসটি পড়ার শুরু করার পর থেকেই ভাল লাগছিল কারণ প্রত্যেকটা চরিত্র খুব আকর্ষণীয়, তার সাথে জঙ্গলের বিভিন্ন অভিজ্ঞতার বর্ণনা, নানান রকম পাখি – গাছ – পশুর বর্ণনা, দল নিয়ে লুকিয়ে লুকিয়ে শিকার করা, ডাকাত দলের সাথে লড়াই সব কিছুই যেনো চোখের সামনে ভাসছিল। চরিত্র গুলো যেনো আমার চোখের সামনেই কথা বলছে, খাচ্ছে ,হাঁটছে, হাসছে , অভিমান করছে এমন অনুভব হচ্ছিল কারণ লেখক ততটুকু পরিশ্রম করেই লিখেছেন তা আপনারা বইটি পড়ার সময় বুঝবেন। আর একটা বিষয় হচ্ছে এই উপন্যাসে অনেক লেখক-কবিদের নিয়ে এবং বাংলা সাহিত্য নিয়ে ‘বুদ্ধদেব গুহ’ অনেক আলোচনা করেছেন। বইটি পড়ে প্রায় মাঝামাঝি আসার পর থেকে খারাপ লাগছিল কারণ উত্থানের পর এমন নির্মম পতন মেনে নেয়া যায় না। পড়তে পড়তে চরিত্রের অনুভূতি গুলো অনুভব করতে করতে ক্লান্ত হয়ে যাচ্ছিলাম বুঝতে পারছিলাম কেনো অনেকে বলেছিল- তারা মাধুকরী পড়া শুরু করেছে কিন্তু শেষ করতে পারেনি। লেখক এই উপন্যাসে বোঝাতে চেয়েছেন- মানুষ মাত্রই প্রকৃতির অংশ, মানুষ সামাজিক জীব তাই একা বেঁচে থাকা কখনোই সম্ভব না, জীব জন্তু পাখি তাদেরও অনুভূতি আছে, মানুষ হয়ে আমরা শুধু প্রকৃতির ক্ষতিই করছি, নিজের সুখকে বড় করে দেখলে বা নিজের সুখ খোঁজার জন্য দ্রুত বেগে ছুটে চললে জীবনে সব কিছু হারাতে হয়, পরিবার- সংসারের-সন্তানের মধ্যেই আসল সুখ লুকানো থাকে শুধু একটু সময় দিয়ে খুঁজে নিতে হয়, যাই হোক না কেন! স্বামী স্ত্রীর মাঝে সুন্দর সম্পর্ক ধরে রাখা উচিৎ। এক কথায় বলতে গেলে – মাধুকরী হচ্ছে সামাজিক মানুষের জীবনধারার অভিধান সরূপ। বইটা পড়া শুরু করার পর মনে হচ্ছিল খুব জমপেশ একটা পর্যালোচনা লিখতে পারবো কিন্তু পড়া শেষ অরতে করতে উপন্যাসের অনুভূতি গুলো এমন ভাবে মনে দাগ কেটেছে যে এখন এতো গুলো ঘটনা মিলিয়ে গুছিয়ে পর্যালোচনা লিখতে পারছি না, ভাষা পাচ্ছি না, তল পাচ্ছি না। আমার কথা শুনে আপনাদের মনে হতে পারে একটা বই সম্পর্কে বেশি বেশি বলছি তাই আবারও বলছি আপনারা একটু কষ্ট করে ‘বুদ্ধদেব গুহ’ এর লিখা “মাধুকরী” উপন্যাসের বই সংগ্রহ করুণ এবং দ্রুত পড়ে ফেলুন। শুভ হোক আপনার পাঠ্য কার্যক্রম

