User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
#পুতুল_জীবন #পাঠ_অনুভূতি ♦এক নজরেঃ •উপন্যাসের নামঃ পুতুল জীবন •লেখকঃ মোহনা জাহ্নবী •ধরনঃ সামাজিক •প্রকাশনীঃ অনুজ প্রকাশন •প্রচ্ছদঃ আহমাদ বোরহান •পৃষ্ঠা সংখ্যাঃ ১৬০ •প্রকাশকালঃ বইমেলা ২০২৪ লেখনীতেঃ রিফায়াত হাসান সাকিব ♦ভূমিকাঃ সে বেশ কতগুলো দিন আগের কথা, যেদিন আমি শেষ বইটি পড়েছিলাম । সেদিন আমার জানা ছিল না যে পরের বইটি পড়তে আমার কতগুলো রাতকে পেরিয়ে যেতে হবে । কতগুলো রাতে বই না পড়তে পারার অদ্ভুত এক কষ্টের সাক্ষী হয়ে যেতে হবে । এই অদ্ভুত মুহূর্তগুলো তাই ভীষণ অন্যরকম হয়ে ধরা দেয় । প্রতিটি রাত যেন ভীষণ গম্ভীর উদাসীন চোখেমুখে আমাকে খেয়াল করে যায় আজন্ম কাল ধরে । শুধু ইশারা করে বলে, একটা বই পড়তে । কিন্তু পড়া হয় না । সময় কাটানো হয় না । তবুও রাতের অন্ধকার আসে, ভোর নামে । সকালের মুগ্ধতা তৈরি হয় । আবার রাতের অন্ধকারে অদ্ভুত সুন্দর নিঃসঙ্গতা আসে কিন্তু বই নামক রাজ্যে আমার চুপটি করে বসে পড়া হয় না । তবুও অপেক্ষা করে থাকা হয় এই থমথমে মুহূর্তে হঠাৎ করে একদিন একটা বই পড়া হবে, সবকিছু যেন এক নিমিষেই কেটে যাবে তারপর । ♦ পারিপার্শ্বিক দিকঃ আজকে হঠাৎ রাতের মুহূর্ত । শুয়ে পড়েছি হঠাৎ করে মনে হলো আজকে রাতে ঘুমোবো না । আগের অভ্যাসের আলোড়ন তুলি । আয়োজন না করেই বই পড়তে যাওয়া এই আমাকে কোন বইটি পড়বো তা নিয়ে বেশি ভাবতে হয়নি কেনো যেন । কোথাও একটা এই বইটির প্রতি যেন চোখ চলে গিয়েছিল । ঠিক সে কারণেই কিনা জানি না, রাত ৩টার সময়ে এই বইটি শুরু করতে আমার কোনো প্রকার সন্দেহ তৈরি হয়নি । বড় আলগোছে, পথের ছুঁয়ে যাওয়া আবেশের মতো করে আমি শুধু বইটিই পড়ে গিয়েছি । এতদিন ধরে বই না পড়ে যাওয়া খেয়ালে বই ঠিক করে পড়তে পারবো কিনা ভাবতে বসা আমাকে যেন সম্পূর্ণ ভাসিয়ে নিয়ে গেল বইটি । যখন বইটি তাই পড়া শেষ হলো, তখন যেন সময় সকাল ৬টা ৩০ মিনিট । ♦নামকরণঃ মানুষের জীবনে এক ধরনের আপেক্ষিকতা আছে । কখন যে কার জীবনে কী হয়ে যায় পৃথিবী বুঝতে পারে না । মানুষ বুঝতে পারে না । শুধু সময় বুঝে এড়িয়ে চলে যায় জীবনভর । এই জীবন নামক মায়া খেলায় সবাই যেন নিজস্ব ঢঙে বেঁচে থাকা দাবা খেলার একেকটা গুটির মতো । নিজেকে