Category:মুসলিম ব্যক্তিত্ব
এ গ্রন্থখানির মূল লেখক হচ্ছেন সালাহ উদ্দিনের ঘনিষ্ট সহচর তাঁর সামরিক আদালতের প্রধান বিচারপতি বাহাউদ্দিন শাদ্দাদ। তিনি সালাহউদ্দীনের অধিনে চাকুরী নেয়ার পর সর্বক্ষণ ছায়ার মতই তাঁর..
* স্টক আউট হওয়ার আগেই অর্ডার করুন
এ গ্রন্থখানির মূল লেখক হচ্ছেন সালাহ উদ্দিনের ঘনিষ্ট সহচর তাঁর সামরিক আদালতের প্রধান বিচারপতি বাহাউদ্দিন শাদ্দাদ। তিনি সালাহউদ্দীনের অধিনে চাকুরী নেয়ার পর সর্বক্ষণ ছায়ার মতই তাঁর সাথে সাথে থাকতেন। তাঁর সকল যুদ্ধাভিযানে তাঁর সঙ্গী হতেন এবং সালাহ উদ্দীনও প্রায় সকল কাজে তার পরামর্শ গ্রহণ করতেন। এরূপ একজন ব্যক্তি তার চাক্ষুষ দেখা ঘটনাবলী ও তিনি চাকুরীতে যোগ দেয়ার পূর্বের ঘটনাবলীও প্রত্যক্ষদর্শীদের নিকট থেকে সংগ্রহ করে এ গ্রন্থখানিতে লিপিবদ্ধ করেছেন। এদিক দিয়ে গ্রন্থখানি সম্পূর্ণ নির্ভরযোগ্য এবং গবেষণার জন্য একটি অমূল্য ঐতিহাসিক সূত্রও বটে। এই বইয়ের বিষয়বস্তু হচ্ছে সুলতান সালাহ উদ্দীনের শাসনকালে ইসলামের বিরুদ্ধে ইউরোপের প্রায় সকল যুদ্ধে তাঁর গৌরবময় ভূমিকা ও ফিলিস্তিন এবং জেরুজালেম পুণরুদ্ধারের কাহিনী। সংক্ষেপে বলা হয় যে, হযরত ওমর (রা.) এর শাসনামলে মুসলমানরা ফিলিস্তিন অধিকার করে, কিন্তু পরবর্তী সময়ে ফিলিস্তিন ও জেরুজালেম মুসলমানদের হাতছাড়া হয়ে যায়। যেহেতু জেরুজালেম মুসলমান ও ইহুদী-খৃস্টান সকলের নিকটই পবিত্র স্থান, তাই জেরুজালেম পুণরুদ্ধারের বিষয়টি যেমন মুসলমানদের নিকট ছিল অতীব গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি খৃস্টান জাতিসমূহের নিকটও তার অধিকার বজায় রাখার ব্যাপারটিও ছিল ধর্মীয় দিক থেকে অতীব পুণ্যের কাজ। তাই ক্রুশেড যুদ্ধসমূহ ছিল দীর্ঘমেয়াদী এবং ভয়াবহ প্রকৃতির। কিন্তু সালাহ উদ্দীনের অতুলনীয় যুদ্ধকৌশল, অনুপম ত্যাগ ও অসীম বীরত্বের কারণে আল্লাহর রহমতে তিনি প্রায় সকল যুদ্ধে খৃস্টান সম্মিলিত বাহিনীর বিরুদ্ধে বিজয়ী হন। এই সকল যুদ্ধে তাঁর একটি উদ্ভাবন ছিল যুদ্ধের গেরিলা কৌশল, আজ থেকে প্রায় হাজার বৎসর পূর্বে তিনি এই গেরিলা কৌশল অবলম্বন করে খৃস্টান সেনাবাহিনীকে নাস্তানাবুদ করে দিতেন। তবে তাঁর গেরিলা যুদ্ধের কৌশলটি ছিল খৃস্টান সৈন্যদেরকে সম্মুখ সমরে অবতীর্ণ করার জন্য। আর যখনই খৃস্টানরা কোন সম্মুখ সমরে অবতীর্ণ হয়েছে, আর যায় কোথায়? সালাহ উদ্দীনের চমৎকার যুদ্ধকৌশল ও তাঁর দুর্ধর্ষ বাহিনীর নিকট খৃস্টান সৈন্যদের পরাজয় ছিল অবধারিত। খৃস্টানদের সম্মিলিত বাহিনীর বিরুদ্ধে তাঁর জিহাদ ও সকল যুদ্ধ বিগ্রহের পূর্ণ বিবরণ রয়েছে এ বইটিতে। এখানে একটি বিষয় উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, জেরুজালেম পুনরুদ্ধার করা ছিল তাঁর আমৃত্যুপণ। তাই তিনি বহু বৎসর একাকী মুসলমানদের খলিফার কোন প্রকার সাহায্য ব্যতিত খৃস্টানদের দ্বারা সম্মিলিতভাবে পরিচালিত ক্রুশেড যুদ্ধের বিরুদ্ধে লড়াই করে জেরুজালেম ও ফিলিস্তিন পুনরুদ্ধার করেন। ঠিক তার কয়েক মাস যেতে না যেতেই তিনি তাঁর মহান সৃষ্টিকর্তার আহবানে সাড়া দিয়ে পরপারে চলে যান। আমার মনে হচ্চে যেন, মহান আল্লাহ তা‘য়ালা জেরুজালেম পুনরুদ্ধার করার জন্য খাস করে তাকে প্রেরণ করেছিলেন এবং যে মাত্র তাঁর উপর অর্পিত জেরুজালেম পুনরুদ্ধারের দায়িত্ব তিনি সাফল্যের সাথে সম্পন্ন করলেন, আর ঠিক তার পরপরই আল্লাহ তা‘য়ালা এ ক্ষণস্থায়ী জগত থেকে তাকে প্রত্যাহার করে তার নিকট নিয়ে গেলেন।
Report incorrect information