      By Rezaul Karim Onik

      12 Oct 2019 05:44 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      বনেদী বংশ, বিলিতি ডিগ্রী, ভাল চাকরি, বাড়ি, গাড়ি , সুন্দরী গুণবতী স্ত্রী। যার জীবনে এতোকিছু থাকে তার সচরাচর আর কোন চাওয়ার থাকেনা বোধহয়। কিন্তু পৃথু ঘোষ আর দশজনের থেকে আলাদা। সে কবি হতে চায়, চায় প্রকৃতির মাঝে একান্তই নিজের মত করে বেঁচে থাকতে। সে প্রকৃতি ভালবাসে, তার বন্ধুদের ভালবাসে, বোধহয় তার স্ত্রীকেও ভালবাসে। গল্পটা পড়তে পড়তে আপনার পৃথু ওরফে পাগলা ঘোসসা কে একবার সাহসী, একবার কাপুরুষ, প্রেমাসক্ত আবার মাঝে মাঝে চরম নির্লিপ্ত, দায়িত্বহীন আবার পরমুহুর্তেই কঠিন দায়িত্ববান মনে হতে পারে। তবে যাই মনে হোক না কেনো গল্প শেষে আমার পৃথু ঘোষ হয়ে যেতে খুব ইচ্ছে হচ্ছিল, যার কোনকিছুতেই কিছু যায় আসে না। বইয়ের প্রায় প্রতিটা পৃষ্ঠায় জীবনদর্শন খুঁজে পাবেন। গান, শিকার, প্রকৃতি, প্রেম, কাম নিয়ে বিশদ আলোচনা আছে কোন কোন যায়গায়।

      By Abu Yousuf Akash

      15 Apr 2021 04:12 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      "প্রীতি, প্রেম, কাম, অপত্য, ভক্তি, শ্রদ্ধা, ঘৃণা, বৈরিতা, ক্রোধ, সমবেধনা এবং এমনকি ঔদাসীন্যরও বোধগুলিকে দেওয়ালি রাতের অসংখ্য প্রদীপের কম্পমান শিখারই মতো অনুভূতির দ্বিধাগ্রস্ত আঙ্গুলে ছুঁয়ে ছুঁয়ে জীবনকে পরিক্রম করে যেতে হয়.. এই পরিক্রমারই আরেক নামই কি মাধুকরী?" উপন্যাস টি কেনার আগে ভাবলাম, এতো বড় উপন্যাস (৬৩২ পৃষ্ঠার), শেষ করতে পারবো তো? তাও আবার এই লেখকের সাথে আমি একদম অপরিচিত একজন পাঠক.. যদিও এর আগে "সাতকাহন", "দূরবীন", "পার্থিব" এর মতো বাঘা বাঘা উপন্যাস শেষ করলাম নিমেষেই... তাই আর না ভেবে, লেখকের প্রথম বই হিসেবে শুরু করে দিলাম এই বিশাল, বর্ণময়, বেগবান উপন্যাস.. উপন্যাস টির গুডরিডস রেটিং ছিলো ৫ এ ৪.. কিন্তু উপন্যাসটি মোটেও ৫ এ ৪ পাওয়ার মতো একটি উপন্যাস নয়.. দিনশেষে উপন্যাসের প্রত্যেকটি কথা পাঠকের জীবনের সাথে মিলে যাবে.. তা উপন্যাসটি না পড়লে আপনি কখনোই উপলব্ধি করতে পারবেন না.. বুদ্ধদেব গুহ অনেক উচ্চমানের লেখক, তাঁর লেখনী, জীবন সম্পর্কে চিন্তাধারা অনেক গভীর, এমনকি অন্যান্য লেখকের উপন্যাসের মতো তাঁর উপন্যাসের লেখা ওতোটাও সাবলীল নয়.. ভাষার কঠিনত্বের কারণে কিছু কিছু লেখা আমার থেকে ২ বারের উপর পড়তে হলো... নারী ও পুরুষের যৌনতা, শ্লীলতা, অশ্লীলতা লেখক খুব সুনিপুণ ভাবে পাঠকের কাছে তুলে ধরেছেন.. কিছু কিছু বই পড়ার কিছু সঠিক সময় রয়েছে.. অসময়ে এইরকম বই পড়লে কিছু পাঠকের কাছে ভালো নাও লাগতে পারে অথবা লেখকের ভাবধারা নাও বুঝতে পারেন.. তাই আমি মনে করি এই কারণে কিছু পাঠক এই উপন্যাস টাকে Underrated করে থাকতে পারে.. আমার কাছে তা একদমেই মনে হয় নি... ☺️ এইবার আসি উপন্যাসের কথায়.. ভারতীয় মধ্যপ্রদেশ কে ঘিরে, বেশকিছু কাল্পনিক স্থান, মানুষের নাম, বাস্তবিক স্থান, মানুষের নামের উপর ভিত্তি করে সমাজকেন্দ্রিক, নারী পুরুষের সম্পর্কের মনস্তাত্ত্বিক জটিলতা, দাম্পত্য কলহ, সমাজের উচ্চবিত্ত ও নিম্নবিত্ত মানুষদের মন-মানসিকতার ভেদাভেদ, মধ্যপ্রদেশের সস্কৃতি, ধর্ম, অরণ্যের জীবন যাপন নিয়ে এই উপন্যাস.. লেখক উপন্যাসের প্রথমেই বলেছেন, "একবিংশ শতাব্দীর নারী ও পুরুষদের জন্য.." উপন্যাসেও উচ্চবিত্ত সমাজের কিছু আধুনিক মনমানসিকতার পরিচয় পাওয়া যাবে... উপন্যাসের কিছু মূল চরিত্র, কাহিনী নিয়ে কিছু আলোচনা.. মূল চরিত্র- পৃথু ঘোষ.. স্ত্রী (রুষা), ছোট ছেলে (টুসু), বড় মেয়ে (মিলি) নিয়ে তাঁর ছোট্ট একটি সংসার.. মধ্যপ্রদেশের একটি কোম্পানিতে উচ্চপদে চাকরি করে... কিছুটা ভাবুক, ভবঘুরে, কবিতা ভালোবাসেন, একাকিত্ব প্রিয়, দার্শনিক, অসম্ভব প্রকৃতি প্রেমী, সংসারের প্রতি সম্পূর্ণ উদাসীন, কিছুটা অদ্ভুত স্বভাবের ও বটে.. এই কারণে তাঁর স্ত্রী তাকে "অদ্ভুত বাজে লোক" বলে.. বন্ধুরা "আজিব আদমি", অফিসে "পাগলা ঘোষষা" নামে পরিচিত.. লেখক এই চরিত্রের মাধ্যমে তাঁর জীবন ও সমাজ সম্পর্কে গভীর, দার্শনিক চিন্তাধারা তুলে ধরেন... পৃথুর সবচেয়ে আকর্ষনীয় যে দিকটি, সে সমাজে অনেক উচুপদে অবস্থান করলেও, তার মেলামেশার খাতায় ছিলো সকল শ্রেণীর মানুষ.. কখনোই সমাজের কোনো মানুষকেই আর্থিক দিক, শিক্ষাগত দিক দিয়ে বিচার