নিয়ে শুরু করে যাওয়া এই জীবনে একটা নির্দিষ্ট ঘরে থাকলেও সময়, পরিস্থিতি তাকে কোথায় যে নিয়ে যায় তার খেয়াল বোধহয় ভবিষ্যতে শুধু মনই কল্পনা আর অনুভবে গিয়ে রেখে টের পেতে পারে । পুতুল খেলার এই জীবনে তাই মানুষের জীবনে কত বিশেষণের যে ছাপ আসে তা কোথাও কেউ টের পায় না । শুধু নিঃশ্বাস ছেড়ে আলগোছে অনুভব করে যায় । হায়রে জীবন! পুতুল জীবন । মানুষের জীবনের এই বিভিন্ন বিশেষণে তাই যেন কোথাও এক ধরনের আলগোছে আঙ্গিকতা । ♦ফ্ল্যাপে লেখাঃ সে বছর খুব বৃষ্টি হলো পাহাড়ে; ভারী বর্ষণ যাকে বলে । রাঙামাটির অনেক জায়গায় পাহাড় ধস হলো । পাহাড়ের নিচে চাপা পড়ে মারা গেলো শত শত মানুষ । সেনাবাহিনীর লোকবল সাধারণ জনগণের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে উদ্ধার কাজে নেমে গেলো । ঋতুরাজ, সেনাবাহিনীতে কর্মরত একজন সুদর্শন যুবক । বৃষ্টিতে ভিজে উদ্ধার কার্যক্রম চালাতে গিয়ে সে দেখলো, একটা ছোট্ট অবুঝ শিশু পাহাড়ের জলকাদার ভেতর বসে একটানা কেঁদে যাচ্ছে, বৃষ্টিতে ভিজে যাচ্ছে তার ছোট্ট দেহ; যা মায়ের উষ্ণতায় থাকার কথা ছিলো । কেউ তার কান্না থামাতে পারলো না । ঋতুরাজ তাকে বুকে জড়িয়ে নেওয়ার সাথে সাথে কান্না থেমে গেলো । কী অমোঘ সম্পর্ক তার সাথে ঋতুরাজের? দূর্বা, যে কিনা পরিবারের সাথে সকল সম্পর্ক ছিন্ন করে পাহাড়ের স্কুলে পড়াতে এসেছে; যেই স্কুলটা ট্রাস্টি বোর্ডের অধীনে এবং ঋতুরাজ সেই বোর্ডের সম্মানিত একজন সদস্য । এদিকে ঢাকা থেকে রাঙামাটি আসার পর বাসে পাশের সিটের যাত্রী শঙ্খের সাথে পরিচয় হয় দূর্বার, গড়ে ওঠে একটা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক । জল কোথায় গিয়ে গড়াবে? শঙ্খ, ঋতুরাজ আর দূর্বার সম্পর্কের পরিণতি কী হবে? পাহাড়ের ভাঁজে ভাঁজে কান্না জন্ম নেওয়া আরো অনেক চরিত্রের জীবনের গল্প প্রকৃতি কোন রেশমি সুতোয় বুনবে? এমন অনেক প্রশ্নের উত্তর নিয়ে এই ‘পুতুল জীবন!’ ♦প্রচ্ছদঃ অনেকগুলো দিন আগে এই প্রচ্ছদটি আমার চোখে পড়েছিল । দেখার পরে কোথাও একটা যেন ভালোলাগা কাজ করেছিল । মনে হয়েছিল, জীবনের গল্প বলা এই সবুজের আচ্ছাদিত মুহূর্তগুলো বড্ড কাছের বলে মনে হয় । সবুজ যেন জীবনের গল্প বলে দেয় । তাই বোধহয় এই পাহাড়ের পাথুরে জীবন, আকাশ, আকাশে উড়ে বেড়ানো পাখি, নামলিপির মতো উপন্যাসে বয়ে বেড়ানো তিনজন নর নারী ভালোলাগা নিয়ে বয়ে যায় খুব একটা । ♦পাঠ প্রতিক্রিয়াঃ ✓পটভূমিঃ এই বইটি আমি যেদিন হাতে নিয়েছিলাম প্রথম । সেদিন বইটির অংশবিশেষ পড়ে আমার মনে হয়েছিল এই বইটি আমার খুব মনের একটা অংশ হবে । কারণ নিজস্ব স্বকীয়তা এবং ঢঙে সবার একটা নিজস্ব আবেগ থাকে । যে আবেগে নিজেকে মেলে ধরে শান্তি খুঁজে পাওয়া যায় । নিজেকে মেলে দিয়ে হাসি নিয়ে তাকিয়ে থেকে নিঃশ্বাস নেয়া যায় । এই বইটি যেন সেরকম কিছুই একটা । পাহাড় আমার ভালোলাগার থেকেও বিশেষ এক অনুভবের নাম । কোথাও একটা অদৃশ্য শান্তি যেন বিরাজ করে । সে পাহাড়ে জীবনের অদ্ভুত কিছু উদাসীন জীবন, বড্ড আলগোছে থাকা পথের বুনো ফুলের মতো আঁকড়ে ধরা জীবনগুলো আমাকে উদাসীন হতে শেখায় । যা আমাকে ভালো লাগা নিয়ে অনুভব করতে আরো খেয়াল রাখায় । এই উপন্যাসের পটভূমি যেন ঠিক সেভাবেই ভেসে আসে । পাহাড়ের প্রতি এক অমোঘ আকর্ষণে তার প্রতি প্রকৃতির খেয়াল যেন কোথাও একটা অন্যরকম আবেগ সৃষ্টি করে দেয় । তাই এই ধরনের পটভূমিতে গল্প হয়ে তার সাথে সম্পর্কিত প্রেক্ষাপটে পুরো গল্পটা সাজানো যেন কোথাও একটা ভালোলাগার অনুভূতি দিয়েছে । কোথাও কোনো আপেক্ষিকতা নেই, কোথাও একটুও যেন এলোমেলো হয়ে প্রেক্ষাপটে উদাসীন কোনো মুহূর্ত নেই । তা যেন নিজস্ব ধাঁচে এক মোহটান এনে বয়ে দিয়েছে অদ্ভুত এক সুরে । এই উপন্যাসের প্রেক্ষাপটগুলোও তাই ভীষণ সুন্দর এবং ভারসাম্যপূর্ণ । যা উপন্যাসের প্রতিটি সূক্ষ্ম দৃশ্যপট এবং জলছাপকে দারুণ ভাবে গড়ে তুলেছে । ✓আবহ গঠনঃ জীবনের গল্প বলে চলা এই উপন্যাসটিতে যেন ভেসে আসে নিত্যদিনের দিন রাত হওয়ার মতো করে চিরাচরিত ঘটনা বয়ে যাওয়ার মতো প্রবাহ । ঠিক সেভাবেই যেন উপন্যাসটির পটভূমিতে প্রেক্ষাপটকে সাজিয়ে তাতে আবহ তৈরি করা হয়েছে । কিছু কিছু আবহ বেশ দারুণ ভাবে তৈরি করা হয়েছে যেন । চরিত্রদের যেন সঠিক ভাবে ফুটিয়ে তুলতে সাহায্য করেছে তা । ♦চরিত্র গঠনঃ একটি উপন্যাসের কায়া পাঠক মনে ফুটে উঠে আলোড়ন তুলে ধরার জন্য সর্বপ্রথম যা কল্পনা এবং অনুভবে ভেসে ওঠে তা হলো চরিত্র । প্রতিটি চরিত্র যেন তাই হয়ে ওঠে একেকটি অস্তিত্ব । তাদেরকে বিশ্বাসযোগ্য এবং ভারসাম্যপূর্ণ করে গড়ে