ফ্ল্যাপে লিখা কথা
তরুণ ঔপন্যাসিক শাহরিয়ার মামুনের আরও একটি স্বপ্নের মৃত্যু আরও একটি আত্মহনন এই বিদ্রোহেরই প্রচ্ছন্ন শৈল্পিক আখ্যান। উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র খুকি, যে ..
TK. 120TK. 106 You Save TK. 14 (12%)
Product Specification & Summary
ফ্ল্যাপে লিখা কথা
তরুণ ঔপন্যাসিক শাহরিয়ার মামুনের আরও একটি স্বপ্নের মৃত্যু আরও একটি আত্মহনন এই বিদ্রোহেরই প্রচ্ছন্ন শৈল্পিক আখ্যান। উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র খুকি, যে বেড়ে ওঠছিল অপার স্বপ্ন ও সজীব অনুভাবনাকে ঘিরে; আশৈশব কেটেছে তার ভাববাদী চেতনার পবিত্র পুরুষ পথিক দাদার স্নেহের উদার ছায়ায়, এর বিপরীতে দেখেছে সে ধর্মীয় লেবাসধারী অপগ্রহ হাজী সাহেবের কদাকার রূপ। আটপৌঢ়ে সংসারে যাপিত জীবনে কোনে রকমে বেঁচে-বর্তে থাকা রজব আলী বৈরী স্রোত ও অসম সংগ্রামের ভেতরেও বড় স্বপ্ন নিয়ে শহরে পাঠায় উচ্চ শিক্ষা নিতে আদুরে খুকিকে। নতুন পরিবেশে বি.বি এ এর পাঠ নেয়া সত্ত্বে ও আপাদমস্তকে শিল্পী সত্তাকে লালন করা খেয়ালী অথচ অসম্ভব রকম মানবতায় সংবেদনশীল হৃদয় শুভ্রর সঙ্গে পরিচয় হয় খুকির, অতঃপর প্রণয়। খুকির হৃদয়ে প্রজ্জ্বলিত হতে খাকে মহত্তম প্রেমের মঙ্গল আলোকের বহ্নিশিখা। কিন্তু হায়, খুকির বিরহে শুভ্রর লেখা খসে খসে পড়তে চায় দু’চোখের তারার মতোই ছাপ্পান্নো হাজার বর্গমাইলের হাজারো ইয়াসমিন-নুরজাহানের মতো ধর্ষিতা হয়ে অসময়ে পতিত হয় পুরুষতান্ত্রিক সমাজে আরও একটি স্বপ্ন আরও একটি জীবন। সমাব বাস্তবতা ও জীবন চেতনায় দীক্ষিত তরুণ ঔপন্যাসিক শাহরিয়ার মামুনকে আশা ও নৈরাশ্য, নিগ্রহ ও বেদনার অসম্ভব রকম মানবিক ও মর্মস্পর্শী শৈল্পিক দলিলের বস্তুনিষ্ট বয়ানে সাধুবাদ জানাই।
শাহান সাহাবুদ্দিন
ভূমিকা
জীবন তো আর সমান্তরাল রেললাইন বা পাকা ধানক্ষেতের আইলের মতো সহজ-আঁকা ছবি নয়। অসমান্তরাল পিচ্ছিল কদর্যময় ও অসংখ্য খানাখন্দে ভরা। চলতে গিয়ে বারবার হোঁচট খেতে হয়, পা পিছলে গড়িয়ে পড়তে হয়, আবার কখনো কখনো আচমকা থমকে দাঁড়াতে হয় কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে। এমনটি হয় না হয়ত সবার ক্ষেত্রেই! বিপন্ন জীবনের দোটানায় আলো-আঁধারের সীমারেখায় দাঁড়িয়ে হরহামেশাই আপন মনে প্রশ্ন জেগে ওঠে-পশ্চাতে কী হলো, বর্তমানে কী হচ্ছে, আর ভাবীকালে কীইবা হতে পারে আমার দ্বারা? হঠাৎ কালো মেঘে ঢেকে যায় সূর্যের তীর্যক আলোয়। ফিকে হয়ে আসে আকাশের রক্তিম আভা। নীড়ে ফেরা পাখির ছাপটায় সহসা নেমে আসে সন্ধ্যা। অন্ধকারের ভয়াল গ্রাসে অচেনা হয়ে ওঠে মৃত্তিকা, জনপদ আর বিশাল চরাচর। চোখ বুজি, দেখি আরও গাঢ় অন্ধকার। ভাবনা তার কূলে বেড়ায় তরী। নিশিরাতে জ্বলা ছোট্র জোনাকির মৃদু আলোর থেকেও ক্ষুদ্র বালুকণাসম এক আলোকরশ্মি ধীরে ধীরে পাহাড়সম আকার ধারণ করে স্বর্ণালোকিত স্বউজ্জ্বল মহিমায় মহিমান্বিত হয়ে ওঠে অন্তরাত্মায় জানান দেয় বিকশিত সত্ত্বার কথা। আমি নড়েচড়ে ওঠি আর অনুভব করি আমার আমিত্ত্বটাকে। পরক্ষণেই সবুজ ধরনীর বায়ুম-লের সতেজ হিমেল হাওয়া এক নিঃশ্বাসে টেনে নিই বুকের পাঁজরে , ফেরি স্বস্তির দীর্ঘাশ্বাস।
এতো আমার নয়, শ্রদ্ধেয় (ছৈয়দ আলী) দাদাজানের কাছ থেকে পাওয়া আত্মিক শক্তির এক প্রতিভার অগ্রযাত্রা মাত্র! যার মূল্যায়ন বা বাছবিচার বিশ্লেষণ ভালো করতে পারবেন বোদ্ধা পাঠক আর সমালোচক।
এই দূর্গম বাধা বিপত্তির পথে অনেক হোঁচট খেতে হয়েছে আমাকে। বুকের পাঁজর ভেঙে গেছে, রক্তক্ষরণ হয়েছে অনেক, এবড়ো-থেবড়ো মুখে ফের ওঠে দাঁড়িয়েছি, আবার হোঁচট খেয়েছি, আবার...!