করতো না.. বরং সমাজের প্রতিটি মানুষকে সে আত্মিক দিক দিয়েই বিচার করতো.. তার কাছে মানুষের মন টাই আসল.. মানুষের মনেই প্রতিটি মানুষের আসল পরিচয়, যতই সমাজে উচ্চবিত্তের আসনে অবস্থান করুক না করুক.. যেকোনো নারী ও পুরুষের সম্পর্কের মধ্যে শারিরীক সম্পর্কের চেয়ে মনের সম্পর্কই যে বড় তা লেখক পৃথু ঘোষ, তাঁর স্ত্রী রুষার মাধ্যমে পাঠককে দেখিয়ে দিয়েছেন.. পৃথুর স্ত্রী রুষা.. আধুনিকা, শিক্ষিতা, অহংকারী, স্বাধীনচেতা, অসম্ভব সুন্দরী একজন মহিলা.. লেখক একবিংশ শতাব্দীর আধুনিক নারী চরিত্রের ধারণা দিয়েছেন এই চরিত্রের মাধ্যমে.. পৃথু-রুষার দাম্পত্য সম্পর্ক টি দ্বন্দে থাকার ফলে পৃথুকে ত্যাগ করে বিনোদ ইদুরকার নামে এক ব্যবসায়ীর সাথে সংসার করার চেষ্টা করেছিলেন.. পরবর্তীতে এর কর্মফল ভোগ করতে হয়েছিলো... পৃথুর প্রথম জীবনের প্রেমিকা হলো কুর্চি.. উপন্যাসের ২ টি গুরত্বপূর্ণ নারী চরিত্রের (কুর্চি, রূষা) মধ্যে একটি.. মূলত এই ২ চরিত্রের মাধ্যমে লেখক সমাজে ২ শ্রেণীর নারীদের মধ্যে পার্থক্য দেখিয়েছেন.. একজন নারী সমাজের উচ্চবিত্তে আসন গ্রহন করলে তার মনমানসিকতা কেমন হবে, আরেকজন নিম্নবিত্তে অবস্থান করলে তার মনমানসিকতা কেমন হবে.. তাও লেখক দিনশেষে বলেছেন "রুষার মধ্যেও কুর্চি রয়েছে, কুর্চির মধ্যেও রুষা রয়েছে.." পৃথুর সাথে উপন্যাসে বেশকিছু জায়গায় কুর্চির সাথে প্রেম, ঝগড়া, সম্পর্কের জটিলতা দেখতে পাই.. সমাজের বেশিরভাগ মানুষ দরিদ্র থেকে ধনী হলে, তারা তাদের শিখড়, অতীত কে ভুলে যান.. কিন্তু কিছু কিছু মানুষ তা মনে রাখেন.. পৃথুর বন্ধু ভুচু তাদের মধ্যে একজন.. লেখক এই চরিত্রটিকে পরিশ্রমী, ভালো মনের একজন মানুষ হিসেবে পাঠকের কাছে তুলে ধরেছেন.. উপন্যাসের অন্যতম চরিত্র ঠুঠা বাইগা (আদিবাসী).. পৃথুকে ছোটবেলা থেকে কোলে পিঠে মানুষ করেছেন.. শিখড়সন্ধানী এই মানুষটাকে ইংরেজী শিক্ষায় শিক্ষিত পৃথু আদিম চিরন্তন ভারতবর্ষ কে যেন নিত্যনতুন করে আবিষ্কার করেন... কলেরার তান্ডবে হারিয়ে যাওয়া নিজের গ্রাম কে সারা উপন্যাস জুড়েই খুঁজেই গিয়েছেন এই মানুষটি... এছাড়াও মধ্যপ্রদেশীয় বেশকিছু স্থান (টাইগার প্রজেক্ট, মান্দলা, ভোপাল, কানহা রেঞ্জ, মুক্কি, সুফকর, ভাইসেনঘাট...) সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা পাবেন... শিকারী দের কারণে বন্যপ্রাণীদের যে সংকাটপন্ন অবস্থা তা সম্পর্কেও জানতে পারবেন.. বেশকিছু স্থানীয় বন্য পুশু পাখি (বারশিঙ্গা, কুটরা, চিতল হরিণ, গাউর বা ইন্ডিয়ান বাইসন, নীল গাই, বড় বাঘ...) সম্পর্কে ও ভালোভাবে ধারণা পাবেন.. আদিবাসীদের সস্কৃতি, চলাফেরা সম্পর্কে ও ধারণা পাবেন... উপন্যাসে বিশেষ ও ব্যতিক্রমধর্মী যেসব দিক আমার কাছে আকর্ষনীয় লেগেছে তা হলো- লেখক সারা উপন্যাস জুড়েই জীবন সম্পর্কিত বিভিন্ন কবির কবিতা তুলে ধরেছেন.. স্থানীয় বেশকিছু গজল, সঙ্গীত ও উপন্যাসে আমি দেখতে পেয়েছি.. লেখক কিছু বিদেশি লেখকের বই থেকে বিভিন্ন কথা ও কবিতা ও এই উপন্যাসে সংযুক্ত করেছেন... এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য ২ টি বই হলো- The prophet (kahil Gibran), The Illusion (Richard Bach).. Illusion থেকে নিজের সন্তানদের নিয়ে লেখা যে কবিতা টা লেখক তুলে ধরেছেন তা আপনার চিন্তাধারাকেই বদলে দিবে..