তোলা তাই খুব গুরুত্বপূর্ণ । এই উপন্যাসেও চরিত্র গঠনে তা বেশ ভালো ভাবে ছিল । যদিও উপন্যাসে যে প্রেক্ষাপট থেকে শুরু হয়েছে সেখানে দূর্বা চরিত্রটির অতীত সম্পর্কে আরেকটু পরিষ্কার এবং বর্ণনা করলে উপন্যাসটি আরেকটু ভারসাম্যপূর্ণ হতে পারতো যা এখানে খানিকটা ধোঁয়াশায় রাখা হয়েছে । তাছাড়া অন্যান্য প্রতিটি চরিত্রই যেন দারুণ ভাবে গঠন করা হয়েছে এবং তাদের উপস্থিতি আনা হয়েছে । এই উপন্যাসে থাকা প্রতিটি চরিত্রের কিছু অন্যরকম অতীত আছে । কিছু কিছু অতীত খুবই নিদারুণ । কিছুটা কষ্ট দেওয়ার মতো হয়ে ভেসে আসা এই উপন্যাসে তাই জীবনের গল্প বলে যায় যেন । ♦চরিত্র বিশ্লেষণঃ •দূর্বাঃ নিজস্ব স্বকীয়তায়, নিজের স্বপ্ন নিয়ে বাঁচতে চাওয়া নারীটি জীবনে শান্তি চেয়েছিল । শান্তির খোঁজে যেন এসেছিল রাঙামাটিতে । রাঙামাটির পাহাড়ের জীবন তাকে উদাসীন হয়ে জীবন সম্পর্কে নতুন এক ধারণা দিয়েছিল । সম্পর্কের মূল্যবোধে বিশ্বাসী এই নারী তাই সবার সাথে মানিয়ে চলতে জানে । •শঙ্খঃ জীবনে ভেসে আসা মানুষটির পারিবারিক মূল্যবোধের এক অতীত কষ্টের ছাপ রয়েছে জীবনে । তবুও ভীষণ আলগোছে জীবনে সবার প্রতি এক দারুণ আলগোছে চেষ্টা আছে । সম্পর্ককে মূল্য দিতে পারা মানুষটি পরিস্থিতি বুঝতে পারে খুব । তা নিয়ে অনুভব করে যায় কোথাও একটা । •ফাগুনঃ ফাগুন যেন তার নামের মতোই বসন্তের আগমনী সুর । পাতা ঝরার গানে তার জীবনেও বিভিন্ন মুহূর্ত আসে । বন্ধুত্বপূর্ণ স্বভাবের, শিক্ষক এই মানুষটি আপন করে নেয়ার এক অসাধারণ গুণ নিয়ে পৃথিবীতে আসে । পরিবারকে ভালোবেসে নিজের ভালোবাসার মানুষের প্রতি এক চেষ্টা তাকে বয়ে নিয়ে যেতে হয় সারা জীবনভর । •ঋতুরাজঃ পেশায় আর্মি অফিসার এই মানুষটি দারুণ বন্ধুত্বপূর্ণ স্বভাবের । সম্পর্ককে মূল্যবোধে বিশ্বাসী হয়ে নিজের জীবনে অন্য কারো জীবনকে সংযুক্ত করে জীবনকে বয়ে নিয়ে যাওয়ার মতো এক চেষ্টা তাকে রেখে দিয়ে যায় অনেকখানি ভালো লাগায় । •টুকিটাকি চরিত্রঃ এছাড়াও এই গল্পে ভেসে আসে উড়িচ্যাং এর মতো একটা চরিত্র । আদিবাসী এই মেয়েটি কোনো এক পরিস্থিতিতে নিজের পরিবেশ বদলে গিয়েছিল । এছাড়াও আছে দারুণ বাচ্চা হৃদ্য চরিত্রটি । হাসিখুশি স্বভাবের বাচ্চা ছেলেটি যেন নিজের অস্তিত্ব দিয়ে পৃথিবীতে ভালোবাসা