30 verified Rokomari customers added this product in their favourite lists
“গোয়েন্দা গল্পসমগ্র" বইটির ফ্ল্যাপ এর লেখাঃ
গােয়েদা শব্দের অর্থ গুপ্তচর। এই গুপ্তচরবৃত্তি নিয়ে অসংখ্য গল্প, উপন্যাস ও নাটক সৃষ্টি হয়েছে। এই গােয়েন্দা গল্প ও উপন্যাস..
TK. 400TK. 288 You Save TK. 112 (28%)
In Stock (only 1 copy left)
* স্টক আউট হওয়ার আগেই অর্ডার করুন
Product Specification & Summary
“গোয়েন্দা গল্পসমগ্র" বইটির ফ্ল্যাপ এর লেখাঃ
গােয়েদা শব্দের অর্থ গুপ্তচর। এই গুপ্তচরবৃত্তি নিয়ে অসংখ্য গল্প, উপন্যাস ও নাটক সৃষ্টি হয়েছে। এই গােয়েন্দা গল্প ও উপন্যাস শিশুদের খুব প্রিয়। বিশ্বের সেরা সেরা সাহিত্যিক এই গােয়েন্দাধর্মী সাহিত্য সৃষ্টি করেছেন। বাংলা সাহিত্যেও অনেক নামকরা সাহিত্যিকেরা এই গােয়েন্দাধর্মী সাহিত্য সৃষ্টি করে পাঠকদের মাঝে অমর হয়ে আছেন। এক সময় সাহিত্য জগতে গােয়েন্দা গল্পকাহিনীর স্থান ছিল না বললেই চলে। কিন্তু স্যার আর্থার কোনান ডয়েল সাহিত্য জগতে এসে গােয়েন্দা গল্পকাহিনী লেখালেখির ফলে গােয়েন্দা গল্প-উপন্যাসের কদর বেড়ে যায়। ভূত নিয়ে লেখা সাহিত্যে শিশু-কিশােরদের যেমন কৌতুহল থাকে, গােয়েদাধর্মী সাহিত্য নিয়েও ঠিক একই রকমের উৎসাহ ও আগ্রহ থাকে। একটি গােয়েন্দা বই যদি কোন শিশু-কিশােরদের হাতে পড়ে তা হলে সে বইটি শেষ না করে সে ঘুমাবে না। শুধু ঘুম নয়, গােয়েদা বই হাতে পড়লে তাদের নাওয়া খাওয়া, খেলাধূলা এমন কি খাওয়া পর্যন্ত হারাম হয়ে যায়। বইটি পড়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত তার কোন অবকাশ অথবা বিশ্রাম নেবারও সুযােগ থাকে না।
খুন, চুরি-ডাকাতি কিংবা ছিনতাইয়ের ঘটনাকে কেন্দ্র করে মূলত এই গােয়েন্দা গল্প, উপন্যাস, কিংবা নাটক রচিত হয়ে থাকে। এর কেন্দ্রিয় চরিত্র সমূহ শিশু-কিশাের অথবা যুবক অথবা বৃদ্ধ বয়সের লােকও হতে পারে। গােয়েন্দা উপন্যাস বা গল্প কিছুটা ভূতের গল্পের মতই রােমাঞ্চকর। গােয়েন্দা গল্পের মূল উদ্দশ্য হচ্ছে পাঠক হৃদয়ে ভীতি ও কৌতূহল সঞ্চার করা। লেখক এতে বাস্তব থেকে অভিজ্ঞতা নিয়ে মনের ভয়ঙ্কর মাধুরী মিশিয়ে এক অপূর্ব চিত্রপ্রকল্প তৈরি করেন যা বিশেষ করে শিশু-কিশােরদের এমন কি সাবালকত্ব প্রাপ্তদের মধ্যেও এমন গল্প শােনার প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। এর একমাত্র কারণ এ বয়সের ছেলেমেয়েরা অজানাকে জানতে এবং অজানিতের সন্ধান করতে ভালবাসেন। গােয়েন্দা গল্পের ক্ষেত্রে তাদের বিচারবােধ, বুদ্ধি, বিবেক ইত্যাদি সব কিছু থেকেও যা অধিক কার্যকরী তা হচ্ছে কল্পনা শক্তির বিকাশ। গােয়েন্দা গল্পের সব থেকে বড় সহায়ক বাস্তবতার নিরিক্ষে কল্পনার রূপায়ন। আমরা জানি পৃথিবীতে দু রকম মানুষ রয়েছে। এর একটি ভাল মানুষ, অপরটি খারাপ মানুষ। ভাল মানুষেরা সদ্ভাবে জীবনযাপন করে, পারলে ভাল কাজ করে, অর্থাৎ মহৎ কাজের মাধ্যমে মানুষের উপকার করে। আর খারাপ মানুষ খারাপ কাজ করে। তাদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য হিংস্রতা, মিথ্যা বলা, মিথ্যার আশ্রয় নেয়া, অন্যের সম্পদ চুরি করে ডাকাতি করে নেয়া এবং প্রয়ােজনে খুন করা। এই কাজগুলাে তারা এমন ভাবে বা কৌশলে করে যাতে তাদের আইনের কাছে এবং প্রশাসনের কাছে ধরা পড়তে না হয়। হিংস্র কাজগুলাে শেষ করার সঙ্গে সঙ্গে ধরা পড়ার যত আলামত তা তারা ধ্বংস করে পালিয়ে যায়। শুধু পালিয়ে যায় না, ধর্মের আবরণে ভাল মানুষ সেজে সমাজে মাথা উঁচু করে চলে। সৃষ্টিকর্তা ও সমাজের ধর্মগুরুদের সন্তষ্ট করার জন্য, মসজিদ মন্দিরে অর্থ সাহায্য করতেও কার্পণ্য করে না। এই রঙচোরা ধূর্ত ও হিংস্র অপরাধী গভীর অনুসন্ধানের মাধ্যমে চিহ্নিত করা এবং গ্রেফতার করাই হচ্ছে গােয়েন্দাদের কাজ, আর এই কাজের শৈল্পিক বর্ণনাকেই বলা হয় গােয়েন্দা গল্প-উপন্যাস বা সাহিত্য। যে কোনাে বিষয়ের বাস্তব বর্ণনাকে প্রতিবেদন বলা যেতে পারে তাকে সাহিত্য বলা যাবে না বা সেটা সাহিত্যও নয়। সাহিত্য হতে হলে তাকে সর্বপ্রকার সাহিত্যরসে ভরে তুলতে হবে। যেমন ভুতের গল্প, ভূতের গল্পের ক্ষেত্রে মানুষের বিচারবােধ, বুদ্ধি, সব কিছু থেকেও যা অধিক কার্যকরী তা হচ্ছে কল্পনাশক্তি। ভূতের গল্পের মত গােয়েন্দা গল্পের সব থেকে বড় সহায়ক কল্পনপ্রবণন মানব মন। তাইতাে গােয়েন্দাগল্প ও ভূতের গল্প শুনতে মানব শিশুর অধিক আগ্রহ, তার কারণ এই বয়সে তারা সবচেয়ে বেশি কল্পনাপ্রবণ।
পৃথিবীর আদিকাল থেকে কিছু চরিত্রহীন,লােভী ও হিংস্র মানুষ তােক চোক্ষুর অন্তরাল থেকে তাদের হিংস্র কার্যকলাপ চালিয়ে আসছে। সভ্যতার উষালগ্ন থেকে তাদের চিহ্নিত করে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানােও হচ্ছে, মূলত এখান থেকেই সাহিত্যকবৃন্দ উক্ত বিষয়গুলােকে উপজীব্য করে সাহিত্য সৃষ্টি করে আবাল বৃদ্ধ বর্ণিতার মনােযােগ সৃষ্টি করতে - সমর্থ হয়েছেন।
সর্বযুগে এবং সর্বকালের ভৌতিক ভীতি তথা ভূতপ্রেত, দৈত্য-দানব ও হিংস্র চোরডাকাত, চিনতাইকারী-খুনিরা মানুষের মনকে যেমন উদ্দীপ্ত করেছে একই সঙ্গে উত্তেজিতও করেছে। মানুষ যেমন এসব থেকে ভয় পায়, রাত্রে ঘর থেকে বের হতে চায় না, কোন কিছুর ছায়া দেখলে ভূত কিংবা চোরের ভয়ে চিৎকার দিয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে ঠিক একই ভাবে তাদের গল্প শুনতেও প্রচণ্ড ভালবাসে। ভাবতেও অবাক লাগে এই বিংশ শতকের আলােকোজ্জ্বল নাগরিক জীবনে এই শিক্ষিত সভ্য মানুষই ঐ ভূতের গল্প কিংবা চোরডাকাতদের নিয়ে লেখা গােয়েন্দা গল্পের পুস্তক বেশি বেশি ক্রয় করে। এর কারণ পৃথিবীর এই হিংস্র লােভী ও চরিত্রহীন মানুষগুলাের কার্যকলাপ এবং তাদের খুঁজে বের করার সাহসী কৌশল ও পদক্ষেপ তাদের অনুপ্রাণিত করে। এ রকম একটি পুস্তক পাঠ করে রাত্রে বাইরে বের হতে চায় না অথচ পরের দিন আর একটি বই সংগ্রহ করে আনে। এর কারণ হতে পারে ঐ দুরাচার মানুষদের হাত থেকে আত্মরক্ষার কৌশল আয়ত্ব করা, একই সঙ্গে বড় হয়ে গােয়েন্দা পেশা অবলম্বন করে এই অপরাধীদের ধরার অভিজ্ঞতা অর্জন করা। একটি কথা ঠিক যে মুখে মুখে বলা হয়, মানুষ সৃষ্টির সেরা জীবন কিন্তু সর্বাংশে কথাটি সঠিক নয়। বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে লক্ষ্য করা যায় সব মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব নয়, কিছু কিছু মানুষ হিংস্র জানােয়ার থেকেও নিকৃষ্ট। মানুষের মূল্যায়ন নিয়ে এই যে ভুল ধারণা এটি প্রমাণ করে ঐ গােয়েন্দা সাহিত্য। এ বিষয়টিও গােয়েন্দা সাহিত্যের জনপ্রিয়তার সুপ্ত কারণ হতে পারে। বাংলা সাহিত্যে গােয়েন্দা উপন্যাস যতটা লেখা হয়েছে বা জনপ্রিয়তা পেয়েছে গােয়েন্দা গল্প ততটা নয়। আবার ভূতের গল্প যতটা জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ভূতের উপন্যাস ততটা নয় । ছােট গল্পের ছােট পরিসরে যে গল্প ভয়মিশ্রিত ভৌতিক অনুভূতির শিহরণ জাগাতে সক্ষম হয়, গােয়েন্দা বিষয়টি এমন ছােট পরিসরে নির্মাণ করা সম্ভব নয়। গােয়েন্দার বিষয়টিই দীর্ঘতর তাই এর অবয়ব সংক্ষিপ্ত করা সম্ভব নয়। তাই গােয়েন্দা বলতেই একটু দীর্ঘতর, যাকে গল্প না বলে উপন্যাস বলাই যুক্তিযুক্ত। তবে গল্পও রচিত হয়েছে অনেক।