      By ফয়সাল আহমেদ

      31 Oct 2019 09:12 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      বইয়ের নামঃমাধুকরী লেখকঃবুদ্ধদেব গুহ প্রকাশনীঃআনন্দ পাবলিশার্স মূল্যঃ৯০০টাকা মাধুকরী বুদ্ধদেব গুহের এমন বই যেখানে মানব প্রকৃতি এবং প্রকৃতি একযোগে বর্ণিত। চরিত্রের পার্থক্য, মানবিক গুণমান, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য খুব সুন্দরভাবে অনুমান করা হয়েছে।একটি অনন্য উপন্যাসও বটে যা তার পাঠকদের কাছ থেকে ভিন্ন ভিন্ন চরিত্রের সেট এবং জীবনের প্রতি তাদের বিপরীত দৃষ্টিভঙ্গির কারণে বিভিন্ন রকম প্রতিক্রিয়া পেয়েছে।লেখাটি সময়ে সময়ে দুর্দান্ত এবং অন্যের কাছে বেশ পরিশ্রম করা হয়। মহিলা চরিত্রের চিত্রণ অস্পষ্ট এবং সামগ্রিকভাবে এটি চূড়ান্তভাবে আত্ম-প্রবৃত্ত বলে মনে হয়েছে আমার কাছে ।মধুকরী সম্ভবত বুদ্ধদেব গুহর সবচেয়ে অসাধারণ লেখা। এটি একটি ব্যতিক্রমী এবং অফ-ট্র্যাক ব্যক্তি, নায়ক পৃথু, তার পরিবার, তার তথাকথিত নিম্ন-স্থিতির বন্ধু এবং প্রকৃতি ও জঙ্গলের প্রতি তাঁর অপরিসীম ভালবাসা উন্মোচন করার এক অনন্য চক্রান্ত, এমন এক গল্প নিহীত রয়েছে উপন্যাসটিতে। বইটি পড়ার সময় এক অসাধারণ অনুভূতি পেয়েছি যেন ঘটনাগুলো বাস্তবিকভাবে আমার সাথে ঘটছে৷ মোট কথায় আমার জীবনে পড়া শ্রেষ্ঠ উপন্যাস।

      By Mohammad Jillur Rahman

      19 Oct 2019 02:05 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      মাধুকরী উপন্যাসটি আসলে একটা ঘোর। সাধারণত এত বড় উপন্যাস (অবশ্যই ভালো) একটু ঘোর হবেই। তবু বলবো মাধুকরী পড়ার পর অন্তত দুই একদিন রেশটা থাকে। যারা বড় উপন্যাস পছন্দ করে তারা খুবই আনন্দ পাবেন। আমার মতন যারা বিভূতিভূষণের ভক্ত, জংগল- নির্জনতা যাদের টানে তারা বলেবে : আনন্দম, আনন্দম, আনন্দম। পৃথু ঘোষ, উপন্যাসের মূল নায়ক। আমার চোখে একজন ভালো মানুষের মডেল। বিলেত থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ে আসলেই আমাদের উপমহাদেশের লোকজনের সাহেবি করার একটা বাতিক আসে। সেখানে সাধারণ ভাবনায় মগ্ন একজন পৃথু ঘোষ কেন মডেল হবে না। উপন্যাসে লেখক নারী-স্বাধীনতার দেয়াল কয়েকবার ছুয়ে গেছেন। বোঝা মুশকিল যে দেয়ালে আঘাত করেছেন নাকি অর্ঘ্য দিলেন। যাই হোক আর লিখবো না, বাকিটা পাঠ্য। 'আমি কখনোই রিভিউতে মূল গল্পে আসাটা পছন্দ করিনা। এতে স্পয়লার হয়।'

      By Raju

      25 Nov 2013 11:58 AM

      Was this review helpful to you?

      or

      পৃথু ঘোষ চেয়েছিল, বড় বাঘের মতো বাচঁবে। বড় বাঘের যেমন হতে হয় না কারও উপর নির্ভরশীল না নারী, না সংসার, না গৃহ, না সমাজ সেভাবেই বাচঁবে সে, স্বরাট, স্বয়ম্ভর হয়ে। তার বন্ধু ছিল তথাকথিত সমাজের অপাংতেয়রা। পৃথু ঘোষ বিশ্বাস করত, এই পৃথিবীতে এক নতুন ধর্মের দিন সমাসন্ন। সে ধর্মে সমান মান-মর্যাদা এবং সুখ-স্বাধীনতা পাবে প্রতিটি নারী-পুরুষ। "মাধুকরী" শুধু পৃথু ঘোষের বিচিত্র জীবঙ্কাহিনী নয়। "মাধুকরী" এই শতকের মানুষের জীবনের যাবতীয় অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে আগামী প্রজন্মের মানুষের সার্থক ভাবে বেঁচে থাকার ঠিকানা। এই কারণেই এ উপন্যাস উৎসর্গ করা হয়েছে 'একবিংশ শতাব্দীর নারী ও পুরুষদের হাতে'।

