14 verified Rokomari customers added this product in their favourite lists
মুসলমানরা ঈসায়ি অষ্টম শতকে ইউরোপ পৌঁছে। তারা পশ্চাদপদ ও অসভ্য আন্দালুসকে সভ্যতা-সংস্কৃতি, জ্ঞান-বিজ্ঞান ও উন্নতিতে ইউরোপের বাতিঘর হিসেবে গড়ে তোলেন। সেখানে জন্ম নেয় অসংখ্য আলেম, ..
TK. 750TK. 563 You Save TK. 187 (25%)
In Stock (only 1 copy left)
* স্টক আউট হওয়ার আগেই অর্ডার করুন
Related Products
Product Specification & Summary
মুসলমানরা ঈসায়ি অষ্টম শতকে ইউরোপ পৌঁছে। তারা পশ্চাদপদ ও অসভ্য আন্দালুসকে সভ্যতা-সংস্কৃতি, জ্ঞান-বিজ্ঞান ও উন্নতিতে ইউরোপের বাতিঘর হিসেবে গড়ে তোলেন। সেখানে জন্ম নেয় অসংখ্য আলেম, ফকিহ, মুহাদ্দিস, দার্শনিক, কবি-সাহিত্যিক, চিকিৎসক, বিজ্ঞানী, প্রকৌশলী ও সংগীতজ্ঞ। ঈসায়ি অষ্টম শতক থেকেই আব্বাসি খেলাফতের আমলে পৃথিবীর নানা জ্ঞানভান্ডার নিয়মতান্ত্রিকভাবে আরবিতে অনূদিত হতে থাকে। মুসলমানদের মাধ্যমে প্রাচীন জাতিসমূহের জ্ঞানভান্ডার, বিশেষত ইউনানি জ্ঞান-বিজ্ঞান, দর্শন ও কলা ইউরোপে পৌঁছে।
ইতিহাস সাক্ষী, ইউরোপের অধিকাংশ ক্লাসিক্যাল সৃষ্টিকর্মের উৎস হলো আরবি সাহিত্য। প্রখ্যাত ইংরেজ দার্শনিক ও বিজ্ঞানী রজার বেকন ছিলেন আরব শিক্ষকদের ছাত্র। তিনি নিজের ছাত্রদের বলতেন, ‘তোমরা যদি সঠিক জ্ঞান অর্জন করতে চাও, তাহলে আরবি পড়ো।’
পশ্চিমা লেখকগণ বলে থাকেন, জ্ঞান-বিজ্ঞানের উৎস হলো ইউনানি ভান্ডার। কিন্তু তারা একথা বলার সাহস করে না যে, ইউনানি জ্ঞানভান্ডার ছয়শো বছর পর্যন্ত ইস্কান্দারিয়া, এথেন্স ও কুস্তানতিনিয়াতে তালাবদ্ধ অবস্থায় পড়ে ছিল। সেখান থেকে মুসলমানরাই জ্ঞানগুলো বের করে এনেছে। মুসলমানরা সেগুলোর অনুবাদ করে ব্যাখ্যাগ্রন্থ লিখেছে; সেখানে থাকা ভুলভ্রান্তি সংশোধন করেছে।
মুসলমানদের অনূদিত ও ব্যাখ্যাকৃত ইউনানি গ্রন্থসমূহ তাদের সঙ্গে ইউরোপ পৌঁছে। কিন্তু কী নির্মম পরিহাস, সেই মুসলমানদের সম্পর্কেই বলা হচ্ছে, ‘হাজার বছর পর্যন্ত তাদের কার্যক্রম শুধু ইউনানি জ্ঞান-বিজ্ঞানের অনুবাদে সীমাবদ্ধ ছিল। তারা জ্ঞান-বিজ্ঞানে উল্লেখযোগ্য কোনোকিছু বৃদ্ধি করেননি!’
যেহেতু অন্যরা জ্ঞান-বিজ্ঞানে মুসলমানদের অবদানের কথা বলতে সাহস করে না; গ্যালিলিও, কেপলার, জেরার্ড ও রজার বেকন প্রমুখ মুসলমানদের নকলকারী ছিলেন এ সত্যটি বলবার সাহস করে না; এজন্য ইউরোপে মুসলমানদের এহসান সম্পর্কে আজকের ছাত্র, এমনকি, সভ্যতা, ইতিহাস ও বিজ্ঞানের পাঠকগণ একেবারে অজ্ঞ।
আমাদের ছাত্রদের বলা হয়েছে, আমেরিকার আবিষ্কারক হলেন কলম্বাস, আর আফ্রিকা আবিষ্কার করেছেন ডেভিড লিভিংস্টন। কিন্তু তাদেরকে একথা জানানো হয়নি, কলম্বাসের বহু আগেই মুসলমানরা ওই দেশের সন্ধান পেয়েছিল। কলম্বাস তো মুসলিম শিক্ষকদের থেকেই নৌবিদ্যার জ্ঞান লাভ করেছিলেন। তার নিকট দিকনির্দেশক যে কম্পাস ছিল সেটিও ছিল মুসলমানদের আবিষ্কার! অন্যদিকে আফ্রিকা গমনকারী আরবদের কাছে এমন একটি মানচিত্র ছিল, যা শতাব্দীর পর শতাব্দী তারা ‘বাহরে রূম’ (ভূমধ্যসাগর), ‘বাহরে কুলযুম’ (লোহিত সাগর), ‘ভারত মহাসাগর’, ‘বাহরে কাহেল’ (প্রশান্ত মহাসাগর) প্রভৃতি সমুদ্রভ্রমণে ব্যবহার করে আসছিলেন। কিন্তু পশ্চিমাদের কথার দ্বারা এমন মনে হয় যে, তারাই যেন মর্ত্য থেকে নিয়ে আকাশপুরির সৃষ্টিকতার্। ভাবখানা এমন যে, কোনো ইউরোপীয় সেদিকে ইশারা না করা পর্যন্ত এসব যেন অস্তিত্বেই আসেনি! যদিও হিমালয় পর্বতশৃঙ্গ কোটি কোটি বছর আগে থেকে গঠন হয়ে আসছে, কিন্তু এর পূর্ণতা পেয়েছে জর্জ এভারেস্টের চোখ যখন সেদিকে পতিত হয়েছে তখন। কী চমৎকার ইতিহাস!
আর তাদের দোষ দিয়েই-বা লাভ কী? যে-জাতি নিজেদের ইতিহাস প্রতিপক্ষের মুখে শুনতে পছন্দ করে তারা হয়তো প্রতিপক্ষের বিরোধী অবস্থানে থাকতে পারে, কিন্তু তাদের সামনে যাওয়ার সাহস পায় না। প্রতিপক্ষ সমাজ এমন একটি জাতি, যারা মুসলমানদের অস্তিত্বের স্বীকৃতি পর্যন্ত দিতে নারাজ। মুসলমানরা তাদের থেকে নিজেদের অধিকার কোন পদ্ধতিতে লাভ করতে চায় তা পুর্নবিবেচনা করা উচিত।...