নিয়ে নেয় । এছাড়াও এই উপন্যাসে আছে একজন স্বামী, যিনি ভালোবাসার বিভিন্ন আখ্যানে পড়ে সম্পর্কের মূল্যবোধ হারিয়ে বসেন । ♦প্রিয় চরিত্রঃ এই উপন্যাসটি যখন পড়ছিলাম অনেকখানি পড়ার পরেও আমার বারবার মনে হচ্ছিল, আচ্ছা এই উপন্যাসের প্রিয় চরিত্রটি কে হতে পারে! তার অনেক পরে একটা চরিত্রের একটা পদক্ষেপ আমাকে বারংবার বুঝিয়ে দিয়েছিল যেন কোথাও একটা, যে এই চরিত্রটিই আমার প্রিয় হবে খুব । প্রিয় চরিত্রও বোধহয় হবে । সেই চরিত্রটির নাম শঙ্খ । উপন্যাসে তাকে একবার পরিস্থিতি ছাপিয়ে চলে যেতে হয়েছিল, কোথাও একটা পিছিয়ে যেতে হয়েছিল যেন । সেই মুহূর্তটি বোধহয় আমার তাকে প্রিয় চরিত্র বলে রূপ নিতে দেয় । ♦প্রিয় অংশঃ এই উপন্যাসের অনেকগুলো বিষয় আমার প্রিয় । বোধহয় এই কারণেই কিনা জানি না, এই বইটি আমার বেশ ভালোলাগার হয়েও রইলো । প্রথমেই যা প্রিয় তা হলো, পাহাড়ের জীবনের পটভূমিতে যে উদাসীন এক ছাপ ফেলে জীবন বয়ে যায় তার বর্ণনা এবং দারুণ কিছুর সৃষ্টি । এছাড়াও তার সাথে খাপ খাওয়ানোর সময়ে চিঠির যে মেলবন্ধন দেখানো হয়েছে তা যেন আরো খুব কাছের হয়ে ধরা দিয়েছে । এছাড়া আদিবাসীদের বিভিন্ন সংস্কৃতি, উৎসব এছাড়া গভীর জীবনবোধ এর এক গল্প এছাড়াও যেন উপন্যাসটিকে ভালো লাগায় আচ্ছন্ন করে দেয় । মনে পড়ে যায় প্রিয় উপন্যাস, মাইনী নদীর বাঁকে নিয়ে থাকা কিছু স্মৃতিচারণ । এছাড়াও উপন্যাসে কিছু প্রাকৃতিক দৃশ্যের বিভিন্ন বর্ণনা, বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সি আব্দুর রউফ এর কিছু মুহূর্ত, কাপ্তাই হ্রদের মুহূর্তগুলো প্রিয় হয়ে ধরা দেয় যেন । কিছু টিলা, কিছু পাহাড়ে বুনো ফুলের গন্ধ এবং আদিবাসী জীবনে বৈসাবি উৎসবের টান পুরো উপন্যাসে প্রিয় হয়ে থেকে যায় । ♦সংলাপঃ এই উপন্যাসে সাধারণত বর্ণনামূলক দৃষ্টিভঙ্গি এবং আবহই বেশি রাখা হয়েছে সংলাপের থেকে । তবুও যতটুকু আছে এবং তার সাথে থাকা শব্দচয়ন বেশ ভালো ছিল । সংস্কৃতি, পটভূমি এবং প্রেক্ষাপট সবকিছুকে খেয়াল রেখে ইতিহাসকে দারুণ ভাবে বর্ণনা করে পুরো উপন্যাসটি সাজানো হয়েছে যেন । ♦লেখক প্রসঙ্গেঃ অনেক দিন আগে লেখক মোহনা জাহ্নবী এর একটা উপন্যাস আমার সংগ্রহ করার ইচ্ছে হয়েছিল । তবে তা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না