7 verified Rokomari customers added this product in their favourite lists
ভূমিকা
মাহবুব উল আলম চৌধুরী(জন্ম ১৯২৭) এককালে চট্রগ্রাম থেকে ‘সীমান্ত’ নামে একটি মর্যাদাবান মাসিক সাহিত্য পত্রিকা প্রকাশ করতেন (১৯৪৭-১৯৫২)।
চট্রগ্রামের ছাত্র- আ..
TK. 100TK. 75 You Save TK. 25 (25%)
Product Specification & Summary
ভূমিকা
মাহবুব উল আলম চৌধুরী(জন্ম ১৯২৭) এককালে চট্রগ্রাম থেকে ‘সীমান্ত’ নামে একটি মর্যাদাবান মাসিক সাহিত্য পত্রিকা প্রকাশ করতেন (১৯৪৭-১৯৫২)।
চট্রগ্রামের ছাত্র- আন্দোলন ,রাজনৈতিক উদ্যোগ ও সাংস্কৃতিক কর্মধারার সঙ্গে তিনি খুব ঘনিষ্টভাবে সংশ্লিষ্ট ছিলেন। তিনি কবিতা ,ছোট গল্প, প্রবন্ধ ও নাটক লিখতেন,তার মধ্যে বেশ কিছু রচনা সমঝদারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল। কিন্তু তাঁর বিশেষ একটি কবিতা রাতারাতি বিখ্যাত হয়ে গিয়েছিল, সরকারী আদেশে বাজেয়াপ্ত হয়েছিল এবং মাহবুব উল আলম চৌধুরীর খ্যাতি বিস্তৃততর ক্ষেত্রে পরিব্যাপ্ত হয়েছিল।
কবিতাটির নাম ‘কাঁদতে আসিনি, ফাঁসির দাবি নিয়ে এসেছি ‘ । ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারিতে ঢাকায় গুলিবর্ষণ ও হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে লেখা এটিই ছিল প্রথম কবিতা। মাহবুব উল আলম চৌধূরী সে সময়ে চট্রগ্রাম জেলা রাষ্ট্রভাষা-সংগ্রাম পরিষদের আহবায়ক ছিলেন। একুশে ফেব্রুয়ারির ঠিক আগে আগেই তিনি আকস্মিকভাবে জলবসন্ত রোগে আক্রান্ত হন। ঢাকার ছাত্রহত্যার খবর পেয়ে একুশে রাতেই রোগশয্যায় শুয়ে এই দীর্ঘ কবিতাটি তিনি রচনা করেন। রাতেই সেটি মুদ্রিত হয় এবং পরদিন প্রচারিত ও চট্রগ্রামের প্রতিবাদ সভায় পঠিত হয়। এই ঘটনার বিবরণ দিয়ে খোন্দকার মোহম্মদ ইলিয়াস লিখেছেন:
জলবসন্তে আক্রান্ত সুশ্রী মাহবুব উল আলম চৌধুরীর সুদীপ্ত দু’টি চোখে ঝরছিল আগুন। তাঁর কলম দিয়ে বেরিয়ে আসে আগ্নেগিরির লাভার মতো জ্বলন্ত এক দীর্ঘ কবিতা, ‘কাঁদতে আসিনি, ফাঁসির দাবী নিয়ে এসেছি’।
আন্দরাকিল্লায় অবস্থিত একটি প্রেসে কবিতাটি পুস্তিকার আকারে প্রকাশের দায়িত্ব পড়ে আমার উপর। ব্যবস্থা হয় সারারাত প্রেসে কাজ চালিয়ে পরদিন সকাল বেলার মধ্যে গোপনে প্রকাশ করতে হবে অমর একুশের প্রথম সাহিত্য সৃষ্টি, প্রথম সাহিত্য সংকলন।
রাতের শেষ প্রহরে কম্পোজ ও প্রুফের কাজ যখন সমাপ্ত প্রায় , হঠাৎ একদল সশস্ত্র পুলিশ হামলা করে উক্ত ছাপাখানায়।প্রেসের সংগ্রামী কর্মচারীদের উপস্থিত বুদ্ধি ও ক্ষিপ্ততার মধ্যে দ্রুত লুকিয়ে ফেলা হয় আমাকে সহ সম্পূর্ন কম্পোজ ম্যাটার। তন্ন তন্ন করে খোঁজাখুঁজির পর পুলিশ যখন খালি হাতে ফিরে চলে যায় শ্রমিক -কর্মচারীরা পুনরায় শুরু করে তাদের অসমাপ্ত কাজ। শ্রমিক শ্রেণি যে ভাষায় যে দেশে যে অবস্থাতেই থাকুক না কেন, তার সংগ্রামী চেতনা যে অসাধারণ তার প্রমাণ সেদিন হাতে হাতে পেয়েছিলাম চট্রগ্রামে। দুপুরের মধ্যে মুদ্রিত ও বাঁধাই হয়ে প্রকাশিত হয় “কাঁদতে আসিনি, ফাঁসির দা্বী নিয়ে এসেছি“।.............