      By Rushoti Amin

      31 Jan 2019 11:46 AM

      Was this review helpful to you?

      or

      " ভালো বই একা একা পড়া যায় না। অন্যকেও সেই বইটি পড়াতে ইচ্ছে করে। " - খুব সত্য একটি কথা। যে বইটি ভেতরটা তছনছ করে দিলো, অনেক কিছু শিখিয়ে গেলো, তা অন্যেরাও পড়ুক - এই ইচ্ছেটি প্রতিনিয়তই আমার ভেতর ঘোরাফেরা করে। আর এজন্যেই কোন বই পড়ে দু কলম না লিখলে আমার যেন বইটি হজম হয় না। অবশ্য "মাধুকরী" শুধু হজম করার মত বই নয়। আত্মসাৎ করার মত বই। বছর এর বিদায়কালে এক অদ্ভুত বিষণ্নতা মাখা হাহাকার আর মন খারাপ জাগিয়ে শেষ হলো বুদ্ধদেব গুহের " মাধুকরী "। কিছু বই থাকে শেষ করার পর আফসোস হয় এত দারুণ বইটি ফুরিয়ে গেল! কেন আরও আগে পড়লাম না! শীর্ষেন্দুর "পার্থিব", সুনীল বাবুর " সেই সময় " কিংবা সুচিত্রা ভট্টাচার্য এর "কাছের মানুষ" এর মত "মাধুকরী" পড়ার পর আমার কেন জানি এই অনুভূতিটা হয়নি। মনে হলো, বইটি পড়ার এটিই মোক্ষম সময় ছিলো। এর আগের বয়সে পড়লে কিছুই আমি বুঝতাম না। আর পরে পড়লে অনেক ভুল এর ব্যাপারে সাবধান হবার সুযোগ হারাতাম। " মাধুকরী " শেষ হয়েও শিখিয়ে গেল অনেককিছু,দেখিয়ে গেল কিছু নগ্ন সত্যের রূপ, বুঝিয়ে গেল তীব্র কিছু অনুভূতির তিক্ততা। পৃথু আর রুষার মধ্য দিয়ে আধুনিক দাম্পত্য জীবনের স্বরূপ চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে গেলেন লেখক। কুর্চি, বিজলী, ভুচু, শামীম, সাবির, দিগা পাঁড়ে, ঠুঠা বাইগা, গিরিশদা - সব চরিত্রগুলো যেন চোখের তারাতে ঝিকিমিকি করছে বই ফুরিয়ে যাবার পরেও। আর মনের অতলে ঘুরছে পৃথু নামের সারাজীবন দ্বিধাগ্রস্ত থাকা মানুষটি। মাথাতে যুক্তির ঢেউ তুলছে রুষা নামের প্রখর ব্যক্তিত্ব সম্পন্না , আত্মসম্মান জ্ঞানে বিভোর, আধুনিক রুচির নারীর চরিত্রটি। পাঠক মাত্রই বইয়ের চরিত্রের মাঝে নিজের ছায়া খুঁজে পায়। আমি বেশি মাত্রার কল্পনাবিলাসী হবার দরুণ আমি আরও বেশি ছায়া খুঁজে ফিরি। মাধুকরীতে অদ্ভুত এক ব্যাপার ঘটলো। নারী চরিত্র রুষা বা কুর্চির বিন্দুমাত্র ছায়া নিজের মাঝে পেলাম না। পেলাম গিয়ে পৃথুর ছায়া! পৃথুর মত সুপ্ত লুকায়িত বাসনা যে আমারও! আমিও ভাবি সব সামাজিকতাকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে, সংসার বিয়ের বাঁধন ছিঁড়ে ইচ্ছে স্বাধীন জীবন হলে মন্দ হয় না। পাহাড়,নদী,মেঘ,সাগর এর কোলে ডুবে যেতেই বোধহয় বেশি সুখ! পৃথু খুব গভীরভাবে নাড়িয়ে দিলো ভেতরটাকে। পৃথুর ধ্যান ধারণা,উদাসীনতা এবং সর্বোপরি উদারতা দেখে বিস্ময় জাগে মনে এমনও হয় কেউ? যারা এমন হয় তাদেরও পরিণতি কি পৃথুর মতোই হয়? আবার রুষার জায়গায় নিজেকে দাঁড় করালাম। পুরো সংসার এর হাল সামলানো, নিয়মের