থাকায় আর সংগ্রহ করা হয়নি । তার বেশ কতগুলো দিন পরে এই বইটি নেয়া হয় আমার । বইটি পড়তে গিয়ে মনে হলো লেখক মোহনা জাহ্নবী এর মধ্যে এক ধরনের স্বতঃস্ফূর্ততা আছে । যে পটভূমিতে প্রেক্ষাপট সাজানো হয় তা নিয়ে দারুণ ভাবে নিজস্ব ধাঁচ এবং স্বকীয়তা বজায় রেখে কোথাও কোনো প্রকার আপেক্ষিকতা না রেখে গল্পটা বয়ে নিয়ে যেতে পারেন তিনি । যা অসাধারণ কিছু মুহূর্ত তৈরি করে । উপন্যাসটির জন্য যেভাবে প্রেক্ষাপটকে সাজিয়ে তা তৈরি করার জন্য তার চেষ্টা তা বেশ ভালো ছিল । বোধহয় এই কারণেই উপন্যাসটি পড়ে মাটির কাছের সোঁদা গন্ধের মতো ভীষণ জীবনের গল্প বলে মনে হয়েছে খুব । তার ভবিষ্যৎ লেখার জন্য শুভকামনা রইলো । ♦প্রকাশনীঃ অনুজ প্রকাশন এর বই অসাধারণ ভাবে তৈরি করা হয় । তাদের বই বাঁধাই এবং প্রচ্ছদ যেভাবে ফুটিয়ে তোলা হয় তা অসাধারণ লাগে যেন কোথাও একটা । ভীষণ মুগ্ধ হয়ে বইটি হাতে নিয়ে থাকতে ইচ্ছে করে খুব । এছাড়াও পৃষ্ঠা বাঁধাই, বইটির অন্যান্য সাজসজ্জা বেশ ভালো ছিল । বইটিতে তেমন একটা বানান ভুল বা অন্যান্য ত্রুটি সেভাবে ছিল না । যা মনোযোগ ধরে রাখতে বেশ সাহায্য করেছে । ♦রেটিংঃ ৪.৭/৫ ♦উপসংহারঃ জীবনের বয়ে যাওয়া এই গল্পে মানুষ যেন স্মৃতিচারণেই অদ্ভুত ভাবে হওয়া সেই ডায়েরিগুলোর মতো । যে ডায়েরিগুলোতে ভীষণ স্মৃতিচারণ তো হয়, অতীতের জীবনবোধে ভাবনা হয় খুব কিন্তু তা আর নতুন করে প্রাপ্তি হয় না । তাই স্মৃতিচারণগুলো ভীষণ অনুভূতিতে ভেসে ওঠা এক নিঃশ্বাসের মতো । যা সুখ দিবে, কষ্ট দিবে, আলোড়ন দিবে, শান্তি দিবে, দুঃখ দিবে । আবার কান্নাও দিবে । কিন্তু নিঃশ্বাসে এক শ্বাসের মতো যে হাওয়াটা বেরিয়ে যায় তা যেন প্রবল কোনো বিশেষণের কোনো গল্প বলে । সেই যে বিশেষণের গল্পটি বলে, সেটাই জীবন । পুতুল জীবন, যার কিছুই নিজের হাতে নেই । তবু বয়ে নিতে হয়, চলে যায় । এটাই জীবন, পুতুল জীবন!
Was this review helpful to you?
or
লেখকের বই এই প্রথম পড়া হয়েছে। বইটা পড়ে মুগ্ধ হয়েছি! এত সুন্দর লেখনী, বর্ণনা! একটানে পুরো বইটা পড়ে শেষ করেছি। উপন্যাসটিতে দূর্বা, শঙ্খ, ঋতুরাজ, হৃদ্য-র সাথে চমৎকার কিছু সময় কেটেছে। উপন্যাসের শেষটা মনে দাগ কাটবার মতো ও অসাধারণ।লেখকের জন্য শুভকামনা।