অপরাহেৃর লালদীঘির ময়দানে জনসমুদ্রে সভাপতির আসন অলংকৃত করলেন চট্রগ্রামের মুসলিম লীগ নেতা জনাব রফিউদ্দিন সিদ্দিকী। সভার কর্মসূচীর এক পর্যায়ে ছিল মাহবুব উল আলেম চৌধুরীর রচিত , “কাঁদতে আসিনি,ফাঁসির দাবী নিয়ে এসেছি” পাঠ। কবিতার যেমন ভাষা , তেমনি তার ভাব, তেমন তার ছন্দ। শ্রোতৃবৃন্দ একেকবার উত্তেজিত হয়ে ফেটে পরছেন আর আওয়াজ তুলছেন ‘চল চল ঢাকা চল’।
দেশের ইতিহাসের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ার সৌভাগ্য হয় না সকল সাহিত্যকর্মের । এই কবিতাটি তা হয়েছিল। বাজেয়াপ্ত হলেও হাতে হাতে কবিতাটি পুর্ব বাংলার এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে ছড়িয়ে গিয়েছিল।
পাদটীকাস্বরুপ একটি কথা বলার দরকার । এই কবিতায় একুশে ফেব্রুয়ারির চল্লিশ জন শহীদের উল্লেখ করা হয়েছে। তথ্য হিসেবে এটি অতিরঞ্জিত ,মনে হতে পারে,কিন্তু তখন আমাদের এমন ধারনা হয়েছিল। হাসান হাবিজুর রহমানের সুবিখ্যাত ‘অমর একুশে’ কবিতায় পঞ্চাশ জন শহীদের কথা বলা হয়েছে। তিনিও তো ভাষা -আন্দোলনের সক্রিয় কর্মী ছিলেন।
একুশের প্রথম কবিতা যে মাহবুব উল আলম চৌধুরী লিখলেন, তা হয়তো এক আকস্মিক ঐতিহাসিক ঘটনা। কিন্তু একুশে ফেব্রুয়ারি নিয়ে কবিতা তাঁকে লিখতেই হতো্ তাঁর সমগ্র জীবনাচরণ ও সাহিত্য চর্চা ধারায় তা চির অনিবার্য। নিতান্ত অল্প বয়স থেকেই রাজনীতি ও সংস্কৃতিকে তিনি মিলিয়েছিলেন একই স্রোতে।
সূচিপত্র
* নজরুলের উদ্দেশে
* আমি এক দুরন্ত সৈনিক
* ভাল লাগে
* মালবিকা
* সূর্যদিন
* মাটির গান
* স্বাধীনতা
* জাপানীরা হিরোহিতোর জন্য হারিকিরি করে
* তোমার চুল *কল্পনার মুহূর্ত
* হে পৃথিবী
* উড়ে চলে গেছে পাথি
* প্রিয়তমাসু
* কুকুরের কান্না
* রবীন্দ্রনাথের প্রতি
* পঁচিশে বৈশাখ
* জন্ম যন্ত্রনা
* অবাঞ্ছিত
* কাঁদতে আসিনি ফাঁসির দাবী নিয়ে এসেছি
* কাঁদকে আসিনি ফাঁসির দাবী নিয়ে এসেছি
* কাঁদতে আসিনি, ফাঁসির দাবী নিয়ে এসেছি
* হতাশার গান
* নসট্যালজিয়া
* বুদ্ধিজীবি
* পালাই পালাই
* কুয়াশার বীজ
* পরিক্রমা
* জীবনের সফলতা
* দিয়ে যাই বলি
* একুশ:১৯৭০
* দু:সময়:১৯৭১
* অঙ্গীকার
* একুশ:১৯৭২
* জারজেরা সব শোন একটি নদীর নাম
* স্বাধীনতা:১৯৮৪
* ভয় লাগানো গোঁফ
* জসিমুদ্দিনের মৃত্যুতে
* ওরা দুইজন
* এ বি সি
* ছড়া