Category:সাহিত্যিক, শিল্প ও সংগীত ব্যক্তিত্ব
কবি মাহবুব উল আলম চৌধুরীর ৮৫তম জন্মদিন উপলক্ষে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করার প্রয়াস থেকে এই প্রকাশনা। তাঁকে আমাদের স্মরণ করতে হয় তাঁর সাংস্কৃতিক জ্ঞানের জন্য। এই জ্ঞান, রুচি এব..
কবি মাহবুব উল আলম চৌধুরীর ৮৫তম জন্মদিন উপলক্ষে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করার প্রয়াস থেকে এই প্রকাশনা। তাঁকে আমাদের স্মরণ করতে হয় তাঁর সাংস্কৃতিক জ্ঞানের জন্য। এই জ্ঞান, রুচি এবং প্রতিরোধের মীমাংসিত জায়গা থেকে উৎসারিত। তাঁর সৃজনশীল কর্মকাণ্ড এবং জীবন-ভাবনার বিদগ্ধ বিস্তার আমাদের জানাশোনা জগতের পরিসর বাড়িয়ে দেয়। তাঁর জন্মদিনে তাঁকে গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করি আমরা।
সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের উদ্যোগে ২০০৬ সালে তাঁর ৮০তম জন্মদিন জাতীয়ভাবে উদযাপন করা হয়। এই উপলক্ষে 'মাহবুব উল আলম চৌধুরী: এক অবিস্মরণীয় কবিতার জনক' শিরোনামে একটি স্মারক গ্রন্থ প্রকাশ করার মাধ্যমে জীবিতকালেও তাঁর প্রতি সম্মান প্রর্দশন করা হয়।
সময় বয়ে গেছে। তিনি এই সুন্দর পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছেন। মানুষের মুক্তির জন্য সংগ্রামের যে বীজ তিনি বপন করেছিলেন তা এদেশের মানুষকে প্রেরণা জোগাবে। এই সংগ্রামের যাঁরা প্রত্যক্ষ শুভাকাঙ্ক্ষী এবং অংশীদার তাঁরা মাহবুব উল আলম চৌধুরীকে 'স্মরণে, বরণে, স্মৃতিতে' আন্তরিকভাবে গ্রহণ করেছেন। তারই প্রতিফলন দেখা যায় প্রতিবছর একুশে ফেব্রুয়ারিতে, তাঁর জন্ম ও প্রয়াণ দিবসে দেশের প্রখ্যাত আবৃত্তিকারদের কণ্ঠে তাঁর কবিতা পাঠ, পোস্টারে তার প্রতিকৃতি এবং রেডিও, টেলিভিশনে, বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় তাঁকে নিবেদিত বিভিন্ন লেখা। এই লেখা সংকলন করার প্রচেষ্টা নেয়া হয়েছে এই প্রকাশনার মাধ্যমে। এছাড়া তাঁর প্রীতিভাজন, শ্রদ্ধাভাজন এবং অনুরাগীদের কাছ থেকে বেশ কিছু লেখা সংগ্রহ করা হয়েছে।
এ বছর কবি মাহবুব উল আলম চৌধুরীর প্রয়াণের চতুর্থ বছর। কবির প্রয়াণ সম্পর্কিত রচনা নিয়ে প্রথম বইটি প্রকাশিত হয় 'তুমি রবে নীরবে' শিরোনামে। সম্পাদনা করেছিলেন অধ্যাপক আনিসুজ্জামান ও জওশন আরা রহমান। বর্তমান বইটিতে কয়েকটি অধ্যায়ে কবির প্রয়াণ সম্পর্কিত রচনা যেমন সংকলিত হয়েছে, তেমনি কবির রচনা ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের ওপর আলোচনা স্থান পেয়েছে। উল্লেখযোগ্য দিক এই যে, প্রবীণ কবিকে মূল্যায়ন করেছেন নবীন লেখকরা। তাঁরা তাঁর রচিত কবিতার বইগুলোর আলোচনা করেছেন, তাঁরা কবিকে স্মরণ করে কবিতা লিখেছেন। আমরা চেয়েছি নবীনের চিন্তা ঘুরে দেখুক প্রবীণকে। সাহিত্যের ধারাবাহিক স্রোত তৈরি হোক সম্মিলিত শক্তিতে। আমরা নবীনদের কাছ থেকে বুঝতে চেয়েছি মাহবুব উল আলম চৌধুরীর অবস্থান। আমরা খুশি যে আমরা যাঁদের অনুরোধ করেছি তাঁরা নিজেদের লেখা দিয়ে সমৃদ্ধ করেছেন গ্রন্থটি।
এই গ্রন্থের উপদেষ্টা-পর্ষদে আছেন অধ্যাপক আনিসুজ্জামান, অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম এবং গবেষক-ফোকলোরবিদ শামসুজ্জামান খান। তাঁদের সহযোগিতার জন্য আমরা কৃতজ্ঞ। শিল্পী হাশেম খান বইয়ের প্রচ্ছদ করে দিয়ে আমাদেরকে কৃতজ্ঞতাপাশে আবদ্ধ করেছেন।
মাহবুব উল আলম চৌধুরী দীর্ঘ সময় ধরে এদেশের সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে আপন নিয়মে কাজ করেছেন। মানবিক চৈতন্যকে জাগিয়ে রেখে নির্মাণ করতে চেয়েছেন পরিশুদ্ধ সমাজ। তাঁর জায়গাটিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চিন্তা থেকে এই গ্রন্থের প্রকাশ। আমরা বিশ্বাস করি তাঁর লেখা মানুষের কল্যাণে অনেককে উদ্বুদ্ধ করবে।
Report incorrect information