বেড়াজাল, রুষার জীবন সম্পর্কে চিন্তাভাবনার জায়গায় দাঁড়িয়ে দেখলাম রুষা তার স্থানে সঠিক। এক জায়গায় রুষা উল্লেখ করেছে, পৃথু যদি অন্যের স্বামী হতো তবে রুষা তার প্রেমে পড়তো! অদ্ভুত হলেও কথাটি সত্য! কিছু মানুষকে দূর থেকে দেখেই আরাম,তাদের সাথে সংসার করা যায় না। পৃথু ও রুষা দুই মেরুর মানুষ। নিজ নিজ জায়গায় দুজনেই সঠিক। আমরা সব সময় এক গোপন অভিমান পুষে ঘুরে বেড়াই - কেউ আমাকে বোঝে না! আচ্ছা,আমরা নিজেরাইবা কতটুকু বুঝি অন্যকে? বুঝি না। এখানে, এই পৃথিবীতে কেউ কাউকেই বোঝে না। কেউ কারোর জন্য কিছু করতেও পারে না। মাধুকরী - শাব্দিক অর্থ বহু স্থান হতে অল্প পরিমাণে সংগ্রহ বা দ্বারে দ্বারে ভিক্ষা। আসলেই তো তাই! জীবন নামের গাছকে বাঁচিয়ে রাখতে বহু জনের কাছ থেকে, বহু স্থান হতে অল্প অল্প সংগ্রহেই আমরা নিয়োজিত থাকি সারাটা জীবন। সেসব প্রাপ্তি পরতে পরতে সাজিয়ে তবেই না জীবনের চূড়াতে অবগাহন করতে পারি। আর যে দ্বারে দ্বারে ঘুরেও প্রত্যাখ্যাত হয় তার কপালে কী জোটে তার হিসেব শুধু সেই রাখে! সুখের ও আনন্দের সন্ধানে বহু স্থানে ঘুরে ঘুরে জীবনের শেষবেলায় এসে দেখি প্রকৃতপক্ষে যে রিক্ত ছিলাম সে রিক্তই আছি! শুণ্যতাতেই আমাদের জীবন নামের কলসটি পূর্ণ। প্রাপ্তির খাতায় কার যে কী জুটে তার হদিশ মেলা বড্ড দায়! আগে থেকেই সাগর, পাহাড় এর প্রতি তীব্র এক ঝোঁক ছিলো! মনে হতো বুড়োকালে পাহাড়ের কোলে ছোট্ট এক কুঁড়েঘর বানাবো। মাধুকরী পড়ার পর থেকে লুকায়িত বাসনাটা মাথার মাঝে প্রতিনিয়ত কিচিরমিচির করছে ভোরের পাখিদের মত! শেষ করবো বিখ্যাত সেই উক্তি দিয়ে - " A classic is a book that has never finished saying what it has to say! " - Italo Calvino.

    •  

    Recently Viewed


    Great offers, Direct to your inbox and stay one step ahead.
    • You can pay using


    JOIN US

    icon Download App

    Rokomari.com is now one of the leading e-commerce organizations in Bangladesh. It is indeed the biggest online bookshop or bookstore in Bangladesh that helps you save time and money. You can buy books online with a few clicks or a convenient phone call. With breathtaking discounts and offers you can buy anything from Bangla Upannash or English story books to academic, research or competitive exam books. Superfast cash on delivery service brings the products at your doorstep. Our customer support, return and replacement policies will surely add extra confidence in your online shopping experience. Happy Shopping with Rokomari.com!